১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট শুক্রবার। একটু দেরি করে ঘুম থেকে উঠেছি। রেডিওটা অন করে শুনি- এক বিশ্বাস ঘাতক মীরজাফরের কণ্ঠস্বর। মেজর ডালিম বলছি- স্বৈরাচারী আওয়ামী লীগ সরকারকে উৎখাত করা হয়েছে। শেখ মুজিবকে হত্যা করা হয়েছে। কি বলছে এ সব। বিশ্বাস হচ্ছে না আমার। কান্না সংবরণ করতে পারলাম না। অলক্ষে চোখ দিয়ে দুফোঁটা লোনা জল গড়িয়ে পড়ল। সকালের নাস্তা না খেয়েই বেরিয়ে পড়লাম। রাস্তায় বের হয়ে দেখি থমথমে পরিবেশ। মানুষের চোখে-মুখে অজানা আতঙ্কের ছাপ। কয়টি অসহায় কুকুর যেন কান্নার শব্দে জানাচ্ছে বাঙালি জাতির সর্বনাশের খবর। স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় দলবদ্ধ কুকুরের এ ধরনের কান্না শুনে তখনো আঁতকে উঠত মানুষ। মানুষ বলে, কুকুর কাঁদলে অমঙ্গল হয় দেশের।
ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও আওয়ামী লীগের কজন নেতার সঙ্গে দেখা। কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে কি যেন ভাবছেন তারা। মুক্তিযোদ্ধা নজরুল ভাই বলছেন- এখন কি হবে? আবার কি অস্ত্র ধরতে হবে বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীদের বিরুদ্ধে? এ সব প্রশ্নের উত্তর আমার জানা নেই। আমি আনন্দ মোহন কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র। রাজনীতি খুব একটা বুঝি না। বুঝি- বঙ্গবন্ধু, বাংলাদেশ, স্বাধীনতা ও শেখ মুজিব এক সুতায় গাঁথা। বুঝি, বঙ্গবন্ধুর হাতের ইশারায়ই চলে বাংলাদেশ। তাঁর হাতের তালুতে আঁকা প্রিয় মাতৃভূমির ছবি।
বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ শুনেছি পরেরদিন সকালে। কাব্যের ভাষায়, নিপুণ শব্দ চয়নে তিনি বলেছেন, এবারের সংগ্রাম মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম। রক্ত যখন দিয়েছি আরো দেব এ দেশের মানুষকে মুক্ত করে ছাড়ব ইনশাল্লাহ। …মরতে যখন শিখেছি তখন কেউ আমাদের দাবিয়ে রাখতে পারবে না। তোমাদের যার যা কিছু আছে তাই নিয়ে শত্রুর মোকাবেলা করতে হবে। তখন থেকে আমি বঙ্গবন্ধুর ভীষণ ভক্ত। ইত্তেফাকে তাঁর সব খবর পড়ি। টেলিভিশনে ছবি দেখি। কেউ তাঁর খারাপ সমালোচনা করলে কষ্ট পাই। প্রতিবাদ করি।
কত আশা ছিল। দেশ স্বাধীন হলে বঙ্গবন্ধু তাঁর দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফোটাবেন। অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান ও চিকিৎসার ব্যবস্থা করবেন। স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ে তুলবেন। শোষণমুক্ত সমাজ গড়বেন। তাই জাতির জনকের এই নিষ্ঠুর হত্যাকাণ্ডকে সহজে মেনে নিতে পারিনি আমরা। ভাবলাম, যদি কোনো প্রতিবাদ-প্রতিরোধের কর্মসূচি আসে, অংশগ্রহণ করব। মুক্তিযুদ্ধের মতো ঝাঁপিয়ে পড়বে মানুষ। এই প্রত্যাশায় আমি ও আমার বাল্যবন্ধু মোকছেদ আলী দুই মাইল পথ হেঁটে এমপি সাহেবের বাড়ি যাই। এমপি সাহেব বাড়ি নেই। ঢাকায় আছেন। বাড়িতে বহু নেতাকর্মীর ভিড়। সবার মুখে উৎকণ্ঠার ছাপ। কেউ কেউ বলছেন রক্ষীবাহিনী কি করছে? স্বাধীনতার স্বপক্ষের সৈন্যরা চুপ করে বসে আছেন কেন? ভারতের ভূমিকা কি। প্রতিরোধের ডাক আসছে না কেন? নেতারা কোথায়? তা হলে কি বাংলাদেশ আবার পাকিস্তান হয়ে যাবে? পাঞ্জাবিদের পায়ের তলায় পিষ্ট হবে বাঙালির স্বাধীনতার স্বপ্ন লাল সবুজের পতাকা? নানা প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে মানুষের মনে।
