একটি রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধুর চোখে বাংলাদেশ


কেমন ছিল সেই দিনগুলো যখন একজন মানুষ একটা দেশ, দেশের চিন্তা, কল্যাণ, সমস্যা, সম্ভাবনা আর অভাবগুলো মাথায় নিয়ে দিন শুরু করতেন আর দিন শেষে রাজ্যের বিষয় নিয়ে ঘুমোতে যেতেন?

কেমন ছিল তখনকার পূর্বপাকিস্তান নামধারী বাংলা, শোষিত বাঙালি, বাংলার অর্থনৈতিক ও সামাজিক চিত্র?

কে ছিল সেই সংগ্রামী মহানায়ক যে নিজের জীবন দেশে বিদ্যমান শোষকদের হাতে দেশ ও দেশের মানুষের সর্বোচ্চ স্বার্থ রক্ষায় শত্রম্নর সামনে এগিয়ে দিতে দ্বিধা করেননি কখনো?

১৯৩৯ সাল, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সূচনাকাল। অখন্ড বাংলার প্রধানমন্ত্রী তখন এ কে ফজলুল হক। সে সময়ের তুখোড় রাজনীতিবিদ, জ্ঞানী ব্যক্তিত্ব যাকে বলা হয় 'গণতন্ত্রের মানসপুত্র' এবং খাদ্যমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্বরত হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীকে সঙ্গে নিয়ে গিয়েছিলেন গোপালগঞ্জ মিশনারি স্কুল পরিদর্শনে। পরিদর্শনের পর বাংলোয় ফেরার ছোট্ট পথটি আটকে দাঁড়িয়ে ছিল কিছু ছাত্র। প্রধান শিক্ষকের নিষেধ, ধমক এমনকি জোর নিষেধ উপেক্ষা করে অটল দাঁড়িয়ে থাকে শিক্ষার্থীরা। দলের মধ্যে সবচেয়ে সাহসী, লম্বা-ছিপছিপে দেখতে, মোটা কাচের চশমা পরিহিত ছেলেটি এগিয়ে আসে আর অকুতোভয়ে স্কুলে বিদ্যমান নানাবিধ সমস্যার কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা করে। অদম্য সাহসিকতাপূর্ণ দাবি উত্থাপনই নয় তা বাস্তবায়নেই নিশ্চয়তা নিয়ে তবেই পথ ছাড়ে বালক দল।

আপনি কি অনুমান করতে পারছেন সাহসী ছেলেটি কে? দিনরাত এক করে দেশের তরে কেঁদে ফেরা ছেলেটি আমাদের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। গল্পগুলো বঙ্গবন্ধুর ছেলেবেলা আর তরুণজীবন থেকে অনুসৃত। জাতির এই সম্ভাবনাময় উজ্জ্বল নক্ষত্র ১৯২০ সালের ১৭ মার্চ গোপালগঞ্জ জেলার টুঙ্গিপাড়ায় জন্মগ্রহণ করেন। আজ জাতির পিতার ৯৯তম জন্মদিন। প্রয়াত বাংলার বন্ধু, বঙ্গবন্ধু, বাংলার স্বপ্নদ্রষ্টা শেখ মুজিবুর রহমানের ৯৯তম জন্মদিনে তার আত্মার প্রতি দোয়া, বিনম্র শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা জ্ঞাপন করছি।

যে মানুষটির স্বপ্ন, আদর্শ, একটি বজ্রকণ্ঠ, দেশপ্রেম, স্বাধীনতার চেতনা আর অসাম্প্রদায়িকতাকে অনুসরণ করে মুক্তিযুদ্ধের মতো একটি মহান অধ্যায় রচনা হয়েছে তার অবদান ও সাহসিকতা বাঙালি প্রজন্মান্তর অনুপ্রেরণা হয়ে থাকবে।

