১৫ আগস্ট আসলে কী হয়েছিল : ইন্দিরাকে হাসিনার প্রশ্ন


ভয় আর আতঙ্ক তখন রাজনীতি এবং রাজনীতির বাইরেও। একটি দেশের রাষ্ট্রপ্রধান ও পরিবারের সদস্যদের নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। রাজনীতি নিষিদ্ধ। সর্বত্রই চাপা ক্ষোভ আর ধূম্রজালে ঘেরা।

দেশের বাইরে থেকেও এমন ধূম্রজালে আটকা ছিলেন বেঁচে থাকা বঙ্গবন্ধুর দুই কন্যা শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা। ১৫ আগস্ট আসলে কী ঘটেছিল- এমন প্রশ্নের উত্তরে উদ্বেলিত ছিলেন শেখ হাসিনা।


ঘটনার ২০ দিন পর ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর সঙ্গে দেখা হওয়ার পর শেখ হাসিনা তার কাছে জানতে চান, ’১৫ আগস্ট আসলে কী হয়েছিল?

১৯৭৫ সালের ২৪ অগাস্ট এয়ার ইন্ডিয়ার একটি বিমানে চড়ে পরিবারের বাকি সদস্যদের নিয়ে শেখ হাসিনা জার্মান থেকে দিল্লির পালাম বিমানবন্দরে অবতরণ করেন।

১৯৭৫ সালের ১৫ অগাস্ট শেখ হাসিনা, স্বামী ড. ওয়াজেদ মিয়া আর বোন শেখ রেহানা বেলজিয়ামের রাজধানী ব্রাসেলসে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত সানাউল হকের বাসায় ছিলেন। পরবর্তীতে সানাউল হক শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানাকে আশ্রয় দিতে অস্বীকৃতি জানান। পরে তারা জার্মান গিয়ে তৎকালীন রাষ্ট্রদূত হুমায়ূন রশিদ চৌধুরীর কাছে আশ্রয় নেন।

সাবেক স্পিকার হুমায়ূন রশিদ চৌধুরীর ছেলে নোমান রশিদ চৌধুরী একটি ইংরেজি দৈনিকে ‘বঙ্গবন্ধুজ ডটার্স’ (বঙ্গবন্ধুর কন্যারা) শিরোনামের একটি লেখায় স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে লেখেন, ভারতের মন্ত্রিপরিষদের একজন যুগ্ম সচিব তাদের স্বাগত জানাতে সেদিন (২৪ আগস্ট) বিমানবন্দরে হাজির ছিলেন। প্রথমে ৫৬ নম্বর রিং রোডের একটি ‘সেফ হাউস’-এ তাদের রাখা হয়। পরে ডিফেন্স কলোনির একটি বাড়িতে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয় তাদের।

ভারতে আশ্রয় নেয়ার ১০ দিন পর, ৪ সেপ্টেম্বর দেশটির বৈদেশিক গুপ্তচর সংস্থা রিসার্চ অ্যান্ড অ্যানালাইসিস উইং বা 'র'-এর একজন কর্মকর্তা তাদের নিয়ে প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর আবাস ১ নম্বর সফদরজং রোডে পৌঁছান।
 
দেখা হওয়ার পর ইন্দিরা গান্ধীকে শেখ হাসিনা জিজ্ঞাসা করেছিলেন, ‘১৫ অগাস্টে ঠিক কী হয়েছিল?’

সেখানে উপস্থিত একজন অফিসার শেখ হাসিনাকে বলেছিলেন, তার পরিবারের আর কেউ জীবিত নেই।

এটা শুনেই কান্নায় ভেঙে পড়েছিলেন শেখ হাসিনা।

SUMMARY

1419-1.jpg