স্বাধীনতা যুদ্ধে মুজিবনগর সরকারের ভূমিকা


 এ.এইচ.এম. ফিরোজ আলী 

১৯৭১ সালের মার্চ মাস স্বাধীনতার যৌবনের মাস। এ মাস কে বলা হয় উত্তাল বা অগ্নিঝরা মার্চ। এ মাসে শিশু, কিশোর, নর-নারী, বৃদ্ধ-বৃদ্ধা সবাইর স্বাধীনতার চেতনায় যৌবন দেখা দিয়েছিল। পরাধীনতার শৃংখল থেকে মুক্তি পেতে যৌবনের সকল শক্তি ও জীবন বিলিয়ে দিতে প্রস্তুত হয়েছিলেন বাঙালিরা। শহর ও গ্রামে গ্রামে স্বাধীনতার আবেগে উৎসবমুখর পরিবেশে দলে দলে লোকজন মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। এপ্রিল মাসে প্রতিষ্ঠা হয় গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার। স্বাধীনতা সংগ্রামের এক পর্যায়ে ১০ এপ্রিল (১৯৭১ সাল) আগরতলা সীমান্তে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে একটি জায়গায় প্রাদেশিক পরিষদের সদস্য অর্থাৎ এমপিদের এক গোপন বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকের ব্যবস্থা করেন ত্রিপুরা রাজ্য সরকারের কর্মকর্তা কে.পি.দত্ত। এখানে নবগঠিত বাংলাদেশ সরকারের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু নিরাপত্তাজনিত কারণে শপথ অনুষ্ঠান হয়নি এবং তারা সকলেই কলকাতায় ফিরে যান। এদিন কলকাতার পত্র-পত্রিকায় তাজউদ্দিন আহমদ স্বাক্ষরিত একটি বিবৃতি পাঠানো হয়। তাতে বলা হয়, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কে রাষ্ট্রপতি, সৈয়দ নজরুল ইসলাম উপ-রাষ্ট্রপতি, তাজউদ্দিন আহমদ কে প্রধানমন্ত্রী করে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার প্রতিষ্ঠার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। বিবৃতিতে আরো বলা হয়, বঙ্গবন্ধুর অবর্তমানে সৈয়দ নজরুল ইসলাম অস্থায়ী রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন করবেন। এ বিবৃতি ভারতীয় পত্র-পত্রিকা ছাড়াও বিশ্বের বিভিন্ন দেশের পত্র-পত্রিকা ও বেতারে এ খবর প্রচারিত হয়। ১৩ এপ্রিল প্রবাসী বাংলাদেশ সরকারের মন্ত্রীসভা সম্প্রসারনের ঘোষনা দেওয়া হয়। অর্থমন্ত্রী করা হয় ক্যাপ্টেন এম. মনসুর আলী কে, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী করা হয় এ.এইচ.এম. কামরুজ্জামান এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী করা হয় খন্দকার মুস্তাক আহমদকে। ১৪ এপ্রিল উপ-রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম কর্ণেল এম.এ.জি ওসমানীকে প্রধান সেনাপতি নিয়োগ করেন।
নতুন সরকারের শপথ অনুষ্ঠান চুয়াডাঙ্গায় হওয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয় এবং চুয়াডাঙ্গা হবে বাংলাদেশের অস্থায়ী রাজধানী। কিন্তু গোপন এ পরিকল্পনাটি পন্ড হয়ে যায়। কারণ চুয়াডাঙ্গার আওয়ামীলীগ নেতা ডাঃ হাসিবুল হক কথা প্রসঙ্গে একজন বিদেশী সাংবাদিককে জানিয়েছিলেন। আকাশ বানী কলকাতা থেকে এ খবর প্রচারিত হওয়ার পর পাকিস্তানীরা ১৩ এপ্রিল চুয়াডাঙ্গায় বৃষ্টির মতো বোমা বর্ষন করে চুয়াডাঙ্গা দখল করে নেয়। চুয়াডাঙ্গা ছিল ‘দক্ষিণ-পশ্চিম রনাঙ্গনের হেডকোয়ার্টার।’ ৪নং ইপিআর উইং ফোর্স ২৬ মার্চ/১৯৭১ তারিখে উইং কমান্ডার মেজর এম.এ.