শহীদ জাতীয় চার নেতা: আত্মত্যাগে অনন্য মানব


আশরাফ সিদ্দিকী বিটু 
  
৩ নভেম্বর ঐতিহাসিক জেলহত্যা দিবস। সভ্যতার ইতিহাসে এক ঘৃণ্য ও কলঙ্কিত দিন। বাঙালির বেদনার অধ্যায়। বাঙালি জাতিকে নেতৃত্বশূন্য করতে ১৯৭৫ সালের ৩ নভেম্বর ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি অবস্থায় রাতের অন্ধকারে জাতির চার মহান সন্তান, মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্বদানকারী ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর একনিষ্ঠ সহচর, জাতীয় চারনেতা, বাংলাদেশের প্রথম অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম, প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদ, মন্ত্রিসভার সদস্য ক্যাপ্টেন এম মনসুর আলী এবং এ এইচ এম কামারুজ্জামানকে নির্মম ও নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়।
কারাগারের নিরাপদ আশ্রয়ে থাকা অবস্থায় এমন নৃশংস ও বর্বরোচিত হত্যাকাণ্ড পৃথিবীতে বিরল। বাঙালি জাতির মহানায়ক, বাংলাদেশের স্বাধীনতার মহান স্থপতি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার মাত্র ২ মাস ২০ দিন পরেই দেশের স্বাধীনতা-বিরোধীচক্র আর একটি ঘৃণ্য ষড়যন্ত্র সফল করে এই হত্যাকাণ্ডের মধ্য দিয়ে। দীর্ঘ ষড়যন্ত্র ও হত্যার পরিকল্পনার নিখুঁত বাস্তবায়ন হলো ১৫ আগস্ট ও ৩ নভেম্বরে দুটি হত্যাকাণ্ড- মানব ইতিহাসে চির কলঙ্কের সৃষ্টি করে। মুক্তিযুদ্ধের পরাজিত শক্তি ও তাদের দোসররা পাকিস্তান ভাঙ্গার প্রতিশোধ নিতে এবং স্বাধীন বাংলাদেশকে পাকিস্তানি ভাবধারায় প্রবাহিত করে দেশের সামগ্রিক অবস্থাকে বিপথে নিতেই এই কাপুরোষিত হত্যাকাণ্ড ঘটায় যা দেশবাসীকে স্তব্ধ করে দেয়। তাদের অশুভ উদ্দেশ্য ছিল বাংলাদেশকে গণতান্ত্রিক কক্ষপথ থেকে বিচ্যুত করা এবং রাষ্ট্রকে পঙ্গু করে দেওয়া। বস্তুত বাংলাদেশের স্বাধীনতা নস্যাৎ, দেশের উন্নয়ন ও আত্মপরিচয়কে ভুলুণ্ঠিত করতেই বঙ্গবন্ধু ও চারনেতাকে হত্যা করা হয়।
উল্লেখ্য, রাষ্ট্রপতি বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর বাণিজ্যমন্ত্রী খোন্দকার মোশতাককে রাষ্ট্রপতি করার তিন মাসের কম সময়ের মধ্যে তাকে সরিয়ে জিয়াকে ক্ষমতায় আনা হয়। জিয়াকে ক্ষমতায় আনার মাত্র চারদিন আগে হত্যা করা হয় জাতীয় চারনেতাকে। বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডে ষড়যন্ত্রে জড়িত থাকার পুরস্কার হিসেবেই ১৫ আগস্টের হত্যাকাণ্ডের ৯ দিন পর সেনাপ্রধান কেএম সফিউল্লাহকে সরিয়ে উপপ্রধান জিয়াউর রহমানকে সেনাপ্রধান এবং এরশাদকে ৬ মাসের মধ্যে দু-দুটি পদোন্নতি দিয়ে উপ-প্রধান নিযুক্ত করা হয়। সেসময় মোশতাক রাষ্ট্রপতি, জে. জিয়া সেনাপ্রধান থাকলেও ঘাতক ফারুক, রশীদ, ডালিম, নূররা সকল ক্ষমতার অধিকারী, ওদের নিদের্শ মতোই বঙ্গভবনে থেকে দেশ শাসন করতে থাকে, তাদের কাছে মোশতাক ছিল পুতুলের মতো। কিন্তু তারা পাল্টা অভ্যুত্থানের আশংকায় ছিল। আওয়ামী লীগের চারনেতা আওয়ামী লীগকে সংগঠিত করে ক্ষমতায় আসতে পারে এতে তারা শঙ্কিত ছিল, এবং মোশতাকের জাতীয় চারনেতাকে সরকারে যোগদানের প্রস্তাব দিয়ে ব্যর্থ হলে সেই আশঙ্কা আরও শক্ত হয়। (সূত্র: ‘যা দেখেছি, যা বুঝেছি, যা করেছি’ -মেজর ডালিম) ঘাতক চক্র ও খন্দকার মোশতাক নিজেদের রক্ষায় ষড়যন্ত্র পাকাপোক্ত করে তাদের করণীয় ঠিক করে এবং তাদের সিদ্ধান্ত - অতিশয় দ্রুততার সঙ্গে প্রধান বিচারপতি এএম সায়েমকে রাষ্ট্রপতি নিয়োগদানের ব্যবস্থা করে এবং ঢাকা সেন্ট্রাল জেলে ঢুকে আওয়ামী লীগের শীর্ষ চার নেতাকে হত্যার নির্দেশে দেয়। হত্যাকাণ্ডের জন্য বিশেষ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত একটি ঘাতক দল গঠন করা হয় যাতে নেতৃত্ব দেয় ঘাতক সর্দার ফারুকের বিশেষ আস্থাভাজন রিসালদার মুসলেহ উদ্দিন।

