হামিম আহসান
১৯৭১ সালের ১লা মার্চ থেকে আক্ষরিক অর্থেই পূর্ব বাংলা চলছিল বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নির্দেশে। আজকের দিনটিও শান্তিপূর্ণ সভা-শোভাযাত্রা ও সরকারি, আধা-সরকারি অফিস-আদালত বর্জনের মাধ্যমে অতিবাহিত হয়। এদিন কড়া নিরাপত্তার মধ্যে করাচী থেকে ঢাকায় আলোচনার জন্য আসেন প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান।
একাত্তরের মার্চে অসহযোগ আন্দোলনের এই দিনেও সারা বাংলায় পালিত হয় পূর্ণ কর্মবিরতি।সরকারি-বেসরকারি ভবন ও যানবাহনে উত্তোলিত হয় কালো পতাকা। তীব্র অসহযোগ আন্দোলনে ক্রমশ খেই হারাচ্ছিল পাকিস্তানী শোষকরা।
এক কথায় বলতে গেলে পুরো পূর্ব পাকিস্তান অচল হয়ে পড়ে। আর এই অচল অবস্থা কাটাতে শেখ মুজিবের সঙ্গে আলোচনা করতে কড়া নিরাপত্তায় ঢাকায় আসেন পাকিস্তানরে প্রেসিডেন্ট জেনারেল ইয়াহিয়া খান।
পশ্চিম পাকিস্তানের কিছু নেতাও বুঝতে পারেন পূর্ব বাংলার রাজনৈতিক পটপরিবর্তন সময়ের ব্যাপার মাত্র। করাচীর জনসভায় তারা আওয়ামী লীগের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরেরও আহ্বান জানান।
৭ই মার্চে বঙ্গবন্ধু তাঁর ঐতিহাসিক ভাষণে আন্দোলনের সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা দেন। ১৫ই মার্চ রাতে ৩৫ দফা আকারে তা ঘোষণা করেন আওয়ামী লীগের তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক তাজউদ্দিন আহমেদ।
কবি সুফিয়া কামালের সভাপতিত্বে এই দিন তোপখানায় অনুষ্ঠিত হয় মহিলা পরিষদের সভা। শহীদ মিনারে বেতার ও টিভি শিল্পীরা পরিবেশন করেন দেশাত্মবোধক গান। ট্রাকে ট্রাকে গণসঙ্গীত, পথনাটক পরিবেশন করেন উদীচীর শিল্পীরা।
নতুন সামরিক বিধি জারির প্রতিবাদে বায়তুল মোকাররম প্রাঙ্গণে ছাত্রসংগ্রাম পরিষদের সভায় জড়ো হয় লাখ লাখ মানুষ। অবিলম্বে পূর্ব বাংলা থেকে সৈন্য প্রত্যাহারের দাবি করেন দেন তারা।
এছাড়া আন্দোলনে নিহত বীর শহীদদের উদ্দেশে শোক এবং সংখ্যাগরিষ্ঠ জনসাধারণের আশা-আকাক্সক্ষাকে তোয়াক্কা না করে একতরফাভাবে জাতীয় পরিষদের অধিবেশন স্থগিতের প্রতিবাদে রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে কালো পতাকা উত্তোলিত থাকে ১৯৭১ সালের আজকের এই দিনে।