ওসমান চৌধুরীর নেতৃত্বে স্বাধীন বাংলাদেশের পক্ষালম্বন করে এবং এ বাহিনীর সদর দপ্তর ছিল চুয়াডাঙ্গায়। ১লা এপ্রিল ১৯৭১ তারিখে এ বাহিনী-ই প্রথম বারের মতো কুষ্টিয়ায় অবস্থানরত পাকিস্তানী সেনার ২৭ নম্বর বেলুচ রেজিমেন্টের এক কোম্পানীর অধিক সেনাকে সম্পূর্ণরূপে পরাজিত করে কুষ্টিয়াকে শত্রু মুক্ত করেছিল। যে কারণে পাকিস্তানীদের নিকট চুয়াডাঙ্গার গুরুত্ব ছিল অপরিসীম। পাকিস্তানীরা স্থল এবং আকাশ উভয় পথে চুয়াডাঙ্গায় একের পর এক বোমা হামলা চালায়। এমন অবস্থায় নতুন পরিকল্পনা মোতাবেক স্থান বদল করে কুষ্টিয়া জেলার মেহেরপুর মহকুমার বৈদ্যনাথতলা গ্রামের সু-বিশাল আম বাগানে ১৯৭১ সালের ১৭ এপ্রিল গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার প্রকাশ্যে শপথ গ্রহণ করেন। 
১৬ এপ্রিল পর্যন্ত কলকাতার ৮নং থিয়েটার রোডে বাংলাদেশ সরকারের অফিসের কেউ জানত না কলকাতা থেকে শতশত মাইল দূরে বাঙালি জাতির সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ট একটি ইতিহাসের স্বর্ণালি অধ্যায় রচিত হতে যাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দিন আহমদ এ অনুষ্ঠানের কঠিন গোপনীয়তা অবলম্বন করেছিলেন। শপথ অনুষ্ঠানে সাধারণ মানুষ, মুক্তিযোদ্ধা, ছাত্র, শিক্ষক, রাজনীতিবিদ নেতাকর্মী, বুদ্ধিজীবী সহ শতাধিক দেশি-বিদেশি সাংবাদিক উপস্থিত ছিলেন। এ সময় মেহেরপুর মহকুমা প্রশাসক সি.এস.পি অফিসার ছিলেন বর্তমান সরকারের জ্বালানি উপদেষ্টা তৌফিক-ই এলাহী চৌধুরী। বেলা ১১টার সময় বহু প্রতীক্ষিত অনুষ্ঠানের সূচনা হয়। এক এক করে মুজিবনগর সরকারের রাষ্ট্রপতি, উপ-রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী ও মন্ত্রী পরিষদের সদস্যদের নাম ঘোষনা করা হয়। অনুষ্ঠানে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষনা পাঠ ও শপথ অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন দিনাজপুরের জাতীয় সংসদ সদস্য অধ্যাপক ইউসুফ আলী। এ সময় মুহুমুহু জয় বাংলা ধ্বনির মধ্যে অভিবাদন গ্রহণ করেন প্রধানমন্ত্রী সহ মন্ত্রী পরিষদের অন্য সদস্যরা। শপথ গ্রহণ শেষে তাজ উদ্দিন আহমদ তাঁর বক্তব্যে বলেছিলেন, আমরা যা করছি সবই শেখ মুজিবুর রহমানের নির্দেশে। তিনি আরও বলেন, পাকিস্তান আজ মৃত এবং অসংখ্য আদম সন্তানের লাশের তামায় তার কবর রচিত হয়েছে। অনুষ্ঠানে কোরআন তেলাওয়াত করেন বর্তমান মুজিবনগর ডিগ্রি কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞানের অধ্যাপক বাকের আলী। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন সাবেক মন্ত্রী ও এম.এম.এ আব্দুল মান্নান। জাতীয় সংগীত পরিবেশন করেছিলেন প্রয়াত অধ্যাপক আসাদুল ইসলাম সহ স্থানীয় মিশনারী শিল্পবৃন্দ। বৈদ্যনাথ তলার আশ-পাশ ঘিরে কয়েক মাইল ব্যাপী বাংলাদেশের অকৃত্রিম বন্ধু ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্ধিরা গান্ধীর হুকুমে কয়েকশ অ্যান্টি এয়ার ক্র্যাফট এবং দমদম এয়ারপোর্টে ভারতের কয়েক ডজন মিগ ফাইটিং এয়ার ক্র্যাফট প্রস্তুত রাখা হয়েছিল। হঠাৎ জেনারেল আতাউল গনি ওসমানী, স্যার হ্যারিআপ হ্যারিআপ (স্যার তাড়াতাড়ি করুন) বলে ওঠেন এবং অল্প সময় পর পাকিস্তানী সৈন্যরা শপথ অনুষ্ঠান স্থলে এসে তছনছ করে দেয়। বলা আবশ্যক যে, মুজিবনগর সরকারের রাষ্ট্রপতি, উপ-রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী