হিমালয়সম বঙ্গবন্ধু


গোলাম মোর্তোজা 
মাঠে থাকা আর না থাকার মধ্যে একটা বড় পার্থক্য আছে। দলের সবচেয়ে বড় তারকার অনুপস্থিতিতে অধিকাংশ ক্ষেত্রে পুরো দলের মনোবল ভেঙে যায়। ব্যতিক্রমও কখনও কখনও ঘটে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে মনোবল বহু গুণ বেড়ে যায়। সকল বাধা অতিক্রম করে লক্ষ্যে পৌঁছে যায় দল। পুরো দল খেলেন, যিনি নেই তার জন্যে। ১৯৭১ সালে পশ্চিম পাকিস্তানিরা পূর্ব পাকিস্তানকে একটা খেলার মাঠে পরিণত করেছিল। সেই খেলায় কোনো নিয়ম ছিল না, ছিল না নায্যতা। তাদের সামরিক শক্তি ছিল, ছিল ক্ষমতার দাম্ভিকতা।

সকল শক্তি-ক্ষমতাকে উপেক্ষা করার মত, তারকা বা মহাতারকা ছিলেন একজনই। হিমালয়ের মতো উচ্চতা-দৃঢ়তা নিয়ে তিনি দাঁড়িয়ে ছিলেন। পাকিস্তানিরা জানত সেই উচ্চতায় কোনো দিন তারা পৌঁছতে পারবে না।
 
ফলে শক্তি দিয়ে তারা হিমালয়ের চূড়া গুঁড়িয়ে দিতে চেয়েছিল। সেই চূড়া গুঁড়ানো তো যায়ইনি, আরো দৃঢ়-শক্তিশালী এবং উঁচু হয়েছে। সেই হিমালয়সম উচ্চতার নাম বঙ্গবন্ধু। এত উচ্চতার বঙ্গবন্ধুর সামনে পাকিস্তানি শাসকরা চোখে চোখ রেখে কথা বলতে পারেনি। জনমানুষের নেতা বঙ্গবন্ধু তাদের ওপর থেকে পায়ের কাছে দেখেছেন।

বঙ্গবন্ধুকে যখন তারা ধরে নিয়ে গেছে, বঙ্গবন্ধুর উচ্চতা আরো বেড়ে গেছে। বঙ্গবন্ধুর সহযোদ্ধারা সেই উচ্চতার দিকে তাকিয়ে নিজেদেরও অনেক উঁচুতে নিয়ে গেছেন যা পাকিস্তানিরা কল্পনাও করতে পারেননি।

শারীরিকভাবে অনুপস্থিত থাকলেও সর্বোচ্চ উচ্চতায় বঙ্গবন্ধুর আসন ছিল স্থায়ী। সেই স্থায়ী আসনকে পুঁজি করে অধিনায়কের দায়িত্ব নিজের হাতে তুলে নিয়েছিলেন তাজউদ্দীন আহমদ। ইন্দিরা গান্ধীর কাছে প্রমাণ করতে পেরেছিলেন তিনিই বঙ্গবন্ধুর অবর্তমানের অধিনায়ক। যুদ্ধদিনের প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদ বুদ্ধিবৃত্তিক নেতৃত্বে নৌকা পরিচালনা করে পৌঁছেছেন গন্তব্যে।

রণাঙ্গনে মুক্তিযোদ্ধারা, লন্ডনসহ সমগ্র ইউরোপ থেকে উত্তর আমেরিকার প্রবাসীরা লড়াইয়ে নেমেছিলেন। সংগ্রামের লক্ষ্য ছিল এক ও অভিন্ন- বিজয় অর্জন। তা না হলে বঙ্গবন্ধুকে বাঁচানো যাবে না, অস্তিত্ব থাকবে না নিজেদেরও। মহাতারকা বঙ্গবন্ধুর জন্যে, স্বাধীনতার জন্যে লড়াইয়ের ফসল স্বাধীন বাংলাদেশ।

