শাহাদৎ স্বপন
প্রবীণ আইনজীবী ডক্টর কামাল হোসেন ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের একান্ত সহযোগী যোদ্ধা ও রাজনৈতিক সহকর্মী। ছাত্রজীবন থেকেই শেখ মুজিবের নেতৃত্বের প্রতি আকৃষ্ট হতে থাকে পূর্ব-পাকিস্তানের মানুষ। ৭ই মার্চ তার ভাষণের পর বাঙলার মানুষ স্বাধীনতা অর্জনের সর্বাত্মক প্রস্তুতি নিতে থাকেন। যার যা আছে- তাই নিয়ে মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ার জন্য তৈরি হন। আর এরই মধ্যে পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় সরকার পূর্ব-পাকিস্তানে পরিকল্পিতভাবে সামরিক বাহিনীর সদস্য সংখ্যা বাড়াতে থাকে।
এরই ধারাবাহিকতায় ২৫ মার্চের কালো রাতেই তৎকালীন পূর্ব- পাকিস্তানের জনগণের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী। এরপর গ্রেফতার করা হয় শেখ মুজিবুর রহমানকে। দীর্ঘ সাড়ে নয় মাস পাকিস্তানে কারাভোগের পর তিনি ছাড়া পান ১৯৭২ সালের ৮ জানুয়ারি।
এদিন শেখ মুজিবুর রহমান ও ডক্টর কামাল হোসেনকে বিমানে তুলে দেওয়া হয় পাকিস্তান থেকে। সকাল সাড়ে ৬টায় তারা পৌঁছেন লন্ডনের হিথ্রো বিমানবন্দরে। সকাল ১০টার পর থেকে তিনি ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী এডওয়ার্ড হিথ, তাজউদ্দীন আহমদ ও ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীসহ অনেকের সঙ্গে কথা বলেন। পরে ব্রিটেনের বিমানবাহিনীর একটি বিমানে তিনি ৯ জানুয়ারি দেশের পথে যাত্রা করেন।
দিল্লি হয়ে শেখ মুজিবুর রহমান ঢাকা এসে পৌঁছেন ১০ জানুয়ারি। তখন বেলা বাজে ঠিক ১টা ৪১ মিনিট। তার ওই দীর্ঘ কারাভোগের প্রত্যক্ষ সাক্ষী ছিলেন বর্তমান গণফোরাম সভাপতি এবং সম্প্রতি গঠিত জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা ডক্টর কামাল হোসেন।
তার সঙ্গে শেখ মুজিবুর রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবসের অনুভূতি নিয়ে বিস্তারিত কথা হয় । সাক্ষাৎকার নিয়েছেন শাহাদৎ স্বপন।
পাঠকদের জন্য সাক্ষাৎকারটি বিস্তারিত তুলে ধরা হলো-
যেভাবে পশ্চিম পাকিস্তানের কারাগার থেকে শেখ মুজিবুর রহমান ও আমি (ডক্টর কামাল) ঢাকায় আসি
প্রথমে জেল থেকে ছাড়া পাওয়ার পর লন্ডন থেকে বাংলাদেশে আসি। তখন বঙ্গবন্ধু (উপাধি পরে পাওয়া) আমাকে বললেন, ‘দেখো আমরা দ্রুত কীভাবে ঢাকা পৌঁছতে পারি, সেই ব্যবস্থা নাও।’ তারা (ব্রিটেনে) আমাদের বললেন, আমরা ট্রেনে যাওয়ার ব্যবস্থা করি। আমরা তখন বললাম, সে তো আরও দুই দিন চলে যাবে। তো, আমরা যদি অন্য কোনোভাবে যেতে পারি। আর সেটা যদি প্লেন হয় তাহলে ভালো।
তখন সঙ্গে সঙ্গে সেই সুযোগ হয়ে গেল। প্লেনে যাওয়ার জন্য আর অপেক্ষা করতে হলো না। আমরা পরের দিন সকালেই রওনা দিলাম। তারপর বঙ্গবন্ধু আমাকে বললেন, তুমি হিসাব করে নাও যে, আমরা যাতে আমাদের দেশে দিনের বেলা পৌঁছতে পারি। ততক্ষণে কলকাতা থেকে প্রচুর পরিমাণে টেলিফোন আসছে। ওখান থেকে বলা হচ্ছে, কলকাতায় আসতেই হবে। কলকাতা থেকে তার বলছে, মুজিবনগর সরকার তো এখান থেকে শুরু হয়েছে। এখানে আসবেন না কেন?
