ব্রজেন্দ্র কুমার দাস
জন কুইনসি অ্যাডামস কোন দেশের নাগরিক, তিনি সাহিত্যিক না দার্শনিক, রাষ্ট্রবিজ্ঞানী না বৈজ্ঞানিক এর কিছুই আমার জানা নেই। কিন্তু নেতা কাকে বলে এ সম্পর্কে তাঁর একটি বক্তব্য আমার কাছে খুবই বাস্তবধর্মী এবং আকর্ষণীয় মনে হয়েছে। তিনি বলেন ‘আপনার কথা ও কাজে অন্যরা কিছু করতে উৎসাহিত হলে তবেই আপনি নেতা।’ আশা করি এ মন্তব্যের সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করা কারো পক্ষেই সম্ভব নয়। তবে কথায় ও কাজে মিল খুঁজে পাওয়া মানুষের সংখ্যা পৃথিবীতে বিশেষ করে আমাদের দেশে খুবই একটা বিরল ঘটনা বলেই মনে হয়।
কিন্তু এই বিরলের মধ্যেও প্রমাণ করে দিলেন শেখ মুজিবুর নামে কেউ একজন আছেন যিনি প্রমাণ করে দিলেন যার কথায় ও কাজে উৎসাহিত হয়ে অন্যরা অর্থাৎ তাঁর দেশের মানুষ কিছু একটা করতে এগিয়ে এলেন। কোন সে কথা? সে কথা ১৯৭১ সালের ৭ই মার্চের কথা। রেসকোর্স ময়দানে দাঁড়িয়ে বাংলার সাড়ে সাত কোটি বাঙালির উদ্দেশ্যে কিছু কথা। যাকে বলা হয় বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণ। সে ভাষণ শুনেছিলেন কারা? শুধুই কি সেদিনের রেসকোর্স ময়দানে উপস্থিত জনতা, জনগণ? সত্যিকার অর্থে সেদিন তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানই হয়ে উঠেছিল অগ্নিমন্ত্রে মুগ্ধ জ্বলন্ত রেসকোর্স ময়দান! সচরাচর দেখা যায় মিটিং-মিছিল হয়ে থাকে রাজধানী আর শহর-বন্দরেই। কিন্তু একাত্তরের ৭ই মার্চের ভাষণের যারা প্রত্যক্ষদর্শী তারা অবশ্যই জানেন যে, ঐ ভাষণের পর গ্রাম-বাংলার কোন মানুষই ঘরে বসেছিলেন না। হাটে-ঘাটে-মাঠে লাঠি-সোঠা হাতে বঙ্গবন্ধুর নির্দেশ পালনে ঘরের বাইরে সবাই। শত্রুর মোকাবেলায় সবাই উদ্যত। দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। এক কথায় গ্রাম-শহর একাকার। ঘরে-ঘরে-আকাশে-বাতাসে শুধু ‘জয় বাংলা’ ধ্বনি।
‘ভাইয়েরা আমার’ হৃদয় নিংড়ানো এমন ডাকে বাংলাদেশ তো বটেই সারাবিশ্বের বাঙালির অন্তরে অন্তরে ভাই ভাই-এ ঐক্যের সুর কানে কানে বাজে। এ যেন সুকান্তের সেই ‘অবাক পৃথিবী তাকিয়ে রয়।’ নেতার কথায় ও কাজে কোন কিছু করার জন্য উৎসাহিত হওয়া জনতার এই বুঝি জাতীয় ঐক্য!