পরাধীন দেশ থেকে পাকিস্তানিরা যাকে ধরে নিয়ে গিয়েছিল, স্বাধীন দেশে তাকে ফিরিয়ে দিতে বাধ্য হয়েছিল। আটকে রাখা বঙ্গবন্ধুর শক্তির কথা বিবেচনায় নিয়ে পাকিস্তানিরা তাকে শেষ পর্যন্ত হত্যা করার সাহস করেনি। কিন্তু আটকে রেখে ক্ষতি একটা করতে যে সফল হয়েছিল, তা স্বাধীনতা উত্তর বাংলাদেশে দৃশ্যমান হয়েছিল।

যুদ্ধদিনের বহু পরীক্ষায় উত্তীর্ণ সৈনিক তাজউদ্দীন আহমদকে সরিয়ে মোশতাক যে সামনে চলে আসতে সক্ষম হলো, তা বঙ্গবন্ধুর যুদ্ধদিনে শারীরিক অনুপস্থিতির সুযোগেই। ফিরে আসার পর সবকিছু এত দ্রুত ঘটে গেছে যে, অনেক কিছু বুঝে ওঠার মতো সময় পাননি বঙ্গবন্ধু।

অনেক বেশি মূল্য দিয়ে যা প্রমাণ হলো ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট।

পাকিস্তানিরা যুদ্ধদিনেও যাকে হত্যা করতে পারল না, তাকে হত্যা করল বাঙালিরা। সেই হত্যাকারীদের পরিচয় খন্দকার মোশতাক বা সেনাবাহিনীর একাংশ, যাই হোক না কেন। তারা তো স্বাধীন বাংলাদেশের বাঙালিই ছিল। তারা বঙ্গবন্ধুর কাছের আপনজনই ছিল।

০২.
পাকিস্তানিদের এক নম্বর শত্রু ছিলেন বঙ্গবন্ধু। পাকিস্তানিরা তাকে খুব সঠিকভাবে চিনেছিল, জেনেছিল। স্বাধীনতার আগের আন্দোলন সংগ্রামের বঙ্গবন্ধুকে দেশের মানুষ চিনেছিলেন, জেনেছিলেন এবং বিশ্বাস করেছিলেন। সেই বিশ্বাস বঙ্গবন্ধু কোনোদিন ভঙ্গ করতে পারেন, দেশের মানুষ তা বিশ্বাস করতেন না।

৭ মার্চের ভাষণের বঙ্গবন্ধুর দিকে নয়, সামনে বসা, দাঁড়িয়ে থাকা বাঁশের লাঠি হাতে মানুষের দিকে তাকিয়ে দেখেন। তাদের শরীরী ভাষা পড়লে বোঝা যায়, বঙ্গবন্ধু বললে লাঠি হাতে সেদিন তারা ক্যান্টনমেন্ট আক্রমণ করতেন। লাঠি নিয়ে আক্রমণ মানে নিশ্চিত মৃত্যু, তা জেনেও মানুষ এগিয়ে যেতেন। বঙ্গবন্ধুর প্রতি তাদের বিশ্বাস এতটাই দৃঢ় ছিল।

সেই নেতা যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ পরিচালনা করতে এসে বিপর্যস্ত হয়ে পড়লেন। আঞ্চলিক রাজনীতিতে ছোট দেশে এত বড় নেতা মেনে নেওয়া অসম্ভব হয়ে পড়ল। জন্ম নিল জাসদ। আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে প্রতিশোধের মঞ্চ প্রস্তুত করা হলো। যার অনিবার্য পরিণতিতে দুর্ভিক্ষের শিকার হলেন স্বাধীন দেশের মানুষ।

আওয়ামী লীগের অধিকাংশ কেন্দ্রীয় এবং তৃণমূলের নেতারা আদর্শ ভুলে, অন্যায়-অনিয়মের সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়ে গেলেন। জনপ্রিয়তা হারালেন, জনবিচ্ছন্ন হয়ে পড়লেন জনমানুষের নেতা বঙ্গবন্ধু। সেই সুযোগটাই নিল খন্দকার মুশতাকরা। অথবা খন্দকার মুশতাকদের ব্যবহার করে পুরো প্রেক্ষাপট তৈরি করা হয়েছিল।

