নজরুল, নেতাজী ও বঙ্গবন্ধু: স্বপ্ন থেকে বাস্তবায়ন


- ইফতেখার ইফতি  

কাজী নজরুল ইসলাম প্রেম-দ্রোহ আর বিপ্লবের কবি। দেশপ্রেম ও সৃষ্ট সাহিত্যকর্মের কারণে নজরুল জীবদ্দশায় পেয়ে গেছেন বহু সম্মান, যার একটি বাংলাদেশের জাতীয় কবির সম্মান। দুখু মিয়ার বিপ্লবী চেতায় ছুঁয়ে যায় বিপ্লবী নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বসুকেও, আর তাই কবি নজরুলের ‘জাতীয় কবি’ হবার বিষয়ে ভবিষ্যদ্বাণী করে গিয়েছিলেন নেতাজী।

বিশিষ্ট নজরুল গবেষক মু. আব্দুল হান্নানের এক বক্তৃতা থেকে এসব জানা গেছে।

মু. আব্দুল হান্নান বলেন, ‘১৯২৯ সালে কলকাতার আলবার্ট হলে, নজরুলের যখন ২৯ বছর বয়স, সে সময়ে তাকে নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বসু বলেছেন, আমি সারা ভারতবর্ষ ঘুরেছি কিন্তু দুর্গম গিরি কান্তার মরুর মতো কোনো গান আমি খুঁজে পাইনি। এবং তিনি ঘোষণা দেন, যেদিন দেশ স্বাধীন হবে, ভারতবর্ষ যেদিন স্বাধীন হবে, বাঙালীর জাতীয় কবি হবেন কাজী নজরুল ইসলাম।’


বাংলাদেশ স্বাধীন হবার পর প্রথম ভারত সফরেই শ্রীমতী ইন্দিরা গান্ধীকে অনুরোধ করে নজরুলকে বাংলাদেশে নিয়ে আসেন জাতির জনক শেখ মুজিবুর রহমান। তাকে ঘোষণা করলেন বাংলাদেশের জাতীয় কবি হিসেবে। ১৯২৯ সালে নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বসুর দেখা স্বপ্নের বাস্তবায়ন হলো বিপ্লবী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হাত ধরে।


তৎকালীন রাষ্ট্রপতি শেখ মুজিবুর রহমান এক বাণীতে তিনি বলেন, ‘কবি কাজী নজরুল ইসলাম বাঙলার বিদ্রোহী-আত্মা ও বাঙালির স্বাধীন-ঐতিহাসিক-সত্তার রূপকার। বাঙলার শেষ রাতের ঘনান্ধকারে নিশিত-নিশ্চিন্ত নিদ্রায় বিপ্লবের রক্ত-লীলার মধ্যে বাঙলার তরুণরা শুনেছে রুদ্র-বিধাতার অট্টহাসি, কাল-ভৈরবের ভয়াল গর্জন- নজরুলের জীবনে, কাব্যে, সংগীতে ও তাঁর কণ্ঠে। প্রচণ্ড সামুদ্রিক জলোচ্ছ্বাসের মতো, লেলিহান অগ্নিশিখার মতো, পরাধীন জাতির তিমির-ঘন অন্ধকারে বিশ্ববিধাতা নজরুলকে এক স্বতন্ত্র ছাঁচে গড়ে পাঠিয়েছিলেন এই ধরার ধুলায়।’

Audio:

SUMMARY

244-1.gif