শেখ রাসেলের সাইকেল


বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কনিষ্ঠ পুত্র শেখ রাসেল। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট খুনিরা সপরিবারে বঙ্গবন্ধুকে খুন করার সময় শিশু রাসেলকেও হত্যা করে। রাসেলের অতি প্রিয় দুটি সাইকেল এখনও রয়েছে ধানমণ্ডির ৩২ নম্বরের বাড়িটিতে। যে সাইকেল নিয়ে নিয়ে ব্যস্ত সময় কাটতো শেখ রাসেলের।

জানা গেছে, ১৯৬০-৬১ সালের দিকে ধানমণ্ডির ৩২ নম্বরের বঙ্গবন্ধুর এই বাড়িটির নির্মাণ কাজ শুরু হয়। ১৯৬১ সালের ১ অক্টোবর পরিবার নিয়ে এই বাড়িতে ওঠেন বঙ্গবন্ধু। এই বাড়িতেই ১৯৬৪ সালের ১৮ অক্টোবর জন্ম হয় শেখ রাসেলের।

১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যাকাণ্ডের পর এই বাড়িটি সিল করে দেয় তৎকালীন সরকার। ১৯৮১ সালের ১১ জুন পর্যন্ত বন্ধ ছিল বঙ্গবন্ধুর এই বাড়িটি। বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা ১৯৮১ সালে দেশে ফিরে এলে এই বাড়িটি ফিরে পান। তিনি বঙ্গবন্ধুর এ বাড়িটি নিজে ব্যবহার না করে বঙ্গবন্ধু মেমোরিয়াল ট্রাস্টের কাছে হস্তান্তর করেন জাদুঘরে রূপান্তরের জন্য। ১৯৯৪ সালের ১৪ আগস্ট ‘জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্মৃতি জাদুঘর’ উদ্বোধন করা হয়।

বাড়িটির দোতলায় উঠতেই দেখা যাবে ডাইনিং টেবিল, বঙ্গবন্ধুর শোয়ার ঘর। ডাইনিং টেবিলের পেছনে এক কোণে পড়ে আছে শেখ রাসেলের দুটি সাইকেল। একটি লাল ও অন্যটি নীল রঙের। বঙ্গবন্ধু জাদুঘর দেখতে আসা দর্শনার্থীরা ছোট রাসেলের সাইকেল, খেলনা, ছবি দেখেই প্রশ্ন করছে, কীভাবে সম্ভব এই ছোট্ট শিশুকে নির্যাতন করা! হত্যা করা!
ছোট রাসেলের সারাদিন ব্যস্ত সময় কাটতো বাড়ির ভেতরের সাইকেল চালিয়ে। শেখ রাসেলকে নিয়ে স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে সাইকেলের গল্প উঠে এসেছে পরিচিতজনদের কাছ থেকে। শেখ রাসেলকে নিয়ে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা লিখেছেন একটি বই। ‘শেখ রাসেল’ নামের বইটিতে উঠে এসেছে রাসেল ও তার সাইকেলের গল্প।

শেখ রাসেল

শেখ রাসেল
এই বইতে স্মৃতিচারণ করে শেখ হাসিনা লিখেছেন, রাসেলের একবার অ্যাকসিডেন্ট হলো। সেদিনটার কথা মনে পড়লে এখনও গা শিউরে ওঠে। রাসেলের একটা ছোট মপেট মোটরসাইকেল ছিল আর একটা সাইকেলও ছিল। ও কখনও কখনও সাইকেল নিয়ে রাস্তায় চলে যেতো। পাশের বাড়ির ছেলেরা ওর সঙ্গে সাইকেল চালাতো। আদিল ও ইমরান দুই ভাই এবং রাসেল একই সঙ্গে খেলা করতো। একদিন মপেট চালাবার সময় রাসেল পড়ে যায় আর ওর পা আটকে যায় সাইকেলের পাইপে। বেশ কষ্ট করে পা বের করে। আমি বাসায় উপর তলায় জয় ও পুতুলকে নিয়ে ঘরে বসে। হঠাৎ রাসেলের কান্নার আওয়াজ পাই। ছুটে উত্তর পশ্চিমের খোলা বারান্দা চলে আসি, চিৎকার করে সকলকে ডাকি। এর মধ্যে দেখি কেউ একজন ওকে কোলে করে নিয়ে আসছে। ওর পায়ের অনেকখানি জায়গা পুড়ে গিয়ে বেশ গভীর ক্ষতের সৃষ্টি হয়েছে।

SUMMARY

695-1.jpg