ব দ রু দ্দী ন উ ম র
বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর শেখ মুজিবুর রহমান পাকি¯-ান থেকে লন্ডন ও নয়াদিলি¬ হয়ে ঢাকায় আসেন ১০ জানুয়ারি ১৯৭২। সে সময় এক বিশাল জনতা তাকে ঢাকা বিমানবন্দর ও রেসকোর্স ময়দানে অভূতপূর্ব সংবর্ধনা জানান। গান্ধী, জিন্নাহ, নেহেরুর যে জনপ্রিয়তা ছিল, তা সবারই জানা। কিন্তু তখনকার পরিস্থিতিতে এটা নিঃসন্দেহে বলা চলে, শেখ মুজিবের জনপ্রিয়তা বাংলাদেশে তখন ছিল তার থেকেও বেশি। কাজেই ১০ জানুয়ারি ঢাকায় তিনি যে জনসংবর্ধনা লাভ করেছিলেন সেটা ছিল খুবই স্বাভাবিক। কিন্তু আওয়ামী লীগ ও শেখ মুজিবুর রহমানের বিষয়ে যেহেতু আমাদের একটা মূল্যায়ন ছিল, এ কারণে ওই সময়ে ১৯৭২-এর ২৩ জানুয়ারি ইংরেজি সাপ্তাহিক ঐড়ষরফধু পত্রিকায় আমি লিখেছিলাম, ÔThe reception which Shaikh Mujibur Rahman was accorded by the people at the Dacca airport and at the Race Course Maidan may be interpreted both as a barometer of his popularity as well as of the aspirations and expectations of the people. In future Prime Minister Shaikh Mujibur Rahman will not be able to take his popularity for granted. It will depend directly on the extent of the fulfilment of the aspirations of the people of Bangladesh.
অর্থাৎ জনগণ শেখ মুজিবকে ঢাকা বিমানবন্দরে যে সংবর্ধনা জ্ঞাপন করেছিল সেটা একদিকে তার জনপ্রিয়তা এবং অন্যদিকে জনগণের আশা-আকাক্সক্ষা ও প্রত্যাশার মাপকাঠি। ভবিষ্যতে প্রধানমন্ত্রী শেখ মুজিবুর রহমান তার জনপ্রিয়তাকে সব সময়ের জন্য ধরে রাখতে পারবেন কিনা এটা সরাসরি নির্ভর করবে জনগণের আশা-আকাক্সক্ষা কতখানি পূর্ণ হবে তার ওপর।
১৯৭৫ সালে ১৫ আগস্ট শেখ মুজিবুর রহমানকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএ কিছুসংখ্যক বাংলাদেশী সামরিক অফিসারের মাধ্যমে নৃশংসভাবে হত্যা করে। এখন পুরো আগস্ট মাসকে শোক দিবস হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে এবং ১৫ আগস্ট শোক দিবস হিসেবে সরকারি এবং সরকারের সঙ্গে সম্পর্কিত অনেক বেসরকারি মহল থেকে সমারোহের সঙ্গে পালন করা হচ্ছে। বহু জায়গায় ব্যানার টাঙানো হয়েছে যাতে লেখা আছে ‘কাঁদো বাঙালি কাঁদো’। কিন্তু ১৯৭৫ সালে ১৫ আগস্ট শেখ মুজিবকে হত্যার পর কোন বাঙালিকে এবং বিশেষ করে আওয়ামী লীগ দলের কোন উগ্র বাঙালিকে রা¯-ায় নেমে আসতে অথবা অন্যভাবে প্রতিবাদ করতে দেখা যায়নি। শুধু তাই নয়, যে চার নেতাকে পরবর্তী নভেম্বর মাসে জেলের মধ্যে হত্যা করা হয়েছিল তারা ছাড়া শেখ মুজিবের