বঙ্গবন্ধুু শেখ মুজিবুর রহমান এ দেশে জন্মেছিলেন বলেই আমরা পেয়েছি বাংলাদেশ নামের মানচিত্রটা, পেয়েছি সবুজের মাঝে লাল বৃত্ত আঁকা বাংলাদেশের পতাকাটিও। আর একটি শিশু পেয়েছে স্বাধীনভাবে জন্মলাভ, স্বাধীনভাবে বেড়ে ওঠার জন্য স্বাধীন বাংলাদেশ। আজ ১৭ মার্চ, সেই মহান নেতার জন্মদিন এবং জাতীয় শিশু দিবস। আমরা পরম শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করি এই মহান নেতাকে।
আমি নিজেকে খুবই ভাগ্যবান মনে করি যে, আমি নিজের চোখে বঙ্গবন্ধুুর নেতৃত্বে বাংলাদেশ নামক মানচিত্রটা প্রতিষ্ঠিত হওয়ার ঘটনা প্রত্যক্ষ করেছি। খুব কম লোকেরই ভাগ্য হয় ইতিহাস সৃষ্টি হতে দেখা। আমি ইতিহাস সৃষ্টি হতে দেখেছি। স্বাধিকার আন্দোলনকে স্বাধীনতার আন্দোলনে রূপান্তরিত হতে দেখেছি। এসব ঐতিহাসিক ঘটনার মূল নায়ক বঙ্গবন্ধুু শেখ মুজিবুর রহমান কর্তৃক অসম্ভবকে সম্ভব করতে দেখেছি। আমি দেখেছি- এদেশের মানুষকে পাকিস্তানি স্বৈরশাসকদের হাত থেকে মুক্তি দেয়ার জন্য বঙ্গবন্ধুু নিরলস পরিশ্রম করে, চারণের মতো সারা দেশ ঘুরে মুক্তির মহামন্ত্রে জাতিকে জাগিয়েছেন। পাকিস্তানি স্বৈরশাসকদের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে তিনি সব সময় ঊর্ধে তুলে ধরেছেন দেশ ও দেশের মানুষের স্বার্থ, কখনো কোনো কিছুর বিনিময় কিংবা প্রলোভনে বিন্দুমাত্র নতি স্বীকার করেননি।
একজন বিশ্ববরেণ্য নেতার ব্যক্তিচরিত্রে যেসব মানবিক গুণাবলি থাকার কথা তার সব কিছু নিয়েই যেন জন্মগ্রহণ করেছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। ছোট থেকেই তিনি ছিলেন ভারি দয়ালু। ছোটবেলায় তাকে বর্ষাকালে স্কুলে যাওয়ার জন্য তার বাবা একটা ছাতা কিনে দিয়েছিলেন। মুজিব সেই ছাতাটি তাঁর এক বন্ধুকে দিয়ে দিয়েছিলেন, যার কোনো ছাতা ছিল না। কিংবা টাকার অভাবে কোনো ছেলে বইপত্র কিনতে পারছে না, দিয়ে দিলেন তাঁর নিজের বইপত্র। এমনকি একদিন নাকি এক ছেলেকে ছেঁড়া কাপড় পরে থাকতে দেখে নিজের পরনের কাপড়ই খুলে দিয়ে দিয়েছিলেন। তাঁর এক স্যার গরিব ও মেধাবী ছাত্রদের সাহায্য করার জন্য একটি সংগঠন করেছিলেন। শেখ মুজিব ছিলেন এই সংগঠনের প্রধান কর্মী। বাড়ি বাড়ি ধান চাল সংগ্রহ করে ছাত্রদের সাহায্য করেছেন।
১৯২০ সালের ১৭ মার্চ গোপালগঞ্জের টুঙ্গীপাড়ায় শেখ লুৎফুর রহমান এবং সায়রা বেগমের ঘরে জন্ম নেন শেখ মুজিবুর রহমান। তাঁর ডাক নাম ছিল খোকা। ভাইবোন আর গ্রামে তিনি মিয়াভাই নামেই পরিচিত ছিলেন। ১৯২৭ সালে সাত বছর বয়সে বঙ্গবন্ধুু পার্শ্ববর্তী গিমাডাঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি হন। স্কুলটি ছিল প্রায় সোয়া এক কিলোমিটার দূরে। বর্ষাকালে একদিন নৌকাই উল্টে গেলে ওই স্কুল থেকে ছাড়িয়ে তাঁকে ভর্তি করিয়ে দেয়া হয় গোপালগঞ্জ পাবলিক স্কুলে। এর দুবছর পর আবার ভর্তি হলেন মাদারীপুর ইসলামিয়া হাইস্কুলে। ১৯৩৪ সালে বেরিবেরি রোগে আক্রান্ত হলে তাঁর একটি চোখ কলকাতায় অপারেশন করা হয় এবং চক্ষুরোগের কারণে তাঁর লেখাপড়ায় সাময়িক বিরতি ঘটে। দীর্ঘ বিরতি দিয়ে ১৯৩৭ সালে ভর্তি হলেন গোপালগঞ্জ মাথুরানাথ ইনস্টিটিউট মিশন স্কুলে। মিশন স্কুলে পড়ার সময় স্কুল পরিদর্শনে এসেছিলেন অবিভক্ত