তারুণ্যের চোখে ৭ই মার্চ-সিলভীয়া পারভীন লেনী


তারুণ্যের চোখে ৭ই মার্চ-সিলভীয়া পারভীন লেনী

জাতির জন্য ৭ই মার্চ, ১৯৭১ ইতিহাসের এক মাহেন্দ্রক্ষণ। এদিন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তার ভাষণে পূর্ববাংলার নিপীড়িত মানুষের মুক্তির বাণী ঘোষণা করেন। ‘এবারের সংগ্রাম, আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম আমাদের স্বাধীনতার সংগ্রাম এই মহান উচ্চারণের মধ্যেই ঘোষিত হয়ে গিয়েছিল জাতির মুক্তির পথ।

পদ্মা-মেঘনা-যমুনা বিধৌত এতদঅঞ্চলের মানুষ এই ভাষণ শুনেছিল। যে মানুষটি সেই ‘৪৮ থেকে শুরু করে ‘৭১ পর্যন্ত সময়ে ধাপে ধাপে সেই মহাজাগরণের ডাকটি দেবার জন্য নিজেকে তৈরি করেছেন ইতিহাসের সমান্তরালে। আর দেশের মানুষকে প্রস্তুত করেছেন সেই ডাকে সাড়া দিয়ে এক মহাজাগরণে শামিল হয়ে ইতিহাসে বাঙালির শ্রেষ্ঠ সময় স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়তে, তিনিই হলেন হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।

বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণ একটি জাতি-জনগোষ্ঠীর মুক্তির কালজয়ী সৃষ্টি, এক মহাকাব্য। বহুমাত্রিকতায় তা বৈশিষ্ট্যমণ্ডিত। শুধু বাঙালির জন্যই নয়, বিশ্ব মানবতার জন্যও অবিস্মরণীয়, অনুকরণীয় এক মহামূল্যবান দলিল বা সম্পদ ইউনেস্কো ৩০ অক্টোবর ২০১৭ তারিখ বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণকে ‘বিশ্ব ঐতিহ্য দলিল’ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে তা সংস্থাটির ‘মেমোরি অব দ্য ওয়ার্ল্ড ইন্টারন্যাশনাল রেজিস্ট্রার’-এ অন্তর্ভুক্ত করেছে।

একাত্তরে বঙ্গবন্ধু দিয়েছিলেন স্বাধীনতার ডাক। আত্মবিশ্বাসী কণ্ঠে ঘোষণা করেছিলেন স্বাধীনতার সংগ্রামের। সেই ডাকে প্রাণ বাজি রেখেছিল বাংলার সাধারণ কিন্তু ভীষণ সাহসী সন্তানরা। তাঁর স্বাধীনতার ডাক ও সশস্ত্র সংগ্রামের প্রস্তুতির নির্দেশে পাল্টে যায় পুরো দেশের চিত্র। বঙ্গবন্ধুর প্রতিটি নির্দেশ অক্ষরে অক্ষরে পালনের জন্য বাংলায় বিদ্রোহ-সংগ্রামের তরঙ্গ টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়া ছড়িয়ে পড়ে। বাঙালির প্রচণ্ড বিক্ষোভে একাত্তরের ৭ই মার্চ রেডিও-টেলিভিশনে বঙ্গবন্ধুর অবিস্মরণীয় ও ঐতিহাসিক ভাষণ প্রচার করতে বাধ্য হয় পাকিস্তান শাসকগোষ্ঠী। সেদিন প্রকাশ্যে বঙ্গবন্ধু ডাক দেন স্বাধীনতার। এ আহ্বানে হতভম্ব হয়ে যায় পাকিস্তানি সামরিক জান্তা।

