হাচু আমাকে মোটেও ছাড়তে চায় না। আজকাল বিদায় নেয়ার সময় কাঁদতে শুরু করে। কামালও আমার কাছে এখন আসে। হাচু ‘আব্বা’ বলে দেখে কামালও ‘আব্বা’ বলতে শুরু করেছে। গোপালগঞ্জ থানা এলাকার মধ্যে থাকতে পারি বলে কয়েক ঘণ্টা ওদের সঙ্গে থাকতে সুযোগ পেলাম- লিখেছেন একজন পিতা যিনি তার শিশুদের দেখার সুযোগ পেতেন আদালতে হাজিরা দেয়ার সময়, জেলের দরজায়। তিনি আর কেউ নন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান (অসমাপ্ত আত্মজীবনী, পৃ-১৮৫-৮৬)। অন্যদিকে তার সন্তানরাও বঞ্চিত হয়েছেন পিতার আদর-স্নেহ-ভালোবাসা থেকে। ‘আব্বা’ ডাকটি সহজে ডাকার অভ্যস্ততা থেকে। কেননা, তাদের পিতা ক’দিন আগেই জেলে যাওয়ার আগে অল্প ক’দিনের জন্য একসঙ্গে থাকা শেষে বিদায় নেয়ার কালে বলেছিলেন, ‘একদিন-দুইদিন করে সাতদিন সেখানেই রইলাম। ছেলেমেয়েদের জন্য একটু বেশি মায়া হয়ে উঠেছিল। ওদের ছেড়ে যেতে মন চায় না, তবুও তো যেতে হবে। দেশ সেবায় নেমেছি, দয়া মায়া করে লাভ কি? দেশকে ও দেশের মানুষকে ভালোবাসলে ত্যাগ তো করতেই হবে এবং সে ত্যাগ চরম ত্যাগও হতে পারে।’ (পৃ-১৬৪) নিজের ব্যক্তিগত জীবন, সন্তানদের চাওয়া-পাওয়া গোটা আত্মজীবীতে খুব বেশি স্থান দেননি। তবে অল্প যে ক’টি কথা ফাঁকে ফাঁকে তাদের সম্পর্কে লিখেছেন তা যেন সবার প্রতি তার অকৃত্রিম ও আবেগের সবটুকু নিংড়িয়ে দেয়ারই বহিঃপ্রকাশ। দেশ ও জনগণকে ভালোবাসার জন্য নিজের ব্যক্তিগত এবং সন্তানদের ত্যাগের আদর্শ প্রতিষ্ঠার এমন দৃষ্টান্ত পৃথিবীর সেরা বিপ্লবী ও নেতারাই কেবল রেখ গেছেন। তবে দুঃখজনক অভিজ্ঞতা হলো, যে দুঃখী জনগণের মুক্তির জন্য এত বড় আত্মত্যাগ একজন নেতা ব্যক্তিগত এবং সমগ্র পরিবারের জীবনে রেখে গেছেন সেই নেতাকে বা তার পরিবারের সদস্যদের ত্যাগকে অনেক সময়ই কেউ কেউ বিতর্কিত করার হীনষড়যন্ত্রে নামে, অপপ্রচারের চুঙ্গা মুখে নিয়ে নেমে পড়ে, অনেক মানুষই অপ্রপ্রচারে বিশ্বাসও করে, সত্য-মিথ্যা যাচাই করে না, বছরের পর বছর সেই মিথ্যার ঢোল বা বাজনা বাজিয়েই চলে। ফলে প্রজন্ম থেকে প্রজন্ম অপপ্রচারের ঢেউ যেন বয়েই চলছে। সত্যটা জানা ও বোঝার চেষ্টা কমই এতে হয়। বাঙালি চরিত্রের ক্ষেত্রে ‘চিলে কান নেয়ার’ প্রবাদটি একারণেই যুগ যুগ ধরে চালু রয়েছে। বঙ্গবন্ধুর ব্যক্তিগত চরিত্র নিয়ে অপপ্রচার করার সামান্যতম উপাদান খুঁজে পাওয়া কঠিন। কিন্তু বঙ্গবন্ধুর বড় ছেলে শেখ কামালকে নিয়ে