বাঙালির জাতীয় জীবনের এক যুগসন্ধিক্ষণে মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনার জন্য মুজিবনগর সরকার গঠিত হয়েছিল। যদিও এই সরকার শপথ গ্রহণের আগে থেকেই বিশেষত বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ এবং এর পরবর্তীতে ২৫ মার্চ গভীর রাতে বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার ঘোষণা অনুযায়ী বাঙালিরা পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধের প্রস্তুতি নিয়েছিল অথবা কোথাও কোথাও যুদ্ধ শুরু করেছিল। আর এসব কিছুর বৈধ ভিত্তি ছিল ১৯৭০ সালের নির্বাচনে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের নিরঙ্কুশ বিজয়।
১৯৭০ সালের ডিসেম্বর এবং ১৯৭১ সালের জানুয়ারিতে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে পূর্ব পাকিস্তান থেকে মোট ৪৬৯ জন নির্বাচিত হয়েছিলেন। এদের মধ্যে জাতীয় পরিষদের সদস্য সংখ্যা ছিলেন ১৬৯ জন এবং পূর্ব পাকিস্তান প্রাদেশিক পরিষদ সদস্য সংখ্যা ৩০০ জন। এসব নির্বাচিত প্রতিনিধির মধ্যে অন্তত সাতজন পাকিস্তানি সামরিক শাসকদের পক্ষাবলম্বন করেছিলেন। শুধু তাই নয়, তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান সরকারের স্বরাষ্ট্র (রাজনৈতিক) অধিদপ্তর, সেকশন-১-এর মাধ্যমে ‘পূর্ব পাকিস্তানের পরিস্থিতি সম্পর্কে ১৯৭১ সালের এপ্রিল মাসের দ্বিতীয়ার্ধের পাক্ষিক গোপন প্রতিবেদন’-এ বলা হয়েছিল, ‘আওয়ামী লীগের কয়েকজন নির্বাচিত এমএনএ এবং এমপিএ ১৮ এপ্রিল ১৯৭১ ঢাকায় পিডিপি প্রধান নুরুল আমিনের সঙ্গে তার বাসভবনে সাক্ষাৎ করেছেন। তারা দেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে তার সঙ্গে আলোচনা করেছেন। আরো জানা গেছে, নুরুল আমিনের প্রতি পূর্ণ সমর্থন এবং স্বাভাবিকতা ফিরিয়ে আনা ও রাজনৈতিক সমঝোতার বিষয়ে তারা তাকে আশ্বস্ত করেছেন।’ এই গোপন প্রতিবেদনে আরো বলা হয়েছিল, ‘১৭ এপ্রিল ১৯৭১ সালে কয়েকজন রাজনৈতিক নেতার সঙ্গে এক অনানুষ্ঠানিক বৈঠকে নুরুল আমিন আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতার দ্বারা তথাকথিত ‘বাংলাদেশ’ সরকার গঠন সম্পর্কে অল ইন্ডিয়া রেডিওর ঘোষণার বিরুদ্ধে ঘৃণামিশ্রিত ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তার (নুরুল আমিনের) মতে, এই নেতারাই পূর্ব পাকিস্তানের জনগণের দুর্দশা ও ভোগান্তির জন্য দায়ী।’
১৯৭০ সালের নির্বাচনে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠ আসনে বিজয়ী বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রধান বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ন্যায্য দাবি অনুযায়ী সরকার গঠন সম্পর্কে পাকিস্তানি সামরিক সরকার রাজি না হওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট জেনারেল আগা মোহাম্মদ ইয়াহিয়া খান বাঙালিদের জাতীয়তাবাদী আন্দোলন দমনের লক্ষ্যে অপারেশন সার্চ লাইটের আদেশ দেন। ২৫ মার্চ, ১৯৭১ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান অফিসিয়াল ঘোষণায় স্বাক্ষর করেন এবং বেতার বার্তা মারফত জনগণকে দখলদার পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানান। এখানে উল্লেখ করা সমীচীন যে, এই নির্বাচন পাকিস্তানের জন্য একটি সুযোগ এনে দিয়েছিল। পর্যবেক্ষকদের