বঙ্গবন্ধু ও বর্তমান প্রাসঙ্গিকতা

আয়েশা পারভীন চৌধুরী
বঙ্গবন্ধু যখন যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশ গড়ে তুলছিলেন ঠিক সে সময় ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টে তাঁকে সপরিবারে হত্যা করা হলো। মুক্তিযুদ্ধের বিজয়ী জাতি তাদের মুক্তির স্বপ্নদ্রষ্টাকে সপরিবারে হত্যা করবে তা বিশ্ববাসী কোনদিন ভাবেনি। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু কোনদিন স্বপ্নেও ভাবেনি কোন বাঙালি তার বুকে গুলি চালাতে পারে। সেদিনের কালো রাত্রিতে জাতি হারিয়েছে তাদের মহান নেতা আর বিশ্বের শোষিত মানুষের মুক্তির একজন মহান কাণ্ডারীকে। ইতিহাসে বার বার প্রমাণিত, যারা দেশকে প্রগতির পথে নিয়ে যান তারা সবসময় প্রতিক্রিয়াশীলদের হাতে নিহত হন। তেমনি বঙ্গবন্ধুকেও নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। তবে বাংলার ইতিহাস থেকে বঙ্গবন্ধুকে কোনদিন মুছে ফেলা যায় নাই, আর যাবেও না। হাজার হাজার বছর ধরে তিনি বাঙালি জাতির অনুপ্রেরণা হয়ে থাকবে। বঙ্গবন্ধু আমাদের মানচিত্র, জাতীয় পতাকা ও জাতীয়তা দিয়েছেন। স্বাধীনতার স্বপ্ন দেখিয়ে সেই স্বাধীনতার রক্তিম সূর্যকে ছিনিয়ে এনেছেন। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে ১৯৭১ এ যে রক্তক্ষয়ী স্বাধীনতা যুদ্ধ চলেছিল তাতে কোন ধরনের দ্বিমত পোষণ করা হয় নাই। কেউ এই যুদ্ধকে প্রশ্নবিদ্ধ করেনি। যারা রাজাকার ও আলবদর তারাও তাদের সহযোগীরাই একমাত্র এই যুদ্ধের বিরোধীতা করেছিল। এক দেশ ও এক নেতার নেতৃত্বে সেই দিনের রক্তক্ষয়ী সংগ্রামে মানুষ একতাবদ্ধ হয়েছিল। স্বাধীন রাষ্ট্র হওয়ার আগেই বঙ্গবন্ধু এদেশের নাম বাংলাদেশ রাখার সিদ্ধান্ত নেন। বঙ্গবন্ধুকে বাদ দিয়ে যেমনি বাংলাদেশের ইতিহাস রচিত হতে পারে না তেমনি বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীদের বিচার কার্য সম্পন্ন না হলে বাংলাদেশের ইতিহাস থেকে জাতির পিতা হত্যার কলঙ্ক কখনো মুছবে না।