তখনও শেখ মুজিবুর রহমান বঙ্গবন্ধু হোননি। শেখ মুজিব বললেন, তুমি হিসাব কর। লন্ডন থেকে দিল্লি এবং দিল্লি থেকে কলকাতা থেমে ঢাকায় কি দিনের বেলা যাওয়া যাবে? দেখা গেল, কলকাতায় থামলে আমরা আর ঢাকায় দিনের বেলা পৌঁছতে পারি না। উনিও (বঙ্গবন্ধু) চিন্তা করলেন, ইন্ডিয়া মুক্তিযুদ্ধে অনেক ভালো ভূমিকা রেখেছেন। সেই দিক বিবেচনা করে বঙ্গবন্ধু কথা দিলেন, আমরা দিল্লিতে কিছু সময় থামবো।
তবে ঢাকা পৌঁছতে হবে আমাদেরকে দিন থাকতে। তখন জানুয়ারি মাস চলে। দিন তো অনেক ছোট, ৪ থেকে ৫টার মধ্যে দিন শেষ হয়ে যায়।
এসব চিন্তা করে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব বললেন, ‘আমি কথা দিলাম। জানুয়ারিতেই আমি কলকাতা আসব। আমি আর কলকতায় দেরি করব না। আমি সময় করে আবারও কলকতায় আসব। আমাকে ১০ তারিখেই ঢাকায় চলে যেতে হবে।’এবং উনি কথা রাখলেন। ঢাকায় আসার পর আবার জানুয়ারি মাসেই তিনি কলকাতা গেলেন।
আর দিল্লিতে আমরা যতটুকু সময় ছিলাম। সেখানকার যে দৃশ্য ছিল এটা ভাষায় প্রকাশ করা যাবে না। মনে হলো, তারা তাদের পরিবারের একজন মানুষকে ফিরে পেয়েছে। মানে ওদের পুরো কেবিনেট ওখানে ছিল। গান্ধীসহ পার্লামেন্টের অধিকাংশ সদস্য, প্রধানমন্ত্রীসহ বিভিন্ন বাহিনীর প্রধানরা এয়ারপোর্টে উপস্থিত ছিল। বঙ্গবন্ধুকে দেখে উপস্থিত সকলের চোখ থেকে পানি ঝড়ছে। পরিবারের একজন সদস্যকে ফিরে পেলে যেমন আবেগঘন পরিবেশের সৃষ্টি হয়, ঠিক তেমনই এক আবেগঘন পরিবেশ সেখানে তৈরি হয়েছিল। এটাকে কোনো রাষ্ট্রীয় বা সরকারি কোনো অনুষ্ঠান মনে হচ্ছিল না। মনে হচ্ছিল একটি পরিবারের পুর্ণমিলনী।
উপস্থিতরা তখন বললেন, দেখুন, একটা আনুষ্ঠানিকতা আমরা করবো। আপনি তো রাষ্ট্রপ্রধান হিসেবে দিল্লিতে নেমেছেন। আমরা আমাদের রাষ্ট্রীয়ভবনে পাঁচ মিনিটের জন্য আপনাকে নিয়ে যাব, জাস্ট একটা আনুষ্ঠানিকতার জন্য। আমরা তখন ঠিক করলাম, দ্রুত গাড়িতে চড়ে যাব, ওখানে একটু প্রেসিডেন্টের সঙ্গে দেখা করব। বঙ্গবন্ধু শুভেচ্ছা জানাবেন, গাড়িতে উঠবেন এবং চলে আসবেন। তো, সেটাই হলো। তখন এয়ারপোর্টের সংবর্ধনা শেষে গাড়িতে চড়ে রাষ্ট্রপতি ভবনে যাওয়া হলো। তখন সেখানে ভারতীয় প্রেসিডেন্ট আমাদের রিসিভ করলেন।