৭ই মার্চের বঙ্গবন্ধুর ভাষণ পুরো মুক্তিযুদ্ধকাল সময়ে মানুষকে উজ্জীবিত রেখেছে। প্রিয় নেতা সুদূর পাকিস্তান কারাগারে। বেঁচে আছেন কিনা তাও জানা নেই। কিন্তু স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র থেকে প্রচারিত ঐ অমর ভাষণ জীবন-মরণের কঠিন দুঃসময়ে এক সঞ্জীবনী সুধার মত বিপন্ন মানুষকে সজীব রেখেছে। ‘বজ্রকণ্ঠ’ – স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র থেকে প্রতিদিন প্রচারিত এই অনুষ্ঠানটি শোনার জন্য গ্রাম ও শহরের মানুষ উন্মুখ হয়ে অপেক্ষা করেছে। ‘বঙ্গবন্ধু’ নামটি হয়ে গিয়েছিল একটি রণহুঙ্কার। বঙ্গবন্ধুর অবর্তমানে ঐ নামেই মুক্তিযুদ্ধ হয়েছে। আর ছিল ‘জয় বাংলা’। বঙ্গবন্ধুর মুখ নিঃসৃত ‘জয় বাংলা’ ছিল মুক্তিযোদ্ধাদের রণধ্বনি। ঐ ধ্বনি দিয়ে মুক্তিযোদ্ধারা চার্জ করেছে পাকিস্তানী সৈন্যদের। মেশিনগানের গুলির মুখে এগিয়ে গেছে, প্রবেশ করেছে শত্রুর বাংকারে। বুকের গভীরে ‘বঙ্গবন্ধু’ আর মুখে ‘জয় বাংলা’ – এইতো ছিল বাঙালির মূল অস্ত্র। এই দু’টো শব্দ তখন আর কোন ব্যক্তি, গোষ্ঠী বা দলের নয়, তা হয়ে গিয়েছিল স্বাধীনতা ও মুক্তির স্বপ্নে বিভোর ঘোর লাগা এক জাতির– গোটা বাঙালি জাতির সবচেয়ে প্রিয় শব্দ।

আর কয়েকটি বছর পর আমরা পৌঁছে যাব স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে। স্বাধীনতার প্রায় অর্ধশতক পেরিয়ে দেশের বিভিন্ন প্রসঙ্গে অর্জন, সংকট ও সম্ভাবনা আমরা খুঁজে দেখতে চেয়েছি; আর চেয়েছি এ অনুসন্ধান হোক তারুণ্যের চোখে। সেই তারুণ্য, যাদের প্রত্যেকের জন্ম স্বাধীন বাংলাদেশে, জন্মেই যারা পেয়েছে স্বাধীনতার আস্বাদ, পরাধীনতার শৃঙ্খল বিষয়ে যারা অনভিজ্ঞ এবং যারা দেখেনি ১৯৭১-এর মুক্তিযুদ্ধ, পাকিস্তানি শোষণ সম্পর্কে যাদের প্রত্যক্ষ কোনো ধারণা নেই। প্রিয় বাংলাদেশ, যার সমৃদ্ধি আমাদের গৌরবান্বিত করে, যার ব্যর্থতা আমাদের বিদীর্ণ করে, সেই বাংলাদেশকে আরো বর্ণিল, প্রগতিশীল ও সমৃদ্ধ করতে আজকের তারুণ্যের অপার সম্ভাবনাই যে সবচেয়ে বড় শক্তি, তা আমরা বিশ্বাস করি। পূর্ব প্রজন্মের গৌরব ও কীর্তি পরবর্তী প্রজন্মের স্পর্ধিত হাতে এগিয়ে যায় সামনে, এটিই সমাজ প্রগতির শিক্ষা।

আগামী দিনের বাংলাদেশ সব প্রজন্মের সম্মিলিত নিজের পায়ে সর্বময় মর্যাদায় বিশ্বের বুকে মাথা উঁচু করে দাঁড়াবে—এই বিশ্বাস অতিশয়োক্তি নয়। একাত্তর আমাদের, অর্থাৎ তরুণ প্রজন্মের কাছে কেবল শোনা গল্প। মা, বাবার কিংবা যুদ্ধে অংশ নেওয়া স্বজনের স্মৃতিগল্প। সেদিন আমাদের জন্ম হয়নি। দেখিনি ‘স্বাধীনতা’ শব্দটি কীভাবে আমাদের হলো। শুনিনি সেদিন কবির কণ্ঠে সেই কবিতাখানি, অবাক হইনি তাঁর দৃপ্ত স্বাভাবিক পথচলায়। ভাবতেও পারি না, মাত্র একজন লোক কী করে কোটি কোটি বাঙালিকে মোহিত করেছিলেন। হোক না তা আমাদের কাছে অন্যের মুখে শোনা গল্প। তবু তো বাস্তব।

