সেদিন ব্রিগেডে বাংলায় ভাষণ দিলেন ইন্দিরা


সৌপ্তিক বন্দ্যোপাধ্যায়: 

ইন্দিরা এবং শেখ মুজিবর রহমান। মারাত্মক দুই জন প্রতিনিধি। ভিড় আছড়ে পড়েছিল কলকাতার মাঠে। যতদূর দেখা যাচ্ছিল শুধুই জনসমুদ্র। কালো কালো মানুষের মাথা। জনসমুদ্রের আয়তনের রেকর্ড আজ পর্যন্ত অক্ষুন্ন আছে। সম্ভবত ১০ লক্ষ মানুষ হাজির হয়েছিলেন সেদিনের জনসভায়।


প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী গরদের শাড়ি পড়ে উঠলেন ভাষণ দিতে। তাঁর ভাষণের কিছুটা বাংলায় করেছিলেন সেদিন। বললেন, “স্বাধীন বাংলাদেশ জিন্দাবাদ, শেখ মুজিবর রহমান জিন্দাবাদ,ভারত বাংলাদেশ মৈত্রী জিন্দাবাদ।” প্রসঙ্গত ইন্দিরা গান্ধীর শিক্ষা জীবনের সঙ্গে জড়িয়ে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, তৎকালীন বাংলার সংস্কৃতি, শান্তিনিকেতন এবং বাংলা ভাষা।


আকাশবাণী ও দূরদর্শণ থেকে বঙ্গবন্ধু–ইন্দিরার জনসভার ধারাবিবরণীর দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্র, দেবদুলাল বন্দ্যোপাধ্যায় ও পঙ্কজ সাহাকে। ধারাভাষ্যকার ও গনমাধ্যমব্যক্তিত্ব পঙ্কজ সাহা এক সাক্ষাৎকারের সেদিনের সেই জনসভার বর্ণনা দিতে গিয়ে বলেন, “শেখ মুজিবুর রহমান তাঁর ভাষণের শুরুতেই রবীন্দ্রনাথের একটি কবিতা উদ্ধৃতি দিলেন। তারপর জনতার সে বিশাল স্রোতের মধ্যে থেকে একটু পরপর আরো কবিতা পড়ার অনুরোধ করা হচ্ছিল শেখ মুজিবকে। শেখ মুজিব জনতার সে অনুরোধে একের পর এক রবীন্দ্রনাথের কবিতা থেকে কিছু কিছু অংশ পাঠ করে শোনাতে লাগলেন। আমরা সবাই আশ্চর্য হয়ে শেখ মুজিবের রবীন্দ্র কবিতাপ্রীতি দেখে বিস্মিত হচ্ছিলাম।”।



১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারিতেই বঙ্গবন্ধুর আসার কথা ছিল কলকাতায়। প্রাথমিকভাবে কথা ছিল দিল্লী থেকে ঢাকা আসার পথে কলকাতায় আরেকবার যাত্রা বিরতি করে পশ্চিমবঙ্গের মানুষের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাবেন মুজিবুর রহমান।
কলকাতার দমদম বিমান বন্দরসহ অন্যান্য প্রটোকলও প্রস্তত রাখাই ছিল। কিন্তু আকাশপথ থেকেই তিনি বার্তা দিয়ে দেন তিনি আগে দেশে ফিরবেন। সেদিন হয়নি। ফিরে আসেন ৬ ফেব্রুয়ারি। ইন্দিরা গান্ধীর অনুরোধে। স্থান কলকাতার ব্রিগেড প্যারেড।

SUMMARY

1187-1.jpg