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে, কেন্দ্রীয় কারাগারের প্রধান ইন্সপেক্টর জেনারেল নুরুজ্জামান হাওলাদার ঘটনার দু’দিন পর ৫ নভেম্বর স্বরাষ্ট্র সচিবের কাছে জমা দেওয়া এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানান। জাতীয় চারনেতাকে হত্যার পরদিন ৪ নভেম্বর তৎকালীন কারা উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি প্রিজন) কাজী আবদুল আউয়াল লালবাগ থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। মামলায় রিসালদার মোসলেম উদ্দিনের নাম উল্লেখ করে বলা হয়, তার নেতৃত্বে চার-পাঁচ সেনাসদস্য কারাগারে ঢুকে চারনেতাকে হত্যা করে। প্রথমে গুলি করে, পরে বেয়নেট দিয়ে খুঁচিয়ে তাদের মৃত্যু নিশ্চিত করে ঘাতকরা।

আইজি প্রিজন নুরুজ্জামান তার প্রতিবেদনে উল্লেখ করেন, ১৯৭৫ সালের ৩ নভেম্বর ভোররাত ৩টার দিকে তিনি বঙ্গভবন থেকে মেজর রশীদের (বর্তমানে পলাতক) টেলিফোন পান। টেলিফোনে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে কোনও গোলযোগ আছে কি-না তা জানতে চাওয়া হয়। জবাবে আইজি জানান, এ মুহূর্তে তা জানা নেই। টেলিফোনে ফের তাকে বলা হয়, কয়েকজন সশস্ত্র ব্যক্তি কিছু বন্দিকে জোর করে নিয়ে যাওয়ার জন্য জেল গেটে যাবে। এ বিষয়ে যেন কারারক্ষীদের সতর্ক রাখা হয়। সে অনুযায়ী আইজি প্রিজন কারাগারে নিরাপত্তা জোরদার করার জন্য টেলিফোনে জেলারকে নির্দেশ দেন। প্রতিবেদনে আইজি প্রিজন বলেন, তিন/চার মিনিট পর তিনি বঙ্গভবনে নিয়োজিত এক সেনা অফিসারের ফোন পান। তিনি জানতে চান, এরই মধ্যে কারাগারে রক্ষীদের সতর্ক করা হয়েছে কি-না। ইতিবাচক জবাব পাওয়ার পর ওই সেনা অফিসার তাকে ব্যক্তিগতভাবে জেলগেটে উপস্থিত থেকে পাহারা ব্যবস্থা দেখতে বলেন। এর পর তিনি কারাগারের ডিআইজি প্রিজনকে ফোন করেন এবং ওই সেনা অফিসারের কথা জানান। টেলিফোনে তাকে তাৎক্ষণিকভাবে জেলগেটে যেতে বলা হলে আইজিও জেলগেটে যান। এরই মধ্যে সেখানে পৌঁছে যান ডিআইজি (প্রিজন)।