বঙ্গবন্ধুর সাড়ে ৩ বছরের শাসনকাল নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা করার সুযোগ আছে। আলোচনা-সমালোচনা হবে বাকশাল গঠন নিয়ে। সেই সমালোচনা হিমালয়সম একজন নেতার জীবনের একটা নির্দিষ্ট সময়ের খণ্ডচিত্র। এই আলোচনা-সমালোচনাই বঙ্গবন্ধুর সমগ্র জীবন-সংগ্রামের মূল্যায়ন নয়। একজন মানুষের নামে একটি দেশ স্বাধীন হয়েছে।

সেই স্বাধীনতার সংগ্রামে অল্প কয়েকজন রাজাকার ছাড়া দেশের সব মানুষ অংশ নিয়েছেন। কিন্তু তারকা বা মহাতারকা নেতা একজনই। তিনি সর্বোচ্চ উচ্চতায় থেকে ছায়া দিয়েছেন, সাহস জুগিয়েছেন। তার সমকক্ষ হওয়ার যোগ্যতা বা সক্ষমতা কোনোদিন কারও ছিল না, এখনও নেই। ধারণা করি ভবিষ্যতেও হবে না।

০৩.
আঞ্চলিক-আন্তর্জাতিক রাজনীতির মারপ্যাঁচে স্বাধীন বাংলাদেশে জাসদ থেকে শুরু করে পর্যায়ক্রমে রাজনৈতিক দলের জন্ম হয়েছে। আদর্শিক নয়, জন্ম হয়েছে এন্টি আওয়ামী রাজনৈতিক দল। এসব দল গঠন ও টিকে থাকায় শক্তি জুগিয়েছে আওয়ামী লীগের অসহিষ্ণু ও ভুল রাজনীতি। ফলে বঙ্গবন্ধুর প্যারালাল চরিত্র তৈরির চেষ্টা হয়েছে। সেই ধারা যে অনেকটাই সফল হয়েছে, তা অস্বীকার করা যাবে না। এই ধারা প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে মূলত দুটি বিষয় প্রতিষ্ঠিত করার চেষ্টা হয়েছে।

এক. বঙ্গবন্ধুকে বিতর্কিত চরিত্র হিসেবে ইতিহাসে পরিচিত করানোর চেষ্টা হয়েছে। শেখ কামালের নামে ব্যাংক ডাকাতি ও একজনের স্ত্রীকে অসম্মান করার অসত্য গল্প চালানো হয়েছে।

দুই. বঙ্গবন্ধুকে ইতিহাস থেকে মুছে ফেলার চেষ্টা হয়েছে।

বিতর্কিত ইমেজ তৈরি এবং মুছে ফেলার চেষ্টা বঙ্গবন্ধুর ক্ষেত্রে যতটা হয়েছে, বিশ্ব ইতিহাসে অন্য কোনো নেতার ক্ষেত্রে এমন নজির খুব একটা আছে বলে মনে হয় না।

বিভাজনের যে রাজনীতি, সেটা বাংলাদেশে খুব ভালোভাবে প্রতিষ্ঠা করা গেছে। কিন্তু বঙ্গবন্ধুকে বিতর্কিত কিছুটা করা গেলেও, ইতিহাস থেকে মুছে ফেলা যায়নি। নিষিদ্ধ বঙ্গবন্ধু আরো শক্তিশালী হয়ে ফিরে এসেছেন।

বঙ্গবন্ধু বিষয়ে যে সব প্রপাগান্ডা চালানো হয়েছিল, বঙ্গবন্ধুর কৃতকর্ম জনমানুষের সামনে আসার পর প্রমাণ হয়েছে, তা অসত্য ছিল।

প্রপাগান্ডায় বলা হয়েছিল, বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতা চাননি। প্রমাণ হয়েছে একথা শতভাগ অসত্য।