আওয়ামী বাকশালী মন্ত্রিসভার সব সদস্যই গভর্নমেন্ট হাউসে গিয়ে ক্রিমিনাল খন্দকার মোশতাক আহমেদের মন্ত্রিসভার সদস্য হিসেবে শপথ গ্রহণ করেছিলেন। নিজেদের এই কাপুরুষতার ব্যাখ্যা হিসেবে তারা মার্শাল ল’-এর কথা উলে¬খ করে নিজেদের জীবন বিপন্নের কথা বলেছিলেন। কিন্তু এ দেশের ইতিহাসে মার্শাল ল’ ভঙ্গ করার দৃষ্টাšে-র অভাব নেই। এভাবে মার্শাল ল’ ভঙ্গ করার মধ্য দিয়ে ১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থান এবং ১৯৭১ সালের ১ মার্চ পরবর্তী সময়ে জনগণের আন্দোলন অগ্রসর হয়েছিল। কিন্তু ১৯৭৫ সালে আওয়ামী বাকশালী সরকার এবং তাদের দলের অবস্থা এমনই ছিল, জনগণের মধ্যে তাদের কোন সমর্থন ছিল না। এজন্য আন্দোলনে জনগণের অংশগ্রহণ ও সম্পৃক্ততার ওপর দাঁড়িয়ে ১৯৬৯ এবং ১৯৭১ সালে যা সম্ভব হয়েছিল ১৯৭৫ সালের আগস্টে তা সম্ভব হয়নি।
১৯৭২ সালের জানুয়ারিতে হলিডেতে প্রকাশিত উপরোক্ত প্রবন্ধে যা বলেছিলাম সেটাই আসলে ঘটেছিল। শেখ মুজিবুর রহমান ও তার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ নিজেদের জনপ্রিয়তাকে সর্বাবস্থায় অটুট ও অক্ষয় এমনকি চিরকালীন মনে করে যেভাবে দেশের শাসন কাজ পরিচালনা করছিলেন তাতে তারা দ্রুত জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়েছিলেন। জনগণ ১৯৭১ সালে ও তারপর কিছুদিন তাদের যে সমর্থন দিয়েছিলেন, সেটাকে ধরে রাখার মতো কোন কাজ করতে না পারায়, উপরন্তু এমন সব কাজ করায় যাতে জনস্বার্থ ক্ষতিগ্র¯- হয়, আওয়ামী লীগের জনসমর্থন শূন্যের কোঠায় দাঁড়িয়েছিল এবং শেখ মুজিবের প্রতি মানুষের কোন আস্থা আর ছিল না। এই পরিস্থিতিতেই আমেরিকানরা কিছু সামরিক অফিসারের মাধ্যমে শেখ মুজিবকে হত্যা করেছিল। এই হত্যাকাণ্ড ১৯৭২, ’৭৩ এমনকি ১৯৭৪ সালেও সম্ভব ছিল না। এটা সম্ভব হল যখন আওয়ামী লীগ ও শেখ মুজিবের জনবিচ্ছিন্নতা চরম পর্যায়ে উপনীত হল।
কেউ কেউ মনে করেন, আমেরিকান সরকার যেহেতু জনগণের শত্র“ সে কারণে তারা কাউকে এভাবে হত্যা করলে বুঝতে হবে, যাকে হত্যা করা হয়েছে তার প্রগতিশীল চরিত্রের কারণেই সেটা তারা করেছে। এটা অনেক ক্ষেত্রে সত্য হলেও সব ক্ষেত্রে সত্য নয়। যখন তারা মনে করে তাদের একজন বিশ্ব¯- লোক অকেজো হয়ে গেছে, কার্যকর কোন ভূমিকা পালন করতে পারছে না বা তাদের জন্য দায় (ষরধনরষরঃু) হয়ে দাঁড়িয়েছে তখন তারা তাকে হত্যা করতে বা সরিয়ে দিতে অসুবিধে বোধ করে না, উপরন্তু সেটাই তারা প্রায় সব সময় করে থাকে। এজন্যই তারা দক্ষিণ ভিয়েতনামে দিয়েমকে হত্যা করেছিল। খোদ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত সায়গনে