হাবীবুল্লাহ সিরাজী
তেল কুচকুচে ডুমুরের মতো রাত
হঠাৎ ফিনকি দেয়া আলোর মধ্যে
খানখান ভেঙে পড়লে
বারুদ ও বিদ্যুতে কোথাকার বসতি কার?
মাঠের পর মাঠ খর্খরে চৈত্রে জমাট;
শুরু আরো আগে, তারো আগে
জ্বলতে-জ্বলতে, পুড়তে-পুড়তে
বৈশাখের শেষে প্রথম ধারায়
পাটপাতা থেকে ধানের গোছা
শিস দিয়ে যায় বাংলাদেশ
হাঁটু মুড়ে আরো একবার দেখে তার অস্তিত্বের সীমা;
পশ্চিমে কী পুবে, উত্তর থেকে দক্ষিণ সাগরে
শোনে সেই রক্তের ডাক- যদি আর একটা গুলি চলে
টলমল মেঘের নিচে ভেসে যাচ্ছে ভাদ্রের তাল
পিঠে-পিঠে দেয়াল, ঘামে-নুনে মাখামাখি তিন শূন্য তিন
চুলে জট; জোঁক টানে, মশা খায়
‘আলম তোর কাছে বিড়ি আছে’
আশ্বিন-কার্তিক যায়, কে খোঁজে না খোঁজে
শিথানের চাঁদ ঢলে পশ্চিমের ঘোরে
ছেলে গেছে শুয়োর তাড়াতে
এখনো নাবায় পানি, শালুক জাগেনি।
: ভাই খুব জাড় লাগে!
: আমারে জড়ায়ে ধর
বালিতে আটকে আছে ছিন্ন মাথা
পদ্মা-যমুনা নামে, সিঁথির সিঁদুর নামে
গুলিবিদ্ধ হাতে তবু ওড়ে সেই সূর্যের রঙ।
পৌষ শুধু পৌষ নয়, এ মাস ঘ্রাণের
এ মাস নিজের কাছে নিজের ফেরার
পিঁপড়েও ফিরেছে ঘরে, প্রিয় ঘাসের পিঠে বসে
ঘৃণাভরে দেখেছে রক্তাক্ত বুট আর অস্ত্রের ধার
সমর্পণের কী লজ্জা খুঃ!
মার্চ থেকে ডিসেম্বর
দীর্ঘ এক নদী হয়ে উদার আকাশ হয়ে
রেসকোর্সের মাটি ছুঁয়ে বলে :
এ দেশ আমার!