আতিকা রহমান
পঁচাত্তরের পনেরো আগস্ট নৃশংস হত্যাকাণ্ডে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সঙ্গে ঘাতকরা হত্যা করে ছোট ছেলে শেখ রাসেলকেও। সেদিন ঘাতকের বুলেটের আঘাত থেকে রেহাই পায়নি দশ বছরের ছোট্ট শিশুটি। রাসেল শিশুকাল থেকেই অনেক মেধাবী ছিলেন। বঙ্গবন্ধুর সফরসঙ্গী হিসেবে তার বুদ্ধিদীপ্ত আচরণ তখন দেশে বিদেশে সবাইকে আকৃষ্ট করতো।
১৯৬৪ সালে ধানমন্ডির ৩২ নম্বরের বাড়িতে জন্ম নেন শেখ রাসেল। বড় ২ বোন ও ২ ভাইয়ের কাছে অত্যন্ত আদরের ছিলেন রাসেল। মেধাবী ও দুরন্ত রাসেল ভালবাসতেন সাইকেল চালাতে।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রিয় ব্যক্তিত্ব ছিলেন দার্শনিক ব্রার্টান্ড রাসেল। তার নামেই ছোট ছেলের নাম রেখেছিলেন শেখ রাসেল। রাসেল শিশুকাল থেকেই দেখতেন যে তার বাবা শেখ মুজিব বেশিরভাগ সময়ই জেলে থাকতেন। মায়ের সঙ্গে কারাগারে বাবার সঙ্গে দেখা করতে যেতেন শিশু রাসেলও।
১৯৭২ সালে পাকিস্তান কারাগার থেকে মুক্তি পাবার পর রাসেল প্রায় সব সময় বাবার কাছাকাছি থাকতেন। রাসেল ৭৫ সালে ঢাকার ইউনিভার্সিটি ল্যাবরেটরি স্কুলের চতুর্থ শ্রেণীর ছাত্র ছিলেন।
৭২ সাল থেকে ৭৫ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন অনুষ্ঠানে বাবার সঙ্গে শেখ রাসেলকে দেখা গেছে। বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে জাপানসহ কয়েকটি দেশ ভ্রমণ করেছিলেন। পোশাকে আশাক, চলন-বলন ও বুদ্ধিদীপ্ত ছোট্ট রাসেল সবার নজর কাড়ে।
১৫ আগস্ট রাতে বাড়িতে মুহুর্মুহু বুলেটের শব্দ ও স্বজনদের আর্তচিৎকার শুনে অবুঝ শিশু রাসেল কাঁদতে কাঁদতে ঘাতকদের বলেছিল, ‘আমি মায়ের কাছে যাব’। যেতে চেয়েছিলেন হাসু আপার কাছেও। মায়ের কাছে নিয়ে যাওয়ার কথা বলে ঘাতকরা অবুঝ শিশু শেখ রাসেলকে গুলি করে হত্যা করে।
বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত খুনিরা শিশু শেখ রাসেলকে হত্যা করে বঙ্গবন্ধুর রক্তের সব উত্তরাধিকার নিশ্চিহ্ন করতে চেয়েছিল।