মৈত্রী অটুটের বাণী নিয়ে এলেন পশ্চিম বাংলার মুখ্যমন্ত্রী

উদিসা ইসলাম

বাংলাদেশ ভারতের মধ্যকার মৈত্রী, বন্ধুত্ব ও বিশ্বাস অটুটের বাণী নিয়ে বাংলাদেশ সফরে আসেন ভারতের পশ্চিম বাংলার মুখ্যমন্ত্রী সিদ্ধার্থ শঙ্কর রায়। তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সঙ্গে গণভবনে সাক্ষাৎ করেন। ১৯৭২ সালের ১০ জুন বাংলাদেশ সফরে এসে তিনি জানান, বাংলাদেশ ও দেশে মানুষদের শ্রদ্ধা জানানোই প্রধান এই সফরের প্রধান উদ্দেশ্য।

মুখ্যমন্ত্রী সিদ্ধার্থ শঙ্কর ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে বন্ধন অটুট থাকবে আশা প্রকাশ করে বলেন, 'কোনও ষড়যন্ত্র করেই কুচক্রী মহল দুই দেশের সম্পর্কে ফাটল ধরাতে পারবে না।'

সস্ত্রীক সিদ্ধার্থ শঙ্কর দুদিনের সফরে তেজগাঁও বিমানবন্দরে এসে পৌঁছালে সেখানে অপেক্ষমান সাংবাদিকদের উদ্দেশে তিনি আরও বলেন, 'প্রথম থেকেই বাংলাদেশের মুক্তিসংগ্রামে ভারত সমর্থন দিয়ে আসছে। নীতিগত কারণ ছাড়া আর কোনও কারণে ভারত বাংলাদেশের সংগ্রামকে সমর্থন দেয়নি। ভারতের পররাষ্ট্র নীতির ভিত্তিতেই এই সমর্থন দেওয়া ও তা বাস্তবায়নে কাজ করা।'

ভারত বাংলাদেশের মাছসহ অন্যান্য ব্যবসা চালিয়ে অর্থনৈতিক শোষণ অব্যাহত রাখবে বলে কোনও কোনও স্বার্থান্বেষী মহলের বক্তব্য সম্পর্কে মৃদু হেসে তিনি বলেন, 'আমরা মাছ চাইনে, আমরা বন্ধুত্ব কামনা করি। সমালোচেকদের মাছ নিয়ে সন্তুষ্ট থাকার আহ্বান জানান সিদ্ধার্থ। তিনি আরও জানান, শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য তিনি বাংলাদেশ সফরে এসেছেন।

  

পশ্চিম বাংলার এই মুখ্যমন্ত্রী সেদিন তেজগাঁও বিমানবন্দরে পৌঁছালে তাকে সম্মাননা জানানো হয়। তাকে স্বাগত জানাতে তৎকালীন তথ্যমন্ত্রী মিজানুর রহমান চৌধুরী, আইনমন্ত্রী ড. কামাল হোসেন, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জিল্লুর রহমান বিমানবন্দরে উপস্থিত ছিলেন বলে পরের দিনের পূর্বদেশ পত্রিকায় প্রকাশ করা হয়। তাকে অভ্যর্থনা জানায় আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক বাহিনী। তারা সিদ্ধার্থ শঙ্করকে গার্ড অব অনার প্রদান করে।

বিমানবন্দরে কিছু সময় অতিবাহিত করার পর তিনি বঙ্গভবনে যান। রাষ্ট্রপতি বিচারপতি আবু সাঈদ চৌধুরীর অতিথি হিসেবে সেখানে অবস্থান করেন। সিদ্ধার্থ শঙ্কর ১০ জুন বিকালে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুস সামাদের সঙ্গে তার দফতরে সাক্ষাৎ করেন। তার সঙ্গে বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার সুবিমল দত্ত উপস্থিত ছিলেন। এদিন তিনি সস্ত্রীক গণভবনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।

  

কী হয়েছিল কুষ্টিয়ায়, তদন্ত হবে

কুষ্টিয়ায় গুলি বিনিময়ে পুলিশসহ বেশকয়েকজন নিহতের ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। ১০ জুন বাসস এই তদন্ত কমিটির সংবাদ প্রকাশ করে। তারা জানায়, কমিটিকে আগামী ১৫ কার্য দিবসের ভেতর তদন্ত প্রতিবেদন পেশ করতে বলা হয়েছে। কুষ্টিয়া জেলা দায়রা জজের নেতৃত্বে আরও চারজন সদস্য কমিটিতে কাজ করার কথা খবরে জানানো হয়। বাকিরা সবাই আইনজীবী।

দালাল আইনে প্রথম বিচার সম্পন্ন

১৯৭২ সালের ৮ জুন রাজাকার চিকন আলীর যুদ্ধাপরাধের বিচার সম্পন্ন হয়। কয়দিন পর ১১ জুনের দেশের সব পত্রিকার প্রধান শিরোনাম ছিল এটি। দেশ স্বাধীন হওয়ার ৬ মাসের মধ্যে দালাল আইনে প্রথম রাজাকার চিকন আলীর বিচার সম্পন্ন হয়। ১৯৭২ সালের ১১ জুন দৈনিক বাংলায় প্রধান শিরোনাম ছিল 'দালালির দায়ে মৃত্যুদণ্ড'। পূর্বদেশের শিরোনাম ছিল, 'রাজাকার চিকন আলীকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে।' কুষ্টিয়ার দায়রা জজ ও বিশেষ ট্রাইব্যুনালের সদস্য রবীন্দ্র কুমার বিশ্বাস ৮ জুন রাজাকার চিকন আলীর বিরুদ্ধে এই রায় দেন। কুষ্টিয়ার মিরপুর গ্রামের চিকন আলীর বিরুদ্ধে ’৭১ সালের ১৯ অক্টোবর একই গ্রামের ইয়াজউদ্দিনকে গুলি করে মারার অভিযোগ ছিল।

সুত্র: বাংলা ট্রিবিউন, প্রকাশিত : জুন ১০, ২০২০ 

SUMMARY

2724-২.jpg