১৯৭৫ এর সেই কালো রাত্রিতে শুধুমাত্র বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হয় নাই। বরং পুরো পরিবারকে উপড়ে ফেলার জন্য এক জঘন্য ষড়যন্ত্র করা হয়। তারই প্রেক্ষিতে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রের শিকার হয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তার পরিবার পরিজনসহ সকলকে নিশৃংসভাবে হত্যা করা হয়। রক্তঝরা এই দিনটিতে ঐতিহাসিক ৩২ নম্বর সড়কের নিজ বাসভবনে হত্যা করা হয় তার সহধর্মীণি বেগম শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিব, তিন ছেলে মুক্তিযোদ্ধা শেখ কামাল, সেনা কর্মকর্তা শেখ জামাল ও দশ বছরের শিশুপুত্র শেখ রাসেল ও নবপরিণীতা দুই পুত্রবধূ সুলতানা কামাল ও রোজী কামাল। হত্যাকারীরা শুধু বঙ্গবন্ধু পরিবারকে হত্যা করে ক্ষান্ত হয় নি বঙ্গবন্ধুর ছোট ভাই মুক্তিযোদ্ধা শেখ আবু নাসের, ভগ্নিপতি আবদুর রব সেরনিয়াবাত, তার ছেলে আরিফ সেরনিয়াবাত, মেয়ে বেবী সেরনিয়াবাত, শিশু পৌত্র সুকান্ত বাবু, বঙ্গবন্ধুর ভাগ্নে শেখ ফজলুল হক মনি, তার অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী আরজু মনি, নিকট আত্মীয় শহীদ সেরনিয়াবাত, আবদুল নাঈম খান রিন্টুকেও নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। সেই দিনের সেই প্রহরে যারা বঙ্গবন্ধুকে বাঁচাতে এগিয়ে এসেছিল তাদেরকেও একে একে হত্যা করা হয়। ১৯৭৫ সালে শুধু একজন বঙ্গবন্ধুকে ও তার পরিবার পরিজনকে হত্যা করা হয় নি, ঘাতক দালালরা বাঙালি জাতির আত্মাকে হত্যা করেছিল। তবে বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে হত্যা করতে পারে নাই। যে উদ্দেশ্য নিয়ে এই হত্যাকাণ্ডটি চলেছিল তা বরং বিপরীত হয়েছে। বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও প্রেরণা জন্ম জন্মান্তের প্রজন্মের পর প্রজন্মকে সামনে চলার পথে এগিয়ে নিয়ে যাবে।

বঙ্গবন্ধু বাঙালি জাতির কাছে একটি আদর্শ এবং একটি প্রেরণা। তিনি শুধু স্বাধীনতার স্বপ্ন দেখিয়ে একটি স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে সর্বোচ্চ নেতৃত্ব দেন। তিনি বিশ্ব দরবারে বাঙালিকে স্বাধীন জাতির মর্যাদা প্রতিষ্ঠা লাভে সংগ্রাম করেছেন। আমাদের এই লাল সবুজের পতাকাও তার অবদান। তাই বঙ্গবন্ধু একটি পতাকা, একটি মানচিত্র, একটি দেশ, একটি আন্দোলন, একটি বিপ্লব, একটি সংগ্রাম, একটি ইতিহাস। তাকে রাজনীতির কবি বলা হয়। দেশ ও মানুষের প্রয়োজনে তিনি রাজনীতিকে সাজিয়ে ছিলেন। সাধারণ মানুষের চিন্তায় এক এক সময় এক একটি সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। তার প্রতিটি আন্দোলন সংগ্রামের পিছনে ছিল সাধারণ মানুষের মুক্তি। এই মুক্তি শুধুমাত্র রাজনৈতিক মুক্তি নয়, একটি পরাধীন জাতি থেকে স্বাধীন জাতিতে পরিণত নয়, পাকিস্তানী শাসকগুলোর নির্মম অত্যাচার থেকে মুক্তি নয়, রাজাকার আলবদরের ঘৃণ্য চক্রান্ত থেকে মুক্তি নয়। বঙ্গবন্ধু যে মুক্তির সনদ রচিত করেছিলেন তাতে ছিল পুরো বাঙালি জাতির অর্থনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও মানবিক মুক্তি। একটি যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশে এই মুক্তির মিছিল শুরু করতে যে শ্রম ও মেধা প্রয়োজন ছিল সব আমাদের ছিল। সময়ের পরিক্রমায় হয়ত একদিন এই দেশের মানুষের ভাগ্যের চাকা বদলাতে শুরু করতো। কিন্তু কিছু বিপথগামী ও স্বার্থান্বেষী মহল এই মুক্তির বিরোধীতা করে। তারা বাঙালি জাতিকে দমিয়ে রাখতে চেয়েছিল বলেই এই নির্মম হত্যাকাণ্ড ঘটায়।