এর কিছুক্ষণ পরেই মেজর রশীদ তাকে ফোন করে বলেন, মোসলেম নামের একজন ক্যাপ্টেন কিছুক্ষণের মধ্যেই জেলে গিয়ে তাকে কিছু কথা বলবে। মোসলেমকে জেলখানার ভেতরে নিয়ে যেতে হবে এবং আওয়ামী লীগের চার নেতা সৈয়দ নজরুল ইসলাম, তাজউদ্দীন আহমদ, মনসুর আলী ও কামরুজ্জামানকে চিনিয়ে দিতে হবে। এ খবরের পর আইজি প্রিজন রাষ্ট্রপতি খোন্দকার মোশতাক আহমদের সঙ্গে কথা বলেন। ফোনে আইজি কিছু বলার আগেই রাষ্ট্রপতি জানতে চান, ‘মেজর রশীদের নির্দেশনা তিনি পুরোপুরি পালন করতে পারবেন কি-না।’ আইজি ইতিবাচক জবাব দিলে রাষ্ট্রপতি তাকে এ নির্দেশনা মেনে চলার আদেশ দেন। এর কয়েক মিনিটের মধ্যেই কালো পোশাকধারী ক্যাপ্টেন মোসলেমসহ আরও চারজন সশস্ত্র ব্যক্তি জেলগেটে আসেন। ডিআইজি (প্রিজন) কাজী আবদুল আউয়ালের অফিসরুমে ঢুকে সে নির্দেশ দেয়, ওই চার বন্দিকে যেখানে রাখা হয়েছে, সেখানে নিয়ে যাওয়ার জন্য।

ক্যাপ্টেন মোসলেমকে আইজি জানান, বঙ্গভবনের নির্দেশনা অনুযায়ী তার কিছু বলার আছে। উত্তরে মোসলেম জানায়, সে ওই চারজনকে গুলি করে হত্যা করতে চায়। এ সময় জেলার মো. আমিনুর রহমানের টেলিফোন সেটে বঙ্গভবন থেকে ফোন আসে। আইজি ফোন ধরলে ওই পাশ থেকে মেজর রশীদ জানতে চান, 'মোসলেম জেলগেটে পৌঁছেছে কি-না।' আইজি জবাব দিয়ে বলেন, 'ব্যাপারটা কী, আমি কিছুই বুঝতে পারছি না।' মেজর রশীদ তাকে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে দ্রুত কথা বলতে বলেন। রাষ্ট্রপতি ফোন ধরলে আইজি তাকে জানান, ক্যাপ্টেন মোসলেম বন্দিদের গুলি করে হত্যা করতে চাইছে। রাষ্ট্রপতি জবাবে বলেন, 'সে যা বলছে তা-ই হবে।' আইজি প্রিজন রাষ্ট্রপতির এমন নির্দেশ পেয়ে তারা হতভম্ব হয়ে পড়েন। মোসলেমের নির্দেশে অন্য বন্দিদের কাছ থেকে আলাদা করে ওই চারজনকে (জাতীয় নেতা) একটি কক্ষে নিয়ে যাওয়া হয়। ক্যাপ্টেন মোসলেম ও তার সঙ্গীরা তখন বন্দিদের গুলি করে নৃশংসভাবে হত্যা করে। এর কিছুক্ষণ পর নায়েক এ আলীর নেতৃত্বে আরও একদল সৈন্য জেলখানায় আসে। তারা নিশ্চিত হতে চায়, চার বন্দি আসলেই নিহত হয়েছে কি-না। সরাসরি ওয়ার্ডে গিয়ে তারা আবারও গুলিতে নিহত চারজনের দেহে বেয়নেট চার্জ করে। (সূত্র: জেলার আমিনুর রহমানের স্মৃতিতে ৩ নভেম্বর। দৈনিক সমকাল, ৩.১১.২০১২)