বলা হয়েছে, বঙ্গবন্ধু ইংরেজি বোঝেন না। বিদেশি সাংবাদিকদের বঙ্গবন্ধু ইংরেজিতে সাক্ষাৎকার দিয়েছেন তার স্বভাবসুলভ দৃঢ়তার সঙ্গে। পৃথিবীর সবচেয়ে বিখ্যাত সাংবাদিকও তার সামনে ম্রিয়মাণই থেকেছেন। ৭ মার্চের ভাষণ অবিনশ্বর রূপ লাভ করেছে। ইউনেস্কো স্বীস্কৃতি না দিলেও তেমনই থাকত। নিষিদ্ধ করে রাখার ফলেও সম্ভবত ৭ মার্চের ভাষণের শক্তি আরো বেড়েছে।

বঙ্গবন্ধু যে আবার মানুষের মাঝে ফিরে এলেন, তার পেছনে খুব গুরুত্বপূর্ণ অবদান ১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় আসা আওয়ামী লীগ সরকারের। প্রথমবারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার তথ্য প্রতিমন্ত্রী অধ্যাপক আবু সাঈদের। সেই সময়ের তথ্য প্রতিমন্ত্রী সারা পৃথিবীতে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা বঙ্গবন্ধু ভিডিও সাক্ষাৎকার, ভাষণ, ফুটেজ সংগ্রহ করেছিলেন।

মানুষকে দেখার সুযোগ করে দিয়েছিলেন। বঙ্গবন্ধুর বিষয় কাউকে বলে এতোটা বোঝানো যায়নি, বঙ্গবন্ধু নিজে টেলিভিশনের পর্দায় এসে যতটা বুঝিয়েছেন। অর্থাৎ বঙ্গবন্ধু নিজের কর্ম দিয়েই মানুষের মাঝে আবার ফিরে এসেছেন।

০৪.
বাংলাদেশের রাজনীতিতে বিভাজন প্রতিষ্ঠিত হওয়ার একটা বড় কারণ মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে গবেষণা না হওয়া। বঙ্গবন্ধুর মতো বিশাল উচ্চতার মানুষকে নিয়ে গবেষণা করার জন্যে যে উচ্চতার বা মানের গবেষক প্রয়োজন, স্বাধীন বাংলাদেশ তা পায়নি।

বাংলাদেশ তাদের হারিয়েছিল স্বাধীনতার দুই দিন আগে। লেখক শিক্ষক-সাংবাদিক বুদ্ধিজীবী যাদের হত্যা করা হয়েছিল, তাদের মধ্যে অনেকেরই হয়ত যোগ্যতা ছিল সেই গবেষণা বা মূল্যায়ন করার।

বাংলাদেশের যে সব গবেষক মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে গবেষণা করেছেন, তারা মুক্তিযুদ্ধটা আত্মস্থ করেননি বা করতে পারেননি। লেখকদের গল্প-উপন্যাসের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য একই কথা। যুদ্ধদিনে রণাঙ্গনে ঘোরা জহির রায়হানের মতো আর কাউকে পায়নি বাংলাদেশ।

১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সঙ্গে যারা নিজেদের সরাসরি সম্পৃক্ত করতে পারেননি, তারা লেখা-গবেষণায় নির্মোহ থাকতে পারেন নি। মানের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে পারেননি।

শারীরিক-মানসিক দুইভাবেই মুক্তিযুদ্ধের থেকে দূরে অবস্থান করা লেখক-গবেষকরা কেউ বঙ্গবন্ধুর প্রশংসা করেছেন, অতি প্রশংসা করেছেন যা নির্মোহ গবেষণার মূল্যায়ন হয়নি। লেখায় বা গবেষণায় বঙ্গবন্ধুর প্রশংসার বিষয় তো অবশ্যই আসবে। গবেষণায় যৌক্তিক করে তোলার যে রীতি তা মেনে চলেননি।

আবার কেউ কেউ এত সমালোচনা করেছেন যে, বঙ্গবন্ধুকে প্রায় পাকিস্তানিদের পর্যায়ে দাঁড় করিয়েছেন। ফলে এসব সমালোচনা দিয়ে রাজনীতিকে বিভাজন তৈরি করা গেলেও জনমানুষের হৃদয়ে তা স্থান পায়নি। মূলত বিভ্রান্তি ছড়ানো হয়েছে।

মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে যারা গবেষণা করেছেন, তাদের নির্মোহ মূল্যায়নের যোগ্যতা বা সক্ষমতা ছিল না বা নেই। গবেষণার নামে যারা বই লিখেছেন, তাদের কত হাজার বই সরকারি অর্থে কেনা হবে- মূল উদ্দেশ্য ছিল সেটা। সে কারণে ৭ মার্চের ভাষণের অন্তর্নিহিত তাৎপর্যের বিশ্লেষণ কোনো গবেষকই করতে পারেননি। কবি নির্মলেন্দু গুণ ‘স্বাধীনতা, এই শব্দটি কিভাবে আমাদের হলো’ ৪৫ লাইনের একটি কবিতার মধ্য দিয়ে যতটা পেরেছেন, ৫০০ পৃষ্ঠার বই লিখেও একজন গবেষক তা পারেননি।

০৫.
১৭ মার্চ ১৯২০ সালে জন্মেছিলেন বঙ্গবন্ধু। এখন তার বয়স ৯৮ বছর। হিমালয় উচ্চতার বঙ্গবন্ধু শারীরিকভাবে আছেন, কি নেই তা গুরুত্বহীন। তিনি সব সময় সব যুগে থাকবেন। যিনি তার রাজনীতি বা দলের অনুসারী নন, তার মনেও আছেন, থাকবেন- স্বীকার করুক বা না করুক।

২১ বছর রাষ্ট্রীয়ভাবে চেষ্টা করে যাকে মুছে ফেলা যায়নি, ভবিষ্যতে তাকে কেউ কোনোদিন মুছে ফেলতে পারবেন না। বঙ্গবন্ধু যা করেছেন, তা দিয়েই টিকে থাকবেন। বঙ্গবন্ধু যা করেননি, দয়া করে তার সঙ্গে তাকে যুক্ত করার চেষ্টা করবেন না। এখন যুক্ত করা খুবই সহজ মনে হলেও, অসত্য টিকিয়ে রাখা যাবে না।

এটা বঙ্গবন্ধুর জন্যে সম্মানজনক হবে না। বঙ্গবন্ধুকে প্রতিষ্ঠা করার কিছু নেই। তিনি স্থায়ীভাবে প্রতিষ্ঠিত। বঙ্গবন্ধু বিষয়ে কথা বলতে গিয়ে, কাউকে অসম্মান করলেও বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে তুলনা করা হয়ে যায়।এটা বোঝা দরকার।

বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে কারও তুলনা হয় না। বঙ্গবন্ধুর সমকক্ষ কেউ নন। কাউকে বঙ্গবন্ধুর সমকক্ষ হিসেবে প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করে, সফল হওয়া যাবে না।

বিভাজনের এই রাজনীতিতে প্রত্যাশা দুটি –

ক. আপনি বা আপনারা যে রাজনীতিই করেন, বঙ্গবন্ধুকে অসম্মান বা অশ্রদ্ধা করবেন না। বঙ্গবন্ধু জাতির পিতা, এটাই সবচেয়ে বড় সত্য।

খ. বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে নির্মোহ মূল্যায়ন- লেখা বা কথা বলার দরজা উন্মোচন করে দিন।জনমানুষের নেতা বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে কথা বলা বা মূল্যায়ন করা ভয়ের বা আতঙ্কের, এমন পরিবেশ তৈরি করবেন না। কোনো বাঁধা-ধরা নিয়মের মাঝে বঙ্গবন্ধুকে রাখার চেষ্টা করবেন না। কেউ বঙ্গবন্ধুকে ‘জাতির পিতা’ বললেন কি না, ‘বঙ্গবন্ধু’ বললেন কি না- তা দিয়ে কিছুই যায় আসে না। সাধারণের ‘ শেখ সাব’ যে কোনো কিছুর চেয়ে অনেক অনেক গুণ শক্তিশালী।

গোলাম মোর্তোজা: সম্পাদক, সাপ্তাহিক।

SUMMARY

514-1.jpg