স্বাধীনতা-উত্তর সাড়ে তিন বছরে তার মৃত্যুর পর এখনো গোপনে একইভাবে সেই সব বানোয়াট গল্প-কল্পকাহিনী ছড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা থেমে নেই। শেখ কামালের অনেক ঘনিষ্ঠ বন্ধু ছিলেন যারা তখন তার সামান্য নৈকট্য পেলেই ধন্য হয়ে যেত, তাদের অনেকেই বোল পাল্টিয়েছে, অনেকে ব্যক্তিগত পর্যায়ে এসব নিয়ে আধা সত্য আধা অসত্য জেনে না জেনে কথা বলেন। কেউ কেউ এসব নিয়ে কিছু লিখে অন্তত সত্যটা জানাতে পারত- মনে হয় তারা সেই কাজটি করতে অক্ষম।
শেখ কামালকে আমি দেখেছি ১৯৭৩ থেকে ১৯৭৫-এর জুলাই পর্যন্ত। কথা হয়েছে অল্প ক’দিন। প্রথম কথা হয় এস এম হলের গেটে। তিনি এস এম হলের সম্মুখে ভলিবল-ব্যাডমিন্টন খেলতে প্রায়ই বিকেলে আসতেন। একদিন হলের গেটে তাকে হাতে রেকেট, কেডস পরা অবস্থায় দেওয়াল পত্রিকাগুলো দেখতে আমি এগিয়ে গেলে জানতে চাইলাম পত্রিকাটি কে সম্পাদনাক করেন। আমার নাম পরিচয় দিলাম, অর্থনীতি বিভাগের ছাত্র বলার পর নিজেরটাই তিনি জানিয়ে দিলেন। অল্প ক’টি কথা সেদিন হলো। এরপর হল টিএসসি এবং সবশেষ বাকশাল গঠিত হওয়ার পর জাতীয় ছাত্রলীগ প্রতিষ্ঠা হলে টিটি কলেজের বিপরীত দিকে নতুন কার্যালয়ে তিনি আসতেন, সেখানে তার প্রাণবন্ত আড্ডার একজন শ্রোতা হওয়ার সুযোগ হয়েছিল আমার। তসলিম তার অভিনীত শেষ নাটকটি স্টেজের পেছনে থাকার সুবাদে তাকে খুব কাছ থেকে অভিনেতা হিসেবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের র্যাগ ডে উদযাপনে কামাল ভাইয়ের বছরের মনমাতানো সাজগোজকে সবাই উপভোগ করেছে, কাছে থেকে দেখেছে। এতটুকু দেখা থেকে একজন তরুণ প্রতিশ্রæতিশীল, বহুগুণের অধিকারী মানুষকে তখন যতটা চিনেছি, পরবর্তী দীর্ঘ সময়ে আরো বেশি উপলব্ধি করেছি। ১৫ আগস্টের হৃদয়বিদারক ঘটনার পর প্রায়ই মনে হতো যদি শেখ কামাল লেখাপড়ার জন্য আমাদের মতো সোভিয়েত ইউনিয়নে চলে আসতেন তাহলে আমরা অন্তত বঙ্গবন্ধু পরিবারের একজনকে পেতাম যিনি দেশের নেতৃত্বের হাল ধরতে পারতেন। পরবর্তী সময়ে অবশ্য শেখ হাসিনা সেই শূন্যতা পূরণে এগিয়ে আসেন।
শেখ কামালের জন্ম হয়েছে ৫ আগস্ট ১৯৪৯ সালে। গোপালগঞ্জেই তখনো বঙ্গবন্ধু পরিবারের সদস্যরা গ্রামেই থাকতেন, বঙ্গবন্ধুর পিতার সঙ্গে। যেই পাকিস্তানের জন্য তরুণ মুজিবরা এক সময় আন্দোলন করেছিলেন সেই পাকিস্তান সৃষ্টির পরই বাংলা ও বাঙালি বিদ্বেষী আচরণ শুরু করলে তরুণ মুজিবের থাকার জায়গা হতে থাকে জেলখানাগুলোতে। সুতরাং