বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রকৃত প্রতিরোধ যোদ্ধাদের মূল্যায়ন হচ্ছে না

- এখলাসুর রহমান 

চ্যানেল আই অনলাইনে ‘মুক্তিযোদ্ধা ও বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিরোধ যোদ্ধারা অবহেলিত কেন?’ শিরোনামের লেখাটি প্রকাশিত হলে এ বিষয়টি কর্তৃপক্ষের নজরে আসে। সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় হতে অনুদানের চিঠি যাওয়া শুরু হয়েছে। এই চিঠিতেও কিছু অনিয়ম ও পক্ষপাত দুষ্টতার কথা শোনা যাচ্ছে।

কারো কারো ভূমিকায় প্রতিরোধ যোদ্ধা নন এমন কয়েকজনের নামে চিঠি ইস্যু হয়েছে বলে জানা যায়। দেশ জুড়ে মুক্তিযোদ্ধা বনাম ভুয়া মুক্তিযোদ্ধার মতো প্রতিরোধ যোদ্ধাদের বেলায়ও তেমন বিব্রতকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হবে না তো? এ প্রশ্ন অনেকের। কতিপয় প্রভাবশালী ব্যক্তি যারা মুক্তিযোদ্ধা নন এমন ব্যক্তিদের মুক্তিযোদ্ধা বানিয়ে একটি চরম লজ্জাজনক পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছে।
 
বাংলাদেশে বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিবাদকারী প্রতিরোধ যোদ্ধাদের দাবি একটি স্বচ্ছ তালিকাভুক্তি। প্রতিরোধ যোদ্ধা পরিষদ নামে যে সংগঠনটি গড়ে উঠেছিল তারও কোন কার্যকারিতা নেই। প্রতিরোধ যোদ্ধাদের মধ্যে যারা শহীদ হয়েছেন তারা পাননি শহীদের মর্যাদা। শহীদ পরিবারেরও খোঁজ নেন না কেউ। খোঁজ নেন না বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী নিজেও।

কথা হলো বীর মুক্তিযোদ্ধা ও প্রতিরোধ যোদ্ধা কবিরুল ইসলাম বেগের সাথে। তিনি বর্তমানে ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও হালুয়াঘাট মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার। তিনি বলেন,আমি একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে বঙ্গবন্ধু হত্যাকে মেনে নিতে পারিনি। যার ডাকে আমরা যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করেছি তার এই হত্যাকাণ্ডকে আমরা কিভাবে মেনে নেই?

আমরা তখন কাদের সিদ্দিকীর নেতৃত্বে প্রতিরোধ যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ি। যদিও কাদের সিদ্দিকীর বর্তমান ভূমিকার সাথে আমার দ্বিমত আছে কিন্তু তৎকালীন সময়ে তার উজ্জ্বল ভূমিকা ছিল। ১৯ মাস ব্যাপী আমাদের প্রশিক্ষণ ও প্রতিরোধ যুদ্ধ দুটোই চলেছে। কাদের সিদ্দিকী হেডকোয়ার্টার হতে অন্যত্র কোথাও গেলে তিনি আমাকে সর্বাধিনায়কের দায়িত্ব দিয়ে যেতেন। সে যুদ্ধে আনুমানিক ১৫০জন প্রতিরোধ যোদ্ধা শহীদ হয়েছেন। সেই শহীদ পরিবারের খবর কেউ নেয় না। আমরা যারা বেঁচে আছি প্রতিরোধ যোদ্ধা হিসেবে আমাদেরও নেই কোন স্বীকৃতি।

তিনি বলেন, ১৯৭৫ সালে আমি যখন প্রতিরোধ যুদ্ধে তখন আমার বাবা ও ভাই গ্রেফতার হন। আমার স্ত্রীও গ্রেফতার হতে পারে এই আশংকায় সাথী সহযোদ্ধারা তাকে ভারতে নিয়ে যায়।

