পঁচাত্তরের পনেরো আগস্ট ও বতর্মান প্রেক্ষাপট

মোনায়েম সরকার  

আমি মনে করি জাতীয় শোক দিবসের তাৎপযর্ তখনই ফলপ্রসূ হবে যখন আমরা এটি সদ্ব্যবহার করব। শোক দিবসে কান্না-হাহাকার নয়, বঙ্গবন্ধুকে সঠিকভাবে বিশ্ববাসীর সামনে উপস্থাপন করাই হওয়া উচিত মূল লক্ষ্য। এ জন্য দেশে-বিদেশে আওয়ামী লীগের নেতাকমীের্দর বেশি বেশি করে সভা-সেমিনার-প্রকাশনা ও গবেষণামনস্ক হওয়া দরকার।
বঙ্গমৃত্তিকায় যেসব মহান পুরুষ জন্ম নিয়েছেন শেখ মুজিবুর রহমান তাদের মধ্যে অগ্রগণ্য। সবর্কালের সবের্শ্রষ্ঠ বাঙালি সন্তান শেখ মুজিব। তিনি বাঙালি জাতির পিতা। তার দুরদশীর্ ও ক্যারিশম্যাটিক নেতৃত্বে একটি পরাধীন জাতি পায় স্বাধীনতার স্বাদ। বহু বছরের শোষণ-দুঃশাসনের অবসান ঘটিয়ে তিনি গড়ে তোলেন সমৃদ্ধশালী, গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ। একটি অবহেলিত ভ‚খÐের ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে ক্রমান্বয়ে স্বাধীনতা অজর্ন করার মতো নেতা পৃথিবীর ইতিহাসে বিরল। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সেই বিরল নেতা। সক্রেটিসের যোগ্যশিষ্য প্লেটো তার ‘রিপাবলিক’ গ্রন্থে আদশর্ রাষ্ট্রনায়কের যেসব গুণের কথা উল্লেখ করেছেন শেখ মুজিবের মধ্যে সেসব গুণের সমাবেশ ঘটেছিল। শেখ মুজিব আদশর্ রাষ্ট্রনায়ক ছিলেন, প্রজাপ্রেমী ও দূরদৃষ্টি সম্পন্ন ভাবুক ছিলেন। যে মানুষটি কখনোই বাঙালিকে অবিশ্বাস করেননি, শত্রæ ভাবেননি, সেই শুদ্ধচিত্তের মানুষটিকেই কয়েকজন স্বাথর্পর-ঘাতক সপরিবারে হত্যা করলÑ যা শুধু বাঙালির ইতিহাসেরই নয়, পৃথিবীর ইতিহাসেও একটি কলঙ্কজনক ঘটনা বলে বিবেচিত।

১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট হত্যাকাÐ শুধু একটি হত্যাকাÐই নয়, একটি স্বাধীন, অসাম্প্রদায়িক জাতিকে পরাধীন ও সাম্প্রদায়িক করার পাশবিক চক্রান্তও বটে। আমরা যদি মুজিব হত্যাকাÐের ষড়যন্ত্রগুলো বিশ্লেষণ করি তাহলে দেখবোÑ একটি স্বাধীন জাতিকে মূলত তারাই ধ্বংস করতে চায় যারা সাম্রাজ্যবাদের পূজারি বা সাম্রাজ্যবাদের মদদদাতা। সুতরাং যারা সাম্রাজ্যবাদী এবং যারা সাম্রাজ্যবাদের ক্রীড়নক তারাই বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারী। বঙ্গবন্ধু হত্যার পরিকল্পনাকারী হতে হত্যাকাÐ বাস্তবায়নকারী পযর্ন্ত সকলেই অপরাধী, সকলেই মুজিব হন্তারক।

মুজিব হত্যাকাÐের পর সমগ্র বাংলাদেশ থমকে গিয়েছিল। বজ্রাহত মানুষের মতো অসাড় হয়ে গিয়েছিল বাংলার শোকাহত মানুষ। ঘনিষ্ঠ স্বজন মারা গেলে মানুষ যেমন বাকরুদ্ধ ও কিংকতর্ব্যবিমূঢ় হয়ে যায়, মুজিব হত্যার ঘটনায়ও পুরো বাঙালি জাতি শোকে-দুঃখে পাথর হয়ে গিয়েছিল। মানুষ এখন সেই অবশ মুহূতর্গুলোর কথা ভুলে গিয়ে বঙ্গবন্ধুর প্রশংসা করছেন, তার নামে স্ত‚তি-স্তব করছেন, এটাই এখন ইতিহাস।