যোগ্য পিতার যোগ্য কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা একান্ত কাছে থেকে দেখেছেন তাঁর পিতা-মাতাকে। বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণ নিয়ে ‘ভাইয়েরা আমার’ নিবন্ধে কিছু অজানা তথ্য তিনি জাতির সামনে তুলে ধরেন যেগুলো আমাদের জাতীয় ঐক্যের প্রতীক।
শেখ হাসিনা স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে লিখেন-‘আব্বাকে মা ঘরে যেতে বললেন। পাশের ঘরটা শোবার ঘর। আমি আর আব্বা ঘরে গেলে মা বললেন ‘তুমি একটু বিশ্রাম নাও।’ আব্বা বিছানায় শুয়ে পড়লেন। আমি আব্বার মাথার কাছে বসে আব্বার মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছিলাম। এটা আমার সব সময়ের অভ্যাস। মা একটা মোড়া টেনে বসলেন। হাতে পানের বাটা। পান বানিয়ে আব্বার হাতে দিলেন। তারপর তিনি বললেন, ‘দেখো, তুমি সারাটা জীবন দেশের মানুষের জন্য সংগ্রাম করেছো, দেশের মানুষের জন্য কি করতে হবে তা সকলের চেয়ে তুমিই ভাল জানো। আজকে যে মানুষ এসেছে তারা তোমার কথাই শুনতে এসেছে। তোমার কারও কথা শুনার প্রয়োজন নেই। তোমার মনে যে কথা আছে তুমি সেই কথাই বলবে। আর সেই কথাই সঠিক কথা হবে। অন্য কারও কথায় কান দেবে না।’ হ্যাঁ সঠিক কথাই তো। ৭ই মার্চের ভাষণ সম্পর্কে এমনি সঠিক কথা বলা বোধ হয় বেগম ফজিলাতুননেছার পক্ষেই বলা সম্ভব। এতেই বুঝা যায় তাঁর চিন্তার দূরদর্শিতা কতো প্রখর ছিল। সবাইতো জানে এবং দেখেছেনও বঙ্গবন্ধু তাঁর ঐতিহাসিক ভাষণটি যখন দিয়েছিলেন তখন তাঁর হাতে কোনো কাগজ ছিল না, ছিল না কোনো নোট। চোখের চশমাটা খুলে টেবিলে রেখে বজ্রকন্ঠে দেশবাসীর প্রতি ডাক দিলেন-‘ভাইয়েরা আমার’। এবং সেদিন ঠিক যে কথাগুলো তাঁর মনে এসেছিল, সে কথাগুলিই তিনি বলেছিলেন। তবে এদেশের জ্ঞানপাপী অনেক নিন্দুকেরা যে যা-ই বলুক না কেন, এটা ঐতিহাসিক সত্য যে এতো কঠিন কথা এতো সহজ সরলভাবে বাংলাদেশে তো দূরের কথা পৃথিবীর ইতিহাসেও বোধ হয় কেউ বলতে পারেন নি।
আমরা যতটুকু জানি বিশ্বের বিখ্যাত যত ভাষণ সেগুলো ছিল লিখিত। কিন্তু ৭ই মার্চের ভাষণটি তো সে রকম ছিল না। সেটি ছিল উপস্থিত বক্তৃতা। ‘ভাইয়েরা আমার! ঘরে ঘরে দূর্গ গড়ে তোল’ সাত কোটি মানুষকে দাবায়ে রাখতে পারবা না’ ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম এবারের সংগ্রাম আমাদের স্বাধীনতার সংগ্রাম’ তিনি তো সব কথাই বলে দিয়েছেন। স্বাধীনতা ঘোষণার আর বাকি রইলোটা কি! শেখ হাসিনা তাঁর নিবন্ধে তাইতো লিখেন ‘৭ই মার্চের ভাষণের রণকৌশল বাঙালি জাতি আশ্বস্ত হয়ে সকল প্রস্তুতি নিতে ছড়িয়ে পড়েছিল গ্রাম বাংলায়, প্রস্তুতি নিয়েছিল যুদ্ধের। প্রতিটি ঘরই পরিণত হয়েছিল এক একটি দূর্গে। প্রতিটি মানুষ হয়েছিলেন এক একজন যোদ্ধা। এই ভাষণ ছিল সকল প্রেরণার উৎস। আর সে কারণেই বাঙালি এত দ্রুত বিজয় অর্জন করেছিল।’ এই ভাষণ নিয়ে যারা অহেতুক বিতর্ক সৃষ্টি করে রাজনৈতিক ফায়দা লুটতে চান, এ দেশের সহজসরল সাধারণ মানুষকে বিভ্রান্ত করতে চান তারা কি বুকে হাত দিয়ে বলতে পারেন শেখ হাসিনার উল্লেখিত কথাগুলো মিথ্যা। যদি তাই হতো তাহলে আজ এ ভাষণ ডকুমেন্টারি হেরিটেজ বা বিশ্বপ্রামান্য ঐতিহ্য হিসেবে স্বীকৃতি পেতো? জাতিসংঘের ইউনেস্কো তার মেমোরি অব দ্য ওয়ার্ল্ড ইন্টারন্যাশনাল রেজিস্টার-এ বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণটি অন্তর্ভূক্ত করা হতো? অবশ্য ‘যারে দেখতে নারি তার চল বাঁকা’ এমনটি হলে তো বলার কিছু নেই“ ‘সাদাকে সাদা কালোকে কালো, সত্যকে সত্য মিথ্যাকে মিথ্যা’ বলার মনমানসিকতা যাদের আছে তাদের কেউ কি ৭ই মার্চের ভাষণের আবেদনকে অস্বীকার করতে পারে!
বাংলাদেশ, বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে যাদের ন্যূনতম বিশ্বাস আছে তাদের কেউ কি ৭ই মার্চের ভাষণকে অস্বীকার করতে পারে। বঙ্গবন্ধুর বিশ্ব স্বীকৃত ঐতিহাসিক ৭ই মার্চের ভাষণকে অস্বীকার করে বা নিষিদ্ধ করে কখনো কি বাংলাদেশে জাতীয় ঐক্য প্রতিষ্ঠা করার স্বপ্ন কেউ দেখতে পারে? এমন দুঃস্বপ্ন তারাই দেখতে পারেন যাদের মাথায় সব সময় পাকি ভূত কিলবিল করে। আর এটাও তো ঐতিহাসিক সত্য যে বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণের পর তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান তথা আজকের বাংলাদেশে ২/৩ সপ্তাহ সমান্তরাল সরকার চলছিল বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে! এই সমান্তরাল সরকার পরিচালনার শক্তি যুগিয়েছিল বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণই। সারাবিশ্বে কি এমন দৃষ্টান্ত দেখা যায়? একটা যুদ্ধরত জাতি কি মাত্রায় ঐক্যবদ্ধ হলেই যে একটি রাষ্ট্র কাঠামোর ভেতর অন্য একটি সমান্তরাল সরকার চলতে পারে তা অবশ্যই বিবেচনায় আনতে হবে। জাতীয় ঐক্যে তাই ৭ই মার্চের ভাষণকে সর্বাগ্রে বিবেচনায় আনতে হবে। বাংলাদেশের স্বাধীনতায় আন্তরিকভাবে বিশ্বাসী হলেই অবশ্যই এ সত্যটিকে মানতে হবেই হবে।