সেখানে পাঁচ থেকে দশ মিনিট কাটিয়ে আবার গাড়িতে করে এসে প্লেনে উঠলাম এবং দিন থাকতেই আমরা ঢাকায় পৌঁছে গেলাম।
বিমানবন্দরে নামার আগে যে অবস্থা তৈরি হলো
ড. কামাল বলেন, ঢাকায় যখন আমরা ঢুকলাম, তখন বঙ্গবন্ধু বিমানের জানালা দিয়ে নিচের দিকে দেখছিলেন, নিচের দিকে দেখা যায় শুধু মাথা আর মাথা, মাথা আর মাথা। গাছের ওপর মানুষ, ছাদের ওপর মানুষ, রাস্তায় রাস্তায় মানুষ। কোথাও সামান্য খোলা জায়গা দেখা যাচ্ছে না। শুধু মানুষ দেখা যাচ্ছে। এই দৃশ্য দেখে বঙ্গবন্ধু সেই রকম চিন্তা করছেন। আমি তো তখন সাংঘাতিক আনন্দবোধ করছি। কারণ আমরা যে জীবিত ঢাকায় পৌঁছতে পারব, এটা তো ভাবি নাই কোনো দিন।
গ্রেফতারের সময় দেশের স্বাধীনতা প্রসঙ্গে অনুভূতি
১৯৭১ সালের ২৫ শে মার্চে রাতে বঙ্গবন্ধুসহ ঢাকা থেকে বের হলাম। তখন বঙ্গবন্ধু আমাকে বলেছিলেন, ‘দেখো দেশ তো স্বাধীন হবে, সেই অবস্থা দেখছি। কিন্তু আমার তো সৌভাগ্য হবে না স্বাধীন দেশ দেখার। কারণ আমাদের বেঁচে থাকার চাঞ্চ খুব কম।’ এটা আমরা সেই সময় বলে গিয়েছিলাম। এ কারণে বিমান থেকে নামার সময় আমরা তখন খুব আনন্দবোধ করছি। তখন আমরা ভাবছিলাম, বেঁচেও আছি, স্বাধীন বাংলাদেশও দেখছি। বিমান থেকে স্বাধীন দেশের মাটিতে পা ফেলতে যাচ্ছি। তখন দেখছিলাম, স্বাধীন বাংলাদেশের চিত্র দেখে বঙ্গবন্ধুর আবেগ। তখন আমি বঙ্গবন্ধুকে বলছিলাম, বঙ্গবন্ধু কী চিন্তা করছেন?
তিনি (বঙ্গবন্ধু) তখন বলেছিলেন, ‘দেখো চিন্তা করছি, এই যে নয় মাসে আমরা স্বাধীন হলাম। এটা কেউ ভাবতে পেরেছিল? আমরা তো ভেবেছিলাম, দীর্ঘ দিনের একটি সংগ্রাম চলবে। তার মধ্য দিয়ে দেশ স্বাধীন হবে এটা শিওর। কিন্তু নয় মাসে স্বাধীন হবে, আর আমিও স্বাধীন বাংলাদেশে যে এখন পা ফেলতে যাচ্ছি এটা আমি কখনও চিন্তা করেছি?’ উনি আমাকে তখন প্রশ্ন করেছিলেন, ‘এটা কী করে অসম্ভবকে সম্ভব হলো?’