বঙ্গবন্ধু হত্যার পরে আজ প্রায় অধর্ শতাব্দী হতে চলল। এ অধর্ শতাব্দীতে আমি অনেক পরিবতর্ন লক্ষ্য করছি যা আগে কখনো করিনি। জাতীয় শোক দিবস এখন যেভাবে উৎসবের মতো করে পালন করা হচ্ছে আগের দিনের শোক দিবস এভাবে পালিত হতো না। অতীত দিনের সেসব শোক দিবসের জৌলুস ছিল না, কিন্তু গাম্ভীযর্ ছিল। সেখানে সৃষ্টিশীলতার-মননশীলতার চচার্ থাকত। আজকের দিনে ‘কাঙালি ভোজন’ আর নেতাকমীের্দর হৈ-হুল্লোড়ই প্রধান আকষর্ণ থাকে জাতীয় শোক দিবসে। ব্যানার-ফেস্টুনে নেতাকমীর্রা নিজের ছবি ছাপায় বঙ্গবন্ধুর চেয়েও বড় করে, ভুল বানানে লেখা থাকে অসংখ্য আজগুবি ¯েøাগান। সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোতে হয় নিয়ম রক্ষার অনুষ্ঠান। এগুলোকে আমি ছোট করে দেখছি না, তবে জাতীয় শোক দিবসের মযার্দা আরও ব্যাপক ও হৃদয়স্পশীর্ হওয়া দরকার বলে আমি মনে করি। ’৭৫-এর পরে দীঘর্ একুশ বছর বাংলাদেশে বঙ্গবন্ধুর দশর্ন ভুলানো হয়েছে, তার নাম মুছে ফেলার ষড়যন্ত্র করা হয়েছে। তার কন্যা শেখ হাসিনা লড়াই-সংগ্রাম করে বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় এলে পরিস্থিতি কিছুটা বদলাতে থাকে, এখন পরিস্থিতি সম্পূণর্ই আওয়ামী লীগের অনুক‚লে। সারাদেশে এখন আমি শুধু আওয়ামী লীগারই দেখি, অন্যান্য দলে যে কিছু নেতা কমীর্ নেই, সে কথা বলব না, তবে বতর্মানে যত আওয়ামী লীগার দেখছিÑ এত নেতাকমীর্ আওয়ামী রাজনীতিতে থাকাকালে কখনোই দেখিনি। আমার মনে মাঝে মাঝে প্রশ্ন জাগে এরা কারা? এরা কি সত্যিকার অথের্ই মুজিব আদশের্ বিশ্বাসী শেখ হাসিনার বিশ্বস্ত সিপাহসালারÑ নাকি সুবিধাবাদী, গুপ্তচর? ’৭৫-এর ১৫ আগস্টের পরে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে যারা মুজিব আদশের্ক প্রতিষ্ঠা করার সংগ্রাম করেছেনÑ আজ তারা অনেকেই আওয়ামী লীগে নেই, অনেকেই মারা গেছেন, অনেকেই বাধর্ক্যজনিত কারণে গৃহবন্দি হয়ে পড়েছেন। 

’৭৫-এর ১৫ আগস্ট হত্যাকাÐের পর যারা শেখ মুজিবের পক্ষে দেশে বিদেশে প্রচার-প্রচারণা চালিয়েছে, প্রকাশনা বের করেছে, সভা-সেমিনার, বক্তৃতার আয়োজন করেছে তাদের কথা আজ খুব মনে পড়ছে। ’৭৫-এর ২০ আগস্ট আমরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক প্রফেসর নূরুল আমীন এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ড. ম. আখতারুজ্জামানসহ একটি লিফলেট তৈরি করি। সেই লিফলেটটির হেডলাইন ছিলÑ ‘মীরজাফররা হুঁশিয়ার’। আর লিফলেটের বক্তব্য ছিলÑ ‘তোমরা যারা বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীদের সহযোগিতা করবে, তাদের সবংশে নিবর্ংশ করা হবে।’ লিফলেটের হাতের লেখা ছিল নূরুল আমীনের। পরে ওটা হাত মেশিনে ফটোকপি করা হয়। এই লিফলেটটি আমরা মন্ত্রী, এমপি, সচিব, ডিসি ও এসপিদের কাছে ডাকযোগে পাঠাই এবং তাদের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়। এরপরে কিছু সাহসী যুবকের নেতৃত্বে প্রকাশিত হয়Ñ ‘এ লাশ আমরা রাখবো কোথায়’ নামে একটি কবিতাসংকলন। এই বইটি পরে আমরা ভারতে থাকা অবস্থায় পুনঃপ্রকাশ করি এবং কলকাতা, দিল্লি, লন্ডনসহ বিভিন্ন শহরে প্রেরণ করি।