স্কুল বয়সেই বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বগুণ বিকশিত হয় তার দৃষ্টান্ত গোপালগঞ্জ মিশনারি স্কুলের ঘটনা থেকে আমরা দেখে এলাম। এরপর ইসলামিয়া কলেজের শিক্ষার্থী থাকাকালে তাকে কলেজ ছাত্র সভার জেনারেল সেক্রেটারি (১৯৪৬) করা হয়। ১৯৪৩ সাল থেকে বঙ্গবন্ধু বাংলার প্রাদেশিক মুসলিম লীগ কাউন্সিলের একজন সক্রিয় কর্মী ও সমগ্র ভারত মুসলিম লীগের সদস্য ছিলেন। তৎকালীন বাংলার অত্যন্ত তেজস্বী নেতা হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর আদর্শ ও রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব ছিল বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক অনুপ্রেরণার উৎস। ব্যক্তিগত জীবন ও রাজনৈতিক আদর্শে বঙ্গবন্ধু ছিলেন একজন মহান সাম্যের প্রতিকরূপে নিজ সত্তা স্থাপন করে গিয়েছেন। তিনি বিচক্ষণতা, মায়া-মমতা, আদর্শ আর যুক্তিপূর্ণ দাবি উত্থাপনে এতটাই পারদর্শী ছিলেন যে শত্রম্নপক্ষ তথা বিরোধী সমর্থক দল কিংবা দলের ব্যক্তিরা শেখ মুজিবুর রহমানের প্রশংসায় পঞ্চমুখ থাকতেন। ভালোবাসা আর আস্থার নিদর্শনস্বরূপ ১৯৪৬-এর সাধারণ নির্বাচনে শেখ মুজিবুর রহমানকে ফরিদপুর জেলা প্রতিনিধিরূপ মুসলিম লীগের পক্ষ থেকে প্রার্থী নির্ধারণ করা হয়। পরবর্তী বছর (১৯৪৭) দেশভাগের পর তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন বিষয়ে অধ্যায়নের উদ্দেশ্যে ভর্তি হন ঠিকই তবে দুর্ভাগ্যবশত তা অসম্পূর্ণ থেকে যায়। ১৯৪৯ সালে তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারীদের বেতন বৃদ্ধির দাবিতে ডাকা ধর্মঘটের নেতৃত্বদানের অপরাধে শেখ মুজিবুরসহ আরও পাঁচজন শিক্ষার্থীকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাময়িক বহিষ্কার ও ১৫ টাকা জরিমানা করেন। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে বিষয়টি মামুলি ও সস্তা মনে হলেও এটি ছিল একটি অনৈতিক সিদ্ধান্ত যার দরুন বিশ্ববিদ্যালয় আঙিনা থেকে ছিটকে পড়ে জাতির পিতা। আশ্চর্যজনকভাবে সত্য যে, এই বহিষ্কার বঙ্গবন্ধুর জীবনে আঘাত হানলেও তা তাকে ভেঙেচুরে দেয়নি। কারণ তিনি শুধু নিজের স্বার্থ ও সফলতা অর্জনের মতো ক্ষুদ্র চিন্তার মধ্যে কখনো আবদ্ধ থাকেননি। তার ভালোবাসা, চিন্তা, আবেগ ও স্বপ্নগুলো ছিল পুরো দেশের মানুষকে ঘিরে। 

'সত্যের জয় নিশ্চিত'-এ প্রবাদের প্রমাণ হয়ে যায় যখন বহিষ্কারের সুদীর্ঘ ৬১ বছর পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ২০১০ সালের ১৪ আগস্ট নিজেদের সুবিচার পরিপন্থী সিদ্ধান্তের কথা স্বীকার করে বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করে নেয়। বঙ্গবন্ধু বেঁচে থাকলে তার ওপর এ সিদ্ধান্তের প্রভাব কীভাবে পড়ত আমার অনুমানের বাইরে। তবে ব্যক্তিগতভাবে আমার কাছে বঙ্গবন্ধুর সম্মানে এ বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের ঘটনা কোনো প্রভাব ফেলেনি। তিনি জাতির জনক, বাঙালির স্বপ্ন বোনার কারিগর, তিনি বিশ্ববিদ্যালয় বহিষ্কৃত অথচ প্রজন্মান্তর বঙ্গবন্ধু, যিনি যুগে যুগে রাজনৈতিক অনুপ্রেরণা। বঙ্গবন্ধু আমার কাছে আদর্শের জায়গাজুড়েই রয়েছেন।