ছাত্রলীগ নেতা ফজলু ভাই কাঁদছে। মনে হলো তাঁর অশান্ত অশ্রæর বন্যায় ভেসে যাচ্ছে বাংলাদেশ। ভেসে যাচ্ছে বাঙালির হাজার বছরের ঐতিহ্য। স্বাধীনতা সংগ্রামের বীরত্বগাথা। লাখ লাখ মানুষের আত্মত্যাগের ইতিহাস! রবীন্দ্রনাথ, নজরুল ও সুকান্তের শব্দ সংগ্রাম। শহীদ বুদ্ধিজীবীদের স্মৃতি।
কিছুদিন আগের কথা। ময়মনসিংহের এক জনসভায় এসেছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। সে সময় ফুলবাড়িয়া উপজেলায় ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড়ে শত শত বাড়িঘর মাটির সঙ্গে মিশে যায়। প্রবল বাতাসে পুকুরের মাছ রাস্তায় উঠে মারা যায়। বাঁশ বাগান, গাছপালা উপরে পড়ে। গাছের ডালে ঝুলে থাকে ঘরের চালের টিন। বহু মানুষ ও গবাদিপশু আহত হয়। মাঠের ফসল নষ্ট হয়ে যায়। বেশ কয়েকটি গ্রাম লণ্ডভণ্ড হয়ে যায় প্রকৃতির পাগলামিতে। বঙ্গবন্ধু এ খবর শোনার সঙ্গে সঙ্গে দুর্গত মানুষের অবস্থা স্বচক্ষে দেখার জন্য ছুটে যান উপদ্রুত এলকায়। আমরা তখন ত্রাণ বিতরণ কাজে ওখানেই ছিলাম। বেলা ১১টার দিকে হঠাৎ দেখি একটি হেলিকপ্টার থেকে বঙ্গবন্ধু নামছেন। তাঁর পাশে হাতেগোনা কজন পুলিশ। তাদের হাতে সাধারণ রাইফেল। একজন রাষ্ট্র প্রধানের নিরাপত্তার জন্য, যা মোটেও যথেষ্ট নয়। অথচ কি সাহস। কি নির্ভীক তিনি। বাংলার মানুষের প্রতি কি অগাধ বিশ্বাস। নিরাপত্তা বেষ্টনী ভেঙে মানুষের সঙ্গে হাত মিলালেন তাদের প্রিয় নেতা। সমবেদনা জানালেন। স্বচক্ষে দেখলেন ঘূর্ণিঝড় উপদ্রুত এলাকার দৃশ্য। অথচ নিজের জীবনের নিরাপত্তার কথা একটুও ভাবলেন না। তিনিতো জানতেন, মহাত্মা গান্ধীর করুণ মৃত্যুর কথা। জন এফ কেনেডির কথা। মার্টিন লুথার কিংয়ের কথা। চিলির আলেন্দের কথা। মৃত্যুর কোনো ভয় তাঁর ছিল না। আদর্শের সঙ্গে আপস ছিল না। এ দেশের মাটি, মানুষ ও মাতৃভাষার প্রতি, বাংলার গাছ-পালা, আকাশ-বাতাস, লতাগুল্মের প্রতি, পশু-পাখি, নদী-নালা, প্রকৃতির প্রতি এবং শিল্প সাহিত্যে ছিল তাঁর সুগভীর ভালোবাসা। অন্তরের আকর্ষণ। তাই তিনি বাংলার প্রখ্যাত নেতাদের পেছনে ফেলে হতে পেরে ছিলেন বঙ্গবন্ধু, জাতির জনক এবং হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি।
এক বিদেশি সাংবাদিক বঙ্গবন্ধুকে জিজ্ঞাসা করেছিলেন, আপনার সবচেয়ে বড় গুণ কোনটি? উত্তরে তিনি বলেছিলেন, আমি আমার দেশের মানুষকে ভালোবাসি। আপনার সবচেয়ে বড় দুর্বলতা কি? আমি আমার দেশের মানুষকে খুব বেশি ভালোবাসি। এই ভালোবাসাই কাল হয়েছিল জাতির জনকের জীবনে। নিরাপত্তার কারণে বঙ্গবন্ধুকে বহুবার বত্রিশ নম্বর ছেড়ে বঙ্গভবনে যাওয়ার কথা বলা হয়েছিল। তিনি সেই কথায় কর্ণপাত করেননি। তাঁর দৃঢ় বিশ্বাস ছিল, যে বাঙালি জাতির জন্য তিনি সারা জীবন জেল খেটেছেন। যাদের ভালোবাসার টানে তিনি পাকিস্তানের ফাঁসির মঞ্চ থেকে ফিরে এসেছেন। স্বজন হারানোর বেদনায় হাউমাউ করে কেঁদেছেন। বীরাঙ্গনাদের নিজের সন্তান হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছেন, সেই