ও মন্ত্রী পরিষদের সদস্যরা সবাই ছিলেন সত্তরের নির্বাচনে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি। এদিন প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দিন আহমদ মেহেরপুরের বৈদ্যনাথতলার নামকরণ করেছিলেন “মুজিবনগর”। স্বাধীনতার নয় মাস গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার ‘মুজিবনগর’ সরকার নামে দেশে বিদেশে বহুল পরিচিতি লাভ করে। এ সরকার সামরকি-বেসামরিক কর্মকর্তা, সেক্টর, সাব-সেক্টর কমান্ডার, ১৫টি মন্ত্রণালয়, অঞ্চল ভিত্তিক সিভিল প্রশাসনিক কাউন্সিল গঠন সরকারী কর্মকর্তা ও কর্মচারীর বেতন ভাতা সহ সবকিছু সরকারের কর্তৃত্বাধীন ছিল। যুদ্ধ চলা অবস্থায় সামরিক অফিসারদের পদোন্নতি, বেতন ভাতা এমনকি যুদ্ধে অবিস্মরণীয় অবদানের জন্য বীরশ্রেষ্ট, বীর বিক্রম, বীর উত্তম, বীর প্রতিক মুক্তিযোদ্ধাদের খেতাব দানের ব্যবস্থা করেছিলেন এ ঐতিহাসিক সরকার। পর্বত সমান প্রতিকুলতার মধ্য দিয়ে বীর সাহসী প্রধানমন্ত্রী তাজ উদ্দিন আহমদ সহ মন্ত্রী পরিষদের অন্যান্য সদস্যগণ অত্যন্ত নিষ্টা, সততা, আন্তরিকতা দিয়ে এ দেশের মাটি ও মানুষের ভালবাসায় যুদ্ধকালীন সরকার পরিচালনা করেছিলেন যা বিশ্বের ইতিহাসে বিরল। ১৮ এপ্রিল (১৯৭১ সাল) বিশ্বের বিভিন্ন দেশে মুজিবনগর সরকারের সংবাদ প্রচার ও প্রকাশিত হয়। সেদিন বিশ্ব অবাক বিষ্ময়ে একটি রাষ্ট্রের জন্মের ইতিহাস প্রত্যক্ষ করেছিল। বর্তমান বাংলাদেশ ভূ-খন্ডের বাঙালিরা প্রথমবারের মতো একটি স্বাধীন বাংলাদেশে জন্মের ইতিহাসের অংশীদার হলেন। 
১৯৭১ সালের ১৮ জুলাই ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের আগরতলা থেকে প্রকাশিত ‘দৈনিক সংবাদ’ পত্রিকার, “স্বাধীন বাংলার অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি নজরুল ইসলাম সহ মন্ত্রী পরিষদের শপথ গ্রহণ দাসত্ব থেকে সাত কোটি মানুষের মুক্তির সনদ ঘোষনা’ শীর্ষক শিরোনামে দীর্ঘ সংবাদের ২টি লাইন ছিল, “১৭৫৭ সালে পলাশীর আম্রকুঞ্জে মীর জাফরদের বিশ্বাসঘাতকতায় বাংলার স্বাধীনতার সূর্য অস্ত গিয়েছিল, আর আজ কুষ্টিয়ার এক আম্রকুঞ্জে বাংলার স্বাধীনতার রক্ত সূর্য আকাশে তার ভাস্বর দীপ্তি ছড়িয়ে দিয়ে বিশ্ববাসীকে জানিয়েছিল- বাংলাদেশ স্বাধীন। রক্তের সাগরে ¯œান করে বাংলার এই নব প্রজন্ম স্বাধীনতার জয়টীকা কপালে পরেছে।” ‘দৈনিক আজাদ’ পত্রিকায় বলা হয়, “পাকিস্তানী সৈন্যরা গতকাল সন্ধ্যায় (১৭ এপ্রিল ১৯৭১) কুষ্টিয়ার সীমান্তবর্তী শহর চুয়াডাঙ্গা হস্তগত করে। ভারতীয় প্রচারকারীরা এই শহরটিকে তথাকথিত বাংলাদেশ সরকারের রাজধানী বলিয়া দাবি করিয়া আসিতেছিল। সৈন্যরা শহরটিতে কোন গুলি বিনিময় ছাড়াই প্রবেশ করে এবং তথায় কোন ভৌতিক সরকারের সন্ধান পায় নাই।” ‘দৈনিক সংগ্রাম’ পত্রিকায় বলা হয়, “পাকিস্তানী সেনাবাহিনী গত শুক্রবার সন্ধ্যায় চুয়াডাঙ্গা শহরটিকে দখলে এনেছে। ভারতীয় প্রচারবিদরা কুষ্টিয়ার এই সীমান্তবর্তী শহরটিকে এতদিন যাবত তথাকথিত বাংলাদেশ সরকারের রাজধানী বলে দাবি করে আসছিল। তারা সেখানে ভারতের কাল্পনিক সরকারের কোন সন্ধান পায়নি। এ সরকার কেবল ভারতীয় প্রচারবিদদের কল্পনার ভেতরেই অবস্থান করছে বলে মনে হচ্ছে।”