বঙ্গবন্ধুর যে মন্ত্র অসম্ভবকে সম্ভব করেছে
গণফোরাম সভাপতি বলেন, তখন আমি ওনাকে বললাম দেখেন, ‘জাতীয় ঐক্যই এটাকে সম্ভব করেছে। তাছাড়া দেশ স্বাধীন হওয়া অসম্ভব ছিল।’
তৎকালীন একটা ইন্টারভিউ ছিল, প্রেসিডেন্ট ইয়াহইয়া আর কিসিঞ্জারের মধ্যে। কিসিঞ্জারকে ইয়াহইয়া খান বলছেন, দেখো অনেকে বলে আমি ডিক্টেটর (একনায়ক)। তুমি কী মনে করো? কিসিঞ্জার উত্তর দিয়েছিল, তুমি ডিক্টেটর কি না আসলে জানি না, কিন্তু তুমি তোমার ইস্ট পাকিস্থানে এ রকম একটি নির্বাচন কী করে করলে সেখানে সব একচেটিয়া জয় পেয়ে গেল তারা, যারা তোমার বিরুদ্ধে?
ওর উত্তরটা আমার মনে দাগ কেটেছে। তিনি বলেছিলেন, আমাদের যত ইনটেলিজেন্স এজেন্সি আছে, মিলিটারি ইনটেলিজেন্সসহ সবাই বলেছিল, ‘বাঙালিরা কখনো ঐক্যবন্ধ হতে পারবে না। এটা অসম্ভব।’
এ কথা বলে আমি বঙ্গবন্ধুকে বলেছিলাম, এই অসম্ভবটাকে আপনি সম্ভব করেছেন। যেটা ওদের ইনটেলিজেন্সও বলেছিল ‘বাঙালি কখনো ঐক্যবন্ধ হবে না, সেটা আপনি করেছিলেন। বঙ্গবন্ধুর ডাকে তখন একটার পর একটা দল এসে যোগ দিলো। কাউন্সিল মুসলিম লীগ, মহিউদ্দিনের ন্যাপ যাকে অনেকে ন্যাপ মহিউদ্দিন বলে, অর্থাৎ তিনি ন্যাপের নেতা ছিলেন। উনি চলে আসলেন।
৭০ এর নির্বাচনে বড় জয় আওয়ামী লীগের
এরপর যে রেজাল্টটা আমরা পেলাম ইলেকশনে, সেটা আপনাদের মনে আছে? দুইটা সিট বাদে সব সিট আমরা পেলাম। দুটো সিট আমরা পাইনি সেটা হলো- দিলিপ রায়। আরেকটা হলো, নুরুল আমিনের সিট। এ ছাড়া সব কয়টা সিট আমরা পেয়ে গেলাম। ঐক্যটা এটা ছিল নজিরবিহীন। আর তখন বলা হয়েছিল, এই স্বাধনীতা অর্জন এবং ঐক্য গড়া অসম্ভব। ইয়াহইয়া খান তার নিজ মুখে বলেছিল, দেখো আমাদের সব ইনটেলিজেন্স বলেছিল, এটা অসম্ভব। সেটা কী করে হয়ে গেল? সেই অসম্ভবকে বঙ্গবন্ধু সম্ভব করেছিলেন। এটা সম্ভব হয়েছিল, ওনার রাজনীতির কারণে।
এটা আমি বলতে চাই, ‘তিনি (বঙ্গবন্ধু) তার বিচক্ষণ রাজনীতির কারণেই এটা সম্ভব করতে পেরেছিলেন।’
বঙ্গবন্ধু যেভাবে মানুষদের এক কাতারে আনতে পেরেছিলেন
তখন ছয় দফার মধ্যে সবাই কিন্তু একত্রিত হয়েছিল। সবচেয়ে বড় কথা কী? তিনি মানুষকে বোঝাতে সক্ষম হয়েছিলেন। তিনি (বঙ্গবন্ধু) নিজেও আমাকে বলেছিলেন, ‘এটা সম্ভব হয়েছে আমার রাজনীতির কারণে। আমি মানুষকে ভেঙ্গে ভেঙ্গে বোঝাতে সক্ষম হয়েছিলাম, দুই পাকিস্তানের মধ্যে ছিল বৈষম্য। সেটা মানুষ বুঝতে পেরেছিলেন।’
তিনি (শেখ মুজিব) বলেছিলেন, ‘আমরা এখানে উৎপাদন করছি, পাট কৃষক উৎপাদন করে, পাটদ্রব্য তৈরি হয়। এটা বিদেশে যায় তাতে এতোগুলো টাকা আমরা ডলারে পাই। এটা করে আমরা বৈদেশিক মুদ্রা আয় করি। সেই মুদ্রা যায় কোথায়?’