তাই উপলব্ধি করি কেবল একজন শেখ মুজিবুর রহমান কীভাবে নাড়া দিয়ে গিয়েছিলেন সারা দেশের তরুণ-যুবাদের। নাড়া দিয়েছিলেন পুরো বাংলাকে। কিন্তু কতটুকু জানি আমরা তাঁর কথা কিংবা তাঁর ভূমিকাকে কতটা স্মরণ করি? এই প্রজন্মের কাছে তিনি কি কেবল একটি নাম শেখ মুজিবুর রহমান, নাকি মহান নেতা বঙ্গবন্ধু অথবা স্বাধীনতার প্রতিশব্দ হয়ে আছেন? তিনি এই দেশ ও জাতির জনক। তিনি সব বিতর্কের ঊর্ধ্বে।

৭ই মার্চ নিয়ে নতুন প্রজন্ম কি ভাবে অনুপ্রাণিত করে তা তরুণদের দেশের প্রতি তাদের কাজ-কর্মের মধ্যে বুঝা যায়। ৭ই মার্চ আজকের তরুণদের আজকেও দেশের স্বার্থে এক হয়ে কাজ করে। তাদের চিন্তা চেতনায় মননশীলতায় ৭ই মার্চ কাজ করে।

৭ই মার্চের ভাষণ প্রগতিশীল সমাজ তৈরি করতে সাহায্য করেছে। সেই জয়বাংলা স্লোগান আজও ধ্বনিত হয় পৃথিবীর সব খানে যে খানে বাংলাদেশীরা থাকে। ৭ই মার্চ এর ভাষণের কারণে পাকিস্তানী ভূত আজ আমাদের ঘাড়ের উপর পড়তে পারেনি।

রাজাকার এর বিচারের দাবিতে যখন শাহবাগ প্রকম্পিত ছিল জয় বাংলা স্লোগান এ তখন ওই আন্দোলন ছিল ৭ মার্চ এ অনুপ্রাণিত হয়ে। গত ৩ বছর হল যে জয়বাংলা কনসার্ট হয় দেশের গান গেয়ে একঝাঁক তরুণ লাখ লাখ তরুণদের উদ্ধুদ্ধ করে তার প্রেরণা আসে ৭ই মার্চ থেকেই। ৭ই মার্চ একটি দেশের, সমাজের সকল বয়সী সকল মানুষদের দেশের জন্য কাজ করার শক্তি। তারুণ্যের শক্তি।

বঙ্গবন্ধু যে ময়দান থেকে ৭ই মার্চের ভাষণ দিয়েছিলেন, উদ্বুদ্ধ করেছিলেন স্বাধীনতার স্বাদ পেতে এবং যে ময়দানে ১৬ ডিসেম্বর পাকিস্তান বাহিনী আত্মসমর্পণ করে, সেটি তৎকালীন রেসকোর্স এবং আজকের সোহরাওয়ার্দী উদ্যান। সেখানে প্রতিদিনই সন্ধ্যায় জমে তরুণের মেলা। সেখানেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষার্থীকে একদিন জিজ্ঞেস করেছিলাম বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে। তাঁদের কথা, ‘বঙ্গবন্ধু কেবল একজন ভালো মানুষ ছিলেন না, তিনি ছিলেন যে কারো আদর্শ হওয়ার মতো। অনেক দৃষ্টান্ত রেখে গেছেন আমাদের জন্য। এই প্রজন্মের আমরা যখন এখনকার রাজনীতিবিদদের প্রতি বিতৃষ্ণা জাগিয়ে রাজনীতি থেকে দূরে সরতে চাই, তখন বঙ্গবন্ধুর আদর্শ আমাদের তাঁর দেখানো পথে চলতে উৎসাহ জাগায়।’

একজনের মতে, ‘বঙ্গবন্ধু দেশের জন্য যা করেছেন কিংবা তাঁর অবদান কোনোভাবেই অস্বীকার করার নয়। আমি যে তাঁর দেশে জন্ম নিয়েছি, এটাই আমার জন্য গর্বের বিষয়।’ বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে তরুণ প্রজন্মের এই ভাবনা থেকে যে কথা বেরিয়ে আসে, তা হলো- মৃত্যুর পরেও দেশের প্রতিষ্ঠাতা এই দেশ থেকে হারিয়ে যাননি, যেতে পারেন না। তিনি চিরঞ্জীব। ইতিহাসবিদরা দেশের জন্য স্বপ্ন দেখেন না। দেশের জন্য স্বপ্ন দেখেন রাজনীতিবিদরা। এ স্বপ্নে আদর্শ থাকে, দর্শন থাকে। এ রকম স্বপ্ন যাঁরা দেখেন, তাঁরাই স্বাপ্নিক। সেই স্বাপ্নিক রাজনীতিবিদরাই ইতিহাস সৃষ্টি করেন। ইতিহাসবিদরা ইতিহাস সৃষ্টি করেন না, তাঁরা কেবল ইতিহাস লিপিবদ্ধ করেন ও বিশ্লেষণ করেন। তাই আজকের প্রজন্মকে জানতে হবে বাঙালির মহান নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সম্পর্কে।

