৬ মার্চ, ২০১৯
‘‘গণসূর্যের মঞ্চ কাঁপিয়ে কবি শুনালেন
তাঁর অমর কবিতাখানি:
‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম,
এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম।’
সেই থেকে ‘স্বাধীনতা’ শব্দটি আমাদের।’’
বাঙালি জাতির জন্য আবেগের, দ্রোহের, চেতনার, আকাঙ্ক্ষার এক অপরূপ সম্মিলন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অমরসৃষ্টি ৭ মার্চের ভাষণ। ১৯৭১ সালের এই ভাষণটির আবেদন ৪৮ বছর পরও সমান উজ্জ্বল। বছর বছর নানা কর্মসূচি আর ভাবগাম্ভীর্যের মধ্যে দিয়ে দিবসটি পালিত হয়ে আসছে। এ বছরও দিবসটি উপলক্ষে বিশেষ রাষ্ট্রীয় কর্মসূচি নেয়া হয়েছে। বাণী দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী।
স্বাধীনতা পূর্ব এই ভাষণের ‘এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম’ বাক্যের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতাকামী সাড়ে সাত কোটি মানুষকে একত্রিত করতে পেরেছিলেন। দীর্ঘ ৯ মাস মুক্তিযোদ্ধা থেকে শুরু করে গণমানুষের অনুপ্রেরণা হিসাবে কাজ করেছে সেই মহাকাব্য।
এই ভাষণের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু নিজেকে নিয়ে গেছেন অনন্য উচ্চতায়। পৃথিবীর ইতিহাসে আরও অনেক স্বাধীনতাকামী নেতারা ভাষণ দিয়েছিলেন স্বাধীনতার জন্য কিন্তু বঙ্গবন্ধুর ভাষণের বাস্তবতা অন্যদের থেকে আলাদাভাবে প্রতিষ্ঠিত হয়ে বাঙালি জাতিকে উদ্বুদ্ধ করতে সক্ষম হয়েছিলো। বঙ্গবন্ধুর এই ভাষণ অন্যতম শ্রেষ্ঠ ভাষণ হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করেছে। ইউনেস্কো বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণটিকে ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ হিসেবে বিশেষ মর্যাদা দিয়েছে, যা সত্যিই গর্বের।
৭ মার্চের চেতনা ছিল অসম্প্রদায়িক, ক্ষুধামুক্ত ও দারিদ্রমুক্ত স্বপ্নের বাংলাদেশ গড়ার, যা বঙ্গবন্ধুর ভাষণের প্রতিটি লাইনে লাইনে রয়েছে। তার সেই কথাগুলো যেনো আজও রাষ্ট্র পরিচালনার দর্শন হিসেবে কাজ করছে।
৭ মার্চ মানের কোনো ভাষণ বর্তমান সময়ের রাজনীতিবিদের কাছ থেকে আমরা আর পাব কিনা সন্দেহ আছে। তবে বর্তমান সময়ের রাজনীতিবিদরা সেই দর্শন কাজে লাগিয়ে দেশের কল্যাণে কাজ করে যাবেন, এ আশা করাটা মোটেও অমূলক নয়।