৭ মার্চ: মহাকাব্যিক ভাষণের দিন

ঐতিহাসিক ৭ মার্চ আজ। ১৯৭১ সালের এই দিনে ঢাকার তৎকালীন রেসকোর্স ময়দানে স্বাধীনতাকামী বাঙালির অবিসংবাদিত নেতা, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যে ঐতিহাসিক ভাষণটি দিয়েছিলেন, সেটি হয়ে আছে পৃথিবীর সর্বকালের সবচেয়ে প্রেরণা জাগানিয়া ভাষণগুলোর অন্যতম।

সমগ্র জাতিকে স্বাধীনতার মন্ত্রে উজ্জীবিত করতে এ দিন বঙ্গবন্ধু বজ্রকণ্ঠে ঘোষণা দিয়েছিলেন, 'এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম।'

বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ১১০৮ শব্দের এবং ১৮.৩১ সেকেন্ডের এই ভাষণটিকে বলা হয় বাঙালির স্বাধীনতা ঘোষণার অলিখিত দলিল।

 
কেমন ছিল সেদিনের আবহ? কবি নির্মলেন্দু গুণের 'স্বাধীনতা, এই শব্দটি কীভাবে আমাদের হলো' কবিতায় দারুণভাবে ফুটে আছে সেটি।

গুণ লিখেছেন,

"একটি কবিতা লেখা হবে তার জন্য অপেক্ষার উত্তেজনা নিয়ে
লক্ষ লক্ষ উন্মত্ত অধীর ব্যাকুল বিদ্রোহী শ্রোতা বসে আছে
ভোর থেকে জনসমুদ্রের উদ্যান সৈকতে: 'কখন আসবে কবি'?

শত বছরের শত সংগ্রাম শেষে,
রবীন্দ্রনাথের মতো দৃপ্ত পায়ে হেঁটে
অতঃপর কবি এসে জনতার মঞ্চে দাঁড়ালেন।
তখন পলকে দারুণ ঝলকে তরীতে উঠিল জল,
হৃদয়ে লাগিল দোলা, জনসমুদ্রে জাগিল জোয়ার
সকল দুয়ার খোলা। কে রোধে তাঁহার বজ্রকন্ঠ বাণী?
গণসূর্যের মঞ্চ কাঁপিয়ে কবি শোনালেন তাঁর অমর কবিতাখানি :
'এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম,
এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম।'

সেই থেকে 'স্বাধীনতা' শব্দটি আমাদের।"


আক্ষরিক অর্থেই জনসমুদ্র হয়ে ওঠা আজকের সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সেদিন দেশবাসীকে আসন্ন যুদ্ধের প্রস্তুতি নেওয়ার বার্তা এবং দিকনির্দেশনাও দিয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু। স্বাধীন বাংলাদেশের রূপরেখার পূর্ণ প্রতিচ্ছবিও ফুটে উঠেছিল কালজয়ী ওই ভাষণে। তাই অনেক ইতিহাসবিদই মনে করেন, জাতির জনকের সাতই মার্চের ভাষণই বাংলাদেশের প্রকৃত স্বাধীনতার ঘোষণা।

এই ভাষণকে ইউনেস্কো 'বিশ্ব প্রামাণ্য ঐতিহ্য' হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে।

SUMMARY

2638-1.jpg