১৯৭৩ সালের শেষার্ধে আলজিয়ার্স নগরীতে আয়োজিত জোট-নিরেপেক্ষ সম্মেলনে যোগদানের উদ্দেশ্যে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে বাংলাদেশ প্রতিনিধি দল আলজিয়ার্স যান। আলজিয়ার্সের প্রেসিডেন্ট বুমেদীন বিমানবন্দরে বঙ্গবন্ধুকে সংবর্ধনা জানান। পরদিন স্থানীয় পত্র-পত্রিকায় বঙ্গবন্ধু-বুমেদীনের কোলাকুলির ছবি সবচেয়ে বেশি প্রাধান্য পায়।
এই সম্মেলনে সর্বমোট ৯২টি দেশের রাষ্ট্রপ্রধান ও প্রশাসনিক প্রধানরা উপস্থিত ছিলেন। বঙ্গবন্ধু ছাড়াও এদের মধ্যে কিউবার ফিদেল কাস্ত্রো, যুগোশ্লোভিয়ার প্রেসিডেন্ট মার্শাল টিটো, সৌদি আরবের বাদশা ফয়সাল, শ্রীলংকার প্রধানমন্ত্রী শ্রীমাভো বন্দরনায়েক এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী অন্যতম।
সম্মেলনের শুরুতেই বিভিন্ন দেশের নেতৃবৃন্দের পরিচয় দেন সম্মেলনের সভাপতি এবং আলজেরিয়ার প্রেসিডেন্ট বুমেদীন। বঙ্গবন্ধুর পরিচিতির পর সম্মেলন কক্ষে অভূতপূর্ব দৃশ্যের অবতারণা হয়। মঞ্চে দাঁড়িয়ে বাঙালি পোশাকে শ্বেতশুভ্র পাজামা-পাঞ্জাবি আর কালো মুজিব কোট পরিহিত প্রায় ছ’ফুটের এক হিমাচল সদৃশ ব্যক্তি শেখ মুজিব। ঈষৎ ঋজু দেহ। মুখে শিশুর সরল হাসি।
সম্মেলন কক্ষের প্রতিটি লোক আসন ছেড়ে দাঁড়িয়ে করতালি দিচ্ছে। তিন মিনিটের বেশি সময় ধরে এক নাগাড়ে করতালির পর প্রেসিডেন্ট বুমেদীনের ইশারায় সবাই আবার আসন গ্রহণ করে। অসংখ্য নৈশ ক্লাব আর ক্যাবারে নগরী আলজিয়ার্স -এ একমাত্র ইংরেজি পত্রিকায় বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে প্রায় এক পৃষ্ঠা বিশেষ প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। হেডিং ছিল, ” দি লিডার উইদআউট বিয়ার্ড; নিদার ভিজিটেড এনি নাইট ক্লাব নর টাচড ড্রিঙ্কস ইন লাইফ”। শ্মশ্রু ( দাড়ি ) বিহীন নেতা; যিনি জীবনে কোনো নৈশ ক্লাবে যাননি কিংবা মদ পর্যন্ত স্পর্শ করেননি।
তথ্য সূত্র: মুজিবের রক্ত লাল [ এম আর আখতার মুকুল ]