একটি মুসলিম প্রধান দেশ হয়েও বঙ্গবন্ধু সকল ধর্মের মানুষকে এক কাতারে এনে সংঘবদ্ধ করতে পেরেছেন। তার প্রতিটি আন্দোলন সংগ্রামে সবার একতাবদ্ধ সমর্থনই পাকিস্তানী শাসকগোষ্ঠীর ভিতকে বার বার কাঁপিয়ে দেয়। ১৯৬৯ সালের ৬ ডিসেম্বর তিন (৩) নেতার মাজার প্রাঙ্গণে সোহরাওয়ার্দীর মৃত্যুবার্ষিকী অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধু ঘোষণা দেন, আজ হতে পাকিস্তানের পূর্বাঞ্চলের প্রদেশটির নাম পূর্ব পাকিস্তান না, শুধুমাত্র বাংলাদেশ। বঙ্গবন্ধুর অসাধারণ সাহস ও নিঃস্বার্থ লোভই বাংলাদেশের ভাগ্যে স্বাধীনতার সূর্য এনে দিয়েছিল। তিনি শেষ রক্ত বিন্দু দিয়ে হলেও বাঙালির মুক্তি কামনা করেছিলেন। বার বার তার সামনে আসা মসনদ, ক্ষমতা, অর্থবিত্তের হাতছানি তিনি ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করেন। বাংলার সাধারণ মানুষগুলোই ছিল তার ধ্যান ও জ্ঞান। বঙ্গবন্ধু বলতেন, আমি মানুষ, আমি বাঙালি, আমি মুসলমান। বাংলাদেশের জনগণকে তিন ধাপে তাদের পরিচয় সাজাতে বলতেন। আগে মানবতা, তারপর জাতিসত্তা ও তারপর ধর্ম। তিনি মানুষকে মানুষের পরিচয়ে প্রতিষ্ঠা করতে চেয়েছিলেন। কোন ধরনের সম্প্রদায় অথবা ধর্ম ভিত্তিক পরিচয়ে নয়। তাই সবাই এক বাক্যে বঙ্গবন্ধুকে তাদের জাতীয় নেতায় অভিসিক্ত করেন। তার শিক্ষা, জ্ঞান ও ধারণার প্রসার এত বেশি তীক্ষ্ম ছিল কখনো কোন ধরনের প্রশ্নের উত্তর দিতে ভয় পেতেন না। যখন যেখানে শত্রু হউক, রাষ্ট্রের প্রধান হউক, রাষ্ট্রদ্রোহীতা হউক, দেশের আমলা হউক, সাধারণ মানুষ হউক–সবাইকে বুঝিয়ে দিতেন তিনি তাঁদেরকে তাদের মতই আপন করতে পারতেন আবার প্রয়োজনে কঠোর হতেও পারতেন। তাঁর ৭ই মার্চের ভাষণ শুধুমাত্র একটি ভাষণ ছিল না, এর একটি মোহনীয় শক্তি ছিল। সেই দিনের সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের বিশাল গণসমাবেশই ছিল তার প্রমাণ, তিনি কত বড় মাপের একজন নেতা, মানুষ, বক্তা। তাঁর নেতৃত্বের গুণাবলী ছিল অদ্বিতীয় ও অতুলনীয়।

