বাঙালি সংস্কৃতিকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে চেয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু

 
বাংলা ও বাঙালির সংস্কৃতিকে স্থায়ীভাবে প্রাতিষ্ঠানিক  রূপ দেওয়া ছিলো জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অন্যতম বড় প্রচেষ্টা। প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে ঘরে ঘরে নিজস্ব সংস্কৃতির চর্চা ও বিকাশের  টেকসই পরিবেশ গড়ে ওঠে। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মধ্য দিয়ে শুধু সেই সম্ভাবনারই মৃত্যু ঘটেনি, বাঙালির চিরায়ত সংস্কৃতিকে কবর দেওয়ার অপচেষ্টা চলে।

যুদ্ধবিধ্বস্ত সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশ গড়ার সংগ্রাম। তার ভেতরেও দেশের মানুষ যেন কখনো নিজস্ব সংস্কৃতির শেকড় থেকে বিচ্ছিন্ন না হয়, সেজন্য শুরু থেকেই উদ্যোগী হন বাংলাদেশের স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। এ বিষয়ে মুক্তিযোদ্ধা এবং সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব কামাল লোহানী বলেন, “বাংলার লোকজ সংস্কৃতিকে তুলে আনা এবং চর্চা করার জন্য বঙ্গবন্ধু ভীষণভাবে আগ্রহী ছিলেন।”

আরেক মুক্তিযোদ্ধা এবং সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব জিয়াউদ্দিন তারিক আলী বলেন, “বঙ্গবন্ধুর লোকজ সংস্কৃতির প্রতি টান আরও প্রকাশিত হয়েছিল তাঁর রবীন্দ্র চেতনার কারণে। বঙ্গ সংস্কৃতি প্রসার এবং সম্প্রসারের জন্য তিনি প্রথমেই বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমী গঠন করেছিলেন। ”

শিল্প, সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড সৃজনশীল মানুষের চিন্তা ও কাজের স্বাধীনতা একটি গুরুত্বপূর্ণ পূর্বশর্ত। বঙ্গবন্ধুর বিশালতা সেক্ষেত্রেও দেখেছেন প্রবীন সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বরা। বঙ্গবন্ধুর নির্মম হত্যাকাণ্ড বাংলা ও বাঙালির  অসাম্প্রদায়িক, উদারনৈতিক ও সহনশীল সংস্কৃতির উপর ছিল এক পরিকল্পিত আক্রমণ।

এ বিষয়ে মুক্তিযোদ্ধা ভাস্কর ফেরদৌসী প্রিয়ভাষিণী বলেন, “বঙ্গবন্ধু হত্যা হওয়ার সাথে সাথেই এদেশের সংস্কৃতি মন ভেঙে গেছে।”

“৭২ থেকে ৭৫ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশের কোনো ধরনের মিডিয়াতে উর্দু শব্দ বা উর্দু গজল অথবা উর্দু কবিতা প্রচারিত হয়নি” বলেন  জিয়াউদ্দিন তারিক।

শুধু সংগীত বা সাহিত্য চর্চাই নয়, বাঙালির চিরায়ত জীবনাচরণের যে সংস্কৃতি-সেখানেও কুঠারাঘাত হানে বঙ্গবন্ধুকে হত্যাকারীদের গোষ্ঠী। বিশ্লেষকদের মতে, বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করাটাই ছিলো বাঙালি সংস্কৃতি বহির্ভূত ও বিরোধী কাজ।

SUMMARY

2070-B2.jpg