বঙ্গবন্ধুর চমৎকার উপস্থাপনা
বঙ্গবন্ধুর চমৎকার উপস্থাপনার জন্য স্কুলের বাচ্চা ছেলেরাও বুঝতে আরম্ভ করেছিল যে, আমরা করি উৎপাদন, করি রফতানি আর উপার্জিত অর্থ ব্যয় হয় পশ্চিম পাকিস্তানে। তিনি (বঙ্গবন্ধু) ভেঙ্গে বলতেন, ‘দেখো, সেই কারণে আমাদের (তৎকালীন পূর্ব-পাকিস্তান) একটা বিশ্ববিদ্যালয়। আর ওদের বিশ্ববিদ্যালয় হচ্ছে ৫টা থেকে ৭টা।’ ফলে তিনি ভেঙ্গে ভেঙ্গে এসব বিষয় বলতেন, ‘আমরা করি উৎপাদন আর ভোগ করে তারা।’
প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষ বঙ্গবন্ধুর মেসেজ মুখস্থ করেছে
ডক্টর কামাল বলেন, সেই সময় আমি যখন একবার পটুয়াখালীতে গিয়েছিলাম। সেখানে একেবারে সাগরপাড়ে দেখতে পেলাম, অলমোস্ট লেংটা ছেলে, ওর বয়স হবে দশ থেকে বারো। লাফাচ্ছে,লাফাচ্ছে আর বলছে, ‘আমাদের এখানে এতো কম টাকা কেন? আর পশ্চিম পাকিস্তানে এতো বেশি টাকা কেন?’
আর আমরা সেই সময় লিফলেট তৈরি করতাম। ‘সোনার বাংলা শ্মশান কেন?’। এটা আমার একটি স্মরণীয় লিফলেট ছিল। আমাদেরও কাজ ছিল ভেঙ্গে ভেঙ্গে এসব তথ্য মানুষকে বোঝানো। বঙ্গবন্ধুর বক্তব্য আমরা নোট নিতাম। তাজউদ্দিন (তাজউদ্দিন আহমেদ) ভাইয়ের বক্তব্য আমরা নোট নিতাম। সেখান থেকে এই পরিসংখ্যানগুলো মানুষের মাঝে প্রচার করতাম।
আমি মনে করি, এই রকম মানুষদের সচেতন করা রাজনীতি অতুলনীয়। সেটাই আমি এখন চিন্তা করি, ১৯৬৬ সাল থেকে ১৯৬৯ পর্যন্ত আমরা যেটা করে গেলাম সেটা মানুষ মারাত্মকভাবে গ্রহণ করেছিল। আমি বললাম যে, বাচ্চা ছেলেরাও আমাদের সেই স্লোগানগুলো মুখস্থ করেছিল। অর্থাৎ আমরা যেটা ধরানোর চেষ্টা করেছি, সেটা পুরোপুরি সম্ভব হয়েছে। তার প্রমাণ, পটুয়াখালীর প্রত্যন্ত একটি গ্রামে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর মাঝেও এমনকি সাগরপাড়েও তা পৌঁছে গিয়েছিল। যার ফলে মানুষের অন্তরে প্রতিবাদের চেতনা তৈরি হয় এবং তারা যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে। আর অর্জিত হয় আমাদের কাঙ্ক্ষিত স্বাধীনতা।
পরিবর্তন ডটকম