স্বাধীনতা বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ

সাঈদুল আরেফীন
 
আমরা বলি স্বাধীনতা আমাদের জন্মগত অধিকার। কথা বলার অধিকার, মনের ভাব প্রকাশ করার অধিকার। স্বাচ্ছন্দ্যে চলাচলের অধিকার, মুক্তো আলো আবহাওয়ায় বুক ভরে নিঃশ্বাস নেয়ার অধিকার। কার সে অধিকার? কেন অধিকার ? এসব নানা প্রশ্ন এখনো আমাদের জনজীবনে নাগরিকের মনে সব সময় ভেসে ওঠে। মানুষের বেঁচে থাকার জন্যে অধিকার পেতে সে সময় আগুন ঝরা দিনগুলোতে কী সেই অধিকার অর্জন করেছিলাম। বিশেষ করে মুক্তিযুদ্ধ ্পরবর্তী ইতিহাস বড়োই করুণ আমাদের। বারবার হোঁচট খেয়েছে আমাদের স্বাধীনতার ইতিহাস। আমাদের অধিকার প্রতিষ্ঠার সে ইতিহাস বারবার ক্ষতবিক্ষত হয়েছে। স্বাধীনতার সঠিক ইতিহাস সমুন্নত রাখা যায় কিভাবে সে যুদ্ধে এখনো আমরা লড়ছি। বলতে দ্বিধা নেই, মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস বিকৃতির জন্যে ওঠে পড়ে লেগেছিলো স্বাধীনতাবিরোধী একশ্রেণীর দুষ্টচক্র। স্বাধীনতা অর্জনের সাতচল্লিশ বছর পরেও আমরা এখনো বিকৃতি আর মিথ্যাচারে নিমজ্জিত। ফলে বারবার স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস তরণ প্রজন্ম সর্বোপরি শিশু কিশোর সহ সকল প্রজন্মের কাছে তুলে ধরার দায়িত্ব বর্তায় প্রাজ্ঞ লেখক বুদ্ধিজীবীদের। বাস্তবতা হলো হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি স্বাধীনতার মহান স্থপতি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এমন একজন ক্ষণজন্মা ব্যক্তিত্বের কাছে ক্রমে ক্রমে স্বাধীনতার বিরুদ্ধ শক্তি আজ দিশেহারা হয়ে পড়েছে। মার্চ মাস এলে বাঙালির অস্থিমজ্জার ভেতর অন্যরকম আবহ তৈরি হয়ে যায়। স্বাধীনতার উৎসমুখ যেনো এই মার্চেই প্রোথিত হয়ে আছে। জাতীয় পতাকা উত্তোলন, জাতীয় সঙ্গীত নির্ধারণ, বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ভাষণ, বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন ও শিশুদিবস, স্বাধীনতার ঘোষণা- স্বাধীনতা দিবস সবকিছুকে ঘিরে বাঙালির আত্মপ্রত্যয় ঘটনাবহুল ইতিহাসের মাইলস্টোন হলো এই মার্চ।