এ প্রসঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ড. এমাজ উদ্দীন আহমদ ২৩.৩.২০১৯ তারিখের দৈনিক আমাদের সময় পত্রিকায় ‘স্বাধীনতা এবং জাতীয় ঐক্য’ শিরোনামে একটি নিবন্ধ লিখেন। এতে তিনি লিখেন ‘সংঘাত নয়, সংহতি যে এর মূল সুর, তা কি একবার অনুভব করবেন? বিভেদ নয়, ঐক্যবোধই যে এর মূল ছন্দ তা কেন আসে না স্মরণে? জাতীয় পর্যায়ে মর্যাদার ভিত্তি হলো জাতীয় ঐক্য। জাতির উজ্জ্বল ভাবমূর্ত্তির জন্য অপরিহার্য ওই একটিই এবং তা হলো জাতীয় ঐক্য।’ এই গুরুত্বপূর্ণ কথাগুলো অস্বীকার করার কোন অবকাশ থাকতে পারে না। কিন্তু তারপরও নিবন্ধে শ্রদ্ধেয় স্যারের কিছু কিছু মন্তব্যের সাথে গভীর শ্রদ্ধাভরে বিনীতভাবে খানিকটা দ্বিমত পোষণ না করে পারছি না। জানি আমার মতো পিচ্ছি ছোকরা এক লেখকের পক্ষে এটা ধৃষ্টতাপূর্ণ কাজ। তবু বিশ্বাস আমার উদার হৃদয়ের অধিকারী স্যার আমার প্রগলভতাকে ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন। তিনি লিখেন ‘মুক্তিযুদ্ধের সঠিক বৈশিষ্ট্য অনুধাবনের জন্য তখন পাকিস্তান ও ভারতের নেতারা কী ভাবছিলেন, যুদ্ধের পর তারা কী পেতে চেয়েছিলেন তাও জানা প্রয়োজন। জানা প্রয়োজন দুই পরাশক্তির সেই বিশ্বের পরাশক্তিসহ বৃহৎ রাষ্ট্রগুলোর ভূমিকাও।’ এখানে প্রশ্ন হলো যুদ্ধের আগেও এবং পরেও পাকিস্তানের নেতারা কি ভেবেছিলেন তা নতুন করে জানার বোধ হয় খুব একটা প্রয়োজন নেই। ১৯৪৭ সালের পর থেকে ১৯৭১ পর্যন্ত পাকিস্তান বাঙালিদেরকে কিভাবে অত্যাচার নির্যাতন করেছিলো, কত মানুষকে হত্যা করেছিল তা আমাদের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসেই লিখা রয়েছে। আর ভারতের নেতারা কি পেতে চেয়েছিলেন সেটা পাকিস্তানের চাওয়ার সাথে তুলনা করাটা কতটুকু যুক্তিযুক্ত তাও ভেবে দেখার প্রয়োজন বলে মনে করছি। আর দুই পরাশক্তি কথা? আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধে আমেরিকার তৎকালীন নিক্সন-কিসিঞ্জার সরকার (জনগণ নয়) বাংলাদেশের সাড়ে সাতকোটি মানুষের বিরুদ্ধে সপ্তম নৌবহর পাঠিয়ে পাকিস্তানের বর্বর সেনাবাহিনীকে সহযোগিতা করার মাধ্যমে কোন মহৎ (?) কর্মটি সাধন করতে চেয়েছিলেন তাতো কারো অজানা থাকার কথা নয়। সে দিনের মহান সোভিয়েত ইউনিয়ন যদি তাদের অষ্টম নৌবহর না পাঠাতেন তাহলে বাঙালির অবস্থা কেমন হতো সেটাও অনুধাবন করার প্রয়োজন আছে বলে মনে করি। শুধু কি তাই? সেদিন জাতিসংঘে সোভিয়েত ইউনিয়ন বার বার ভেটো প্রয়োগ না করলে আজকের বাংলাদেশ কি পাকিস্তানের দখল মুক্ত থাকতে পারতো। আর যত আন্তরিক প্রচেষ্টাই থাকুক না কেন ভারতের পক্ষে তো আমেরিকাকে ঠেকানো সম্ভব ছিল না। তাই আমার মনে হয়, দুই পরাশক্তিকে এক পাল্লায় তুলে পরিমাপ করা সুবিচার নয়। দানব আর মানব কখনও এক হতে পারে না।