শেখ মুজিবুর রহমান সম্পর্কে বলতে ও জানতে গিয়ে কিছু কিছু ব্যক্তিগত অভিমত প্রকাশ না করে পারছি না। প্রথমেই বলব মুজিব কোটের কথা। বঙ্গবন্ধুর একটি বিশেষ পোশাক যা তার অভিব্যক্তিকে আরো বেশি আকর্ষণীয় করে তুলতে সেই মুজিব কোটটি এমন একটি অতি সাধারণ পোশাকে পরিণত। রাস্তা ঘাট, যে কোন অনুষ্ঠান আয়োজনে, সামাজিক ও রাজনৈতিক মিলনমেলায় বঙ্গবন্ধুর মুজিব কোটটি অতিমাত্রায় চোখে পরে। ২৬শে মার্চ ও ১৬ই ডিসেম্বর সবাই যেমন লাল সবুজের পোশাক ও ২১শে ফেব্রুয়ারিতে সাদাকালো পোশাক পড়ে তেমনি মুজিব কোটটিও সবাই পড়ে। সে ছোট হউক, বড় হউক, আওয়ামীলীগ করছে এই বার্তা জানান দেওয়ার জন্য যেন এই পোশাকটি পরিধান করে। কিন্তু পোশাকের মর্ম কত জন ধারণ ও লালন করে তা বোঝা যায় না। তবে এইটুকু বুঝতে কষ্ট হয় না, এই মুজিব কোটের যে আদর্শ ও মহত্ত্ব আছে তার কিছুটা হলেও বুঝলে বাংলাদেশের এমন হতভাগ্য অবস্থা হত না। চারিদিকে নানা অন্যায়–অত্যাচারের সংবাদ আর সংবাদ। আর যারা বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে বিভিন্ন অনুষ্ঠান আয়োজনে বক্তৃতা দিয়ে থাকেন তারাও কখনো কখনো মাত্রাজ্ঞান হারিয়ে ফেলে। একটি রাজনৈতিক মঞ্চ ও একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মঞ্চ সর্ম্পূণ আলাদা। যারা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কোমলমতী শিক্ষার্থীদের সামনে বঙ্গবন্ধুর উপর বিস্তারিত আলোচনা করেন তাদের অন্তত জ্ঞান থাকা দরকার সামনে উপবিষ্ট দর্শকরা কি ধরনের আলোচনা পছন্দ করে। গলা কাপিয়ে, মুখের থুথু বের করতে করতে চিৎকার করে বক্তৃতা দিলে শিক্ষার্থীরা কিছুই শিখবে না। বরং তথ্য বহুল ও চিত্র প্রদর্শনীর মাধ্যমে স্বাভাবিক ও সাবলীল আলোচনায় শিক্ষার্থীরা বেশি উপকৃত হবে।

১০–১২ বছরের ছেলেরা যারা ভোটার নয় তাদেরকে দিয়ে নানা সময়ে মিছিল মিটিং করা হয়। হঠাৎ হঠাৎ রাস্তায় এই বয়সের ছেলেরা বঙ্গবন্ধুর নামে শ্লোগান দিতে থাকে। সেই শ্লোগানে কোন গাম্ভীর্য নেই। বরং কিছুটা হালকামি দেখা যায়। এই ধরনের মিছিলগুলো কারো কাম্য নয়।

রাজনৈতিক কোন নির্বাচনে কেউ জিতলে বা কোন সংগঠন যদি কোন সাংগঠনিক ভোটে জিতে তাহলে দেখা যায় তারা দলবদ্ধভাবে টুঙ্গীপাড়ার দিকে যায় অথবা ধানমন্ডির ৩২ নং বাড়ীর দিকে ছোটে। যতটুকু বঙ্গবন্ধুর নীতি ও আদর্শকে মেনে তাদের পথ চলা শুরু করা উচিত তার চেয়ে বেশি নিজেদের প্রদর্শনে ব্যস্ত। বঙ্গবন্ধুর ছবির সামনে অথবা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবির সামনে ফটো সেশন করতে ব্যস্ত থাকে। আসলে তারা কী চায়? বঙ্গবন্ধুর প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন হওয়া উচিত তাদের কর্মে ও উদ্দেশ্যে। বর্তমান রাজনীতির একটি বড় দিক হচ্ছে কথায় কথায় সোনার বাংলা শব্দটি উচ্চারণ করা। সবাই যেন সোনার বাংলা গড়তে অতি বেশি উৎসাহী। বঙ্গবন্ধুর ইচ্ছা ছিল এই দেশকে সোনার বাংলায় পরিণত করা। তার রাজনৈতিক জ্ঞান, প্রজ্ঞতা, প্রত্যুৎপন্নমতিতা, দক্ষতা, নেতৃত্বের গুণাবলী, সদাহাস্য মনোভাব, কঠোর ও অবিচল সিদ্ধান্ত ইত্যাদি গুণাবলীকে কাজে লাগিয়ে সবাইকে একত্র করে এই বাংলাকে সোনার বাংলা করার যে স্বপ্ন ছিল তার যথাযথ মর্ম যদি বর্তমান ও পরবর্তী প্রজন্ম বুঝতে পারে তাহলেই এই দেশ এক সময় বঙ্গবন্ধুর সেই স্বপ্নের দেশে পরিণত হবে।