বাংলাদেশের রক্তস্নাত স্বাধীনতার জন্মকথা অনেক ব্যাপক ও বড়ো বিস্ময়ের। ৪৮ বছরের পাদপীঠে দাঁড়িয়ে বাংলাদেশ হাঁটি হাঁটি পা পা করে অনেক এগিয়ে যাচ্ছে। স্বাধীনতাত্তোর বাংলাদেশের ইতিহাস বড়োই করুণ। বৈষম্যই স্বাধীন বাংলাদেশ সৃষ্টির পেছনে মূল কারণ হিসেবে চিহ্নিত হয়ে থাকবে। ১৯৪৭ সালে পাকিস্তান জন্মের পর দেখা যায়,হাজার হাজার মাইল দূরের পাকিস্তানের সাথে বাংলাদেশের নাগরিক চিন্তা ভাবনা, অর্থনীতি ও সংস্কৃতির কোন মিল খুঁজে পাওয়া যায়নি। বৃটিশ শাসনের দুইশ বছর অতিক্রম করার পরও পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী ঠিক একই ধারা অব্যাহত রাখে। পাকিস্তাান সৃষ্টির পর থেকে দেখা দেয় নানা বৈষম্য। সেই থেকে ধীরে ধীরে বাংলাদেশের সকল স্তরে সৃষ্টি হয় শোষণ বঞ্চণা ,অনিয়ম,অন্যায় ও নির্যাতন। বাঙালি সেই সব নির্যাতন ও অনিয়মতান্ত্রিকতা সহ্য করে তাদের দিনগুলো গুজরান করতে থাকে। রাজনৈতিক অধিকার প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি নাগরিক জীবনের অর্থনৈতিক মুক্তি প্রতিষ্ঠায় নাগরিক জীবনে বিভিন্ন সময়ে ফুঁসে ওঠে ক্ষোভ। তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান তথা বাংলাদেশের নাগরিদের মধ্যে বিদ্যমান পাকিস্তান সরকারের সেই ক্ষোভই পরবর্তী পর্যায়ে একে একে বাংলাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলনের ভিত রচিত হয়েছিলো। সেই ধারাবাহিকতায় আসে ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন। এরপর ধারাবাহিকভাবে স্বাধীনতার প্রেক্ষাপটে ইতিহাসের আলোচনায় বাংলাদেশের প্রেক্ষিত তুলে ধরতে গেলে বাংলার বাঘ শেরে বাংলা একে ফজলুল হক, গণতন্ত্রের অতন্দ্র প্রহরী হোসেন শহীদ সোহ্রাওয়ার্দ্দী, মজলুম জননেতা মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর প্রসঙ্গটি অবধারিত আসবে। এরপর সবাইকে ছাপিয়ে স্বাধীন বাংলাদেশের নেতৃত্বের পুরোভাগে চলে আসে বঙ্গবন্ধুর নাম। মূলতঃ বাংলাদেশের অবিসম্বাদিত নেতা জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে স্বাধীনতার বীজ বপিত হয়। ইতিহাসের এই অমোঘ সত্যকে অস্বীকারের কোন বিকল্প নেই। তবে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধকে আজকের শিশু ও প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে হবে সত্যিকার ভাবেই। এরপর পর্যায়ক্রমে ১৯৬২ সালের হামদুর রহমান শিক্ষানীতিতে সংকোচন নীতি বাতিলের দাবিতে ছাত্র অসন্তোষের সৃষ্টি হয়। বেড়ে যায় পাকিস্তান সরকারের নিপীড়ন নির্যাতন। ১৯৬৬ সালের এপ্রিলে গ্রেপ্তার করা হয় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে এবং ইত্তেফাক সম্পাদক তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়াকে ১৫ জুন গ্রেপ্তার করা হয় এবং ইত্তেফাক নিষিদ্ধ করা হয়। এভাবে গ্রেপ্তার নির্যাতনে পালাক্রমে আসে ১৯৬৬ সালের পর ১৯৬৯ সাল। নেতাদের গ্রেপ্তার ও সাধারণ জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে সেই আন্দোলন একটা বলিষ্ঠ রূপ লাভ করে। সেই আন্দোলন এমন এক পর্যায়ে পৌঁছে যা ১৯৬৯ সালে ছাত্রদের ১১ দফা দাবি প্রদানের পথ প্রশস্থ করে। ইতিহাসে প্রকাশ ১৯৬৯ সালের ১লা জানুয়ারি সর্বদলীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের ১১দফা দাবী পেশ করা হয়। যা এক পর্যায়ে গণবিক্ষোভের পথে জনগণকে ধাবিত করে। এই সময়ে সারাদেশে ধ্বণি ওঠে,‘‘জাগো জাগো বাঙালি জাগো, বীর বাঙালি অস্ত্র ধর বাংলাদেশ স্বাধীন করো।”স্বাধীনতা আন্দোলনের মূল সুরগুলো ওই স্লোগান গুলোতে বেজে ওঠে। যতোই বিকৃত হোক অবিকৃত হোক বাঙালির স্বাধিকার আন্দোলনের চরম পর্যায়ে বাঙালি জাতীয়তাবাদী চেতনা বিকাশ লাভ করে জয়বাংলা স্লোগান এবং তোমার দেশ,আমার দেশ, বাংলাদেশ, বাংলাদেশ নামে স্লোগান প্রতিধ্বণিত হয়ে। এখানে অবশ্যই স্বীকার করতে হবে বাঙালি জাতির অবিসম্বাদিত নেতার অভূতপূর্ব নেতৃত্ব সেই সময়ে জাতিকে ভিন্নরকম দিক নির্দেশনা দিয়েছিলো,যা তাকে ইতিহাসে মহান ও মহীয়ান করে তুলেছে। জানা যায়, ১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থানের প্রাক্কালে ১৯৬৮ সালের ৬ ডিসেম্বর থেকে ১৯৬৯ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারির মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাবলি ঘটে যায়। আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা থেকে বঙ্গবন্ধুকে মক্তির দাবিতে জনসভা, হরতাল, বিক্ষোভ সমাবেশ হতে থাকে দুর্বার গতিতে। প্রাণ দিতে হয় অনেক বাঙালিকে। ১৯৬৯ সালের ১৯ জানুয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা সক্রিয় আন্দোলনে নেমে পড়ে। যা পরবর্তীতে ১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থান নামে ইতিহাসে স্বীকৃতি লাভ করে। ১৯৬৯ সালের ২০ জানুয়ারি ঢাকা মেডিকেলের দিকে যাত্রাকালে ছাত্রনেতা আসাদ পুলিশের গুলিতে মৃত্যুমুখে পতিত হয়। আসাদ হত্যার প্রতিবাদে ১৯৬৯ সালের ২৪ জানুয়ারি গণহত্যার প্রতিবাদ দিবস হিসেবে পালিত হয়। এভাবে থেমে ছিলো না স্বাধীনতান্দোলনের পটভূমি। ১৯৬৯ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি সকালে নিরাপত্তা প্রহরীরা আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার অন্যতম আসামী সার্জেন্ট জহুরুল হককে নৃশংসভাবে হত্যা করে। একই ধরণের ঘটনা ঘটে ১৮ ফেব্রুয়ারিতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড.শামসুজ্জোহাকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে নিষ্ঠুরভাবে বুলেট ও বেয়োনেট দিয়ে হত্যা করে। ড. শামসুজ্জোহার মৃত্যু সংবাদ ছড়িয়ে পড়লে সারাদেশে বিক্ষোভ দানা বেঁধে ওঠে। জনতার বিক্ষোভে ভেঙ্গে যায় ঢাকার সামরিক আইন ও ঢাকায় বিরাজমান কারফিউ। এতে সাধারণ জনতা কারফিউ ভঙ্গ করে রাতভর সশস্ত্র বাহিনীর সাথে যুদ্ধে লিপ্ত হয়। ড. জোহার পৈশাচিক হত্যাকান্ড উনসত্তরের গণঅভ্যুত্থান গণবিস্ফোরণে পরিণত হয়।এতে করে বন্ধ হয়ে যায় আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা। ২২ ফেব্রুয়ারি মুক্তি পান বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সহ আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার আসামিরা। পরদিনই ২৩ ফেব্রুয়ারি রমনার জনসমুদ্রে ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের পক্ষ থেকে তৎকালীন ডাকসু ভিপি তোফায়েল আহমেদ শেখ মুজিবুর রহমানকে বঙ্গবন্ধু উপাধিতে ভূষিত করেন।