বাঙালিরা তাঁকে হত্যা করতে পারে না। ফুলবাড়িয়ায় ঘূর্ণিঝড় উপদ্রুত এলাকায় খুব কাছে থেকে বঙ্গবন্ধুকে প্রত্যক্ষ করেছি আমি। তাঁর প্রশস্ত ললাট, কালো ফ্রেমের চশমা, বলিষ্ঠ বাহু, শাল প্রাংশু দেহ, দীপ্তিমান চক্ষুদ্বয় দেখে আমার মনে হয়েছে কিউবার বিপ্লবী নেতা ফিদেল ক্যাস্ট্রোর কথা- আমি হিমালয় দেখেনি; কিন্তু শেখ মুজিবকে দেখেছি। ব্যক্তিত্ব এবং সাহসিকতায় তিনিই হিমালয়। আমার কাছে মনে হয়েছে তারচেয়েও বেশি। এর আগে ময়মনসিংহের সার্কিট হাউস এবং কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে এই মহান নেতাকে আমি দেখেছি। কি কারুকাজ আছে তাঁর কথায়? জাদু আছে বক্তৃতায়। চুম্বকীয় আকর্ষণ আছে তাঁর চাহনীতে? এক পলক তাকালেই বিনম্র শ্রদ্ধায় মাথা নত হয়ে আসে মানুষের। তখন কে জানত শেখ মুজিব এভাবে চলে যাবেন না ফেরার দেশে। জনসভায় কোনোদিন শোনা যাবে না তাঁর প্রিয় সম্ভাষণ- ভাইয়েরা আমার। যে মহান নেতা বাঙালি জাতিকে একটা মানচিত্র দিল। পতাকা দিল। পরিচয় দিল বিশ্ব দরবারে। তাঁকেই নিষ্ঠুরভাবে হত্যা করে প্রতিশোধ নিল পারজিত শত্রুরা। প্রতিশোধ নিল মার্কিন সাম্রাজ্যবাদ ও তাঁর এ দেশের দোসররা। সেনাবাহিনীর কিছু বিপথগামী সৈনিক। যার সঙ্গে যুক্ত ছিল কিছু অসৎ আমলা ও আওয়ামী লীগের একটি কুচক্রীমহল, যারা বঙ্গবন্ধুকে কোনো সময় সহ্য করতে পারত না।
শেখ মুজিব ছাত্র জীবন থেকেই রাজনীতি করতেন। পাকিস্তান আন্দোলনের সঙ্গেও তিনি ওতপ্রোতভাবে জড়িত ছিলেন। পরবর্তীতে মহাত্মা গান্ধী, হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী, দেশ বন্ধু চিত্তরঞ্জন দাস, নেতাজি সুভাষ বসু, এ কে ফজলুল হকের চিন্তা-চেতনা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের রাজনীতিকে প্রভাবিত করেছিল প্রবলভাবে। চীনের মহান নেতা মাওসেতুংয়ের প্রতিও তিনি ছিলেন খুব অনুরক্ত। সিপাহি বিপ্লব, ফকির-সন্ন্যাসী বিদ্রোহ, তেভাগা আন্দোলন, টংক বিদ্রোহ, ক্ষুদিরামের ফাঁসি, তীতুমীরের বাঁশের কেল্লা, প্রীতিলতা ও সূর্য সেনের আত্মত্যাগ থেকেও তিনি অনুভব করতে পেরেছিলেন বাঙালির প্রত্যাশা, চাওয়া-পাওয়া এবং তাঁদের মনের সুপ্ত খবর। সে পথেই তিনি অগ্রসর হয়েছেন অত্যন্ত সুপরিকল্পিতভাবে। তাঁর পরিকল্পায় কোনো ভুল ছিল না। তিনি বাঙালির শত বছরের বঞ্চনার অবসানেই ১৯৬৬ সালে জাতির সামনে তুলে ধরেন ছয় দফার মুক্তি সদন। প্রকৃত প্রস্তাবে ছয় দফাতেই ছিল স্বাধীনতা বৃক্ষের অঙ্কুরিত চারা। ছয় দফার মূল উদ্দেশ্য ছিল পাকিস্তান হবে একটি একটি ফেডারেল ধরনের রাষ্ট্র এবং প্রতিটি অঙ্গ রাজ্যের থাকবে পূর্ণ স্বায়ত্তশাসন। পৃথক মুদ্রা ব্যবস্থা, নিজস্ব আঞ্চলিক সেনাবাহিনী এবং বৈদেশিক মুদ্রার আয়-ব্যয়ের হিসাব, কর আদায়ের ক্ষমতা। শুধু পররাষ্ট্র ও বৈদেশিক নীতি ছাড়া সব কাজের কর্তৃত্ব থাকবে আঞ্চলিক সরকারের হাতে। পাঞ্জাবিদের পছন্দ না হলেও ছয় দফা সারা দেশের মানুষের কাছে বিপুল জনপ্রিয়তা অর্জন করে এবং তার ঢেউ লাগে বেলুচিস্তান ও উত্তর-পশ্চিম সীমান্ত প্রদেশে।
