হৃদয়ে জাগ্রত বঙ্গবন্ধু

শামীমা সুমি 
 বঙ্গবন্ধু একটা চেতনার নাম, বঙ্গবন্ধু একটা ইতিহাসের নাম, যে ইতিহাস রচিত হয়েছে, হাজার বছরে তিমিররাত্রি সরিয়ে নতুন স্বাধীনতার সূর্যোদয়ের মাধ্যমে। ঘুমন্ত জাতিকে সোনার কাঠির স্পর্শে জাগিয়ে তোলা হিরন্ময় ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। কী এমন ক্ষতি হতো শুধু নিজেকে নিয়ে ভাবলে, নিজের ধ্যানে পড়ে থাকলে, কিন্ত বঙ্গবন্ধু তা পারেননি কৈশোর থেকেই তার প্রাণ কাঁদতো নিপীড়িত মানবের জন্য, শোষিত মানুষের জন্য কিছু একটা করার স্পৃহা তাকে তাড়িত করতো। নির্যাতিত নিপীড়িত মানুষের পাশেই তাকে পাওয়া যেতো। দেশের জন্য কিছু করার তাগিদ তার পিছু নিয়েছে, এই প্রতিবাদী কণ্ঠস্বর জীবনের বেশীরভাগ সময় কাটিয়েছেন জেলে, ভাবনা জুড়ে থাকতো মানুষের কথা মানবতার কথা তথা আপামর অবহেলিত জনতার কথা, নিরন্তর শোষিত পূর্ব পাকিস্তানের জনগণের কথা। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ব্যক্তিগত নোটবুকের উদ্ধৃতি — (৩০–০৫–১৯৭৩ সালে লিখিত, মূল ইংরেজি সংগ্রহ – অসমাপ্ত আত্মজীবনী) : “একজন মানুষ হিসাবে সমগ্র মানবজাতি নিয়েই আমি ভাবি। একজন বাঙালি হিসাবে যা কিছু বাঙালিদের সঙ্গে সম্পর্কিত তাই আমাকে গভীরভাবে ভাবায়। এই নিরন্তর সম্পৃক্তির উৎস ভালোবাসা, অক্ষত ভালোবাসা, যে ভালোবাসা আমার রাজনীতি এবং অস্তিত্বকে অর্থবহ করে তোলে ।”

একটি অঙ্গুলি নির্দেশেই লাখো জনতায় ছড়িয়ে দিয়েছেন বিদ্রোহ, নিজের প্রাণের নিরাপত্তাকে তুচ্ছ করে লাখো মুক্তিযোদ্ধাসহ ছিনিয়ে এনেছেন স্বাধীনতার লাল সূর্য। বাঙালি জাতিকে এনে দিয়েছেন একটি স্বাধীন দেশ একটি স্বাধীন জাতিসত্তার স্বীকৃতি ও একটি ভাষার মর্যাদা। বাঙালিদের বড্ড ভালোবাসতেন বড় বিশ্বাস করতেন। মৃত্যুর কিছুদিন পূর্বে গোপন গোয়েন্দাবিভাগ তাকে সতর্ক করেছিলো। তিনি বলেছিলেন “আমার বাঙালি জাতি আমারে মারবার পারে আমি বিশ্বাস করি না।” কিন্তু এই বাঙালি জাতির কতিপয় হীন চরিত্রের বিপথগামী কুচক্রী বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করতে দ্বিধাবোধ করেনি, তাদের আত্মা চিৎকার করেনি, তাদের বিবেক ধিক্কার দেয়নি, তাদের হাত কাঁপেনি তাদের আঙ্গুল অবশ হয়নি। উনি মরেননি, উনি বেঁচে থাকবেন কোটিকোটি দেশপ্রেমীদের হৃদয়ে, বঙ্গবন্ধু মানেই বাংলাদেশ, বাংলাদেশের কখনোই মৃত্যু হবে না, হতে পারে না।


SUMMARY

926-1.jpg