ফারমিনা তাসলিম
পাকিস্তানের কারাগারে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কারাসঙ্গী ছিলেন বিমান বাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত সার্জেন্ট আব্দুল মালেক। তিনি জানান, কারাবাসে বঙ্গবন্ধু উদ্বিগ্ন থাকতেন দেশের খবরের জন্য। নানা কৌশলে তিনি তথ্য সংগ্রহ করতেন। আব্দুল মালেক আরো দাবি করেন বঙ্গবন্ধুর তিন মাসের সান্নিধ্য তার বহু অর্জন।
৭২ বছর বয়সে আব্দুল মালেক। ১৯৬৭ সালে আর্মি মেডিকেল কোরে যোগ দিয়ে চলে যান পাকিস্তান সেনানিবাসে। ১৯৭১ সালের অক্টোবরে এক পাঞ্জাবি বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে কটূক্তি করলে তিনিও ভুট্টো, কায়েদে আযম, আইয়ুব খানকে গালি দেন। এ অপরাধে প্রায় তিন ঘণ্টা বুটের আঘাতসহ নানাভাবে তাকে শাস্তি দেয়া হয়।
আব্দুল মালেক বলেন, ’পেটের ওপরে বুট জুতা দিয়া ঘুরাইয়া ঘুরাইয়া পারাইছে। এতে আমার পেটে খুব আঘাত হয়েছে। বাংলাদেশে আসার পরে দুইবার মেজর অপারেশন হয়েছে। কেটে জোড়া দেয়া হয়েছে।’
আহত মালেককে ১৫ দিন হাসপাতালে রেখে পাঠিয়ে দেয়া হয় পাকিস্তানের কারাগারে। যা এখন ফয়সালাবাদ সেন্ট্রাল জেলে দেখা পান বঙ্গবন্ধুর।
তিনি আরো বলেন, বঙ্গবন্ধু আমাকে সবসময় দেশের কথা জিজ্ঞেস করতেন। তখন আমি বলতাম যে স্যার আপনিও বন্দি, আমিও বন্দি। কিভাবে বলব আমি, আমার কাছে কোন টেলিভিশন নাই।
জেলে বঙ্গবন্ধুকে সাবান সংগ্রহসহ ছোট ছোট কাজ করে দিতেন মালেক। এসব বিভিন্ন স্মৃতি তার কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে সরাসরি জানাতে চান তিনি।
মালেক আরোও বলেন, উনি আমার সাবানগুলো পেয়ে মনটা খুব খারাপ হয়ে গেল। উনি আমার জেলখানার গ্রিলের যে ফাঁক তার মাঝখান দিয়া তুমি এদিকে আসো আব্দুল মালেক। তখন তিনি আমার গালে একটা চুমু দিয়া দিল আর চোখের পানি ছেড়ে দিল।
মালেকের একমাত্র ছেলে ও প্রতিবেশীরাও চান তার স্বপ্ন পূরণের পাশাপাশি তাকে মুক্তিযুদ্ধের সম্মান দেয়ারও দাবি তোলেন এলাকাবাসী।
প্রতিবেশীরা বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে তার কষ্টের কথাটা বলার জন্য জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর কী কষ্ট ছিল। আমরা চাই তিনি মুক্তিযুদ্ধের স্বীকৃতি পান।
ভোলার সদর উপজেলার আব্দুল মালেক ১৯৮২ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ সেনাবাহিনী এবং পরে ১৯৯৭ সাল পর্যন্ত বিমান বাহিনীর সার্জেন্ট হিসেবে কাজ করেন। সূত্র: একাত্তর টিভি