মতে, ১৯৫৮ সাল থেকে চলে আসা সামরিক শাসন থেকে বেসামরিক শাসনে উত্তীর্ণ হওয়ার একটা সুযোগ এসেছিল ১৯৭০-এর নির্বাচন। কিন্তু বাঙালিদের হাতে ক্ষমতা চলে যাওয়ার ভয়ে পশ্চিম পাকিস্তানের সামরিক ও বেসামরিক নেতৃত্ব সেখান থেকে সরে এসেছিল। ১৯৭১ সালের ৩ জানুয়ারি রমনা রেসকোর্স ময়দানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বলেন যে, জনগণ তাঁকে ছয় দফা কর্মসূচির প্রতি সমর্থন জানিয়ে রায় দিয়েছে অতএব সেই রায় অনুযায়ী তাঁকে কাজ করতে হবে এবং ছয় দফা কর্মসূচি থেকে তিনি একটুও নড়বেন না। এ সময় বঙ্গবন্ধু আওয়ামী লীগ দলীয় নির্বাচিত প্রতিনিধিদের শপথ গ্রহণ করান।
ভুট্টো ঢাকায় এসেছিলেন ১৯৭১ সালের ২৭ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে আলোচনার জন্য। আলোচনা হয়েছিল, তবে তা সফল হয়নি। ইতোমধ্যে ১৯৭১ সালের ৩০ জানুয়ারি ইন্ডিয়ান এয়ার লাইন্সের একটি বিমান ছিনতাই করে লাহোর নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। সভ্য জগতের সব নিয়মকানুন উপেক্ষা করে, এই ছিনতাইকারীদের সঙ্গে ভুট্টো সাক্ষাৎ করেছিলেন। দু’দিন পর ছিনতাইকারীরা ভারতীয় বিমানটিকে উড়িয়ে দিয়েছিল। এভাবে ছিনতাই করে এনে ভারতীয় বিমান উড়িয়ে দেয়ার ঘটনাকে বঙ্গবন্ধু নিন্দা জ্ঞাপন করেন। দ্রুত ঘটে যাওয়া এসব ঘটনাবলির মধ্যেই পাকিস্তান জাতীয় পরিষদের সভা আহ্বান করা হয়েছিল ১৯৭১-এর ৩ মার্চ। ভুট্টো আইন সভার অধিবেশনে যোগদান করতে অসম্মতি জ্ঞাপন করেছিলেন। এরপরই ইয়াহিয়া খান ১৯৭১ সালের ১ মার্চ হঠাৎ করে জাতীয় পরিষদের অধিবেশন অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করেন। এর প্রতিবাদে ওই দিন বিকেলে হোটেল পূর্বাণীতে অনুষ্ঠিত এক সভায় বঙ্গবন্ধু অসহযোগ আন্দোলনের ডাক দেন। আর ৭ মার্চ, ১৯৭১-এ বর্তমান সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বঙ্গবন্ধু এক বিশাল জনসভায় ভাষণ দেন। প্রকৃতপক্ষে এ সময় তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের শাসন ক্ষমতার প্রকৃত অধিকারী ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ গভীর রাতে পুনরায় স্বাধীনতার ঘোষণা দেন। ওই রাতে স্বাধীনতার ঘোষণা দেয়ার পর পরই পাকিস্তানি সামরিক বাহিনী বঙ্গবন্ধুকে তাঁর ধানমন্ডি ৩২ নম্বর সড়কের বাসভবন থেকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে যায়। বঙ্গবন্ধুকে পাকিস্তানি বাহিনী গ্রেপ্তারের পর মধ্য রাতে তেজগাঁও আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর দিয়ে একটি পিএএফসি-১৩০ বিমানে করে (পশ্চিম) পাকিস্তানে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। যেসব কর্মকর্তার সামনে দিয়ে বঙ্গবন্ধুকে (পশ্চিম) পাকিস্তানে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল তারা হলেন এটিসি অফিসার স্কোয়াড্রন লিডার খাজা, সিনিয়র অপারেশন্স অফিসার উইং কমান্ডার খাদেমুল বাসার এবং এয়ারপোর্ট এন্ড ফ্লাইট সিকিউরিটির ডাইরেক্টর স্কোয়াড্রন লিডার এম হামিদুল্লাহ খান। এ সময় জরুরি অবস্থার কারণে বিমানবন্দরে তারা কর্তব্যরত ছিলেন। বঙ্গবন্ধুকে পাকিস্তান বাহিনী গ্রেপ্তার এবং পশ্চিম পাকিস্তানের কারাগারে বন্দি অবস্থায় নিয়ে যাওয়ার পর ২৬ মার্চ চট্টগ্রাম আওয়ামী লীগের নেতা এম এ হান্নান বঙ্গবন্ধুর ঘোষণাটি প্রচার করেন। এই প্রচারের ফলে বাঙালি জনসাধারণের মধ্যে পাকিস্তানি দখলদার বাহিনীকে প্রতিরোধের মনোবল ফিরে আসে। ১৯৭১ সালের ১৭ এপ্রিল আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ নেতারা বৈদ্যনাথতলার আম্রকাননে সমবেত হতে থাকেন। