যে নামটি বাংলাদেশের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে আছে তা হলো জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তিনি ১৭ মার্চ ১৯২০ সালে গোপালগঞ্জ জেলার টুঙ্গীপাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি মাওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী প্রতিষ্ঠিত আওয়ামী লীগের সভাপতি, বাংলাদেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি এবং পরবর্তীতে এদেশের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। জনসাধারণের কাছে তিনি ‘শেখ মুজিব’ এবং ‘শেখ সাহেব’ হিসাবে বেশি পরিচিত এবং তার উপাধি ‘বঙ্গবন্ধু’। মহান এই নেতার কণ্ঠে বিভিন্ন সময় দেশের গণতন্ত্র, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা, অসাম্প্রদায়িকতা, রাজনৈতিক সমঝোতা ও সহনশীলতা, দুর্নীতিসহ নানা বিষয়ে যে কথাগুলো উচ্চারিত হয়েছে, তা যেন এখনো সাম্প্রতিক। তাঁর এমন কিছু অমর বাণী নিম্নে তুলে ধরা হলো…
বঙ্গবন্ধুর কিছু আলোচিত উক্তি…
শহীদদের রক্ত যেন বৃথা না যায়।
বাংলার মাটি দুর্জয় ঘাঁটি জেনে নিক দুর্বৃত্তেরা।
গণআন্দোলন ছাড়া, গণবিপ্লব ছাড়া বিপ্লব হয় না।
আমরা যখন মরতে শিখেছি, তখন কেউ আমাদের দাবাতে পারবে না।
বাঙালি জাতীয়তাবাদ না থাকলে আমাদের স্বাধীনতার অস্তিত্ব বিপন্ন হবে।
এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম!
বাঙালি – অবাঙালি, হিন্দু – মুসলমান সবাই আমাদের ভাই, তাদের রক্ষা করার দায়িত্ব আমাদের।
দেশ থেকে সর্ব প্রকার অন্যায়, অবিচার ও শোষণ উচ্ছেদ করার জন্য দরকার হলে আমি আমার জীবনও উৎসর্গ করব।
আমার সবচেয়ে বড় শক্তি আমার দেশের মানুষকে ভালবাসি, সবচেয়ে বড় দূর্বলতা আমি তাদেরকে খুব বেশী ভালবাসি।
মানুষকে ভালোবাসলে মানুষও ভালোবাসে। যদি সামান্য ত্যাগ স্বীকার করেন, তবে জনসাধারণ আপনার জন্য জীবনও দিতে পারে।
এই স্বাধীনতা তখনি আমার কাছে প্রকৃত স্বাধীন হয়ে উঠবে, যেদিন বাংলার কৃষক-মজুর ও দু:খী মানুষের সকল দু:খের অবসান হবে।
জনগণকে ছাড়া, জনগণকে সংঘবদ্ধ না করে, জনগণকে আন্দোলনমুখী না করে এবং পরিষ্কার আদর্শ সামনে না রেখে কোন রকম গণআন্দোলন হতে পারে না।
প্রধানমন্ত্রী হবার কোন ইচ্ছেই আমার নেই। প্রধানমন্ত্রী আসে এবং যায় কিন্তু যে ভালোবাসা ও সম্মান দেশবাসী আমাকে দিয়েছেন, তা আমি সারাজীবন মনে রাখবো।
আমাদের চাষিরা হল সবচেয়ে দুঃখী ও নির্যাতিত শ্রেণি এবং তাদের অবস্থার উন্নতির জন্যে আমাদের উদ্যোগের বিরাট অংশ অবশ্যই তাদের পেছনে নিয়োজিত করতে হবে।
আমি যদি বাংলার মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে না পারি, আমি যদি দেখি বাংলার মানুষ দুঃখী আর যদি দেখি বাংলার মানুষ পেট ভরে খায় নাই, তাহলে আমি শান্তিতে মরতে পারব না।
সাংস্কৃতিক স্বাধীনতা ছাড়া রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক স্বাধীনতা অর্থহীন। তাই মাটি ও মানুষকে কেন্দ্র করে গণমানুষের সুখ, শান্তি ও স্বপ্ন এবং আশা-আকাঙ্খাকে অবলম্বণ করে গড়ে উঠবে বাংলার নিজস্ব সাহিত্য-সংস্কৃতি।
এ স্বাধীনতা আমার ব্যর্থ হয়ে যাবে যদি আমার বাংলার মানুষ পেট ভরে ভাত না খায়। এই স্বাধীনতা আমার পূর্ণ হবে না যদি বাংলার মা-বোনেরা কাপড় না পায়। এ স্বাধীনতা আমার পূর্ণ হবে না যদি এদেশের মানুষ যারা আমার যুবক শ্রেণি আছে তারা চাকরি না পায় বা কাজ না পায়।
দুর্নীতিবিরোধী আন্দোলনে নিজে থাকবেন আশ্বাস দিয়ে বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, ‘একটা কথা মনে রাখতে হবে, আঙ্গুল দিয়ে দেখাতে হবে, ওই চোর, ব্ল্যাক মার্কেটিয়ান, ওই ঘুষখোর।
ভয় নাই, কোনো ভয় নাই। আমি আছি। দুর্নীতিবাজদের খতম করো, বাংলাদেশের দুঃখী মানুষের দুঃখ মোচন করো।’
আপনি চাকরি করেন- আমি গাড়ি চলি ঐ টাকায়, আমরা ভাত খাই ওদের টাকায়- ওদের সম্মান করে কথা বলেন, ওদের ইজ্জত করে কথা বলেন, ওরাই মালিক।
সাত কোটি বাঙালির ভালোবাসার কাঙাল আমি। আমি সব হারাতে পারি কিন্তু বাংলাদেশের মানুষের ভালোবাসা হারাতে পারব না।
এই স্বাধীন দেশে মানুষ যখন পেট ভরে খেতে পাবে, পাবে মর্যাদাপূর্ণ জীবন; তখনই শুধু এই লাখো শহিদদের আত্মা তৃপ্তি পাবে।
রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠানের চারটি জিনিসের প্রয়োজন, তা হচ্ছে: নেতৃত্ব, ম্যানিফেস্টো বা আদর্শ, নিঃস্বার্থ কর্মী এবং সংগঠন।
যিনি যেখানে রয়েছেন, তিনি সেখানে আপন কর্তব্য পালন করলে দেশের মধ্যে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হতে পারে না।
সমস্ত সরকারি কর্মচারীকেই আমি অনুরোধ করি, যাদের অর্থে আমাদের সংসার চলে তাদের সেবা করুন।
বাংলার উর্বর মাটিতে যেমন সোনা ফলে, ঠিক তেমনি পরগাছাও জন্মায়! একইভাবে।
বিশ্ব দুই শিবিরে বিভক্ত – শোষক আর শোষিত। আমি শোষিতের পক্ষে।
গরিবের উপর অত্যাচার করলে আল্লাহর কাছে তার জবাব দিতে হবে।
বাংলার মাটিতে যুদ্ধাপরাধীর বিচার হবেই।
বাংলাদেশ এসেছে বাংলাদেশ থাকবে।