বসে থেকে এ কাজ করেছিলেন। এরপর ইরানের শাহ্ ইরান থেকে বিতাড়িত হয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে আশ্রয়ের জন্য গেলেও সেখানে তার আশ্রয় মেলেনি। উপরন্তু তাকে চিকিৎসার নামে ক্যান্সারের ইনজেকশন দিয়ে তারা মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিয়েছিল। সেই অবস্থায় মিসর তাকে আশ্রয় দিয়েছিল এবং অল্পদিন পর কায়রোতে তার মৃত্যু হয়েছিল। পরে মার্কোস ফিলিপাইন থেকে বিতাড়িত হয়ে হাওয়াইয়ে আশ্রয় নিয়েছিলেন। তখনও তিনি হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সরকারের জন্য এক দায়। সেই দায়মুক্তির জন্য তাকেও তারা ক্যান্সারের ইনজেকশন দিয়ে মারার ব্যবস্থা করেছিল। কাজেই মার্কিন সরকার কখন কাকে রক্ষা করবে এবং কখন কাকে খুন করবে এটা নির্ভর করে তাদের স্বার্থের ওপর।
আওয়ামী লীগের সঙ্গে ১৯৭১ সালে আমেরিকার সম্পর্কের অবনতি হলেও ১৯৭২ থেকেই তার পরিবর্তন হতে শুরু হয়। কিন্তু সম্পর্কের এই উন্নতি সত্ত্বেও যত দ্রুত বাংলাদেশে তারা নিজেদের আধিপত্য প্রতিষ্ঠা করতে চাইছিল তত দ্রুত এটা সম্ভব হচ্ছিল না। সোভিয়েত ইউনিয়নের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক ছিল এর একটা বড় কারণ।
পাকি¯-ান আমলে আওয়ামী লীগ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সরকারের সঙ্গেই সম্পর্কিত ছিল। ১৯৫৭ সালে পাক-মার্কিন সামরিক চুক্তি বাতিল না করে তা বহাল রাখার জন্য সোহরাওয়ার্দীর নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ ও পাকি¯-ান সরকার দৃঢ় অবস্থান গ্রহণ করায় আওয়ামী লীগ থেকে বিভক্ত হয়ে মওলানা ভাসানীর নেতৃত্বে ন্যাপ গঠিত হয়। পরবর্তীকালেও শেখ মুজিবের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের মার্কিনপন্থী নীতি খুব স্পষ্ট ছিল। ১৯৭১ সালের মার্চ মাসেও মার্কিন রাষ্ট্রদূত যখন ঢাকায় প্রায় দুই সপ্তাহ ছিলেন তখন তার সঙ্গে শেখ মুজিবের দেখা-সাক্ষাৎ হতো। কাজেই ১৯৭১ সালে যুদ্ধের সময় মার্কিন সরকারের সঙ্গে আওয়ামী লীগের সম্পর্ক খারাপ হলেও গুণগতভাবে তারা ছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সরকারের মিত্রশক্তি। এই মৈত্রীর বন্ধন পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হতে শুরু করলেও যত দ্রুততার সঙ্গে সেটা হওয়া আমেরিকার জন্য প্রয়োজন ছিল সেটা উপরোক্ত কারণে হতে না পারা এবং অন্যদিকে আওয়ামী লীগ ও শেখ মুজিবের জনপ্রিয়তা প্রায় শূন্যের কোঠায় নেমে আসায় তাদের অকার্যকারিতার কারণে শেখ মুজিবকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দেয়ার প্রয়োজন তাদের হয়েছিল। যে কাজ আওয়ামী লীগের মধ্যে তারা শুরু করেছিল সেটাই শেখ মুজিব হত্যার পর বেশ দ্রুততার সঙ্গে তারা পরবর্তী সামরিক সরকারের মাধ্যমে করেছিল।