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের প্রবাসী সরকারের শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানটি হয়েছিল ১৯৭১-এর ১৭ এপ্রিল। ইতোপূর্বে বঙ্গবন্ধুর ‘স্বাধীনতার ঘোষণা’ এর দ্বারা নিশ্চিত করা হয়েছিল। মুজিবনগর সরকারের একজন কর্মকর্তা ও বীর মুক্তিযোদ্ধা রবীন্দ্রনাথ ত্রিবেদী তাঁর স্মৃতিচারণে বলেছেন যে, ‘মুজিবনগর সরকারের শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে স্বাধীনতার ঘোষণার বাংলা অনুবাদ স্টেন্সিল করে সমবেত বিদেশি সাংবাদিকদের মধ্যে বিতরণ করা হয়েছিল। এ সময় পাকিস্তান জাতীয় পরিষদ সদস্য আব্দুর রব সেরনিয়াবাত ও প্রাদেশিক পরিষদের সদস্য ফনি ভূষণ মজুমদারও উপস্থিত ছিলেন।’ পাকিস্তানের কারাগারে বন্দি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নির্বাচিত করা হয়েছিল প্রেসিডেন্ট, সৈয়দ নজরুল ইসলামকে নির্বাচিত করা হয়েছিল ভাইস প্রেসিডেন্ট এবং তাজউদ্দিন আহমেদকে প্রধানমন্ত্রী। প্রবাসী বাংলাদেশ সরকারের রাষ্ট্রপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অনুপস্থিতিতে উপরাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন করেছিলেন। প্রবাসী বাংলাদেশ সরকার সেই সময়ের মেহেরপুর মহকুমার বৈদ্যনাথ তলার ভবেরপাড় গ্রামে ১৯৭১ সালের ১৭ এপ্রিল শপথগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়েছিল। ইস্ট পাকিস্তান রাইফেলসের (ইপিআর) অল্প কয়েক প্লাটুন সৈন্য এবং মুক্তিযোদ্ধারা গার্ড অব অনার দেয়ার জন্য সমবেত হয়েছিল। শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানটি শুরু হয়েছিল সকাল ১১টায়। সৈয়দ নজরুল ইসলাম যখন জাতীয় পতাকা উত্তোলন করছিলেন তখন একটি ছোট দল সমবেত কণ্ঠে ‘আমার সোনার বাংলা’ সঙ্গীতটি পরিবেশন করেছিলেন। সৈয়দ নজরুল ইসলাম বাংলাদেশের একটি সার্বভৌম সরকার গঠনের কথা ঘোষণা করেছিলেন এবং মন্ত্রীদের পরিচিত করিয়ে দিয়েছিলেন। এরপর ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতি তাঁর ভাষণ প্রদান করেন। সবশেষে প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দিন আহমেদ সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন। পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে বাঙালিদের মুক্তিযুদ্ধের সমগ্রকালব্যাপী মুজিবনগর সরকার মুক্তিবাহিনী তথা গেরিলা বাহিনীর নিয়মতান্ত্রিক প্রধান হিসেবে কাজ করেছে। যদিও বাংলাদেশ শত্রুমুক্ত হয়েছে ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর কিন্তু মুজিবনগর সরকারই প্রথম অফিসিয়াল সরকার হিসেবে গণ্য হয়ে থাকে। এই শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে মুজিবনগর প্রবাসী সরকার পরিচালনার জন্য যাদের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব দেয়া হয়েছিল তাঁরা হলেন- রাষ্ট্রপতি : বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান (পাকিস্তানি