নয় মাস কনডেম সেলে কারাবন্দী থাকায় শেখ মুজিবুর রহমানের ওজন ২০ কেজি কমেছিল। দুই মাসের বেশি সময় কনডেম সেলে বন্দী থাকার ফলে অনেক সময় বন্দীরা মানসিকভাবে বিকারগ্রস্ত হয়ে যায়। দীর্ঘ কারাবাস শেখ মুজিবুর রহমানকে ভেঙে না ফেললেও যুদ্ধে অঙ্গ হারানো একজন সৈনিকের মতোই তিনি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিলেন। কনডেম সেলে থেকেছেন এমন লোকের পক্ষেই শুধু ওই কষ্ট বোঝা সম্ভব।
১৫ আগস্ট ১৯৭৫-এ শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার সংবাদে ভুট্টো তার আনন্দ পুরোপুরি গোপন করতে পারেন নি। কিন্তু তিন বছর পর ভুট্টো যখন নিজে মৃত্যুর অপেক্ষায় কারাবন্দী জীবন যাপন করছিলেন তখন তার শেখ মুজিবুর রহমানের কথা মনে পড়েছিল। তখন হয়ত তার বোধোদয় হয়েছিল।
১৯৭৮-এর ৯ অক্টোবরে ভুট্টো রাওয়ালপিন্ডির জেলা কারাগারের সুপারিনটেনডেন্টকে লেখা চিঠিতে লিখেছিলেন, “১৫ থেকে ২০ জন সৈনিক সারাদিন পর্যায়ক্রমে কুচকাওয়াজ করে। তাদের ছন্দবদ্ধ পায়ের শব্দ এবং মাটি খোঁড়ার শব্দ ইত্যাদির কারণে সামান্য একটু ঘুমানোও অসম্ভব। এসবের কারণে ১৯৭২ সালে মুজিব তাঁর কারাবন্দী অবস্থায় যে দুর্দশার বর্ণনা করেছিলেন সেগুলোর কথা মনে পড়ে যায়। তিনি বলেছিলেন এটি তাকে মানসিকভাবে দুর্বল করার কৌশলের অংশ ছিল।”
এরপরও ভুট্টোর অবস্থা শেখ মুজিবুর রহমানের চেয়ে ভালো ছিল কারণ তিনি ছিলেন নিজের দেশে, চাইলেই স্ত্রী কন্যার সাথে দেখা করতে পারছিলেন। কারাগারে শুধু লিখতে পারছিলেন তাই নয় সে লেখা পাচারও করতে পারছিলেন। নয় মাস ধরে শেখ মুজিব স্ত্রী আর সন্তানদের কোনো খবরই পাননি।
[তথ্য সূত্র: হু কিল্ড মুজিব – এ.এল.খতিব ]