বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে কাস্ত্রো যা বলেছিলেন


জীবনের প্রতিটি মুহূর্তে বিশ্বের শোষিত আর সুবিধাবঞ্চিতদের অধিকার আদায়ের কথা বলে গেছেন কিউবার অবিসংবাদিত নেতা ফিদেল কাস্ত্রো। বাংলাদেশের মানুষের উপর পাকিস্তানের শোষণের বিরুদ্ধেও ছিল কিউবার বিপ্লবী এই মহান নেতার অবস্থান।

আর তাই তো ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধে সমর্থন দিয়েছিলেন ফিদেল কাস্ত্রো ও তার দেশ। শুধু তাই নয়, স্বাধীনতার পর পরই বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেয় কিউবা।

১৯৭৩ সালে আলজেরিয়ায় অনুষ্ঠিত জোট নিরপেক্ষ আন্দোলনের (ন্যাম) চতুর্থ সম্মেলনে অংশগ্রহণকারী দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ ও কিউবা ছিল। সেই সময়ে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সঙ্গে কিউবার বিপ্লবী নেতা ফিদেল কাস্ত্রোর সাক্ষাৎ হয়। সে সময় তিনি বঙ্গবন্ধুকে আলিঙ্গন করে বলেছিলেন, ‘আই হ্যাভ নট সিন দ্য হিমালয়েজ। বাট আই হ্যাভ সিন শেখ মুজিব। ইন পারসোনালিটি অ্যান্ড ইন কারেজ, দিস ম্যান ইজ দ্য হিমালয়েজ। আই হ্যাভ দাজ হ্যাড দ্য এক্সপিরিয়েন্স অব উইটনেসিং দ্য হিমালয়েজ।’

অর্থাৎ, ‘আমি হিমালয় দেখিনি। তবে শেখ মুজিবকে দেখেছি। ব্যক্তিত্ব ও সাহসে এই মানুষটি হিমালয়ের সমান। এভাবে আমি হিমালয় দেখার অভিজ্ঞতাই লাভ করলাম।’

শোষিতের পাশে থাকা বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে শ্রদ্ধা করতেন ফিদেল কাস্ত্রো। কেননা তার নিজেরও তো ছিল একই আদর্শ। আলজিয়ার্সের জোট নিরপেক্ষ সম্মেলনে ভাষণ দিতে গিয়ে শেখ মুজিবুর রহমান বলেছিলেন, ‘পৃথিবী আজ দুইভাগে বিভক্ত। একভাগে শোষক শ্রেণী, আরেকভাগে শোষিত। আমি শোষিতের দলে।’

ভাষণের পর মুগ্ধ কিউবার প্রেসিডেন্ট ফিদেল কাস্ত্রো শেখ মুজিবুর রহমানকে সেদিন বলেছিলেন, ‘যে ভাষণ আজ তুমি দিয়েছ, তারপর থেকে সাবধানে থেকো বন্ধু।’ আবেগাপ্লুত হয়ে কাস্ত্রো বলেছিলেন, ‘তোমার এই অবস্থানের কারণে জেনো, তোমাকে হত্যার জন্য আজ থেকে একটি বুলেট তোমার পিছু নিয়েছে।’

আর বাংলার মানুষের প্রতি সেদিন ফিদেল কাস্ত্রো বলেছিলেন, ‘শেখ মুজিবের মৃত্যুতে বিশ্বের শোষিত মানুষ হারাল তাদের মহান নেতাকে, আর আমি হারালাম একজন অকৃত্রিম বিশাল হৃদয়ের বন্ধুকে।’

বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে ও স্বাধীনতার পর ফিদেল কাস্ত্রো সমর্থন দেওয়ায় ২০১৩ সালের মার্চে তাকে অকৃত্রিম বন্ধুত্বের সম্মাননা দেয় শেখ হাসিনার সরকার। দেওয়া হয় বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ সম্মাননা। ফিদেল কাস্ত্রোর মৃতুতে শোকাহত বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা তার বাবার সঙ্গে এই বিপ্লবী নেতার সম্পর্কের কথাও স্মরণ করেন।

SUMMARY

549-1.jpg