উদিসা ইসলাম
১৯৭২ সালে দেশ গড়ার সংগ্রামে বঙ্গবন্ধুর পাশে বাংলাদেশ ছাত্রলীগসহ বেশকিছু সংগঠন আস্থার সঙ্গে উপস্থিত ছিল। বঙ্গবন্ধুও ছাত্রনেতা এবং সাধারণ শিক্ষার্থীদের জন্য স্থান করে দিতে কখনো কার্পণ্য করেননি। ১৯৭২ সালে বিভিন্ন ছাত্রসংসদ নির্বাচন, শিক্ষার্থীদের বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে সাক্ষাত এবং তাদের কথপোকথনের যে প্রতিবেদন বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে সেসব থেকেই এর প্রমাণ মেলে।
কেবল কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী নয়, তৃণমূলের বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও সাক্ষাতের সুযোগ পেতেন। ১৯৭২ সালের ১৪ জুন ময়মনসিংহ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের নবনির্বাচিত কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ ও হল ছাত্র সংসদের ছাত্রলীগ নেতারা বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে সাক্ষাত করেন এবং তাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিষয়ে অবহিত করেন। বঙ্গবন্ধু অত্যন্ত আন্তরিকতার সঙ্গে প্রতিনিধিদের কথা শোনেন এবং তাদের যাতায়াতের সুবিধার জন্য দুটি গাড়ির ব্যবস্থা করার আশ্বাস দেন। বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় সংসদের সহ-সভাপতি মজিবুর রহমান এই সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের আলোকচিত্রশিল্পী নায়েব উদ্দিনের বিধ্বস্ত বাংলা ও সোনার বাংলা গড়ো আলোকচিত্রের একটি অনুলিপি উপহার দেন।
সামাজিক শত্রু দমন পক্ষ সামনে
এদিকে ২২ জুন সামাজিক শত্রু দমন পক্ষ পালনের প্রস্তুতি চলছে। বাংলাদেশ ছাত্রলীগের (সিদ্দিকী সমর্থিত) কেন্দ্রীয় সংসদের এক জরুরি বৈঠকে গৃহীত এক প্রস্তাবে বলা হয়, ২২ জুন থেকে বাংলাদেশের সামাজিক শত্রু দমন পক্ষ পালনের যে সিদ্ধান্ত ঘোষণা করা হয়েছে তাকে সফল করার জন্য ছাত্রলীগের সংস্থাকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। মুজিববাদের ভিত্তিতে ভবিষ্যত সংবিধান তৈরি করতে হবে উল্লেখ করে বৈঠকে বলা হয়, গণতন্ত্র-সমাজতন্ত্র-ধর্মনিরপেক্ষতা ও জাতীয়তাবাদ তথা মুজিববাদের ভিত্তিতেই দেশের ভবিষ্যত সংবিধান প্রণয়ন করতে হবে। কেন্দ্রীয় অফিসে অনুষ্ঠিত এই সভায় সভাপতিত্ব করেন ছাত্রলীগের সভাপতি নুরে-আলম সিদ্দিকী।
বৈঠকে দেশের বর্তমান রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও শিক্ষামূলক বিষয় সম্পর্কে দীর্ঘ আলোচনা হয়। দলটির সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য পরিবেশন করা হয়েছে বলে পরের দিনের পূর্বদেশে পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। সংবিধানকে সর্ব কাজের উপযোগী করে প্রণয়ন করার তাগিদ জানিয়ে ওই প্রস্তাবে আরও বলা হয়, সমাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠার পথে অন্তরায় হতে পারে এমন কোনও ধারা ভবিষ্যত সংবিধানে সংযোজিত হওয়া উচিত নয়।
অসুস্থ তোফায়েল আহমেদের পাশে বঙ্গবন্ধু
অসুস্থ তোফায়েল আহমেদের পাশে বঙ্গবন্ধু
প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক সচিব তোফায়েল আহমেদ হলি ফ্যামিলি হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। ১৯৭২ এর ১৪ জুন বিকালে প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তাকে দেখতে হাসপাতালে যান। তিনি তার শারীরিক অবস্থার খোঁজ খবর নেন এবং চিকিৎসকরা জানান, তিনি সুস্থ হয়ে উঠছেন।
পাটের বৈদেশিক দাম স্থিতিশীল রাখার ব্যবস্থা
পাটের বৈদেশিক দাম স্থিতিশীল রাখার ব্যবস্থা
রফতানির লক্ষ্যমাত্রা নিশ্চয়তা বিধান এবং এর অনুসূচি বজায় রাখতে পাটের রফতানি মূল্য স্থিতিশীল করার উদ্দেশ্যে বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষ কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করছে বলে জানানো হয়। বোর্ডের চেয়ারম্যান এন এল রহমান সাংবাদিকদের কাছে এই কথা বলেন। চেয়ারম্যান বলেন যে ১৫ থেকে ১৬ লাখ বেল পাটের কোনও সন্ধান পাওয়া যায় নাই। এগুলোকে হিসাব বহির্ভূত তালিকায় ফেলা হয়েছে কিন্তু তা সত্ত্বেও পাট রফতানি করপোরেশন ১৯৭২-৭৩ সালে ৩৫ লাখ বেল পাট রফতানির আশা রাখছে। কাঁচা পাট ব্যবসা জাতীয়করণ করায় বিদেশি ক্রেতাদের মধ্যে যে ভুল বোঝাবুঝির সৃষ্টি হচ্ছিল সেটিকে নিরসন করতেই সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। উদ্বিগ্ন হবার কিছু নেই উল্লেখ করে তিনি বলেন, বাণিজ্যমন্ত্রী ইতোমধ্যে এটিকে শুধুমাত্র কেন্দ্রীয়করণ বলে আখ্যায়িত করেছেন। ফলে উদ্বিগ্ন হবার অবকাশ নেই। বোর্ডের প্রধান আরও বলেন, জাতীয়করণ অথবা কেন্দ্রীয়করণ যে নামেই আখ্যায়িত করা হোক না কেনও এর ফলে একাধিকভাবে বিদেশি খরিদ্দার লাভবান হবেন।
সুত্র: বাংলা ট্রিবিউন প্রকাশিত : জুন ১৪, ২০২০