স্বাধীনতার ইতিহাস ওখানে থেমে যায়নি। ১৯৬৯ সালের ১০ মার্চ রাওয়ালপিন্ডিতে ঢাকা গোলটেবিল বৈঠকে বঙ্গবন্ধু ছয়দফা ও ছাত্রসংগ্রাম পরিষদের এগার দফার ভিত্তিতে তৎকালীন পাকিস্তানের শাসনতান্ত্রিক সমস্যা সমাধানের প্রস্তাব তুলে ধরেন। পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীকে মুক্ত ও উদার মন নিয়ে ভ্রাতৃত্ববোধ ও জাতীয় মনোবলের ভিত্তিতে এগিয়ে আসার আহবান জানালেও বৈঠক ব্যর্থ হয়ে যায় ২৫ মার্চ প্রেসিডেন্ট আইয়ুব খানের ক্ষমতা ইয়াহিয়া খানের কাছে হস্তান্তরের মধ্য দিয়ে। এরপর বাঙালির জীবনে ঘটে যায় নানা দুঃসহ পরিবর্তন। আসে ১৯৭০সালের ঘূর্ণিঝড় ও প্লাবন। তবুও জনগণের দাবির মুখে ১৯৭০ সালের সাধারণ নির্বাচনে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করে। এরপরও থেমে থাকেনি পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর ষড়যন্ত্র। নানাভাবে টালবাহানা চলতে থাকে ক্ষমতা হস্তান্তর না করার।