আওয়ামী লীগ ও তাদের বুদ্ধিজীবী সমর্থকদের পক্ষ থেকে বলা হয়, ১৯৭৫ সালে তারা ‘দ্বিতীয় বিপ¬বের কর্মসূচি’ গ্রহণ করার কারণেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সরকার ও দেশীয় শত্র“রা শেখ মুজিবকে হত্যা করে এবং আওয়ামী লীগকে উৎখাত করে সে বিপ¬ব প্রতিহত করে। এসব দলীয় প্রচারণার কোন ঐতিহাসিক মূল্য নেই। আওয়ামী লীগের এই তথাকথিত দ্বিতীয় বিপ¬বের কর্মসূচি ১৯৭৫ সালে কি ছিল তার কোন হদিস পাওয়া যায়নি। উপরন্তু জরুরি অবস্থা জারি, সংবিধানের চতুর্থ সংশোধনীর মাধ্যমে জনগণের সব গণতান্ত্রিক অধিকার হরণ, পেশাÑ নির্বিশেষে সবাইকে, এমনকি শিক্ষক, সাংবাদিক, পুলিশ, সামরিক বাহিনী এবং আমলাদের পর্যš- শেখ মুজিবের নেতৃত্বাধীন বাকশাল নামক নবগঠিত দলের সদস্য হওয়ার জন্য চাপ সৃষ্টি ও তাকে প্রায় বাধ্যতামূলক করার চেষ্টাই ছিল সেই সময়কার মূল কর্মসূচি। তার মধ্যে বিপ¬বের কোন নামগন্ধ ছিল না। উপরন্তু সে সময় যা কিছু করা হয়েছিল তাকে প্রচলিত অভিধা অনুযায়ী প্রতিবিপ¬ব নামে আখ্যায়িত করাই সঙ্গত ছিল এবং প্রগতিশীল ও বিপ¬বী মহল থেকে সেটাই করা হয়েছিল। এই প্রতিবিপ¬বী কর্মসূচির মাধ্যমে আওয়ামী লীগ ও শেখ মুজিবের জনপ্রিয়তা বিন্দুমাত্র বাড়েনি। উপরন্তু আরও দ্রুতগতিতে তারা জনবিচ্ছিন্ন হয়েছিলেন। এই পরিস্থিতির সুযোগেই আমেরিকা এবং দেশের অভ্যš-রে মোশতাকের মতো তাদের এজেন্ট ও শেখ মুজিবের ব্যক্তিগত শত্র“রা গ্রহণ করেছিল।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট শেখ মুজিবকে হত্যা করার পর যে আওয়ামী লীগাররা মোশতাক সরকারের মন্ত্রিত্বের শপথ নিয়েছিলেন এবং যারা সেই হত্যাকাণ্ডের বিরুদ্ধে কোন মিছিল তো দূরের কথা, একটি লিফলেট ও পোস্টার দিয়েও প্রতিবাদ জানাননি, তারাই এখন ১৫ আগস্ট ‘কাঁদো বাঙালি কাঁদো’ বলে এক মাস ধরে শোক পালনের ব্যবস্থা করেছেন। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টে এই লোকদের কাপুরুষতা এবং পলায়ন যেমন ছিল তাদের নিকৃষ্ট চরিত্রের পরিচায়ক, ঠিক তেমনি বড় রকম অনুকূল পরিস্থিতিতে, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকার সময়, যেভাবে তারা গলা ফাটিয়ে এবং নানা ধরনের বানানো গল্প টেলিভিশনে টকশো, সংবাদপত্রের মাধ্যমে বলে ‘শোক’ প্রকাশ করছে তার মাধ্যমেও সেই একই চরিত্রের বহিঃপ্রকাশ ছাড়া আর কিছু নেই।
