তেসরা মার্চ। ১৯৭১ সালের এদিনে পল্টন ময়দানে শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে ছাত্রসংগ্রাম পরিষদ স্বাধীনতার ইশতেহার ঘোষণা করে। স্বাধীন দেশ প্রতিষ্ঠার সব রাজনৈতিক ও আনুষ্ঠানিক প্রক্রিয়াশেষে ঘোষণা করা হয়– এদেশের নাম হবে বাংলাদেশ। এদিন সারাদেশে পূর্ণ দিবস হরতালও পালিত হয়। হরতাল চলাকালে জনতার মিছিলে পাকিস্তানী সেনাদের গুলিবর্ষণ ও বিভিন্ন সংঘর্ষের ঘটনায় ১শ’র মতো মানুষ নিহত হয়। এদিন রংপুর এবং সিলেটে কারফিউ জারি করা হয়। গণ-আন্দোলনের ভয়াবহতা দেখে জুলফিকার আলী ভুট্টো জেনারেল ইয়াহিয়া খানের সাথে আলোচনায় বসেন। আর ১০ই মার্চ রাজনৈতিক নেতাদের সম্মেলন ডাকেন ইয়াহিয়া খান। এ সম্মেলন সরাসরি প্রত্যাখান করেন শেখ মুজিবুর রহমান। ৩ মার্চের ঘটনা তুলে ধরছেন হেদায়েত উল্যাহ সীমান্ত।
একাত্তুরের তেসরা মার্চ পাক-শাসকদের কারফিউ অগ্রাহ্য করে ঢাকাসহ সারাদেশে বঙ্গবন্ধুর ডাকে অসহযোগ আন্দোলন চলতে থাকে। বের হয় অসংখ্য প্রতিবাদী মিছিল।
দেশের বিভিন্ন স্থানে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে গঠিত হতে থাকে সংগ্রাম পরিষদ। গোপনে চলে সশস্ত্র সংগ্রামের প্রস্তুতি। এ সংগ্রামে যোগ দিতে থাকে তরুণ-যুবকসহ সকল স্তরের মানুষ।
এদিন বিকেলে পল্টন ময়দানের জনসভায় বাংলাদেশের স্বাধীনতার ইশতেহার পাঠ করেন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শাজাহান সিরাজ।
পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীর অতর্কিত হামলায় এদিন ঢাকায় শহীদ হন ২৫ জন মুক্তিকামী মানুষ। আহত হন দেড় শতাধিক।
বাঙালির দুর্বার আন্দোলনে দিশেহারা হয়ে পড়ে পাকিস্তান সামরিক সরকার। দেশীয় দোসরদের নিয়ে নীল-নকশা করতে থাকেন তারা। আন্দোলন দমনে জারি করা হয় সান্ধ্য আইন। সংবাদপত্রে আন্দোলনের কথা প্রকাশ বন্ধে সামরিক জান্তা সেন্সরশীপ আরোপ করে এদিন।