কবিরুল ইসলাম বেগ আরও বলেন, ইন্দিরা গান্ধীর পরে মুরারজী দেশাই যখন ভারতের প্রধানমন্ত্রী হল তখন আমরা ভারতের সহানুভূতি হারাই। তৎকালীন জিয়া সরকার মুরারজী দেশাইয়ের সাথে মিত্রতা গড়ে তোলে। ১৯৭৭ সালের শেষদিকে আমি দেশে ফিরি। দেশে ফিরতেই ডিজিএফআই আমাকে ধরে নিয়ে যায়। ৬ মাস অন্তর অন্তর তারা আমাকে ডিটেশন দিতো। অতঃপর হাইকোর্টের রিটে আমি রেহাই পাই।

নালিতাবাড়ি উপজেলার চকপাড়া গ্রামের আব্দুল মমিন মুন্সীর ছেলে প্রতিরোধ যোদ্ধা হায়দার আলী। তিনি বর্তমানে একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক। তিনি বলেন, ১৯৮১ সালে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা যখন দেশে ফিরেন তখন আমরা তার সাথে কলকাতা বিমানবন্দরে দেখা করি। আমরা প্রতিরোধ যোদ্ধারা তাকে অভিবাদন জানাই ও তার বাংলাদেশ যাত্রার শুভ কামনা করি।
 
হায়দার আলী বলেন, আমি বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিবাদকারী প্রতিরোধ যোদ্ধা হিসেবে গর্বিত। আমরা বারোমারী ক্যাম্পের উত্তরে বেদেরকোনা গ্রামে ক্যাম্প স্থাপন করেছিলাম। সারাদেশেই প্রতিরোধ যোদ্ধারা অবহেলিত ও স্বীকৃতিবঞ্চিত রয়েছে। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে যারা প্রতিরোধ যুূদ্ধে যেতো তাদের জন্য ভারতের মেঘালয়ে চান্দুবুই নামক স্থানে একটি অতিথি ব্যারাক ছিল।

অতিথি ব্যারাক হতে যাচাই বাছাইয়ের পরেই তবে হেডকোয়ার্টারে নেয়া হতো।

প্রতিরোধ যোদ্ধা নূরুল হকের বাড়ি সুনামগঞ্জ জেলার ধরমপাশা উপজেলার কালাগড় গ্রামে। তিনি মুক্তিযোদ্ধা ও প্রতিরোধ যোদ্ধা দুটোই ছিলেন।

তিনি বলেন, আমাদের বাড়ি ছিল নেত্রকোনা জেলার শ্যামগঞ্জে। মুক্তিযোদ্ধা ছিলাম বলে রাজাকাররা শ্যামগঞ্জ বাজারের আমাদের দোকান লুট করে নিয়ে যায়। এরপর স্বাধীনতার পরে আমি সপরিবারে সুনামগঞ্জ জেলার ধরমপাশা উপজেলায় চলে আসি।
 
বঙ্গবন্ধু হত্যার পর একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে মনে হল যার ডাকে মুক্তিযুদ্ধে গেলাম তিনিই যখন নাই আমার আর বেঁচে থাকার অধিকার নাই। বঙ্গবন্ধু হত্যাকারী তৎকালীন সরকারকে আমি মেনে নিতে পারিনি। তাই নেমে গেলাম প্রতিরোধ যুদ্ধে। মহিষখলা, বাঙ্গাল ভিটা ও বেতগড়ার পশ্চিমে বিডিআরের সঙ্গে আমাদের সংঘর্ষ হয়। নেত্রকোনা জেলার কলমাকান্দা উপজেলার পাঁচগাঁওয়ের যুদ্ধে মারা যান শ্যামগঞ্জের রজব আলী, আব্দুল আজিজ ও নেত্রকোণার ঝন্টু। প্রতিরোধ যোদ্ধারা যুদ্ধ করতে করতে পাঁচগাঁও বর্ডার অবজারভেশন পোস্টে (বিওপি) ঢুকে পরে।