বাংলার মুখ্যমন্ত্রী শেরেবাংলা এ কে ফজলুল হক ও পরবর্তী সময়ে পাকিস্তানের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্বে থাকা হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী। সে সময়ে স্কুলের মেরামত কাজ ও ছাদ সংস্কার এবং খেলার মাঠ রক্ষণাবেক্ষণের জন্য জরুরিভাবে অর্থ বরাদ্দ দেয়ার দাবি করেন শেখ মুজিবুর রহমান। গোপালগঞ্জ মিশন স্কুলের অষ্টম শ্রেণির ছাত্র থাকাকালে তৎকালীন ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনে যোগদান করায় তিনি জীবনে প্রথম গ্রেপ্তার হন। ১৯৩৮ সনে আঠারো বছর বয়সে তার সঙ্গে ফজিলাতুন্নেসার বিয়ে হয়। ১৯৪২ সালে তিনি ম্যাট্রিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে উচ্চ শিক্ষার্থে কলকাতায় গিয়ে বিখ্যাত ইসলামিয়া কলেজে ভর্তি হন। ১৯৪৬ সালে তিনি বিএ পাস করেন। শেখ মুজিবুর রহমান এই সময়ে ইসলামিয়া কলেজ ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছিলেন। শহীদ সোহরাওয়ার্দী, শেরেবাংলা এ কে ফজলুল হকসহ তৎকালীন প্রথম সারির রাজনৈতিক নেতাদের প্রত্যক্ষ নেতৃত্বে রাজনীতির সূচনা করেন বঙ্গবন্ধুু। ১৯৪৮ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন বিভাগে ভর্তি হন এবং ৪ জানুয়ারি মুসলিম ছাত্রলীগ প্রতিষ্ঠা করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীরা তাদের দাবি-দাওয়া আদায়ের উদ্দেশ্যে ধর্মঘট ঘোষণা করলে বঙ্গবন্ধুু ধর্মঘটের প্রতি সমর্থন জানান। কর্মচারীদের এ আন্দোলনে উস্কানি দেয়ার অভিযোগে ২৯ মার্চ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ অযৌক্তিকভাবে তাকে জরিমানা করে। তিনি এ অন্যায় নির্দেশ ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করেন। ফলে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কৃত হন। ১৯৪৯ সালের ২৩ জুন পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগ গঠিত হয় এবং জেলে থাকা অবস্থায় বঙ্গবন্ধুু এ দলের যুগ্ম সম্পাদক নির্বাচিত হন।
১৯৫৩ সালের ৯ জুলাই পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগের কাউন্সিলে শেখ মুজিবুর রহমান দলের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। ১৯৫৪ সালের ১০ মার্চ তিনি গোপালগঞ্জের আসনে মুসলিম লীগের প্রভাবশালী নেতা ওয়াহিদুজ্জামানকে ১৩ হাজার ভোটে পরাজিত করে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ১৫ মে বঙ্গবন্ধু প্রাদেশিক সরকারের কৃষি ও বনমন্ত্রীর দায়িত্ব লাভ করেন। ৩০ মে কেন্দ্রীয় সরকার যুক্তফ্রন্ট মন্ত্রিসভা বাতিল করে দেয়। ১৯৫৫ সালের ২১ অক্টোবর আওয়ামী মুসলিম লীগের কাউন্সিল অধিবেশনে দলের নাম থেকে ‘মুসলিম’ শব্দ প্রত্যাহার করা হয় এবং বঙ্গবন্ধু পুনরায দলের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। ১৯৫৬ সালে কোয়ালিশন সরকারের মন্ত্রিসভায় শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পান তিনি। ১৯৬৩ সালে হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর মৃত্যুর পর আওয়ামী মুসলিম লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং ১৯৬৬ সালে ১ মার্চ সভাপতি নির্বাচিত হন শেখ মুজিবুর রহমান।