পাকিস্তান মুসলিম ছাত্রলীগ গঠনে যারা মূল নির্মাতা ছিলেন বঙ্গবন্ধু তাদের মধ্যে অন্যতম। মূলত পশ্চিম পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগ নির্বাচনে তিনজন যুগ্ম-সম্পাদক প্রার্থীর মধ্যে অন্যতম একজন ব্যক্তিত্বের ধারক হিসেবে শেখ মুজিবের রাজনৈতিক পেশায় আত্মপ্রকাশ ঘটে যখন কিনা তিনি জেলে রয়েছেন।

ব্যক্তিগত এবং রাজনৈতিক অঙ্গনজুড়ে মুজিব ছিলেন নিরপেক্ষ ও অনৈতিকতা থেকে শত শত হাত দূরে। তারই প্রমাণ মেলে যখন 'আওয়ামী মুসলিম লীগ' দলীয় নামের মধ্য থেকে 'মুসলিম' শব্দটি তুলে দেয়া হয় যাতে রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটকে ঘিরে ধর্ম নিয়ে অরাজকতা, শোষণ, অনধিকারচর্চা কিংবা অসহনশীলতার পরিবেশ না সৃষ্টি হয়। সবার প্রতি সমান বিচার ও মর্যাদা প্রদর্শনের লক্ষ্য নিয়ে এমন পরিবর্তনের উদ্যোগ নেন বঙ্গবন্ধু।

১৯৪৯-এর জুলাই মাসে মুজিব জেল থেকে ছাড়া পান কিন্তু অক্টোবর মাসে ঢাকার আর্মিটোলা থেকে মুখ্যমন্ত্রী খাজা নাজিমুদ্দিনের বাসভবনকে ঘিরে এক ভুখা মিছিল শুরু হয় যার পথিমধ্যে পুলিশের ব্যাপক লাঠিচার্জে আহত হয় অনেকে। মিছিল থেকে তাৎক্ষণিক মওলানা ভাসানী, শামসুল হক ও শেখ মুজিবকে গ্রেপ্তার করা হয়। কিছুদিন পর মওলানা ভাসানী ও শামসুল হকের মুক্তি হলেও টানা আড়াই বছর জেলে রইলেন মুজিব। ১৯৫২-এর ২১ ফেব্রম্নয়ারির ভাষা আন্দোলনের সময় মুজিব জেলে, যখন তার কাছে সংবাদ পৌঁছল যে বাঙালির এই প্রাণের দাবিতে তাদের ওপর গুলিবর্ষণ করা হয়েছে সঙ্গে সঙ্গে জেলে থেকেই অনশন ধর্মঘট শুরু করলেন তিনি। যার দরুন মুজিবকে অতিসত্বর কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে ফরিদপুর স্থানান্তর করা হয়। এরপর ধাপে ধাপে শেখ মুজিবের সোনার বাংলার স্বপ্ন বিকশিত হতে থাকে। ১৯৫৫-এর পূর্ববাংলার ওপর থেকে গভর্নর শাসন প্রত্যাহার, গণপরিষদ নির্বাচন, পূর্ববাংলার নাম পরিবর্তন করে পূর্বপাকিস্তানের প্রস্তাবে মুজিবের তীব্র প্রতিবাদ শেখ মুজিবুর রহমানের দেশপ্রেমে নতুন মাত্রা যোগ করে। ১৯৫৮-এর আতাউর রহমান সরকারের পতন, ১৯৬২-এর ৬ জুন রাজনৈতিক নেতাদের অন্যায়ভাবে জেলে দেয়ার প্রতিবাদে গণআন্দোলন, ১৯৬৩ সালে হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর মৃতু্যতে রাজনৈতিক শূন্যতা বয়ে যেতে থাকে মুজিবের জীবন। 

