- সামসুদ্দোহা পান্না
বঙ্গবন্ধুর ডাকে সাড়া দিয়ে ২৮ মার্চ তীর, লাঠি, বল্লম, কুড়াল, দা নিয়ে ক্যান্টনমেন্ট দখল করতে যায় রংপুরের কয়েকটি গ্রামের মানুষ। ক্যন্টনমেন্টের কাছাকাছি পৌঁছালে তাদের লক্ষ্য করে ব্রাশ ফায়ার করে পাকিস্তানি সৈন্যরা। এভাবেই শহীদ হন গ্রামের কয়েক হাজার সহজ সরল মানুষ।
৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার ঘোষণায় সংঘবদ্ধ হয় রংপুর শহরের পাশের কয়েকটি গ্রামের হাজারো মানুষ। পাকিস্তানি সৈন্যদের হত্যা করতে রংপুর ক্যান্টনমেন্ট ঘেরাও করার পরিকল্পনা করে তারা। কৌশল হিসেবে প্রথম সারিতে রাখা হয় তীর চালানোয় পারদর্শি সাওতালদের। পরের সারিতে দা, কুড়াল, বল্লম হাতে রাখা হয় আর একটি দলকে। শেষের দিকে রাখা হয় রংপুরের বিখ্যাত লাঠিয়াল বাহিনীকে।
২৮ মার্চ সকাল থেকে রংপুর ক্যান্টমেন্টের চারদিকে অবস্থান নেয় এই বাহিনী। দুপুরের পর তারা এগিয়ে গেলে পাকিস্তানিরা ক্যান্টনমেন্টের এক পাশের গেট খুলে দেয়। গ্রামের এই সব সাধারণ মানুষ ভেতরে প্রবেশ করলে তাদের ব্রাশ ফায়ার করে হত্যা করা হয়।
নির্মম এ হত্যাকান্ডের ঘটনায় রংপুরের আন্দোলন নতুন গতি পায়। তৎকালীন রংপুর জেলা সদর, কুড়িগ্রাম নীলফামারি, গাইবান্দা মহকুমার প্রত্যেক থানার রেল লাইন তুলে ফেলে বিক্ষুদ্ধ জনতা। পুল কালভার্ট ভেঙ্গে, রাস্তা কেটে পাকিস্তানি সৈন্যদের জন্য প্রতিবন্ধকতা তৈরি করে।
২৪ এপ্রিল পাকিস্তানী সেনারা জনতার ভয়ে আতঙ্কিত হয়ে সৈন্য ও সমরাস্ত্র বাড়িয়ে দেয়। সম্মুখযুদ্ধে তাদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলে গেরিলা মুক্তিযোদ্ধারা।