শোকাবহ আগস্টের প্রথম প্রহরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে প্রদীপ প্রজ্বলন ও পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করা হয়েছে। বছরের আবর্তনে বার বার ফিরে আসে এই শোকাবহ আগস্ট। পুরো জাতি বার বার লজ্জিত ও দুঃখিত হয় এই অন্যায় ও অপকর্মের জন্য। যারা এই হত্যাকান্ড চালিয়েছে তাদেরকে এই ঘটনা বরং অনুপ্রেরণা দিয়ে আসে। কিন্তু বাংলার প্রতিটি সাধারণ মানুষ এই হত্যাকান্ডকে কখনো মেনে নিতে পারেনি বলেই আগস্টের প্রথম প্রহর থেকেই তাদের শ্রদ্ধা নিবেদন করে থাকেন। ১৯৭৫ এর এই কালো দিনটিতে জাতি হারিয়েছে তার গর্ব, আবহমান বাংলা ও বাঙালির আরাধ্য পুরুষ, স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে।

বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বের ও রাষ্ট্রনায়কের গুণাবলী নিয়ে অনেক সময় অনেকেই আলোচনা সমালোচনা করেছে। ১৯৭৩ সালে এক অনুষ্ঠানে অধ্যাপক খান সরওয়ার মুরশিদ বেশ কৌতূহলে ফরাসি লেখক বিপ্লবী মার্লোকে প্রশ্ন করেছিল, “মুজিব পারবেন তো একটি রাষ্ট্র তৈরি করতে?” উত্তরে মার্লো বেশ জোরালো কন্ঠেই বলেছিলেন, “অবশ্যই, যদি না আপনারা শিক্ষিতরা, বুদ্ধিজীবীরা তাঁকে মেরে ফেলেন।” কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় এই দেশেরই তথাকথিত কতিপয় বিপথগামী ও ক্ষমতালোভী বুদ্ধিজীবী ও সামরিক কর্মকর্তার ষড়যন্ত্রে মুজিবকে প্রাণ দিতে হয়েছিল। এক্ষেত্রে দেশীয় চক্রান্তের সাথে বিদেশী মহলের মদদ দাতারাও বেশ তৎপর ছিল। তাই সেই কালো রাত্রির কলঙ্কময় অধ্যায় এখনো বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি কালো অধ্যায় হিসেবে চিহ্নিত হয়ে আছে। যত বারই খুনী ও তাদের দোসরদের বিচারের আওতায় আনার চেষ্টা করা হয় তত বারই এদেশীয় কতিপয় ব্যক্তি দেশী ও বিদেশী ষড়যন্ত্রে তা বানচাল করতে চায়। কিন্তু বাঙালি এর বিচার চায়। কলঙ্কের কালিমা হতে মুক্ত হতে চায়।

লেখক : কলামিস্ট ও অধ্যাপক, ইংরেজী বিভাগ,

ডাঃ ফজলুল–হাজেরা ডিগ্রী কলেজ, চট্টগ্রাম

SUMMARY

931-1.jpg