- কাজী ইমদাদ
১২ মার্চ
বাঙালির গর্বের, গৌরবের মাস মার্চ। এ মাসেই ঘোষিত হয় বাঙালীর স্বাধীনতা, বাংলাদেশ নামের একটি নতুন দেশের স্বাধীনতা। বঙ্গবন্ধুর ডাকে বাঙালি ঝাঁপিয়ে পড়ে মুক্তির মরনপণ লড়াইয়ে।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নির্দেশে সারা দেশের মানুষ অসহযোগ আন্দোলন করতে থাকে। পাশাপাশি চলছে স্বাধীনতা সংগ্রামের প্রস্তুতি। প্রতিটি গ্রাম-শহর, নগর বন্দরের মানুষ সংগঠিত হতে থাকে।
নাসির উদ্দিন ইউসুফ বাচ্চু বলেন, আমাদের মুল কাজটা ছিলো আমরা ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ এবং বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে অসহযোগ আন্দোলন চলাকালীন সময়ে আমরা বিভিন্ন পাড়া মহল্লায় কমিটি করেছিলাম। সেই কমিটির নাম ছিলো সংগ্রাম পরিষদ। সেই সংগ্রাম পরিষদের অধীনে রাতের বেলা পাহাড়া দেয়া হতো। আর সারা দিন মিছিলগুলো করা হতো। আমাদের মুল দায়িত্বটা ছিলো আসলে বিভিন্ন দোকানপাট যাতে লুটপাট না হয়। বিভিন্ন বাড়িঘরে যাতে আক্রমণ না হয়।
বাঙ্গালির আকাংখা আর মানসিক প্রস্তুতি আঁচ করতে পেরেছিলেন পাকিস্তানের বিরোধী দলীয় অবাঙালি নেতারাও। এদিন অবিলম্বে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করার দাবি জানান ওই নেতারা।
জমিয়তে উলামায়ে ইসলামীর সংসদীয় দলের নেতা মওলানা মুফতি মাহমুদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এক সভায় সেনাবাহিনীকে ব্যারাকে ফিরিয়ে নিয়ে দেশ থেকে সামরিক আইন প্রত্যাহারের দাবি জানানো হয়। আহ্বান জানানো হয় ২৫শে মার্চের আগেই ক্ষমতা হস্তান্তরের।
নাসির উদ্দিন ইউসুফ বাচ্চু বলেন, মানুষগুলো যখন মারা যায়, এদের দেহগুলো কিন্তু সবসময় পাওয়া যায় না। এদের নাম ঠিকানাও জানিনা। মগবাজার এলাকায় প্রায় ত্রিশ-চল্লিশজন একরাতে মারা গেছে। কারণ ওরা গুলি করছে মানুষও দৌড়ে গিয়ে ওদের ইট মারছে, পেট্রোল বোমা মারছে। লক্ষ লক্ষ লোক ঢাকার রাস্তায় মশাল নিয়ে মিছিল করছে। এবং স্লোগানটি কি- ‘জয় বাংলা, তোমার নেতা-আমার নেতা শেখ মুজিব, শেখ মুজিব’, ‘পদ্মা-মেঘনা-যমুনা, তোমার আমার ঠিকানা’, ‘বীর বাঙ্গালি অস্ত্র ধরো, বাংলাদেশ স্বাধীন করো’।
অসহযোগ আন্দোলনের প্রতি সমর্থন জানিয়ে ওইদিন শীতলক্ষ্যা নদীতে অনুষ্ঠিত হয় এক ব্যাতিক্রমি প্রতিবাদ, দীর্ঘ এক নৌ-মিছিল বের করে তৎকালিন পূর্ব পাকিস্তান অভ্যন্তরীন নৌ-শ্রমিক ফেডারেশন।