পাকিস্তান জেল থেকে ছাড়া পেয়ে বঙ্গবন্ধু ১৯৭২ সালের ৮ জানুয়ারি লন্ডন যাত্রা করেন। সেই দিনই একটি পাকিস্তানি হকি দল লন্ডনে যায়। কিন্তু এই হকি দলে খেলোয়াড় এবং তাদের সাথে যুক্ত লোকজন বাদেও, পাকিস্তান সরকারের আদেশে ওই একই বিমানে আরও ক’জন ব্যক্তিকে লন্ডনে পাঠানো হয়। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার উদ্দেশ্যে এদেরকে লন্ডনে পাঠানো হয়েছিল। এই ঘাতক দলের সর্দার ছিল দবির উদ্দিন সিদ্দিকী নামে এক ব্যক্তি। যে ঢাকা জেলার বালিয়াদি গ্রামের এক বিশিষ্ট জমিদার পরিবারের সন্তান। কিন্তু বঙ্গবন্ধু ১০জানুয়ারি লন্ডন থেকে দিল্লি হয়ে ঢাকায় প্রত্যাবর্তন করেন। ফলে ঘাতক দল তাঁর উপর আঘাত হানার কোন রকম সুযোগ পায়নি।
১৯৭২ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি বঙ্গবন্ধু কলকাতা যান। ওই দিনই কলকাতার ব্রিগেড প্যারেড গ্রাউন্ডে তিনি ভাষণ দেন। বঙ্গবন্ধুর কলকাতা আগমনকে কেন্দ্র করে ঘাতক দল তাঁকে হত্যার আর একটি যড়যন্ত্র করেছিল।সেই উদ্দেশ্যে ওই ঘাতক দল ৭ ফেব্রুয়ারি কলকাতা আসে। কিন্তু ওই দিন রাতেই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র দপ্তরের গোয়েন্দা দল তাদের গ্রেফতার করে। গ্রেফতার হওয়ার পর দবির উদ্দিন সিদ্দিকী একটা বিবৃতি দেয়। বিবৃতিতে বলে, সে পাকিস্তানি সামরিক গোয়েন্দা চক্রের লোক। শেখ মুজিবকে হত্যা করার জন্যই পাকিস্তানের প্রতিরক্ষা দপ্তর তাকে নিয়োগ করেছে।
বঙ্গবন্ধুকে জানানো হলে, তিনি দবির উদ্দিনকে বাংলাদেশ পুলিশের হাতে তুলে দিতে ভারত সরকারকে অনুরোধ করেন। বাংলাদেশে কিছুদিন জেল খাটার পর বঙ্গবন্ধুর দয়ায় সে মার্জনা পায়।
তথ্য সূত্র: মুজিব হত্যার তদন্ত ও রায় [ পরেশ সাহা ]