১৯৭৫ সালের ৪ নভেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলা থেকে ছাত্র-শিক্ষক-জনতার শোক মিছিল যায় ধানমÐির ৩২ নম্বর সড়কের বঙ্গবন্ধুর বাসভবনে শ্রদ্ধা জানাতে। একই দিনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেটে বঙ্গবন্ধুর প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন এবং ওই হত্যাকাÐের বিচার দাবি করে সবর্সম্মত প্রস্তাব গৃহীত হয়। বঙ্গবন্ধু শহীদ হওয়ার পরে ১৯৭৬ সালে সবর্প্রথম শোকসভা হয় লন্ডনের কনওয়ে হলে। কিন্তু সেদিনের শোকসভা পÐ করার জন্য জিয়ার অনুগত পেটোয়া বাহিনী হামলা করেÑ তখন লন্ডন আওয়ামী লীগের সভাপতি গাউস খানসহ অন্যরা (রুহুল কুদ্দুস, স্থপতি মাজহারুল ইসলাম, আবদুল গাফ্ফার চৌধুরী, সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম) সাহসের সঙ্গে সেই হামলা মোকাবিলা করেন। জিয়ার অনুগতদের পিটিয়ে হল ছাড়া করেন। এরপর ১৯৭৭ সালে আমরা দিল্লির গান্ধী মেমোরিয়াল হলে শোকসভার আয়োজন করি। এই শোকসভায় ভারতের প্রায় সব রাজনৈতিক দলের নেতাই কমবেশি অংশগ্রহণ করেন। সেদিনের সেই শোকসভায় যারা বক্তৃতা দিয়েছিলেন তাদের বেশ কয়েকজনের নাম আমার স্মৃতিতে এখনো উজ্জ্বল হয়ে আছে। এরা হলেনÑ ইন্দিরা গান্ধীর প্রিন্সিপাল সেক্রেটারি পিএন হাকসার, বিশ্বশান্তি পরিষদের রমেশ চন্দ্র, কংগ্রেসের জেনারেল সেক্রেটারি ভি ভি রাজু, জনতা পাটির্র নেতা কৃষ্ণ কান্ত। সেদিনের শোকসভার সভাপতি ছিলেন বিপ্লবী ও লেখক মন্মথনাথ গুপ্ত।

আমি মনে করি জাতীয় শোক দিবসের তাৎপযর্ তখনই ফলপ্রসূ হবে যখন আমরা এটি সদ্ব্যবহার করব। শোক দিবসে কান্না-হাহাকার নয়, বঙ্গবন্ধুকে সঠিকভাবে বিশ্ববাসীর সামনে উপস্থাপন করাই হওয়া উচিত মূল লক্ষ্য। এ জন্য দেশে-বিদেশে আওয়ামী লীগের নেতাকমীের্দর বেশি বেশি করে সভা-সেমিনার-প্রকাশনা ও গবেষণামনস্ক হওয়া দরকার।

২০২০-২১ সালকে মুজিব বষর্ বলে সরকার ঘোষণা করেছেন। এই দুই বছরে আমি মনে করি ব্যাপক কাজ হওয়া দরকার। দেশি-বিদেশি খ্যাতনামা গবেষক দিয়ে বঙ্গবন্ধুর জীবনের নানা দিক নিয়ে গ্রন্থ মুদ্রণ করা দরকার। এগুলোই বঙ্গবন্ধুকে বঁাচিয়ে রাখবে।