পাকিস্তানের সুদীর্ঘ ২৩ বছরে ১৪ বার গ্রেপ্তার, রাজনৈতিক কারণে প্রায় ১৩ বছর কারাবরণ ও দুবার ফাঁসির মঞ্চ থেকে ফিরে এসেছেন। ১৯৪৭- এর দেশ ভাগ, ১৯৫২-এর ভাষা আন্দোলন, ৬২-এর শিক্ষা আন্দোলন, পরবর্তী সময়ে আওয়ামী লীগপ্রধান হিসেবে ১৯৬৬-এর ঐতিহাসিক ৬ দফা, স্বায়ত্তশাসনের আন্দোলনে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলায় কারারুদ্ধ হন বঙ্গবন্ধু। ১৯৬৯-এর ঐতিহাসিক গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে দেশের ছাত্র-জনতা তাঁকে ‘বঙ্গবন্ধু’ উপাধিতে ভূষিত করে। ১৯৭০ সালের ৭ ডিসেম্বরে সাধারণ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে জাতীয় পরিষদের ১৬৯টি আসনের মধ্যে ১৬৭টি আসন এবং প্রাদেশিক পরিষদের ৩১০টি আসনের মধ্যে ৩০৫টি আসন লাভ করে। নির্বাচনের পর থেকেই আমরা বিপুল আশা-উদ্দীপনার মধ্যে ছিলাম। বাংলাদেশ যে সৃষ্টি হতে যাচ্ছে তা নিয়ে আমাদের মনে আর কোনো সন্দেহ ছিল না। তখন একমাত্র প্রশ্ন ছিল আমরা কি শান্তিপূর্ণভাবে আলোচনার মাধ্যমে এই স্বাধীন দেশ সৃষ্টি করতে পারব নাকি আমাদের একটা বিরাট রক্তাক্ত সংঘাতের পথে যেতে হবে। কিন্তু পশ্চিম পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী মুজিবের স্বায়ত্বশাসনের নীতির পুরোপুরি বিপক্ষে ছিল। আওয়ামী লীগের সরকার গঠন ঠেকাতে প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান সংসদের অধিবেশন ডাকা নিয়ে টালবাহানা শুরু করেন। শেখ মুজিব তখনই বুঝে যান যে, পশ্চিম পাকিস্তানি শাসকদের দুঃশাসনের অবসান ঘটাতে লড়াইয়ের কোনো বিকল্প নেই।
১৯৭১ সালের ৭ মার্চ মুজিব রেসকোর্স ময়দানে দশ লাখ লোকের বিশাল জমায়েতে তাঁর ঐতিহাসিক ভাষণ দেন যা বাঙালি জাতির ইতিহাসে যুগ সন্ধিক্ষণ হিসেবে চিহ্নিত থাকবে। মুজিব তাঁর ভাষণে নির্বাচিত প্রতিনিধিদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে ব্যর্থ সামরিক কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট কিছু অভিযোগ আনেন। বক্তৃতার শেষে মুজিব ঘোষণা করেন- ‘প্রত্যেক ঘরে ঘরে দুর্গ গড়ে তোল। তোমাদের যা কিছু আছে তাই নিয়ে শত্রুর মোকাবিলা করতে হবে। মনে রাখবা, রক্ত যখন দিয়েছি, রক্ত আরো দেব, এদেশের মানুষকে মুক্ত করে ছাড়ব ইনশাল্লাহ। এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম।’ বঙ্গবন্ধুর এই ঐতিহাসিক ভাষণে সাড়া দিয়ে সেদিন গোটা বাঙালি জাতি ঐক্যবদ্ধ হয়ে মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। ২৫ মার্চ রাতের অন্ধকারে নিরীহ নিরস্ত্র বাঙালির ওপর শকুনের মতো ঝাঁপিয়ে পড়ে পাকিস্তানি সেনারা; শুরু করে অপারেশন সার্চলাইট নামে ইতিহাসের জঘন্যতম হত্যাকাণ্ড। মুজিবকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে যাওয়া হয় পশ্চিম পাকিস্তানে। ৯ মাসের সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে বীর বাঙালি ১৯৭১-এর ১৬ ডিসেম্বর বিজয় ছিনিয়ে নেয়। জন্ম হয় স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশের। ১৯৭২-এর ১০ জানুয়ারি বিশ্ব নেতাদের চাপে পাকিস্তানের শাসকগোষ্ঠী বঙ্গবন্ধুকে মুক্তি দিতে বাধ্য হয়।