নিবন্ধে আরো উল্লেখ করা হয়-‘যে সব তথ্য আমরা পেয়েছি তা থেকে জানা যায়, স্বাধীন বাংলাদেশকে ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী চিহ্নিত করেছিলেন, এক কৌশলগত অসঙ্গতি রূপে। নেহেরু-গান্ধী এক জাতি তত্ত্বের ভারতবর্ষ বিভক্ত হয় জিন্নাহর দ্বিজাতিত্ত্বের ভিত্তিতে। শেখ মুজিবুর রহমানের বাঙালি জাতীয়তাবাদ তাকে ত্রিভঙ্গ মুরারী করে তুলবে না তো।’ এখানে ত্রিভঙ্গ মুরারী বলতে কি বুঝানো হচ্ছে তা বোধগম্য হচ্ছে না। আর বাঙালি জাতীয়তাবাদ কাকে ত্রিভঙ্গ মুরারী করে তুলবে বা তুলেছে কিনা তাও স্পষ্ট নয়। তবে যে যাই বলুন না কেন শেখ মুজিবুর রহমানের বাঙালি জাতীয়তাবাদেই কিন্তু বাংলাদেশের পরিচয়। এ প্রসঙ্গে বিশিষ্ট লেখক-সাংবাদিক আবদুল গাফফার চৌধুরী তাঁর ‘আযাদি না স্বাধীনতা দিবস’ প্রবন্ধে যথার্থই বলেছেন ‘ইংল্যান্ডে বহু বিদেশি নাগরিকত্ব বদল করে ব্রিটিশ হয়েছে। কিন্তু ইংলিশ জাতি পরিচয় গ্রহণ করতে পারেনি। বাঙালি জাতীয়তা ও বাংলাদেশী নাগরিকতার মধ্যে কোনো বিরোধ নেই।’ অনেকটাই উদ্দেশ্যমূলক ভাবেই অনেকে অহেতুক বিতর্কের সৃষ্টি করেন মাত্র। স্যারের নিবন্ধে আরো উল্লেখ করা হয়-এনায়েতুর রহিম ও জয়েস এল রহিম Us President Richard Nixon, Indian Prime Minister Indira Gandhi and Bangladesh war of Independence প্রবন্ধে লেখেন-‘পাকিস্তানকে ভেঙে দেওয়া ভারত ইউনিয়নের খন্ডছিন্ন হওয়ার পথ প্রশস্ত করবে ঃ না তো!’ তবে সত্যি কথা হলো, বাংলাদেশের সাড়ে সাত কোটি বাঙালি না চাইলে ভারতের পক্ষে কখনো পাকিস্তানকে ভাঙ্গা সম্ভব হতো না। আর বাস্তবতা হলো ভারত এতো বছর পরও ‘খন্ডছিন্ন’ হয়নি।
স্যারের নিবন্ধে আরো বলা হয়-‘সহায়তাদানকারী ভারতের লক্ষ্য ছিল মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে জন্ম লাভ করা বাংলাদেশের মাধ্যমে ভারতের জাতীয় স্বার্থ সংরক্ষণ।’ সবাই তো চায় তার জাতীয় স্বার্থ রক্ষা করতে। কিন্তু সর্বক্ষেত্রে ভারতের সাহায্য-সহযোগীতা, শ্রীমতি ইন্দিরা গান্ধী এবং ভারতীয় জনগণের ত্যাগ-তিতিক্ষাকে কি হালকাভাবে দেখার কোন অবকাশ আছে? কারো ঘরে আগুন লাগলে যারা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে আগুন নিবাতে এলেন তাদের কাছে তো ঘরের মালিককে চিরদিনই কৃতজ্ঞ থাকতেই হবে। যারা এলেন তাদের কোন স্বার্থ রয়েছে কিনা সেটা খোঁজা বা চিন্তা করা কি সমীচিন?
যাক গে সে কথা। বলছিলাম জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৭ই মার্চের ভাষণের কথা। আমাদের জাতীয় ঐক্যের কথা। তবে সব কথার শেষ কথা হলো-বাংলাদেশে বিশ্বাস করলে, বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধে বিশ্বাসী হলে, বাংলাদেশে জাতীয় ঐক্য সত্যিকার অর্থে গড়ে তুলতে হলে ৭ই মার্চের ভাষণের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হতেই হবে।
লেখক : মুক্তিযোদ্ধা কলামিস্ট, সাবেক ব্যাংকার।