কিন্তু শত উত্থান-পতনে মুজিব কখনো ভেঙে পড়েননি কেননা তিনি বঙ্গবন্ধু, তাকে ব্যক্তি নয় বরং সামষ্টিক চিন্তায় সবসময় নিয়োজিত থাকতে হতো। খুব ভালোবেসেছিলেন তিনি দেশকে। আরও একবার সে প্রমাণের লক্ষ্যে ১৯৬৬-এর ৫ ও ৬ ফেব্রম্নয়ারি লাহোরে অনুষ্ঠিত সম্মেলনে বঙ্গবন্ধু মাত্র ২১ জন প্রতিনিধি নিয়ে পূর্ববাংলার দাবি 'ছয় দফা' উত্থাপন করে। দাবিগুলো সম্পূর্ণরূপে বাঙালির সামগ্রিক অধিকার আদায়ের দাবি নিয়ে উপস্থাপিত হলেও পশ্চিম পাকিস্তানি নেতারা তাতে বিন্দুমাত্র আগ্রহ পোষণ করেনি। কিন্তু বঙ্গবন্ধু তাতে বিচলিত না হয়ে অতি বুদ্ধিমত্তার সঙ্গে এক সংবাদ সম্মেলনে ছয় দফা দাবি পেশ করেন যাতে সর্বসাধারণের কাছে তার মহিমা ও প্রয়োজন স্পষ্ট করা যায়।

রাজনৈতিকচর্চা ও অধিকার বাস্তবায়নের যাত্রাপথ অতিক্রমকালে মুজিব বারবার লক্ষ্য করলেন যে পূর্ব পাকিস্তান ও পশ্চিম পাকিস্তানের একে অন্যের প্রতি ব্যবহার এমনকি কেন্দ্রীয় নেতাদের গৃহীত সিদ্ধান্তগুলো মোটেও সমান ও ভ্রাতৃত্বপূর্ণ ছিল না। বাঙালির চেতনায় দেশত্ববোধকে বারবার জাগিয়ে রাখতে শেখ মুজিব অক্লান্ত পরিশ্রম করে গিয়েছেন।

১৯৭০-এর সাধারণ নির্বাচনে পূর্ব পাকিস্তান তথা বাঙালির অধিকারে আরও একবার আঘাত হানে তৎকালীন পশ্চিম পাকিস্তানের জেনারেল ইয়াহিয়া খান ও জিন্নাহ আলি ভুট্টো কোনোভাবেই ক্ষমতা হস্তান্তরের জন্য প্রস্তুত ছিল না। ৭ মার্চ ১৯৭১, শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ভাষণ মুক্তিযুদ্ধের আগে এক গুরুত্বপূর্ণ সূচনা বহন করে। বঙ্গবন্ধুর তর্জনী তোলা উচ্ছ্বাসভরা প্রাণবন্ত কথা, উপদেশ আর আহ্বান বাঙালির স্বাধীনতার চেতনায় নাড়া দিয়ে যায়। বঙ্গবন্ধু আপামর জনগণকে স্বাধীনতার জন্য ঝাঁপিয়ে পড়তে আন্দোলিত করেন। শুরু হয় মুক্তিযুদ্ধ, আবার সবার আগে জেলে গেলেন মুজিব। বাঙালির কষ্ট, দুঃখ, দুর্দশা আর নির্যাতনের কথা ভেবে ভেবে বঙ্গবন্ধু জেলে বসে কষ্ট পান, সেখান থেকেই অনুপ্রেরণা জোগানোর চেষ্টা করেন অবিরত। লাখো শহীদের বিনিময়ে রচিত হয় স্বাধীনতার ইতিহাস। বঙ্গবন্ধুর সারাজীবনে অন্তরের অন্তঃস্থল থেকে চাওয়া সোনার বাংলা বাস্তবায়নের সবচেয়ে বড় 'পরাধীনতার' বাধা ভেঙে গিয়ে সম্ভাবনার দ্বার খুলে যায়। আর তারই নির্মম প্রতিশোধ গ্রহণ ছিল ১৯৭১-এর মুক্তিযুদ্ধে নির্মমভাবে ঘুমন্ত বাঙালির ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে পশ্চিম পাকিস্তান যে পশুত্বের পরিচয় দিয়েছিল তা বাঙালির জন্য এক বিভীষিকাময় অধ্যায় রচনার মধ্যে। কিন্তু স্বাধীনতার পর পরই যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশের রাজনৈতিক, সামাজিক ও অর্থনৈতিক কাঠামোতে পরিবর্তনের জন্য সারা দিন-রাত পরিশ্রম করতে থাকেন। অথচ সেই বঙ্গবন্ধু, যার স্বপ্নে বাঙালির স্বাধীনতার চেতনা তৈরি হলো, মুক্তিযুদ্ধের মতো এত বড় আন্দোলনে স্বাধীনতার মতো অমূল্য অর্জন বয়ে এলো বাংলাদেশে, তার সপরিবারে নির্মম মৃতু্য হয় দেশের মাটিতে। হিংস্র, জঘন্য আর পশু মনোভাবসম্পন্ন একদল কুচক্রী ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট নির্মমভাবে হত্যা করে শেখ মুজিবুর রহমান ও দেশে অবস্থানরত তার পরিবারদের।