‘আমি প্রতিরোধ যোদ্ধা ছিলাম বলে আমার পিতা হাছেন আলী মুন্সী ও বড় ভাই ক্বারী আব্দুর রহমানকে অবৈধ সরকারের বাহিনী ধরে নিয়ে যায়। তাদেরকে নির্মম নির্যাতন করে। প্রতিরোধ যোদ্ধা হওয়ার কারণে আমি বাবার কুলাঙ্গার সন্তানে পরিণত হই। আত্মরক্ষার জন্য বাবা বাধ্য হয়ে আমাকে ত্যজ্যপুত্র করেন। শহীদ প্রতিরোধ যোদ্ধা আব্দুল আজিজের সাথে একটি মেয়ের গভীর প্রেম ছিল। প্রেমিকার নিকট হতে তার বিদায় ও যুদ্ধযাত্রার দৃশ্যটি এখনও আমার চোখে ভাসে। মেয়েটি বলেছিল,যাও, যুদ্ধশেষে বিজয়ীর বেশে ফিরে এসো। না,আব্দুল আজিজ আর ফিরতে পারেনি।’

এই স্মৃতিচারণে নূরুল হকের চোখ ছলছল করে ওঠে। তিনি আরও বলেন, যে হত্যার প্রতিবাদে এই জীবন ক্ষয় আমরা এই ভেবে আত্মতৃপ্ত যে বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার হয়েছে।

তিনি বলেন, প্রতিরোধ যোদ্ধাদের স্বীকৃতি ও মর্যাদা প্রতিষ্ঠার জন্য প্রতিরোধ যোদ্ধা পরিষদকে সক্রিয় করা দরকার।

বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিবাদকারী অশোক তালুকদারের গ্রামের বাড়ি নেত্রকোনা জেলার কলমাকান্দা উপজেলার বরই উনধ গ্রামে।

তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু হত্যার পরে খুনী সরকারের মিডিয়ায় প্রচার করা হয় এই বলে যে স্বৈরাচারী সরকারকে উৎখাত করা হয়েছে। বাঙালির অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার পরে তৎকালীন নেতারা নিশ্চুপ হয়ে যায়। বঙ্গবন্ধু সরকারের ৩৩০ জন এমপির মধ্যে ২০০ জনই খুনী মুশতাক সরকারে যোগ দেয়। তবে পাকিস্তান প্রাদেশিক পরিষদের সাবেক সদস্য ডাঃ আখলাকুল হোসেইন আহমেদ নেত্রকোনার মোহনগঞ্জ উপজেলার ডিঙ্গাপুতার হাওর পাড়ে মল্লিকপুর গ্রামে দেশের প্রথম আনুষ্ঠানিক শোকসভা আয়োজনের নেতৃত্ব দেন।

তিনি বলেন, ১৯৭৬ সালে একযোগে ১৪০টি বিওপিতে আক্রমণের নির্দেশনা এলো। ১৯ জানুয়ারি সুকোমার সরকারের নেতৃত্বে আমরা চারটি থানা হালুয়াঘাট,দূর্গাপুর,কলমাকান্দা ও নালিতাবাড়িতে আক্রমন করি। প্রত্যেকটি থানা আক্রমনে ১৭/১৮ জনের দল ও প্রত্যেক বিওপি আক্রমনে ৪/৫ জনের দল কাজ করে। কলমাকান্দা থানার ওসি আশরাফ আলী খানকে আমরা ধরে নিয়ে যাই। তৎকালীন সংবাদ মাধ্যমে তখন আমাদের দুষ্কৃতিকারী হিসাবে প্রচার করা হয়। ১৯৭৬ সালে বঙ্গবন্ধু আমলের সাবেক এমপিদের নিয়ে বিপ্লবী সরকার গঠনের চিন্তা করি।
 
যশোরের চিত্তরঞ্জন সুতার এমপি এতে সম্মত হন। বঙ্গবন্ধু আমলের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুল মান্নানের মগবাজারের বাসায় এবিষয়ে বৈঠক হয়। এতে উপস্থিত ছিলেন, মোহনগঞ্জের আখলাকুল হোসেইন, গৌরীপুরের হাতেম আলী, ফুলপুরের শামসুল হক (গোঁয়ার শামসু হিসেবে পরিচিত, ময়মনসিংহের আঞ্চলিক ভাষায় তাকে গাঁইররা শামসু বলা হয়) পূর্বধলার মোশারফ হোসেন ও আনোয়ারুল কাদির প্রমুখ।