পাকিস্তানের কারাগার থেকে মুক্তি লাভ করে তিনি স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করেন। দেশে ফিরেই তিনি যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশ পুনর্গঠনে মনোনিবেশ করেন। আইনশৃঙ্খলা পুনঃপ্রতিষ্ঠা, অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার, মুক্তিযোদ্ধাদের পুনর্বাসন, যোগাযোগ ব্যবস্থা পুনঃনির্মাণ, মুক্তিযুদ্ধ-বিরোধীদের জনরোষ থেকে রক্ষা করা এবং সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ হলো লাখ লাখ ক্ষুধার্ত মানুষের জন্য খাদ্য সংগ্রহ করা এবং আরো অনেক সমস্যার সমাধান তাঁর সরকারের সামনে সুবিশাল চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছিল। সমস্ত দেশ যখন ক্ষয়ক্ষতি কাটিয়ে উঠে ঘুরে দাঁড়াচ্ছিল, ঠিক তখনই আসে আরেকটি আঘাত। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট মধ্যরাতে একদল বিপথগামী সেনা কর্মকর্তা হত্যা করে শেখ মুজিব এবং তাঁর পরিবারের সদস্যদের। কেবল তাঁর দুই মেয়ে শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা সেই সময় দেশের বাইরে থাকায় বেঁচে যান। সদ্য স্বাধীন জাতির জীবনে এক অপূরণীয় ক্ষতি নিয়ে আসে এই জঘন্য হত্যাকাণ্ড, তৈরি করে রাজনৈতিক শূন্যতা, ব্যাহত হয় গণতান্ত্রিক উন্নয়নের ধারা।
বঙ্গবন্ধু শিশুদের অত্যন্ত ভালোবাসতেন। তাদের ভবিষ্যৎ নিয়ে ভাবতেন। বাচ্চাদের সঙ্গে সময় কাটাতে পছন্দ করতেন। শিশুদের সব কিছুকে সহজে বুঝতে পারতেন। আর এ জন্যই তাঁরই সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৯৯৬ সালের ১৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর জন্মদিনকে জাতীয় শিশুদিবস হিসেবে ঘোষণা করেন। ১৯৯৭ সালের ১৭ মার্চ দিবসটি পালন শুরু হয়। কিন্তু ২০০১ সালে তৎকালীন সরকার জাতীয় শিশুদিবস পালনের রাষ্ট্রীয় আনুষ্ঠানিকতা বন্ধ করে দেয়। ২০০৯ সালে বঙ্গবন্ধুর কন্যা শেখ হাসিনা আবার ক্ষমতায় আসলে রাষ্ট্রীয়ভাবে আবার পালিত হচ্ছে জাতীয় শিশুদিবস। কিন্তু সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু কি এতই ফেলনা যে, সরকার পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে ছুড়ে ফেলতে হবে? সরকারিভাবে তাঁর জন্মদিন পালন বন্ধ হয়ে যাবে? বঙ্গবন্ধু সমগ্র জাতির নেতা। তিনি একটি স্বাধীন রাষ্ট্রের স্থপতি এবং জাতির পিতা। অথচ ভিন্ন আদর্শের অন্য সরকার ক্ষমতায় এলে তাঁর জন্মদিন রাষ্ট্রীয়ভাবে পালন হবে না, তা কি ভাবা যায়? বঙ্গবন্ধুকে অসম্মান মানে বাঙালির জাতির সত্তাকে অস্বীকার করা।
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মানুষকে ভালোবেসে, মানুষের দুঃখ-দুর্দশার সাথী হয়ে মানুষের মধ্যে অমর হয়েছেন। অহিংসা দিয়ে, মানবপ্রেম দিয়ে, ভালোবাসা দিয়ে সমাজে যে আদর্শ তিনি তৈরি করে গেছেন তার কোনো মৃত্যু নেই, ক্ষয় নেই। আমরাও বঙ্গবন্ধুর মতো দেশকে ভালোবাসব। উদার ও অসাম্প্রদায়িক চেতনায় বেড়ে উঠব। স্বাধীনতার শত্রুদের সমস্ত ষড়যন্ত্র রুখে দিয়ে এ দেশকে গড়ে তুলব বঙ্গবন্ধুুর সোনার বাংলা- এবারের জাতীয় শিশুদিবসে এ-ই হোক আমাদের দৃপ্ত শপথ।
অধ্যাপক ড. কামাল উদ্দিন আহাম্মদ : ভাইস-চ্যান্সেলর, শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়।