১৯৭৫ এর ১৫ আগস্ট থেকে ৭ নভেম্বর সময়কালে সংঘটিত ঘটনা ও হত্যাকাণ্ডে দেশের সাধারণ মানুষের কোনও সম্পৃক্ততা ছিল না, এসময়ে শুধু ক্ষমতার জন্য ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে হত্যা, হত্যার প্রতিশোধে হত্যা, এবং দেশের স্বাধীনতাকে ধ্বংস করে স্বৈরশাসকদের ক্ষমতায় বসানোর পথ পরিষ্কার করা হয়। বস্তুত ৩-৭ নভেম্বর ৭৫’ ছিল সৈনিক সেনাকর্মকর্তাদের ক্ষমতার লড়াই। ৩ নভেম্বর রাত সাড়ে ১০টায় ১৫ আগস্টের ঘাতকদের দেশের বাইরে চলে যাওয়ার সুযোগ দেয়া হয়। ৬ নভেম্বর রাতে জাসদের হঠকারীতার কারণে মেজর জিয়া ক্ষমতায় চলে আসেন। আর ৭ নভেম্বর হচ্ছে মেজর জিয়ার ক্ষমতা দখলের এক গভীর ষড়যন্ত্রের দিন। পরবর্তীতে মেজর জিয়া ১৯৭৬ সালের ৮ জুন বঙ্গবন্ধু ও জেল হত্যাকারী ১২ জনকে কূটনৈতিক মিশনের চাকরিতে নিয়োগ করেন এবং তার ৬ বছরের দুঃশাসনে স্বাধীনতাবিরোধীদের এ দেশের রাজনীতিতে পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করেন। বঙ্গবন্ধু ও জেল হত্যাকাণ্ডে মেজর জিয়াউর রহমানের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ জড়িত থাকার বিষয়টি আজ প্রমাণিত।

২ নভেম্বর রাতে ১৫ আগস্ট ক্যু-এর বিরুদ্ধে পাল্টা অভ্যূত্থান ও জেলহত্যাকাণ্ডের বর্ণনায় আত্মস্বীকৃত খুনি কর্নেল ফারুকের মন্তব্য ছিল- ‘দ্ব্যর্থহীনভাবে আমরা বলতে চাই যে, ১৯৭৫ সালের ৩ নভেম্বরের অভ্যুত্থানটি ছিল মেজর জিয়াউর রহমানের নেপথ্যে পরিকল্পনা ও প্ররোচনার ফসল, তিনি একটি সামরিক ফ্যাসিস্ট সরকার গঠনের লক্ষ্যে নেপথ্যে থেকে একদল অসন্তুষ্ট সামরিক অফিসারের মাধ্যমে এটি সংগঠিত করেছেন। আমরা জানি, আমাদের এই কারও কারও কাছে রুঢ় এবং বিব্রতকর লাগতে পারে। কেননা মেজর জিয়া অত্যন্ত দক্ষতার সাথেই তার শঠ ও ক্ষশতালিপ্সু চরিত্রটিকে আড়াল করে নিজের একটা ভাবমূর্তি গড়ে তুলতে পেরেছিলেন’। (সূত্র: জাতীয় চারনেতা স্মারক গ্রন্থ: জাতীয় চার নেতা পরিষদ। প্রকাশ: ৩রা নভেম্বর ১৯৯৬)

