উদিসা ইসলাম
‘কয়েকটি পত্রিকা কিছু সংবাদ প্রকাশ করেছে, যা সম্পূর্ণ অসত্য ও ভিত্তিহীন। এর ফলে আমাদের বন্ধু রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে ভুল বোঝাবুঝির সৃষ্টি হযয়েছে। এই গণবিরোধী কার্যকলাপের বিরুদ্ধে সচেতন হতে হবে’, ১৯৭২ সালের ১৯ জুন জনগণকে সচেতন হওয়ার আবেদন জানিয়ে এসব কথা বলেন তৎকালীন তথ্য ও বেতারমন্ত্রী মিজানুর রহমান চৌধুরী।
তিনি বলেন, ‘সংবাদপত্রের স্বাধীনতা হচ্ছে গণতন্ত্রের পূর্বশর্ত এবং সংবাদপত্রের স্বাধীনতার জন্য আওয়ামী লীগ সংগ্রাম করেছে। দৈনিক নবযুগ পত্রিকা আয়োজিত স্থানীয় প্রতিনিধিদের এক সম্মেলনে বক্তৃতা দিতে গিয়ে তিনি একথা বলেন। তথ্যমন্ত্রী আরও বলেন, ‘বর্তমান সরকার প্রেস ট্রাস্ট চালু করবেন না, বা দেশের পরিত্যক্ত সংবাদপত্রের মালিকানা গ্রহণ করবেন না। পরিত্যক্ত সংবাদপত্রের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার নিশ্চয়তার জন্য পরিচালনার প্রতি লক্ষ্য রাখবে।’ সততার সঙ্গে জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষা, তাদের প্রয়োজন, অভাব, অভিযোগ ফুটিয়ে তোলার জন্য সাংবাদিকদের আবেদন জানান তিনি। জাতির বৃহত্তর স্বার্থে সাংবাদিকদের কাজই সমাজকে সুস্থ করে তুলতে পারে বলে তিনি উল্লেখ করেন। সংবাদপত্রের সুস্থ ও গঠনমূলক সমালোচনায় প্রতি অভিনন্দন জানান এবং একইসঙ্গে দুঃখ প্রকাশ করে মিজানুর রহমান চৌধুরী বলেন, ‘এসময় কিছু সংবাদপত্র সরকারের কার্যাবলী বিশ্বস্ততার সঙ্গে প্রকাশ করছে না।’
১৯ জুনের দৈনিক পূর্বদেশ
আর মাত্র কয়েক ঘণ্টা
দেশ ও জাতির শত্রু, মুনাফাখোর, কালোবাজারি মজুতদারদের দিন ফুরিয়ে এসেছে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ঘোষিত ১৫ দিনের সময় আগামী ২২ জুন শেষ হতে চলেছে। এরপর দেশ ও জাতি এই শত্রুদের ক্ষমা করবে না। গত ৭ জুন ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আয়োজিত জনসভা থেকে অসাধু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে শেষ হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন। কিন্তু দৈনিক পূর্বদেশের ১৯ জুনের প্রতিবেদন বলছে, বাজারদর দেখে মনে হচ্ছে— বঙ্গবন্ধুর হুঁশিয়ারি স্বাভাবিক শত্রুদের কানে পৌঁছায়নি। তা না-হলে চালের দর আবারও বাড়বে কেন, প্রশ্ন করে বলা হয়— দুদিন ধরে যে চালের দাম ছিল ৬২ টাকা প্রতিমণ সেটি ১৯৭২ সালের ১৯ জুন আল্টিমেটামের মাত্র তিন দিন আগে ঢাকার বাজারে বেড়ে ৬৭ টাকায় পৌঁছেছে। একমাত্র কেরোসিন তেল স্বাভাবিক দরে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া দেশ শত্রুমুক্ত হওয়ার পর কাপড়ের দাম দ্বিগুণ হয়ে গেছে, বর্তমানেও সেই উচ্চমূল্য বজায় রয়েছে।
১৯ জুনের দৈনিক পূর্বদেশ
গৃহ নির্মাণে অর্থ দিয়েছে ভারত
গৃহ নির্মাণে আরও এক কোটি ৩৬ লাখ টাকা দিচ্ছে ভারত। বাংলাদেশে গৃহ নির্মাণের সরঞ্জাম সরবরাহের জন্য তারা এই টাকা বরাদ্দ করেছে। ভারতীয় তথ্য বিভাগের এক প্রেস রিলিজে বলা হয়, ইতোপূর্বে বাংলাদেশ থেকে আগত উদ্বাস্তুদের আশ্রয় স্থান নির্মাণের জন্য ১৩ কোটি ৯০ লাখ টাকা এখনও মজুত রয়েছে। তার বাইরে এই অতিরিক্ত অর্থ বরাদ্দ করা হলো। এর আওতায় সীমান্ত জেলা পশ্চিমবঙ্গ, আসাম, মেঘালয় এবং ত্রিপুরা থেকে বাঁশ সরবরাহ করা হবে।
বাংলাদেশের জেলা কর্তৃপক্ষ ভারতীয় সীমান্ত এলাকার কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে তাদের নির্দিষ্ট প্রয়োজন জানাবেন এবং কোন সরবরাহ কেন্দ্রে সরবরাহ করতে হবে তা জানিয়ে দেবেন। সাহায্যের জন্য যে পোশাক-পরিচ্ছদ সরবরাহ করা হয়েছে, তা অংশবিশেষ থেকে ২২ হাজার ৩৭০টি পোশাক-পরিচ্ছদ এ মাসের প্রথম সপ্তাহে বিমানযোগে কলকাতা থেকে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে বলেও সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।
সুত্র: বাংলা ট্রিবিউন, প্রকাশিত : জুন ১৯, ২০২০