বঙ্গবন্ধু অল্প বয়সে বিয়ে করেও সংসার ত্যাগী সন্ন্যাসীর মতো ঘুরেছেন সারা দেশ। গড়ে তুলেছেন ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগের মতো দুটি শক্তিশালী সংগঠন। জাতি, ধর্ম ও বর্ণ নির্বিশেষে তিনি সব পেশা ও শ্রেণির মানুষকে একত্রিত করেছিলেন ছয় দফা ও এগার দফার দাবির ভিত্তিতে। এখানেই তাঁর বড় কৃতিত্ব।
বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে নয় মাস যুদ্ধ করে আমারা স্বাধীনতা অর্জন করেছি। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন ছিল দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফোটানো। সব মানুষের মৌলিক চাহিদা, অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা ও চিকিৎসা নিশ্চিত করা। কলকারখানায় উৎপাদন বাড়ানো। শ্রমিকের ন্যায্য মজুরি প্রদান। কৃষি উৎপাদন বাড়িয়ে দেশকে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ করা। দেশ থেকে দুর্নীতি দূর করা। স্বাধীনতার সুফল সবার ঘরে ঘরে পৌঁছে দেয়া। বঙ্গবন্ধুর সেই স্বপ্ন আজো পূরণ হয়নি। আমারা যদি জাতির জনকের স্বপ্ন পূরণ করতে চাই, তাঁর প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করতে চাই, যদি ২০২১ সালের মধ্যে একটি মধ্যম আয়ের দেশ গড়তে চাই, ২০৪১ সালের মধ্যে একটি উন্নত দেশ হিসেবে বিশ্বের দরবারে বাংলাদেশকে প্রতিষ্ঠিত করতে চাই, তবে আমাদের সংকীর্ণ স্বার্থ ভুলে ধ্বংসের রাজনীতি ত্যাগ করতে হবে। জ্বালাও-পোড়াও বন্ধ করতে হবে। স্বশাসিত গণতান্ত্রিক স্থানীয় সরকার গঠন করে সব উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জনগণকে চীন, ভিয়েতনাম ও দক্ষিণ কোরিয়ার মতো যুক্ত করতে হবে। শিক্ষা ব্যবস্থার আমূল পরিবর্তন করে বিজ্ঞান ও কারিগরি শিক্ষার ওপর জোর দিতে হবে। প্রশিক্ষিত মানবসম্পদ তৈরি করতে হবে। নারীর ক্ষমতায়ন করতে হবে। নারী নির্যাতন, শিশু হত্যা বন্ধ করতে হবে। পরিকল্পিত ও পরিবেশবান্ধব নগর গঠনের জন্য এখন থেকেই দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে। প্রতিটি নগরে একরূপ নগর সরকার ও নগরীয় কৃষি ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে। গ্রাম আদালতগুলোকে আরো কার্যকর করতে হবে। প্রশাসন বিকেন্দ্রীকরণ করতে হবে। নির্দিষ্ট এলাকায় পরিবেশবান্ধব পরিকল্পিত সবুজ শিল্প নগরী গড়ে তুলতে হবে। কৃষি জমি সুরক্ষা করতে হবে। সব প্রকার জলাশয় ভরাট এবং নদী দখল ও দূষণ কঠোরহস্তে বন্ধ করতে হবে। আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করতে হবে। গণতন্ত্রকে টেকসই করতে হবে। চোরাচালান ও মাদক ব্যবসা জাতির বৃহত্তর স্বার্থে বন্ধ করতে হবে। প্রত্যেক অফিস-আদালত থেকে ঘুষ-দুর্নীতি জনহয়রানি বন্ধ করতে হবে। আমলা, রাজনীতিবিদ ও ব্যবসায়ীদের আচরণের পরিবর্তন করতে হবে। খাদ্যে ভেজাল দেয়া বন্ধ করতে হবে। ব্যাংকসহ সব আর্থিক প্রতিষ্ঠানের দুর্নীতির মূলোৎপাটন করতে হবে। বিদেশি বিনিয়োগের পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে। মনে রাখতে হবে, আমলা ও রাজনীতিবিদরা জনগণের সেবক এবং জনগণই রাষ্ট্রের প্রকৃত মালিক। বঙ্গবন্ধু আজীবন সেই রাষ্ট্রের মালিক জনগণের ক্ষমতায়নের জন্যই রাজনীতি করেছেন। নিজের জীবন দিয়ে ত্রিশ লাখ মানুষের রক্তের ঋণ শোধ করে গেছেন।
নিতাই চন্দ্র রায় : কৃষিবিদ ও কলাম লেখক।