তিনি স্ত্রী-কন্যা-পুত্রকে নিয়ে ঢাকায় থাকার সুযোগই তো পাচ্ছিলেন না। নবগঠিত আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক বা সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব নেয়ার পরও তার ঠিকানা বেশির ভাগ সময়ই জেলে হতে থাকে। ফলে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে তার দেখা বাসাবাড়ির চাইতে থানা-আদালতপাড়া ও জেলখানাতেই বেশি হতো। সেই কষ্টের জীবনটি তো এই পরিবারের শিশুদের জন্ম থেকেই সঙ্গী হয়ে গেল। রাষ্ট্র ও সরকার থেকে যেমনিভাবে নিগৃহীত হওয়া, সামাজিকভাবেও জেল-জুলুমের পরিবারকে পরিহার করার বিষয়টি তখন প্রকট ছিল। সুতরাং জনগণের জন্য আন্দোলন-সংগ্রামে ব্যক্তি ও পরিবারের জীবনকে উৎসর্গ করে চললেও খুব কম মানুষই নেতার পরিবারের পাশে এসে দাঁড়িয়েছিলেন বাসাভাড়া দিতে নিঃসংকোচ বোধ করেছেন। ১৯৬৯-এর গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়েই গণমানুষের হৃদয়ে তার ঐতিহাসিক ভূমিকার অবস্থানটি দৃঢ় হতে থাকে, ৩২ নম্বর তখনই কেবল রাজনীতির তীর্থঘরে পরিণত হয়। একই দীর্ঘ সময়ে এই পরিবারের মানুষগুলো নেতার মতোই ত্যাগের মধ্য দিয়েই বেড়ে উঠেছিলেন। তাদের কারোই জীবনে জৌলুশ, চাকচিক্য আসেনি। বাঙালি আট দশটি মধ্যবিত্ত পরিবারের মতোই পোশাক পরতেন। এত বড় নেতার বাড়ির সরু সিঁড়ি, মাঝারি পরিসরের কক্ষ প্রমাণ করে ত্যাগের বাইরে, রাষ্ট্র ও জনগণের স্বাভাবিক জীবনের চাইতে তাদের জীবনও খুব বেশি আলাদা ছিল না। থাকলে স্বাধীনতা-উত্তরকালে তারা থাকতে পারতেন গণভবন, বঙ্গভবন বা অন্য কোনো অট্টালিকায়। বঙ্গবন্ধু পরিবারকে বুঝতে হলে ত্যাগের দীর্ঘ সিঁড়ি মাড়ানোর অভিজ্ঞতাকে বুঝতে হবে, মাথায় রাখতে হবে। শেখ কামালের এই ধারার বাইরে যাওয়ার কোনো সম্ভাবনা ছিল না। যারা কাছ থেকে, আমার মতো কিছুটা দূর থেকে স্বল্প সময়ের জন্য দেখেছেন তারা যদি খুব নৈর্ব্যক্তিকভাবে সবকিছু মিলিয়ে দেখেন তাহলে ত্যাগী, সংগ্রামী, সংযত পরিবারের ব্যাপক প্রভাব নিয়েই তাকে বেড়ে উঠতে দেখবেন। এর বাইরে যাওয়ার উপাদান পাওয়া দুষ্কর।