স্বাধীনতার ইতিহাসে পালাবদল চলতেই থাকে। ১৯৭১ সালের ২রা মার্চ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত হয় ছাত্র সমাবেশ । সেই সময়ের জাঁদরেল ছাত্রনেতা ছাত্রলীগ সভাপতি নুরে আলম সিদ্দিকী ,ছাত্রলীগ সম্পাদক শাহজাহান সিরাজ, ডাকসুর সাধারণ সম্পাদক আবদুল কুদ্দুস মাখন বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বকে সম্মান জানিয়ে নির্দেশনামতো সংগ্রাম চালিয়ে যাবার দৃঢ় শপথ গ্রহণ করেন। ওই ঐতিহাসিক সভাতেই সর্বপ্রথম সবুজ জমিনের ওপর লালবৃত্ত খচিত সোনার বাঙলার সোনালি মানচিত্র খচিত “স্বাধীন বাঙলাদেশের জাতীয় পতাকা” উত্তোলন করা হয়। পতাকটি উত্তোলন করা হয় ডাকসু ভিপি আসম আবদুর রবের নেতৃত্বে। ৩ রা মার্চ পল্টন ময়দানে গঠিত হয় সর্বদলীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ। ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ বাঙলাদেশের সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু ঘোষণা করলেন ঐতিহাসিক স্বাধীনতা । তিনি ঘোষণা করলেন, এবারের সংগ্রাম,স্বাধীনতার সংগ্রাম। যার যা আছে তাই নিয়ে শত্রুর মোকাবেলা করতে হবে। এখানেই থেমে যায়নি স্বাধীনতা আন্দোলন।বাঙালি প্রস্তুত হতে থাকে স্বাধীনতা সংগ্রামের লড়াই করার দৃঢ় প্রত্যয়ে। ভেতরে ভেতরে সংগঠিত হতে থাকে মুক্তিযোদ্ধারা। পর্যায় ক্রমে আসে সেই মাহেন্দ্রক্ষণ ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ কালোরাত্রি। বঙ্গবন্ধুর ধানমন্ডির ৩২ নম্বরের বাসভবন থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তার হবার প্রাক্কালে বঙ্গবন্ধু ওয়ার্লেস যোগে স্বাধীনতার শেষ ঘোষণাটি দিয়ে যান। পরদিন ২৬ মার্চ চট্টগ্রামের কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র থেকে বেলা প্রায় দুটোয় প্রথমে চট্টগ্রাম জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি মরহুম এম এ হান্নান এবং এরপর ২৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর পক্ষে বঙ্গবন্ধুকে জাতীয় নেতা হিসেবে ঘোষণার মাধ্যমে মেজর (তৎকালীন) জিয়াউর রহমান স্বাধীনতার ঘোষণা পাঠ করেন। ১৭ এপ্রিল ১৯৭১ সনে তৎকালীন কুষ্টিয়া জেলার মেহেরপুর মহকুমার ভাবেরপাড়া গ্রামের মুজিবনগরে গঠিত হয় স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম অস্থায়ী সরকার। প্রায় দশহাজার মানুষের আনন্দ উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে ঘোষিত হয় স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র। পঞ্চাশ জন বিদেশি সাংবাদিকের উপস্থিতিতে এতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে প্রেসিডেন্ট ও সৈয়দ নজরুল ইসলামকে ভাইস প্রেসিডেন্ট করা হয়। প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দিন আহমদ ও সর্বাধিনায়ক করা হয় কর্নেল আতাউল গণি ওসমানীকে। এটাই হলো স্বাধীনতার প্রথম পটভূমি। স্বাধীনতার দীর্ঘ বিস্তৃত কাহিনির সার সংক্ষেপ। যা বলে কয়ে শেষ করার মতো নয়। সেই প্রেক্ষাপটে নয়মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের ফসল আজকের স্বাধীন বাঙলাদেশ। সারাদেশে ১১টি সেক্টরে বিভক্ত হয়ে সকল স্তরের জনগণের স্বত:স্ফূর্ত অংশগ্রহণের মাধ্যমে আমরা পেয়েছি স্বাধীন সার্বভৌম বাঙলাদেশ। ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দ্দী উদ্যানে বা রেসকোর্স ময়দানে পাকিস্তানের ৯১ হাজার ৪৯৮ জন নিয়মিত, অনিয়মিত ও আধা সামরিক বাহিনীর সৈন্য সমেত ইষ্টার্ণ কমান্ডের প্রধান লে. জেনারেল আমীর আবদুল্লাহ খান নিয়াজীর নেতৃত্বে পাকিস্তানী হানাদার বাহিনির আত্মসমর্পণের মধ্য দিয়ে যা পরবর্তীতে চূড়ান্ত বিজয়ের রূপ পরিগ্রহ করে। দৈনিক আজাদী থেকে নেয়া)

SUMMARY

338-1.jpg