শেখ মুজিবের হত্যাকাণ্ডের পর ৩৪ বছর পার হয়েছে। এত বছরেও তার সেই হত্যাকাণ্ডের বিচার ও বিচারে সাজাপ্রাপ্তদের শা¯ি- হয়নি। তার মধ্যে ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যš- শেখ মুজিবের কন্যার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগের একটি সরকারও ক্ষমতাসীন ছিল। পাঁচ বছর অনেক লম্বা সময়। সেই লম্বা সময়ে তারা ক্ষমতায় থাকলেও এই বিচার হয়নি। এ নিয়ে তারা অন্যদের দোষারোপ করেছে, নিজেরা অনেক চিৎকার ও প্রতিজ্ঞা করেছে, তাদের লোকজন অনেক লাফালাফি করেছে, কিন্তু আসল কাজ তারা করেনি। এর কারণ শেখ মুজিবই হলেন আওয়ামী লীগের একমাত্র পুঁজি। এই পুঁজি ভাঙিয়েই তার কন্যা থেকে শুরু করে অন্যেরা নিজেদের ক্ষমতা দাঁড় করিয়ে রেখেছেন। এদিক দিয়ে শেখ মুজিবের হত্যার বিচারের দাবি এই পুঁজি ব্যবহারের একটা বড় উপায়। এই উপায়কে যতদিন সম্ভব টিকিয়ে রাখার প্রয়োজন তাদের আছে। কাজেই এ বিচারের জন্য নিজেদের ক্ষমতা যেভাবে ব্যবহার করা দরকার ছিল সেটা তারা মোটেই পারেনি। তাদের দালাল বুদ্ধিজীবীদের এ নিয়ে ব্যাখ্যা-বিশে¬ষণের শেষ নেই। কিন্তু এসব অসার ব্যাখ্যা-বিশে¬ষণের কোন কার্যকারিতা প্রকৃতপক্ষে নেই।
এখন আওয়ামী লীগ সরকার বেশ শক্তিশালীভাবেই ক্ষমতায় আছে। ভাবলে অবাক লাগে যে, এখনও তাদের লোকেরা শেখ মুজিব হত্যার বিচার ও বিচারের সাজাপ্রাপ্তদের দণ্ডাদেশ কার্যকর করার জন্য দাবি জানাচ্ছে। এ দাবি তারা জানাচ্ছে কার কাছে? তারাই তো এখন ক্ষমতায় আছে। কিন্তু এ ধরনের প্রচার-প্ররোচনার এমনই মাহাÍ্য যে এর খপ্পরে পড়ে মানুষের বিচার-বুদ্ধি অনেকাংশে বিভ্রাš- হয়। আওয়ামী লীগ নেতৃত্ব ও তাদের বুদ্ধিজীবীরা এর দ্বারা জনগণকে বোঝাতে চায় যে, ‘স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি’ এবং পাকি¯-ানিরাই এর জন্য দায়ী। কিন্তু নিজেদের জেলে আটক থাকা ইতিমধ্যে সাজাপ্রাপ্ত মুজিব হত্যাকারীদের দণ্ড কেন সরকার এখনও পর্যš- কার্যকর করছে না, এ রহস্য ভেদ করা খুব অল্প লোকের দ্বারাই সম্ভব হয়। এ নিয়ে অনেক লোকই বিভ্রাšি-র মধ্যে থাকেন। এখন আবার সরকারের পক্ষ থেকে জোর গলায় বলা হচ্ছে, খুব শিগগিরই শেখ মুজিবের হত্যার জন্য সাজাপ্রাপ্তদের দণ্ডাদেশ কার্যকর করা হবে। হতে পারে এখন এটা তারা করবে। কিন্তু যতদিন এটা স্থগিত রাখা যায় ততদিনই আওয়ামী লীগের লাভ। ততদিনই তারা এ ইস্যুটিকে ভাঙিয়ে নিজেদের রাজনৈতিক প্রচার কাজ চালিয়ে যেতে পারবে। এটা শুধু শেখ মুজিব হত্যাকারীদের বিচার ও শা¯ি-র ক্ষেত্রেই যে প্রযোজ্য তাই নয়, এটা যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের ক্ষেত্রে আরও বেশি প্রযোজ্য।
১৫.৮.২০০৯