অতঃপর আব্দুল মান্নান আমাদেরকে সুরঞ্জিত সেন গুপ্তের বাসায় পাঠান। আমরা সেন বাবুর বাসায় ১৫দিন ছিলাম। তিনি আমাদেরকে কিছু হাতখরচা দিতেন, এতেই চলতাম।

অশোক তালুকদার বলেন, ১৯৭৬ সালে আমি গ্রেফতার হই। সেনাসদস্যরা তখন আমাকে মেজর জিয়ার সামনে নিয়ে যায়। জিয়া বললেন,কখন সারেন্ডার করলেন? আমি উদ্যত কন্ঠে বলি,সারেন্ডার করিনি, তোমার সেনাবাহিনী আমাকে গ্রেফতার করেছে। তখন হতে একমাসের বেশি সময় আমাকে আটকে রাখে। হাজার পাওয়ারের তিনটা বাল্ব আমার চোখের সামনে জ্বালিয়ে রাখত।তারা আমাকে নির্মমভাবে শারীরিক নির্যাতনও করে। অতঃপর ময়মনসিংহ জেলখানায় পাঠিয়ে দেয়।

তিনি বলেন, ১৯৭৮ সালে হাইকোর্টে রিটের মাধ্যমে আমি ছাড়া পাই। সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর হতে যে অনুদানের চিঠি এসেছে তা আমি পাইনি। সাবেক পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রী দীপংকর তালুকদারের মাধ্যমে আমার প্রথম মেয়ের বিয়ে উপলক্ষে ২৫,০০০টাকা সাহায্য পেয়েছিলাম। দীপংকর তালুকদার নিজেও একজন বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিবাদকারী প্রতিরোধ যোদ্ধা ছিলেন। অপর মেয়ের বিয়ে উপলক্ষে দীপংকর তালুকদার নিজে আরও ৫০,০০০ টাকা দিয়েছেন।

অশোক তালুকদার আক্ষেপ করে বলেন, ভাল অবস্থানে থাকা কিছু সাথী সহযোদ্ধা অন্যদের সুযোগ হরন করছেন।

সুনামগঞ্জের হাওর পাড়ের প্রতিরোধ যোদ্ধা সুকেশ চন্দ্র সরকার। তার বাবার নাম সুরেন্দ্র চন্দ্র সরকার। গ্রামের নাম: রাঙ্গামাটি, থানা: মধ্যনগর, জেলা: সুনামগঞ্জ। তিনি ১৯৭১ সালে কমিউনিষ্ট গেরিলাদের সাথে যুদ্ধ করেছেন।

তিনি আরও বলেন, ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে আমাদের এমপি সৈয়দ রফিকুল হকের সুপারিশকৃত একটি অনুদানের আবেদন মানু মজুমদারের কাছে জমা দিই।

মানু মজুমদার আমাদের সহযোদ্ধা ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে থাকেন তাই আশা ছিল সুফল পাবো। আশা বিফল হলো। এও শুনছি তিনি তার ইচ্ছেমত তার পছন্দ হলে আবেদন গুলো অগ্রসর করেন অথবা ফেলে রাখেন। এখন শুনছি তিনি যে প্রতিরোধ যোদ্ধা ছিলেন তা বলতেও রাজী হন না। আমাদের দুঃখ দুর্দশার খোঁজ খবর নেন মোহনগঞ্জের মানশ্রী গ্রামের স্বপন চন্দ। তিনি আমাদের কথা গুলো মিডিয়ায় প্রচার করতে সাংবাদিকদের সাথে যোগাযোগ করছেন। 
 
নেত্রকোনা জেলার কলমাকান্দা দাকিনাইল গ্রামের গজেন্দ্র ভৌমিকের ছেলে জিতেন্দ্র ভৌমিক(৬৯)। তিনি দূর্গাপুর উপজেলা ছাত্র লীগের সভাপতি ছিলেন। তিনি এখন বাস্তুহারা হয়ে অন্যের বাড়িতে থাকেন। ২০১০ সালে তিনি বাংলাদেশে আসেন। তার স্ত্রী এখনও ভারতে রয়ে গেছেন।