তিনি ২৫ মার্চের পর ঠিকই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ঢাকা ছাড়লেন, রণাঙ্গনে যোগ দিলেন মুক্তিযুদ্ধের সেনা প্রধান আতাউল গণি ওসমানির এডিসির দায়িত্ব পালন করেন। যুদ্ধ শেষে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিরে গেলেন। বঙ্গবন্ধুর বড় ছেলে পরিচয়ে ছাত্রলীগের বিশেষ কোনো পদ বাগিয়ে নেননি বরং তারুণ্যের মেধাকে কাজে লাগানোর চিন্তাই তার মধ্যে নীরবে কাজ করছিল। তিনি এস এম হলের বাস্কেট বল ক্যাপ্টেন হলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এর প্রসারে নিজেকে যুক্ত করলেন, ১৯৭২ সালেই আবাহনী সমাজকল্যাণ সংস্থা গড়ে তুললেন, ফুটবল, ক্রিকেট, হকির সমন্বয়ে আবাহনী ক্রীড়াচক্র যাত্রা শুরু হয়। এর স্বপ্নদ্রষ্টা এবং পরিচালনার কেন্দ্রবিন্দুতে ছিলেন শেখ কামাল। উদ্দেশ্য তার একটিই দেশের তরুণদের ক্রীড়ার মাধ্যমে সংগঠিত করা, আন্তর্জাতিক অঙ্গনে নিয়ে যাওয়া। শেখ কামাল ভালো গিটার বাজাতেন, সঙ্গীত চর্চা করতেন, নাট্য চর্চাতেও তার ছিল অসাধারণ দক্ষতা। তিনি আড্ডাও আসর মাতাতে পারতেন নানা গল্প, কবিতা আবৃত্তি করে, হাসাতে পারতেন বড় ছোট সবাইকে। তাকে সামাজিক বিজ্ঞান বিভাগের করিডোরে দাঁড়িয়ে ক্লাসের অপেক্ষায় অথবা বন্ধুদের সঙ্গে কথা বলতে অনেকবারই দেখেছি। তার এতসব কাজের খোঁজখবর ক’জনই বা রাখত, জানত। কিন্তু তাকে নিয়ে গল্পের ফাঁদ তৈরি করতে ঈর্ষাপরায়ণ বাঙালির অভাব ছিল না। আমাদের চোখে কখনো তাকে ঔদ্ধত্য বা অশালীন কোনো আচরণে লিপ্ত হতে দেখিনি। তবুও কতজন কত কথা বলে বেড়াত। বঙ্গবন্ধুর ছেলে বলেই হয়তো একটি গোষ্ঠী বেশ কৌশলেই নানা বানোয়াট গল্প ছড়িয়ে দিয়ে চানাচুরের মতো মুখরোচক তৈরি করত, সেগুলো ভেসে বেড়াত। যারা উগ্রবাদী রাজনীতিতে হেলে পড়েছিল তারা এসবের প্রচার হলগুলোতে করিডোরের টিএসসিতে এক সময় গোপনে, পরে প্রকাশ্যেই করেছে। মেয়েদের নিয়েই তার সম্পর্কে নানা গল্প প্রচারে আনা হতো। এ সবের মূল ছিল একটি প্রেক্ষাপট তৈরি করা যা অল্প ক’দিন পরই বড় ধরনের অপবাদ দেয়ার জন্য বিশ্বাসযোগ্য (!) হতে পারে। এর একটি হলো ব্যাংক ডাকাতির প্রচারণা- যা দেশের তৎকালীন দু’একটি পত্রিকায় বড় করে ছাপা হলো। ঢাকায় অবস্থানরত ডেইলি টেলিগ্রাফ পত্রিকার সাংবাদিক পিটার হেজেল হার্সকে দিয়ে বিদেশে প্রচার করানোর চেষ্টা করেছিল একটি মহল। পশ্চিমা এই ভদ্রলোক তাৎক্ষণিকভাবেই বললেন, প্রধানমন্ত্রীর পুত্রের টাকার প্রয়োজন হলে তাকে ব্যাংক ডাকাতির মতো কাণ্ডে লিপ্ত হতে হবে কেন? টাকা চাইলে ব্যাংক ম্যানেজাররা তার বাড়িতেই টাকা নিয়ে যেতে প্রস্তুত অনেককেই পাওয়া যাবে। এটি যে একটি পরিকল্পিত ঘটনা ছিল তা অনেকেই বুঝতে পারেনি। মূল এ ঘটনা যে উল্টো, অর্থাৎ দুষ্কৃতকারীদের ধরতে শেখ কামাল জিপ থেকে লাফ দিলে মাটিতে পড়ে যান। সেটিকেই পরদিন থেকে স্বাধীনতা বিরোধী এবং উগ্র হঠকারী শক্তি ব্যাংক ডাকাতির ঘটনা হিসেবে প্রচার করতে থাকে। অবশ্য আসল ঘটনা পরদিন মর্নিং নিজউ পত্রিকায় ছাপা হলেও তা অপপ্রচারে চাপা পড়ে যায়। ১৯৭৫-এর ১৫ আগস্টের পর অপপ্রচারই প্রচারের মূল রসদ হিসেবে থেকে যায়।
