বঙ্গবন্ধু ছিলেন আজন্ম এক তরুণ


শোকাবহ আগস্ট মাস। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ছিলেন বাংলাদেশের আপামর তরুণসমাজের হৃদয়ের প্রতিধ্বনি। কেননা বিশ্ব কবি রবিন্দ্রনাথ ঠাকুরের সেই অমর পঙক্তি ‘ঐ নতুনের কেতন ওড়ে কালবৈশাখী ঝড়, তোরা সব জয়ধ্বনি কর, ওরে তোরা সব জয়ধ্বনি কর’ তিনিও সেই মন্ত্রেই দীক্ষিত ছিলেন। তাই আমৃত্যু তিনি তারুণ্যেরই জয়ধ্বনিই করে গেছেন। অবশ্য তিনি নিজেও ছিলেন এক আজন্ম তরুণ। প্রকৃতপক্ষে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অমর কবিতা ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণেও সেই সময়ের যুবসমাজের প্রাণের ধ্বনিই তিনি প্রতিধ্বনিত করেছিলেন। তাইতো বঙ্গবন্ধুর সে সময়ের ঘনিষ্ঠ সহচরদের মধ্যে দু-চারজন ছাড়া বাকি সবাই ছিলেন বয়সে তরুণ। তাদের মধ্যে আওয়ামী লীগনেতা আবদুর রাজ্জাক, তোফায়েল আহমেদ, শেখ ফজলুল হক মনি, আবদুল কুদ্দুস মাখন প্রমুখ নেতৃবৃন্দ বঙ্গবন্ধুর অত্যন্ত আস্থাভাজন ছিলেন। তখনকার ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ, ছাত্রলীগ, ছাত্র ইউনিয়নসহ প্রগতিশীল ছাত্র সংগঠনগুলো বঙ্গবন্ধুর নির্দেশ অক্ষরে অক্ষরে মেনে চলতো। শুধু তাই নয়, আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণকারীরা অধিকাংশই বয়সে তরুণ ছিলেন। বঙ্গবন্ধুর ভাষণ ও দিকনির্দেশনায় এই তরুণগোষ্ঠীই আমাদের স্বাধীনতাকে ত্বরানি¦ত করেছিলো। মূলত বাংলাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলনের অবিস্মরণীয় এক কীর্তিও জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৭ মার্চের ভাষণ। তেজদীপ্ত এ ভাষণ বাংলাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলনের মূল ভিত্তিই শুধু নয়, এই ভাষণ পৃথিবীর ইতিহাসে এক অনন্য দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ঠ সহচরদের সূত্রে জানা যায়, এ ঐতিহাসিক ভাষণ তিনি আকস্মিকভাবে দেননি; বুঝেশুনে চিন্তা করে তিনি এ ভাষণ দিয়েছিলেন। বঙ্গবন্ধু ভাবতেন তরুণ যুবসমাজ ছাড়া স্বাধীনতা আন্দোলন যেমন গড়ে তোলা সম্ভব নয়; ঠিক তেমনি যুব সম্প্রদায় ছাড়া স্বাধীনতা রক্ষা করাও অসম্ভব। বাংলাদেশের ইতিহাস বিকৃতির ধারাবাহিকতায় ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট পরবর্তী সরকারগুলো ইতিহাসের এ জ্বলন্ত অধ্যায়কেও মুছে ফেলার চেষ্টা চালিয়েছে। কিন্তু তাদের ইতিহাস বিকৃতির সেই অপচেষ্টা ধোপে টিকেনি। সময়ের ব্যবধানে নতুন প্রজন্ম প্রকৃত ইতিহাস জেনে নিয়েছে। ১৯৭১ সালের ৭ মার্চে দেয়া বঙ্গবন্ধুর সেই ঐতিহাসিক ভাষণে স্বাধীনতার যে মূল মন্ত্র, চেতনা ও দিক-নির্দেশনা প্রজ্বলিত ছিলো তা নতুন করে উপলব্ধির সময় এসেছে। বর্তমান মহাজোট সরকার এই শোকের মাসে বঙ্গবন্ধুর ত্যাগ-তিতিক্ষা ও সংগ্রামের সেই চেতনাকে সর্বত্র ছড়িয়ে দেবে সেটাই এখন দেশবাসীর প্রত্যাশা।

SUMMARY

408-1.jpg