মিনার মনসুর
একজন কৃষকের চালচুলোহীন অন্ধকার
ঘরে তোমার একটি নিরাপস ছবি সারাক্ষণ
আশ্বাসের পিদিমের মতো ধিকিধিকি জ্বলছিলো;
ভূমিহীন অন্নহীন উদ্বাস্তু জীবনে তার শুধু
এই একটি আশ্রুয় ছিলো;
ছিলো ভালোবাসার সে-এক অনন্ত উর্বর ভূমিÑ ‘বঙ্গবন্ধু’।
রাত্রির ঘাতক অন্ধকারে উন্মাতাল সাগরের বুক চিরে
ক্ষিপ্র ছুটে চলা জেলেদের মাঝিদের ভাঙা নায়ে
তুমি ছিলে মৃত্যুঞ্জয়ী অবিনাশী পাল, চেতনায়
সঞ্জীবনী ভাটিয়ালী গান; কর্মচ্যুত শ্রমিকের
বেদনায়-ব্যর্থতায় ক্ষয়ে আসা হাড়ে, প্রতীক্ষায়
নুয়ে আসা বিদীর্ণ পাঁজরে তুমি ছিলে সর্বজয়ী
বিশাল সাহস; ছিলে বিপ্লবের হিরন্ময় মহান সাধক।
মালিকের রক্তচোখ পুড়ে যেতো তোমার আগুনে;
রক্তচোষা মহাজন-জোতদার নিত্য আতঙ্কে কাটাতো নিশি;
তোমার সাম্যের হাতে তার মৃত্যু লেখা ছিলো; তাই
তুমি শুধু বঙ্গবন্ধু নওÑ কারো কারো শত্রুও ছিলে!
তোমার মৃত্যুতে কার কতোখানি ক্ষতি হলো? আর
কারা লাভবান হলো? সোনার তরিতে চেপে কারা
গেলো তড়িঘড়ি আলোঝলমল রাজার মহলে?
কারা জয়ী হলো? নিঃস্ব হলো কারা? আর কারা হলো
অরক্ষিত বনের হরিণ? মাঝিহীন বিধ্বস্ত সাম্পানে চড়ে
কারা আজ দিশেহারাÑ ঝড়ে-পাওয়া বিপন্ন মানুষ?
আজ তার উন্মোচন হোকÑ তুমি কার বন্ধু ছিলে?