বৃহত্তর ময়মনসিংহের টাঙ্গাইলের মধুপুর থানার বেদুরিয়া গ্রামের জঙ্গলে বসবাস করছেন মুক্তিযোদ্ধা ও প্রতিরোধ যোদ্ধা আলবার্ট মারাক (৬৩)। একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে তিনি প্লাটুন কমান্ডার ও তার কোম্পানী কমান্ডার ছিলেন ডা.উইলিয়ামস। তিনি বলেন,আমার ছোট ভাই নরবার্টও মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন।পরে সেও বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিবাদে প্রতিরোধ যুূদ্ধে যোগ দেয়। নরবার্ট ভারতে মারা যান শিলিগুঁড়িতে তার দাফন হয়। মারাক বলেন,১৯৭৫ সালে কাদের সিদ্দিকীর সাথে আমি প্রতিরোধ যুদ্ধে যোগ দিই।

সম্প্রতি প্রতিরোধ যোদ্ধাদের অনুদানের চিঠি প্রসঙ্গে বলেন,আমি মুক্তিযোদ্ধা হিসাবে ভাতা পাচ্ছি। অনেক সাথী সহযোদ্ধা কিছুই পাচ্ছেনা। তারা চরম কষ্টে আছে আমার প্রত্যাশা তারা যেন অনূদান পায়। আমার প্রত্যাশা গ্রাম গঞ্জের প্রতিরোধ যোদ্ধারা স্বীকৃতি পাক ও মাসিক ভাতা পাক।

তিনি বলেন, প্রায় ৬০০ জন প্রতিরোধ যোদ্ধা এখনও ভারতের আসাম,পশ্চিম বঙ্গ, মেঘালয় ও ত্রিপুরা রাজ্যে বসবাস করছে। প্রতিরোধ যোদ্ধাদের সাথে কথা বলে জানা যায়, ৪০০০ অস্ত্রধারী প্রতিরোধ যোদ্ধার মধ্যে প্রায় ৩৭০০ জনই ছিল বৃহত্তর ময়মনসিংহের ও হাওর পাড়ের। নামীদামী নেতাদের মধ্যে কমসংখ্যকই প্রতিরোধ যুদ্ধে গেছে। তবে যারা গেছেন তাদের অনেকেই আওয়ামী লীগের মূলধারা হতে ছিটকে পড়েছেন। যেমন লতিফ সিদ্দিকী, কাদের সিদ্দিকী ও সুলতান মোহাম্মদ মনসুর। প্রতিরোধ যোদ্ধারা চায় মূল্যায়ন ও স্বীকৃতি। বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার হতে পারলে এ হত্যার প্রতিবাদকারীরা কেন রাষ্ট্রীয় সম্মান পাবেনা?

তাদের দাবি অনুদান প্রদানের স্বচ্ছ প্রক্রিয়া। কেউ কেউ স্বেচ্ছাচারিতা শুরু করে দিয়েছে। মুক্তিযোদ্ধাদের মাঝে যে কারনে ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা অনুপ্রবেশ করেছে প্রতিরোধ যোদ্ধাদের অনূদানের চিঠি প্রেরণেও সেরকমটি দেখা যাচ্ছে। তাই প্রতিরোধ যোদ্ধাদের দাবি শুরুতেই একটি স্বচ্ছ প্রক্রিয়া। স্বাধীনতা দিবস ও বিজয় দিবসে মুক্তিযোদ্ধাদের মূল্যায়ন করা হয়।

আর ১৫ আগস্টে বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিবাদকারী শহীদ প্রতিরোধ যোদ্ধা ও জীবিত প্রতিরোধ যোদ্ধাদের কেন মূল্যায়ন করা হবে না? বঙ্গবন্ধু হত্যাকারীদের দেশে ফিরিয়ে আনার যদি চেষ্টা হতে পারে তবে বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিবাদকারীদের কেন নয়? কেন তারা ভারতে মানবেতর জীবনযাপন করছে।

SUMMARY

287-1.jpg