মিথ্ ও মিথ্যাচার-মুহম্মদ মাহবুব আলী

 
বঙ্গবন্ধু আমাদের স্বাধীনতা সংগ্রামের স্থপতি এবং জাতির জনক। জীবন দিয়ে তিনি এ দেশের মানুষের মঙ্গল করতে চেয়েছেন। তার কর্মতৎপরতা প্রত্যেক বাঙালির আদর্শস্বরূপ। কিন্তু ইচ্ছে করে কোন কোন বিদূষক আছে বা ছিল যারা বঙ্গবন্ধুর বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করেন। বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতার ঘোষণা দেননি, বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতা চাইলেও তার ঘোষণা চাননি, বঙ্গবন্ধু সময়মতো স্বাধীনতার ঘোষণা দেননি, বঙ্গবন্ধু সশস্ত্র যুদ্ধের ঘোষণা দেননি, বঙ্গবন্ধু ও আওয়ামী লীগ একা দেশ স্বাধীন করেনি, বঙ্গবন্ধু বেগম মুজিব ও ছাত্র নেতাদের চাপে পড়ে স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছেন, বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়ে আত্ম-সমর্পণ করেন ইত্যাকার বহু অভিযোগে অনুযোগ, অপবাদ, মিথ্ ও মিথ্যাচারিতা বাংলাদেশ ও বিদেশে চলমান রয়েছে। সময় সময় এ সবের পৃথক পৃথক জবাবও দেয়া হয়েছে কিন্তু একই গ্রন্থে এত সব প্রশ্নের জবাব এই প্রথম। গ্রন্থটির নাম ‘বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশকে নিয়ে মিথ্ ও মিথ্যাচার।’ গ্রন্থকার বিশিষ্ট মুক্তিযোদ্ধা, ৬ দফা, ১১ দফার সৈনিক ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ-এর উপাচার্য ড. আবদুল মান্নান চৌধুরী।

বইটি আদ্যোপান্ত পড়লে যে কোন পাঠক চোখ বুজে বিরুদ্ধ রাজনীতিবিদ, বুদ্ধিজীবী, কলাম লেখক, দু’দেল বান্দা কলমচোরদের বিচিত্র প্রশ্নের জবাব দিতে পারবেন। যারা জেগে ঘুমান না, তারা হয়ত বুঝতে পারবেন যে, জীবনের সেই প্রথম থেকেই বঙ্গবন্ধু ছিলেন সংগ্রামী মানুষ, নির্ভেজাল বাঙালি প্রেমিক, স্বাধীনচেতা, স্বাধীনতা প্রেমিক, স্বাধীনতার মহান স্থপতি এবং সে সুবাদে জাতির পিতা ও সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি।

ড. চৌধুরীর গ্রন্থে ২৪টি অধ্যায় রয়েছে তন্মধ্যে নি¤েœাক্ত অধ্যায়গুলোর গভীর মনোনিবেশ সহকারে দেখা যেতে পারে :

‘এ কে খন্দকারের ১৯৭১ : ভেতরেÑবাইরে’ ও আমার কিছু কথা : ড. ফেরদৌস আহমদ কোরেশীর পুরানো যুদ্ধের নতুন ফ্রন্ট, এক কলাম লেখকের বিবেচনা, জয়তু শেখ হাসিনা, যুদ্ধাপরাধীদের বিচারে আওয়ামী লীগ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, কে কাকে ফায়ার করে?, শেখ হাসিনা দেশে ফিরে না এলে কি হোত?; “তাজউদ্দীন আহমদের রাজনৈতিক জীবন” প্রসঙ্গে কিছু কথা, আবদুর রব নতুন পথ দেখাচ্ছেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবকে নিয়ে মিথ্যাচার, বদরুদ্দীন উমরের ‘ব্যাকরণবিহীন বিতর্ক প্রসঙ্গে’ আমার কিছু কথা, এ কে খন্দকার ও অন্যান্যদের দৃষ্টিতে মুজিব বাহিনী, স্মারক বক্তৃতা- ‘তাজউদ্দীন ও প্রথম বাংলাদেশ সরকার’ নিয়ে কিছু কথা, এ. কে. খন্দকারের সাথে সুর মিলানো বুদ্ধিজীবীগণ, স্বাধীনতার ঘোষণা : কিছু মীমাংসিত বিষয় নিয়ে বিতর্ক, বাংলাদেশের অভ্যুদয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব।


 
ড. চৌধুরী সত্যকে প্রতিফলন ও প্রতিস্থাপন করতে চেয়েছেন। এই বইটি তার শেখ মুজিব থেকে জাতির পিতা গ্রন্থের সম্পূরক অবশ্যই হবে। আমরা তাঁর এই নিরলস ও নির্মোহ, নিরাভরণ লেখাকে অভিনন্দন জানাই এবং পক্ষ, বিপক্ষ, শত্রু, মিত্র ও সব মানুষকে বইটি পড়ে দেখার অনুরোধ জানাই। আশা করি, লেখকের শ্রম যেমন বৃথা যাবে না, তেমনি পাঠকের সময়ও নষ্ট হবে না। বঙ্গবন্ধু যেভাবে স্বাধীন বাংলাদেশে রাষ্ট্রের উন্নতি করতে চেয়েছিলেন এবং এ জন্য বিভিন্ন সময়ে সামাজিক পদক্ষেপ নিয়েছিলেন তা প্রশংসনীয়।

SUMMARY

2066-1.gif