বঙ্গবন্ধুকে হত্যার আদেশ দিয়েছিল জিয়া


মোল্লা আবু কাওছার   
হাজার বছরের শেষ্ঠ বাঙ্গালি কালপুরুষ জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমানকে নৃশংসভাবে স্বপরিবারে হত্যার মূলনায়ক ছিলেন বিএনপি প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগষ্ট বঙ্গবন্ধুকে হত্যার আদেশ দিয়েছিল জিয়া। পর্দার আড়ালে থেকে বঙ্গবন্ধু হত্যার সকল কলকাঠি নেড়েছিলেন তিনি। জিয়াই বঙ্গবন্ধু হত্যার নীল নকশার প্রধান ষড়যন্ত্রকারী ও চক্রান্তকারী এবং গোপন মদদদাতা। এটা আমাদের কথা নয়, বঙ্গবন্ধু হত্যার আতœস্বীকৃত খুনিদের জবানবান্দি। কর্নেল ফারুক বিদেশি টেলিভিশনের সাক্ষাৎকারে বলেছেন, “১৯৭৫ সালের ২৮ মার্চ সন্ধ্যায় আমি জিয়াউর রহমানের সাথে বৈঠক করি। বঙ্গবন্ধুকে স্বপরিবারে হত্যার পরিকল্পনা তাকে জানালে তিনি বলেন, একজন সিনিয়র কর্মকর্তা হিসাবে আমি এই ঘটনার সাথে জড়িত থাকতে পারি না। কিন্তু জুনিয়র হিসাবে তোমরা এগিয়ে যেতে পারো”।  খন্দকার আব্দুর রশিদও সাক্ষাৎকারে একই কথা বলেছেন।

তাই খুব সংগত কারণেই এখানে সহজ একটা প্রশ্ন হচ্ছে, দেশের রাষ্ট্রপতি হত্যার সাড়ে চার মাস আগে ষড়যন্ত্রের কথা জানার পরে সেনাবাহিনীর সিনিয়র একজন কর্মকর্তা হিসাবে জিয়াউর রহমানের দায়িত্বটা কি ছিল? ষড়যন্ত্রের কথা সর্বোচ্চ পর্যায়ে জানিয়ে ষড়যন্ত্রকারীদের বিচারের আওতায় আনা, নাকি রাষ্ট্রপতিকে হত্যায় এগিয়ে যাওয়ার আদেশ দিয়ে চুপ করে থাকা? বঙ্গবন্ধুকে হত্যার ষড়যন্ত্র জানার পরে, খুনিদের আদেশ দিয়ে সেই সাড়ে চার মাস জিয়া কি করেছিলেন? পরিস্কারভাবে বুঝা যায়, ষড়যন্ত্রের নীল নকশা সফলভাবে বাস্তবায়ন করতে চক্রান্ত করে যাচ্ছিল এবং বঙ্গবন্ধুকে হত্যার ফলে জিয়া কি পাবে? সেই দর কাষাকষি করেছিল এবং সেখানেও জিয়া সফল হয়েছিল। তারই বহিঃপ্রকাশ দেখা যায় বঙ্গবন্ধুকে হত্যার দশ দিনের মাথায় জিয়াউর রহমান সেনাপ্রধান হয়েছিল। জাতির জনকের খুনিদের বিচার না করে দেশের বাইরে পালিয়ে যাওয়ার সুযোগ করে দিয়েছিলেন। বিচারের বদলে বিভিন্ন দূতাবাসে চাকরি দিয়ে পুরস্কৃত করেছিলেন। সেখানেই শেষ নয়, বঙ্গবন্ধুর খুনিদের নানান উপায়ে জাতীয়ভাবে পুরস্কৃত করেছিলেন। জাতির জনকের হত্যার বিচারের দরজা চিরতরে বন্ধ করতে ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ জারি করেছিলেন। কেউ যাতে কোনোদিন বিচার করতে না পারে সেজন্য সংবিধানে আইন জুড়ে দিয়েছিলেন । যেটা কালো আইন নামে পরিচিত। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মাধ্যমেই পরবর্তীতে জিয়ার রাষ্ট্রপতি হওয়ার দরজা খুলে যায়। এক কথায় বলা যায়, বঙ্গবন্ধুকে হত্যার ষড়যন্ত্রের সাথে জিয়াউর রহমান যে সরাসরি যুক্ত ছিলেন, পরবর্তীতে তার অবস্থান, ভূমিকা এবং কর্মকান্ড তা প্রমাণ করেছে। জিয়া আজ বেঁচে থাকলে জাতির পিতাকে খুনের দায়ে বিচারের মুখে দাঁড়াতে হতো।
 
পরিচিতি: আইনজীবী ও সভাপতি, স্বেচ্ছাসেবক লীগ

SUMMARY

479-1.jpg