মুক্তিযুদ্ধে রণনীতি ও রনকৌশলের অংশ হিসেবে পুরো বাংলাদেশকে ১১টি সেক্টরে ভাগ করা হয়েছিল। তেমনি বিশ্বের রাজনৈতিক রাজধানী হিসাবে খ্যাত লন্ডন শহর কাগজপত্রে কোন সেক্টরের মর্যাদা না পেলেও লন্ডন শহরে ১২ নম্বর সেক্টরের মর্যাদায় আসিন ছিল। ইতিহাসের সাক্ষ্য মতে, এ সেক্টরের সেক্টর কমান্ডারের সফলভাবে দায়িত্ব পালন করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বিচারপতি আবু সাঈদ চৌধুরী। তাঁর সাথে আরও দায়িত্ব পালন করেছেন, তাঁরই সেকেন্ড ইন কমান্ড যুক্তরাজ্য আওয়ামীলীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মরহুম গৌছ খান। 
যাই হোক, স্বাধীনতার সূতিকাগার ঐতিহাসিক এ স্থানটিকে স্মরণীয় করে রাখতে ১৯৭৪ সালের ১৭ এপ্রিল মুজিবনগর স্মৃতি মিউজিয়ামের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেছিলেন তদানীন্তন শিল্পমন্ত্রী সৈয়দ নজরুল ইসলাম। একই দিনে বঙ্গবন্ধু তোরণের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেন তদানীন্তন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ক্যাপ্টেন এম. মনসুর আলী। ১৯৮৭ সালে এরশাদ সরকার ১৪ কোটি টাকা ব্যয়ে ২৩ স্তম্ভ বিশিষ্ট একটি স্মৃতিসৌধ ৩৯.৩৭ একর জমির ওপর নির্মাণ করেন। সবুজ শান্ত পরিবেশে এক গর্বিত অহংকার নিয়ে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে স্মৃতিসৌধটি। পাকিস্তানের ২৩ বছরের নিপীড়ন শোষন আর নির্যাতনের প্রতীক ২৩টি স্তম্ভ। আড়াই ফুট উচ্চতার গোলাকার বৃত্ত ৩০ লাখ শহীদের স্মৃতি চিহ্ন প্রতিফলিত হয়েছে। ৩ ফুট উচ্চতায় ওপর বেদিটি সাত কোটি সংগ্রামী জনতার প্রতীক দেখানো হয়েছে। অস্থায়ী সরকারের শপথ গ্রহণ স্থানটিকে ইট দিয়ে আয়তকার রণক্ষেত্র চিহ্নিত করা হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধের ১১টি সেক্টর কে ভাগ করে দেখানো হয়েছে। বঙ্গবন্ধু সহ জাতীয় চার নেতা গার্ড অব অনারকারী ১২ আনসার সদস্য সহ ৪০০ মুক্তিযোদ্ধার ভাস্কর্য নির্মাণ করা হয়েছে। শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানের চেয়ারগুলো ঢাকা মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরে রাখা হয়েছে। 
১৭ এপ্রিলের গুরুত্ব বা ইতিহাস আজকের অধিকাংশ প্রজন্ম একেবারেই জানে না। আওয়ামীলীগে অনুপ্রবেশকারীরা এই দিনটির ব্যাপারে কিছু জানে না এবং জানার চেষ্টাও করে না। কোন কোন রাজনৈতিক দল এ দিনটিকে মানে না। তারা কোন অনুষ্ঠানের আয়োজনও করে না। এমনও অনেক প্রতিষ্ঠান আছে গুরুত্বপূর্ণ জাতীয় দিবসে জাতীয় পতাকাও উত্তোলন করে না। কিন্তু তারা জানে না মুক্তিযুদ্ধের আদর্শই হচ্ছে আমাদের রাষ্ট্রের একমাত্র আদর্শ। সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক সুবিচার হবে সব আইনের উৎস। মুক্তিযুদ্ধের আদর্শভিত্তিক বাংলাদেশ বিনির্মাণে নবতর সংগ্রামকে জাতীয় সংগ্রামে পরিণত করতে হবে। ১০ এপ্রিল প্রজাতন্ত্র দিবস এবং ১৭ এপ্রিল কে স্বাধীনতার প্রতিষ্ঠা দিবস হিসেবে সরকারি ছুটি ঘোষনা করা উচিত। পরিশেষে দেশের সকল মুক্তিযুদ্ধে বিশ্বাসী নাগরিক ও তরুণ সমাজকে বাঙালি জাতির অস্তিত্ব ইতিহাসের সাক্ষী মুজিবনগরকে অন্তত একবার দেখে আসার আমন্ত্রণ জানাচ্ছি। 
লেখক : কলামিস্ট।

SUMMARY

1835-1.png