আমি একজন সামান্য মানুষ। জানি না নিজের কথা বললে কে কীভাবে নেবেন তবু বলিÑ আমাদের বাংলাদেশ ফাউন্ডেশন থেকে এ পযর্ন্ত আমরা বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে প্রায় ৫০টির মতো গ্রন্থ রচনা, সম্পাদনা ও প্রকাশ করেছি। বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবষের্ আমরা দেশ-বিদেশের খ্যাতিমান লেখকের প্রবন্ধ দিয়ে একটি স্মারক গ্রন্থ প্রকাশের জন্য ইতিমধ্যেই তালিকাভুক্ত লেখকের কাছে বাতার্ পাঠিয়েছি। সেই সঙ্গে একশ’ বিখ্যাত কবির কবিতাও প্রকাশ করব ভিন্ন একটি গ্রন্থে। এর মধ্যেই ‘সবর্কালের সবের্শ্রষ্ঠ বাঙালি জাতির জনক শেখ মুজিবুর রহমান’ শিরোনামে একটি নান্দনিক অ্যালবাম প্রকাশ করেছি। সেটাও যথেষ্ট গ্রহণযোগ্যতা পেয়েছে সাধারণ মানুষের। আমি মনে করি, শুধু শেখ হাসিনার দিকে তাকিয়ে না থেকে ব্যক্তিগত পযাের্য়ও আমাদের কিছু করণীয় আছে বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে। ব্যক্তি মানুষের মনে যখন বঙ্গবন্ধু থাকবেন তখন আওয়ামী লীগ এমনিতেই যুগ-যুগ রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় থাকবে। জাতীয় শোক দিবস এলে দেখি বঙ্গবন্ধুর ঘাতকেরাও আজ ছদ্মবেশ ধারণ করে মুজিব প্রেমী হওয়ার। খুব কষ্ট পাই। যারা পলিটিক্যালি বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করেছে তাদের সঙ্গে আওয়ামী লীগের তো আপস করার কথা ছিল না, তবু আজ আমরা সেটাই দেখছি। কেন দেখছি? দেখছি এই জন্য যে আওয়ামী লীগাররা সংখ্যায় বৃহৎ দেখায় বটেÑ আসনসংখ্যা এখনো অনেক পিছিয়ে থাকে নানা ষড়যন্ত্রে। 

এখানে আরও একটি বিষয় উল্লেখ করা প্রয়োজন। সেটি হলোÑ বঙ্গবন্ধু যখন বাকশাল গঠন করেছিলেন তখন সেটি ছিল সময়ের দাবি। আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় বিভিন্ন সমাজতান্ত্রিক দেশ নানাভাবে সহযোগিতা করেছে। বঙ্গবন্ধুও চেয়েছিলেন সমাজতান্ত্রিক ভাবধারায় দেশকে নিয়ে যেতে যদিও বঙ্গবন্ধু ছিলেন শোষিতের গণতন্ত্রের পক্ষের মানুষ। বাকশালে সেদিন বাংলাদেশের বামপন্থিরা উৎসাহভরে দলে দলে যোগদান করেছিল। অথচ বঙ্গবন্ধুর মৃত্যুর পরে ওই বামপন্থিরাই জিয়ার পক্ষে ১৯-দফা ছাপে এবং জিয়ার খাল খনন কমর্সূচিতে কোদাল নিয়ে ঝঁাপিয়ে পড়ে। এদেশের বামপন্থিরা এটাকি কখনো ভাবেন যে, আওয়ামী লীগ এলে তারা যেসব সুযোগ-সুবিধা ভোগ করেন তা অন্য কোনো সরকারের আমলে পান না। আওয়ামী লীগ ভিন্ন অন্য দল ক্ষমতায় এলেই তাদের উপর পীড়ন শুরু হয়। গতের্ ঢুকতে হয় তাদের। বাংলাদেশের বামপন্থিদের মানসিকতা পরিবতর্ন হওয়া জরুরি বলেই আমি মনে করি। আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে নানা রকম ষড়যন্ত্র হচ্ছে ঘরে-বাইরে। আওয়ামী লীগের উচিত হবে এসব ষড়যন্ত্র ছিন্ন ভিন্ন করে সবসময় এককভাবে ক্ষমতা গ্রহণের চেষ্টা করা। অতীতে বাংলাদেশ যারাই শাসন করেছে (আওয়ামী লীগ ছাড়া) তারাই চেয়েছে বাংলাদেশকে অনুন্নত ও মৌলবাদী ভাবধারায় নিয়ে যেতে। আওয়ামী লীগ এলেই কেবল উন্নত ও অসাম্প্রদায়িক হয়ে ওঠে বাংলাদেশ। উন্নয়ন ও অসাম্প্রদায়িক মনোভাব ধরে রাখার জন্য বাংলাদেশের মানুষের উচিত হবে বারবার আওয়ামী লীগকে নিবাির্চত করা। এর ব্যত্যয় ঘটলেই দেশের ভাগ্যে, জনতার ভাগ্যে নেমে আসবে সীমাহীন দুযোর্গÑ সেই দুযোর্গ যেন কোনোদিনই না আসে এবারের শোক দিবসের অঙ্গীকার হোক এটাই। 

মোনায়েম সরকার: রাজনীতিবিদ ও কলামিস্ট

SUMMARY

1400-B4.jpg