হাসান বিন বাংলা
বঙ্গবন্ধু শুধু বাংলাদেশের নয়, তিনি ছিলেন সমগ্র বিশ্বের নিপীড়িত-নির্যাতিত মানুষের কণ্ঠস্বর। বঙ্গবন্ধু ছিলেন সারাবিশ্বের মুক্তিপাগল সংগ্রামী মানুষের কণ্ঠস্বর। শোষকের-দানবের হুংকারের বিরুদ্ধে বঙ্গবন্ধু ছিলেন প্রতিবাদের জ্বলন্ত উদাহরণ।
ঊনবিংশ শতাব্দীর গীতিকবি ল্যামারটিন ফ্রান্সের বৈদেশিক মন্ত্রিত্বের দায়িত্ব গ্রহণকালে বলেন, ‘অভভবপঃরড়হ, ধষধিুং ধভভবপঃরড়হ ভড়ৎ ঃযব ঢ়বড়ঢ়ষব রহ ৎবঃঁৎহ রিষষ ষবহফ ঃযবরৎ যবধৎঃং.’ (জনগণকে নিখাঁদভাবে ভালবাসো, জনগণও প্রতিদানে তোমাকে হৃদয় নিংড়ে ভালোবাসবে)। শেখ মুজিবুর রহমানের জীবনী পর্যালোচনা করলে গীতিকবি ল্যামারটিনের বক্তব্যের যথার্থ প্রতিফলন দেখা যায়। ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধু স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের পর তাকে প্রশ্ন করা হয়Ñ‘আপনার দোষ কোথায়?’ উত্তরে বঙ্গবন্ধু বলেন-আমার সবচেয়ে বড় ও একমাত্র দোষ হলো আমি আমার জনগণকে খুব বেশি ভালোবাসি।’ দেশে-বিদেশে অনেক নেতাই জন্মায়। তাদের কেউ ইতিহাসের একটিমাত্র পঙক্তি, কেউ একটি পাতা, কেউবা একটি অধ্যায়। আবার কেউবা নিজেই সমগ্র ইতিহাস। বঙ্গবন্ধু নিজেই ছিলেন ইতিহাস। তাই বলা হয়, বঙ্গবন্ধুর নামেই ইতিহাসের দরজা খুলে যায়। বঙ্গবন্ধু শুধু রাজনৈতিক ঘাত-প্রতিঘাত এবং সশস্ত্র সংগ্রামের মধ্য দিয়ে দেশকে স্বাধীন হওয়ার ক্ষেত্রে নেতৃত্ব দিয়েই ক্ষান্ত হননি বরং এই দেশটির নাম বাংলাদেশ তারই দেয়া। ১৯৬৯ সালে হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর মৃত্যুবার্ষিকীতে ঢাকা হাইকোর্ট প্রাঙ্গণে বঙ্গবন্ধু ঘোষণা করেন…‘এই ভূ-খ-টির নাম হবে বাংলাদেশ।’ বঙ্গবন্ধুর শাসননীতিতে কোনো ত্রুটি ছিলো কিনা, তা বিচার করবেন রাজনীতিবিদ কিংবা ইতিহাসবিদরা। কিন্তু বঙ্গবন্ধুর স্বদেশপ্রেম নিয়ে তার চরম শত্রুও সন্দেহ পোষণ করবে না। বাঙালি জাতির ইতিহাসে বঙ্গবন্ধু চিরঅম্লান সূর্যের মতো দোদীপ্যমান থাকবেন।