মার্কিন গণতন্ত্রকামী জনগণ ভিয়েতনামের পক্ষে: বঙ্গবন্ধু

উদিসা ইসলাম

বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বলেছেন, ভিয়েতনাম ভূখণ্ড থেকে অবিলম্বে বিদেশি সৈন্য প্রত্যাহার করতে হবে। সংবাদ সংস্থা বাসসের প্রতিনিধির সঙ্গে আলাপকালে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ভিয়েতনামি জনগণকে তাদের ভাগ্য নির্ধারণ করতে হবে। সমগ্র বিশ্ববাসী গভীরভাবে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছে। শান্তিপ্রিয় মানুষ বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের গণতন্ত্রকামী জনগণ ভিয়েতনামের সংগ্রামী মানুষের পক্ষে রয়েছে।’

এদিকে এই দিনে বাংলাদেশ-ভারত যৌথ বৈঠকের সমাপ্তি শেষে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন দুদেশের মন্ত্রীরা। একইসঙ্গে ১৯৭২ সালের ২৯ এপ্রিল ভারতের বিদ্যুৎমন্ত্রী কে এল রাও গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ মুজিবুর রহমানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। বাংলাদেশের বিদ্যুৎমন্ত্রী মফিজ চৌধুরী ও বন্যানিয়ন্ত্রণ মন্ত্রী খন্দকার মোশতাক আহমদ সেখানে উপস্থিত ছিলেন।

  

যৌথ ঘোষণা

যৌথ নদী কমিশন গঠনে সার্বিক মতৈক্য প্রতিষ্ঠিত হওয়ার খবর প্রকাশিত হয় ৩০ এপ্রিলের সংবাদপত্রে। এতে বলা হয়, যৌথভাবে বিদ্যুৎসম্পদ ব্যবহার, যৌথ নদী কমিশন গঠন, বন্যার পূর্বাভাস. ঘূর্ণিঝড়ের সংকেত দানসহ  চার দিনব্যাপী মন্ত্রিসভার বৈঠক শেষে মতৈক্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। দুই দেশের পারস্পরিক কল্যাণে পানি ও বিদ্যুৎ ব্যবহারের সহযোগিতার প্রশ্নে উচ্চপর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠানের উদ্যোগ নেওয়া হয়।

২৯ এপ্রিল রাষ্ট্রপতি ভবনে ভারতের বিদ্যুৎ, পানি ও সেচমন্ত্রী কে এল রাও বৈঠকের ফলাফল সম্পর্কে সাংবাদিকদের বলেন, ‘গত চার দিনের বৈঠকে দুই দেশের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত নদীর পানিবণ্টন প্রশ্নে তারা বিস্তারিত আলোচনা করেছেন। এ সময় বাংলাদেশের বন্যা নিয়ন্ত্রণ মন্ত্রীও উপস্থিত ছিলেন।’ বৈঠকে তিনি বলেন, ‘ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের মিজো রাজ্য ও ত্রিপুরা রাজ্য বাংলাদেশ থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ পাবে। অন্যদিকে পশ্চিম বাংলার সংলগ্ন এলাকা ও যশোর প্রভৃতিতে ভারত বিদ্যুৎ সরবরাহ করবে।’   এ ব্যবস্থার সুষ্ঠু পরিচালনার জন্য বোর্ড গঠন করার কথাও তিনি জানান।
 
স্থানীয় স্বায়ত্তশাসিত সংস্থা পরিচালনা

অন্তর্বর্তীকালীন ব্যবস্থা হিসেবে সরকারি কর্মকর্তারা সব পর্যায়ের স্বায়ত্তশাসিত সংস্থার প্রশাসনিক কাজ চালিয়ে যাবেন। এসব সংস্থার নির্বাচন অনুষ্ঠান না হওয়া পর্যন্ত এ ব্যবস্থা চালু থাকবে। ১৯৭২ সালের ২৮ এপ্রিল  এক প্রেসনোটে এ কথা জানানো হয়। বাসসের খবরে প্রকাশ, প্রেসনোটে বলা হয়— যত শিগগির সম্ভব প্রাপ্ত বয়স্কদের ভোটের ভিত্তিতে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে সরকার স্বায়ত্তশাসিত সংস্থাগুলো গঠনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সরকারি কর্মকর্তারা নিম্ন লিখিতভাবে স্বায়ত্তশাসিত সংস্থাগুলোর প্রশাসনিক কাজ চালাবেন।

জেলা ও পৌর পৌরসভায় যেসব প্রশাসককে ইতোমধ্যে নিয়োগ করা হয়েছে, তারা এই সংস্থাগুলোর দায়িত্ব ও কর্তব্য পালন করে যাবেন।

থানা উন্নয়ন প্রসঙ্গে সংবাদে বলা হয়, কমিটি সংশ্লিষ্ট সার্কেল অফিসার স্থানীয় থানা রিলিফ কমিটির সঙ্গে আলোচনা করে এসব সংস্থার দায়িত্ব ও কর্তব্য পালন করবেন। স্থানীয় ইউনিয়ন কৃষি অ্যাসিস্ট্যান্ট অথবা যেখানে কৃষি অ্যাসিস্ট্যান্ট নেই, সেখানে ইউনিয়ন পঞ্চায়েতের প্রশাসক নিয়োগ করা হবে।
 
শহর কমিটি

স্থানীয় সার্কেল অফিসারকে শহর কমিটির প্রশাসক নিয়োগ করা হবে। প্রশাসক সংশ্লিষ্ট সব অফিসার  নিয়োগ করবেন। সার্কেল অফিসারের অনুপস্থিতিতে মহকুমা অফিসার বা অপর কোনও দায়িত্বশীল অফিসারকে প্রশাসক হিসেবে নিয়োগ করা যাবে। ইউনিয়ন কমিটির সব কাজকর্ম সংশ্লিষ্ট পৌরসভার প্রশাসন পরিচালনা করবেন। ইউনিয়ন কমিটির চেয়ারম্যান নিয়োগ করা হয়ে থাকলে, তিনি অবিলম্বে তার দায়িত্ব পালনে বিরত থাকবেন।

সুত্র: বাংলা ট্রিবিউন, প্রকাশিত : এপ্রিল ২৯, ২০২০ 

SUMMARY

2606-১.jpg