তাঁর আদর্শ ও চেতনাকে বুকে ধারণ করে বঙ্গবন্ধুর মতো করে ভালোবাসতে হবে স্বদেশকে। অন্যদিকে আর কিছু বছর অতিক্রান্ত হলেই বাঙালি জাতি স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী পালন করবে। আবার এর মধ্যে আমরা ক্রমে হারাতে থাকব একাত্তরের আগের বীর সংগ্রামী সন্তান ও একাত্তরের বীর মুক্তিযোদ্ধাদের। ইতোমধ্যে অনেক বীর সেনানীকে হারাতে হয়েছে। বর্তমান বাংলাদেশে একাত্তরের পরে জন্ম নেওয়া নাগরিকই বেশি, যাদের স্বাধীনতা ও মুক্তিসংগ্রামের অভিজ্ঞতা নেই। ধীরে ধীরে এ জাতিকে আন্দোলন-সংগ্রামের চাক্ষুস অভিজ্ঞতা থেকে দূরে সরে যেতে হবে। এটাই প্রকৃতির নিয়ম। নতুন প্রজন্মকে স্বাধীনতা আন্দোলনে-সংগ্রামের অকুতোভয় বীর সন্তান ও মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে যাঁরা জীবিত রয়েছেন, তাঁদের সান্নিধ্যে বেশি বেশি করে আসতে হবে। ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার পর বহু বছর নতুন প্রজন্মের কাছে স্বাধীনতার ভুলপাঠ হাজির করা হয়েছে। সেদিকে নজর রেখে বাংলাদেশের শেকড়ের সন্ধান করে জানতে হবে স্বাধীনতার ইতিহাসের ইতিকথা ও বিস্তারিত পটভূমি। জানতে হবে তাঁদের কথা, যাঁদের আন্দোলন-সংগ্রামের ফল হিসেবে বিশ্বের মানচিত্রে একদিন জয়যুক্ত হয়েছিল লাল-সবুজের পতাকা।

আমরা এমন এক দুর্ভাগা জাতি যে, যে মানুষ আমাদের জন্য সারা জীবন জেল-জুলুম-অত্যাচার সহ্য করে সংগ্রাম-লড়াই করে একটি স্বাধীন দেশ ও বাঙালির জাতি পরিচয় এনে দিলেন তাঁকেই আমরা খুন করলাম। ১৯৭৫ সালের পর মিথ্যা, অপপ্রচার ও প্রোপাগান্ডা এত বেশি তীব্রভাবে চালানো হয়েছে যে, সুদীর্ঘ ২১ বছর তাঁর নামটা পর্যন্ত রাষ্ট্রযন্ত্র উচ্চারণ করতে দেয় নি। তাঁর সুযোগ্য কন্যা ও জননেত্রী শেখ হাসিনা আজ দেশের প্রধানমন্ত্রী। তিনিও জীবনবাজি রেখে অনেকবার মৃত্যুর মুখে পতিত হয়েও, দেশের হাল ধরে বাংলাদেশকে বিশ্ব দরবারে সুউচ্চ মর্যাদায় সমাসীন করতে সক্ষম হয়েছেন। জাতির পিতা বাংলাদেশ নামে একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম দেশ উপহার দিয়ে যান। আর এ দেশকে উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির পানে নিয়ে গেলেন, তাঁর সুযোগ্য কন্যা। ডিজিটাল বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন নিয়ে তিনি ২০০৯ সালের প্রথমার্ধে সরকার গঠন করে দেশকে সুখী, সমৃদ্ধি ও উন্নয়নের সোপানে উঠিয়ে দিতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রাত-দিন অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। আর তাঁর সুযোগ্য পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয় আজকের তারুণ্যের প্রতীক হিসেবে বাংলাদেশকে তথ্য-প্রযুক্তিতে সমৃদ্ধ করে সামগ্রিকভাবে উন্নত দেশগুলোর সমান কাতারে পৌঁছে দিয়েছেন। তাঁর মধ্যে আমি বঙ্গবন্ধুর তরুণ বয়সের প্রতিচ্ছবি দেখতে পাই। চল্লিশ, পঞ্চাশ, ষাট ও সত্তরের দশকের প্রথমার্ধে বঙ্গবন্ধুর জীবনটাকে আমরা যেমন দেখতে পাই, সজীব ওয়াজেদ জয়ও সকল বাধা-বিপত্তি ডিঙ্গিয়ে আধুনিক বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখাচ্ছেন আমাদেরকে।