জাতির জন্য প্রতিবছর তা শোক দিবস হিসেবে পালিত হয়। নিভে যায় বাঙালির স্বপ্নের আলো, আন্দোলনের শক্তি, দেশপ্রেমে নিবেদিত প্রাণপ্রিয় বঙ্গবন্ধুর আদর্শে পরিপূর্ণ জীবন। 

স্বাধীনতার ইতিহাসের পরবর্তী প্রজন্ম হয়ে মাঝেমধ্যে অদ্ভুত কৌতূহলপরবশ হয়ে যাওয়ার মধ্যে যেমন রয়েছে আনন্দ তারও বেশি জড়িয়ে আছে সম্মান। একটি দেশ, দেশের মানুষ, মানুষের প্রতি ভালোবাসা, ঐতিহ্যের প্রতি সম্মান আর সর্বোপরি দেশপ্রমে উদ্বুদ্ধ হয়ে লাখ লাখ মানুষের জীবন অকাতরে বিলিয়ে দেয়ার নজির বিশ্বের বুকে ছাপ ফেলে দিয়েছে বাঙালি। ত্যাগের বিনিময়ে গাথা বাংলাদেশের ইতিহাস ও ইতিহাস রচয়িতা বীর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি স্বাধীনতার এতগুলো বছর কাটানোর পরেও কেন মনে হয় স্বপ্নগুলো বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে আঁকড়ে ধরে বাংলাদেশের অগ্রগতি হচ্ছে বলে আমি মনে করি। জন্মদিনের এই স্মরণীয় দিনে শেখ মুজিবুর রহমানের অবদান, রাজনৈতিক অঙ্গনে ছড়ানো নানা অবদানের কথাই ঘুরে-ফিরে আসে। বছর ঘুরে শুধু দিবসগুলো উদ্‌যাপন নয় বরং বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়ার জন্য বাঙালির ত্যাগের মাত্রা বাড়াতে হবে। শপথ নিতে হবে দেশ গঠনের। সক্রিয় কার্যক্রমের মাধ্যমে উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখার পাশাপাশি নিজ নিজ স্থান থেকে সমাজে শান্তি, সাম্য, শৃঙ্খলা, নিরাপত্তা ও সংহতি বজায় রাখার জন্য সচেষ্ট হতে হবে। মনে রাখতে হবে বঙ্গবন্ধু রাতারাতি বঙ্গবন্ধু হননি, মুক্তিযুদ্ধের অধ্যায় কাকতালীয়ভাবে উত্থাপন হয়নি। ছোট ছোট ব্যক্তিগত উদ্যোগ, সক্রিয়তা ও প্রচেষ্টার মাধ্যমে গড়ে উঠুক সোনার বাংলা। 

জয় হলে বাঙালির, জিতে যাবে বঙ্গবন্ধু।

ভালো থাকবে বাংলাদেশ সেই সঙ্গে বাংলাদেশের মানুষ।

মুক্তা আক্তার

SUMMARY

390-1.jpg