জাতীয় চার নেতাকে নৃশংসভাবে হত্যার পর তৎকালীন রাষ্ট্রপতি খন্দকার মোশতাক ‘৭৫ সালের ৫ নভেম্বর লোক দেখানো তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিশন গঠন করেন। এ গেজেটে আপিল বিভাগের বিচারপতি আহসানউদ্দিন চৌধুরীকে প্রধান এবং হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি কে এম সোবহান ও বিচারপতি সৈয়দ মোহাম্মদ হোসেনকে সদস্য নিয়োগ করা হয়। পরবর্তী সময়ে জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় এসে বর্বরতম জেলহত্যার তদন্ত কার্যক্রম স্থগিত করেন। মোশতাক বঙ্গবন্ধু হত্যাকারীদের অর্থাৎ নিজেদের রক্ষা করতে একটি অভিসন্ধি গ্রহণের পদক্ষেপ নেয়। কুখ্যাত ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ প্রথমে খুনি মোশতাক এটিকে জারি করলেও জিয়াউর রহমান এটিকে জাতীয় সংসদের মাধ্যমে পরবর্তীকালে আইনে পরিণত করে (সূত্র: ‘কারা মুজিবের হত্যাকারী?’-এ এল খতিব)।  সংবিধানের পঞ্চম সংশোধনীর মাধ্যমে ইনডেমনিটি অধ্যাদেশকে বৈধতা দেওয়ায় ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত অপরাধীরা দায়মুক্তি পেয়ে যায় ফলে দীর্ঘ ২১ বছর যাবৎ বঙ্গবন্ধু হত্যা ও জেল হত্যাকাণ্ডের বিচার হতে পারেনি। জিয়াউর রহমানের মৃত্যুর পর বিচারপতি আবদুস সাত্তার, এরশাদ এবং ১৯৯১ সালে বেগম খালেদা জিয়া ক্ষমতায় এলেও ইনডেমনিটি অধ্যাদেশটি বাতিল বা রহিত করেননি।

১৯৯৬ সালে দেশরত্ন শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পরই কুখ্যাত ইনডেমনিটি আইন বাতিল করা হয় এবং তারপরই এসব কলঙ্কজনক হত্যাকাণ্ডের বিচার প্রক্রিয়া শুরু হয় এবং দীর্ঘ বিচার প্রক্রিয়া শেষে আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ রায় ২০১৫ এর ডিসেম্বর মাসে প্রকাশিত হয়। বিচার কার্যক্রম শেষ হওয়ার মধ্য দিয়ে জাতির কলঙ্কের তিলক খানিকটা মোচন হয়। এখনও কয়েকজন খুনি বিদেশে পলাতক রয়েছে। এদের ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে আওয়ামী লীগ সরকার কাজ করছে, প্রত্যাশী রাখি যে কোনও উপায়ে খুনিদের ফিরিয়ে এনে রায় কার্যকরা করা সম্ভব হবে। হত্যাকাণ্ডের বিচার হলেও নেপথ্যে কারা ছিল সেই ষড়যন্ত্রকারীদের এবং ঘাতকদের মদদ দাতাদের জাতির সামনে উপস্থাপনের সময় এসেছে এবং এদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি আজ যৌক্তিক।

শহীদ জাতীয় চারনেতা তাদের জীবনের শেষদিন পর্যন্ত দেশের প্রতি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর প্রতি বিশ্বাসী ও আস্থাশীল থেকেছেন। খুনিরা তাদের ক্ষমতার লোভ দিলেও তারা প্রত্যাখ্যান করায় তাদের কারাগারে নিক্ষেপ করা হয়। স্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা ও বঙ্গবন্ধুর প্রতি একাত্ম থাকার অকৃত্রিম নির্দশন বাংলাদেশের ইতিহাসে জাতীয় চারনেতাকে চির স্মরণীয় করে রাখবে।

লেখক: পরিচালক, সিআরআই

SUMMARY

781-1.jpg