ছয় দফা আওয়ামী লীগের কর্মসূচি হলো যেভাবে


১৯৬৫ সালের সেপ্টেম্বরে ভারতের সঙ্গে পাকিস্তানের ১৭ দিনের যুদ্ধ রাজনীতির চালচিত্র অনেকটা পাল্টে দেয়।যুদ্ধ-পরবর্তী পরিস্থিতি পর্যালোচনা করার জন্য ১৯৬৬ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি লাহোরে একটা জাতীয় সম্মেলন ডাকা হয়।তাতে আইয়ুববিরোধী প্রায় সব রাজনৈতিক দলকেই আমন্ত্রণ জানানো হয়।সিদ্ধান্ত হয়, পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী লীগের প্রতিনিধি হিসেবে দলের সাধারণ সম্পাদক শেখ মুজিবুর রহমান লাহোর সম্মেলনে যাবেন।লাহোরে কি কি বিষয় নিয়ে আলোচনা করবেন, তার একটা বিষয়সূচি বা ‘টকিং পয়েন্ট’ মুসাবিদা করার জন্য শেখ মুজিব দুজন বাঙালি সিএসপি কর্মকর্তার সঙ্গে যোগাযোগ করলেন।তাঁরা হলেন রুহুল কুদ্দুস ও আহমেদ ফজলুর রহমান।রুহুল কুদ্দুস সাত দফা কর্মসূচির একটা খসড়া তৈরি করে দেন।পরে পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক তাজউদ্দীন আহমদের সহযোগিতায় এটা পরিমার্জন করে ছয় দফায় আনা হয়।
শেখ মুজিব তাজউদ্দিনকে নিয়ে লাহোর গেলেন।সম্মেলনের সাবজেক্ট কমিটির এক সভায় আলোচ্য সূচিতে ছয় দফা অন্তর্ভুক্ত করার প্রস্তাব করেন।কমিটিতে পশ্চিম পাকিস্তানি রাজনীতিবিদদের প্রাধান্য ছিল।তাঁরা ঘোর আপত্তি তুললে শেখ মুজিব সভা থেকে ওয়াক আউট করেন।

শেখ মুজিবের সামনে তখনো একটা বড়ো বাধা ছিল আওয়ামী লীগের কার্যকরী কমিটি।তিনি কমিটির সভা ডাকলেন ধানমন্ডির ৩২ নম্বর সড়কে তাঁর বাড়িতে।সভা হলো ১৯৬৬ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি।উপস্থিত অনেক সদস্যই ছয় দফা সমর্থন করতে রাজি ছিলেন না।সভা কক্ষের বাইরে ছাত্রলীগের একসময়ের সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল আলম খান দলবল নিয়ে ঘোরাফেরা করছিলেন।সবার হাতেই চেলা কাঠ।কয়েক জন ভয়ে সভাস্থল ছেড়ে চলে গেলেন।যাঁরা রয়ে গেলেন,তাঁরা সর্বসম্মতিক্রমে ছয় দফার পক্ষে হাত তুললেন।ছয় দফা আওয়ামী লীগের কর্মসূচি হলো।

তথ্য সূত্র : জাসদের উত্থান পতন – অস্থির সময়ের রাজনীতি ( মহিউদ্দিন আহমদ )

SUMMARY

1504-1.png