বঙ্গপিতার সমীপে – কামরুল ইসলাম

কামরুল ইসলাম

বিদগ্ধ মানুষেরা সমাহিত রক্তস্রোতে, পৃথিবীর শাদায় ঢেকেছে মেঘ

বঙ্গপিতার শয্যাভূমিতে শত শত রাক্ষস, নিবে গেছে অগ্নিবার্তা

দেহরক্তে ভিজে গেছে মানব আশ্রয়, পড়ে থাকে জ্যোর্তিময় আলো

নক্ষত্রের গতিপথে ধুলোমাটি ওড়ে, পবিত্র ভূমিতে ডাইনীর সংসার।

রাতের কালোয় মাঠখানি পড়ে থাকে মাঠে, সৃষ্টির তিমিরে আগুন জ্বলে

উজানের পথে পথে বিবর্ণ জনপদ, শান্তির জ্যোৎস্না ক্ষয়ে গেছে অবসাদে

রক্ত নদীর স্রোতে ধূসর সন্ধ্যা নামে, বিপন্ন জলের শব্দে বুনো হাঁস কাঁদে

আকাশের প্রান্তে প্রান্তে মেঘের প্রখরতা, থেমে গেছে বাসন্তীর উৎসব।

দগ্ধীভূত আবাসে পাণ্ডুলিপি উড়ে যায়, প্রেতপুরীতে ছেয়ে গেছে আকাশ

এসো, দ্রোহের জ্বালানিতে উড়াই নিশান, নব নব উদ্যমে নবীনের মেলায়

ধ্বংসের উপত্যকায় ধ্বংস হোক শয়তান, দ্রোহে দ্রোহে গড়ে তুলি দেশ

বীরত্ব সাধনার পথে পথে শুনতে পাই, জাতির জনকের তীব্র নাদ-

কালে কালে আমার যজ্ঞলীলায়, আমি মহাপ্রতাপ

আমি ঝড়ের মতো প্রবল, বায়ুর মতো চঞ্চল

আমি শ্রাবণের প্লাবন, আমি সবুজ শস্য প্রান্তর

আমি কঠোর যোদ্ধা, আমিই বংশীবাদক

আমি ঝঙ্কার, কালের রাখাল, আমিই বাউল

আমি শক্তি, বীরত্ব সাধক, আমিই মহাকাল

আমি মহাসমুদ্রের গর্জন, প্রলয়ের অহঙ্কার

আমার রক্তলাভায় সহস্র দ্রোহ, আমিই বঙ্গপিতা।

হে নবীন প্রলয়ের বন্ধু,

জেগে ওঠো, জ্বলে ওঠো, দ্রোহে দ্রোহে বার বার

আমার বাংলায় তোমরাই সাহসী বীর।

জনকের বাণী, আসে ঝড়ে, পাড়ি দেয় সমুদ্র

নদীর স্রোতে পাল তুলে, মেঘের সাথে গর্জনে

পাহাড় ডিঙিয়ে, ঝড়ের তুফানে বাণ হয়ে

তীব্র আলোয় ভেদ করে শব্দরঙ,

পাখির ক্ষ্যাপা ক‚জনে, বাঘের অদম্য হুঙ্কারে

টাইফুনের জলোচ্ছ¡াসে, অগ্ন্যুৎপাতের লাভায়

শুনতে পাই

‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম-

এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম।’

অমর শব্দমালায় আমরা উত্তাল, উন্মত্ত দ্রোহী

দ্রোহের অনলে গেয়ে উঠি বার বার

জয় হোক বাঙালির, জয় হোক সোনার বাংলার।

SUMMARY

1165-1.png