দ্বিতীয় ইস্যু হিসেবে মেজর ডালিমের স্ত্রীর সঙ্গে একটি স্ক্যান্ডালের ঘটনার রটনা ছড়িয়ে শেখ কামালকে দুশ্চরিত্রের বা লম্পট হিসেবে উপস্থাপনের চেষ্টা করা হয়। অথচ গাজী পরিবারের সঙ্গে বিয়ের অনুষ্ঠানের কথা কাটাকাটির বিষয়টি বঙ্গবন্ধুই শেখ পর্যন্ত নিষ্পত্তি করিয়ে দেন, শেখ কামালের অংশগ্রহণ সেখানে ছিল না বলেই উপস্থিত অনেকেই বলেছেন। অথচ একের দোষ অন্যের ঘাড়ে চাপানোর ঘটনাই শেষ পর্যন্ত তিল থেকে তালে পরিণত হলো। সুলতানা খুকু ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সেরা অ্যাথলেট। তাদের দুজনের ভালোবাসার কথা আমরা জানতাম। অথচ অপপ্রচারকারীরা তা নিয়ে কত গল্প বাজারে ছেড়েছিল। সেই সুলতানার সঙ্গে তার পরিণত হলো, ১৫ আগস্টের রাতে একসঙ্গে ষড়যন্ত্রকারীদের গুলিতে নিহত হওয়ার মধ্য দিয়ে কামাল-সুলতানার স্বামী-স্ত্রীর জীবনের সত্যতা চিরকাল ভাস্কর হয়ে থাকবে।
বঙ্গবন্ধুর পর যাতে কেউ তার যোগ্য, সৎ উত্তরাধিকার না হতে পারেন- সে জন্যই অপপ্রচারের চাদরে ঢেকে দেয়ার ষড়যন্ত্র করেছিল একটি মহল। কিন্তু আমরা ষড়যন্ত্রকারীদের কথাই এখনো শুনি, অনেকে বিশ্বাসও করি। তরুণ প্রজন্মের অনেকেই সেই সব অপপ্রচারে এখনো আক্রান্ত। কিন্তু তাদের বুঝতে হবে এত ত্যাগের ইতিহাস যে পরিবারের রক্ত কণিকায় রয়েছে- সেই পরিবারের সদস্যরা এতখানি নৈতিকভাবে স্খলিত হতে পারেন না, শেখ কামালও কোনো স্খলিত তরুণ ছিলেন না। তিনি একজন সৃজনশীল উদ্যমী প্রাণবন্ত তরুণ ছিলেন- যিনি মুক্তিযুদ্ধে অস্ত্র ধরেছেন, সঙ্গীত, নাটক, ক্রীড়া, সামাজিক কাজেকর্মে তরুণদের নেতৃত্ব দেয়ার উদ্যোগ নিয়েছেন। মাত্র ২৬ বছরের একজন তরুণ দেশকে যা দিয়ে গেছেন, যে সব উদ্যোগ নিয়েছিলেন তার প্রতিটিই যেন এখনো বলে দিচ্ছে শেখ কামাল এমনই ছিলেন, তোমরা সেগুলোকে দেখার চেষ্টা করো, জানার ও বোঝার চেষ্টা করো, তা হলেই তোমরাও মহৎ হয়ে উঠবে, নতুবা তোমরা অপপ্রচারকারীদের ফাঁদেই আটকে পড়ে থাকবে।
মমতাজউদ্দীন পাটোয়ারী : অধ্যাপক, বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়।