কারাগারে বন্দি); উপরাষ্ট্রপতি : সৈয়দ নজরুল ইসলাম (রাষ্ট্রপতির অনুপস্থিতিতে ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন করেন); প্রধানমন্ত্রী : তাজউদ্দিন আহমেদ; পররাষ্ট্র ও আইনমন্ত্রী : খোন্দকার মোশতাক আহম্মদ অর্থমন্ত্রী : ক্যাপ্টেন মন্সুর আলী; স্বরাষ্ট্র, ত্রাণ এবং পুনর্বাসনমন্ত্রী : এ এইচ এম কামরুজ্জামান; কমান্ডার ইন চিফ : জেনারেল মোহাম্মদ আতাউল গনি ওসমানী; চিফ অব স্টাফ : মেজর জেনারেল আব্দুর রব; বিভাগীয় প্রধান : সংবাদ, তথ্য, বেতার ও চলচ্চিত্র আব্দুল মান্নান; ত্রাণ ও পুনর্বাসন প্রফেসর ইউসুফ আলী; বাণিজ্য মতিউর রহমান; স্বেচ্ছাসেবক বাহিনী ব্যারিস্টার আমিরুল ইসলাম।
অন্যদিকে, গ্রেপ্তারের পর বঙ্গবন্ধুকে ফয়সালাবাদের (সেই সময়ের লায়ালপুর) কাছে একটি করাগারে নিয়ে রাখা হয়েছিল। অপরদিকে দখলদার পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী সমগ্র বাংলাদেশব্যাপী ব্যাপক হত্যাকাণ্ড শুরু করেছিল। পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীকে সহযোগিতা করার জন্য গঠিত হয়েছিল রাজাকার, আল বদর, আল শামস ও শান্তি কমিটি। বঙ্গবন্ধু পাকিস্তানি কারাগারে বন্দি থাকাকালে তাঁকে প্রহসনের বিচার করে ফাঁসি দেয়ার লক্ষ্যে সব ধরনের আয়োজন করা হয়েছিল। এমনকি লায়ালপুর কারাগারে তাঁকে যে স্থানে বন্দি করে রাখা হয়েছিল সেখানে কবর পর্যন্ত খনন করা হয়েছিল বঙ্গবন্ধুকে ফাঁসি দিয়ে হত্যার পর কবরস্থ করার জন্য। একদিকে পাকিস্তানের কারাগারে এভাবে বঙ্গবন্ধু মৃত্যুর অপেক্ষায় ছিলেন অপর দিকে তাঁর ঘোষিত মুক্তি ও স্বাধীনতা অর্জনের লক্ষ্যে বাঙালিরা গেরিলা যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছিলেন। আর এর সার্বিক নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন মুজিবনগর সরকার। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে গঠিত মুজিবনগর সরকারের কারণে প্রধানমন্ত্রী শ্রীমতি ইন্দিরা গান্ধীর নেতৃত্বে তৎকালীন ভারত সরকার ও সে দেশের জনগণ বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে প্রকৃত বন্ধুর মতো সহায্য-সহযোগিতা করেছে। এক কোটি বাঙালি শরণার্থী পশ্চিমবঙ্গ, ত্রিপুরা, আসাম, মেঘালয়, মনিপুর, বিহার, মধ্য প্রদেশ এবং উত্তর প্রদেশের বিভিন্ন স্থানে ৮২৫টি শরণার্থী শিবিরে আশ্রয় নিয়েছিল। এই শরণার্থীদের নিরাপদ আশ্রয় ছাড়াও খাদ্য ও চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছিল। পাশাপাশি মুক্তিযোদ্ধাদের প্রশিক্ষণ, বহির্বিশ্বে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের প্রতি সমর্থন আদায়ের জন্য বিভিন্ন দেশে যাওয়া এবং নেতাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করা প্রভৃতি ভারত সরকারের প্রত্যক্ষ সাহায্য-সহযোগিতায় সম্ভব হয়েছে। দীর্ঘ নয় মাসব্যাপী যুদ্ধ শেষে বাংলাদেশের মুক্তিবাহিনী ও ভারতীয় মিত্র বাহিনীর কাছে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর আত্মসমর্পণের মধ্য দিয়ে দেশ শত্রুমুক্ত হয়।
প্রফেসর ড. অরুণ কুমার গোস্বামী : চেয়ারম্যান, রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ ও পরিচালক, সাউথ এশিয়ান স্টাডি সার্কেল, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়।