বঙ্গবন্ধু -প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়ার সময় হতে এলাকাবাসী ও সহপাঠীদের দাবি-দাওয়া আদায়ে নেতৃত্ব দেন। মাধ্যমিক স্তরে পড়াশোনা করার সময় সক্রিয় রাজনৈতিক কর্মী এবং রাজনৈতিক নেতৃত্ব দেন। কলেজ জীবনে ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলন-সংগ্রামে সক্রিয় ভূমিকা পালন এবং কলকাতার হিন্দু-মুসলিম দাঙ্গা চলাকালে সম্প্রীতি প্রতিষ্ঠায় সরাসরি ভূমিকা পালন। পরে বাঙালি জাতিসত্তার পরিচয় প্রতিষ্ঠা, বাংলা ভাষার মর্যাদা প্রতিষ্ঠা এবং স্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করেন।

আজকের তরুণদের সামনে দুই প্রজন্মের শেখ মুজিবকে তুলে ধরার প্রয়াস চালালাম, আমি এ নিবন্ধে। একজন পুরো তরুণ বয়স কাটিয়েছেন একটি স্বাধীন-সার্বভৌম জাতি ও দেশ প্রতিষ্ঠার জন্য। আর তাঁর সুযোগ্য উত্তরসূরি, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মান্যবর তথ্য-প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় বাংলাদেশকে তথ্য-প্রযুক্তিতে সমৃদ্ধ করে উন্নত দেশের কাতারে নিয়ে যেতে নিরন্তর কাজ করে যাচ্ছেন। বাংলাদেশের তরুণ প্রজন্ম বঙ্গবন্ধুর জীবনের চির তারুণ্যের এবং চূড়ান্ত লক্ষ্যে না পৌঁছা পর্যন্ত অবিচল থাকার আদর্শ অনুসরণ করতে পারেন।

বঙ্গবন্ধু সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি; এতে কোন সন্দেহ নেই। তিনি পুরো জীবন জাতি ও দেশের জন্য শুধু উৎসর্গই করে গেছেন। নিজের জন্য ও পরিবারের জন্য বলতে গেলে তেমন কিছুই করেন নি, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। কিন্তু তিনি মানুষের ভালবাসা পেয়েছেন অকাতরে, চিরদিন পেতে থাকবেন তা। পুরো বাঙালি জাতি তাঁর নিকট কৃতজ্ঞ। তাঁর সুযোগ্য কন্যা ও জননেত্রী শেখ হাসিনা আজ দেশের প্রধানমন্ত্রী। সীমিত সম্পদ, অথচ ১৭ কোটি মানুষের এ দেশকে এগিয়ে নিতে তিনি রাত-দিন অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সুযোগ্য পুত্র ও তথ্য-প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় তথ্য-প্রযুক্তি খাতকে সমৃদ্ধ করে বাংলাদেশকে উন্নত দেশে পরিণত করতে অনন্য ভূমিকা পালন করে যাচ্ছেন। বলা যায়, বঙ্গবন্ধু পরিবারের সকল সদস্যই বাংলাদেশের জন্য অবদান রেখেছেন এবং রেখে চলেছেন। তাঁদের সবার ত্যাগ-তিতিক্ষায় আজকের বাংলাদেশ আমরা পেয়েছি। মানুষকে ভালবাসা এবং তাদের জন্য কিছু করাই ছিল জাতির জনকের জীবনের ব্রত। আজকের তারুণ্য তাঁর জীবন হতে এ শিক্ষাটি গ্রহণ করতে পারে।

SUMMARY

1632-1.jpg