১৯২০ সালের ১৭ই মার্চ টুঙ্গিপাড়ায় শেখ মুজিবর রহমানের জন্মের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের স্বাধীনতার বীজ বপন হয়- কথাগুলো বলে সঞ্চালনার শুভ সূচনা করেন সুকন্ঠি গায়িকা এবং কানাডা বঙ্গবন্ধু পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ফারহানা শান্তা। কেক কেটে, গানে, কবিতায়, কথায় পালিত হলো কানাডা বঙ্গবন্ধু পরিষদ আয়োজিত জাতির জনকের ৯৮তম জন্মদিন টরন্টোর ড্যানফোর্থের মিজান কমপ্লেক্সে। বক্তব্য রাখেন শ্রদ্ধেয় প্রফেসর মোজাম্মেল খান, প্রিয় কবি আসাদ চৌধুরী, মোস্তফা কামাল, অগ্রজ কবি দেলওয়ার এলাহি, বাদল ঘোষ, আব্দুল আওয়াল, মুক্তিযোদ্ধা ইলিয়াস মিয়া, ফরিদা হক এবং কানাডা বঙ্গবন্ধু পরিষদের সভাপতি আমীন মিয়া। বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে কবিতা আবৃত্তি করেন সংগঠক, নির্দেশক আহমদ হোসেন, তাসরিনা শিখা, নুসরাত জাহান শাঁওলি ও হিমাদ্রী রয় সঞ্জীব। গান পরিবেশনে ছিলেন ফারহানা শান্তা ও আসিফ কালাচান।
সর্বজন শ্রদ্ধেয় কবি আসাদ চৌধুরী কথায়, আমরা বাঙালি প্রবাসী হই সাধারণত দুটি জিনিস নিয়ে। এক ফুড হেবিট আর হৃদয় জুড়ে বাংলাদেশ। কবির প্রতি ভক্তি রেখে যোগ করতে চাই, আমাদের মজ্জা জুড়ে থাকে ইতিহাস যার প্রেরণার নাম বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান। যিনি ছিলেন একাধারে কবি, রাষ্ট্রবিজ্ঞানী, স্বাধীনতা নামক কাব্যের শ্রেষ্ঠ কবি এবং মানবতার দ্বারা নির্মিত একজন মানুষ। তাই তিনি মানুষের কথা ভেবে মানুষের মাঝখানে থেকে, বাংলার মানুষের ভবিষ্যৎ রচনা করেছিলেন। দিয়েছিলেন এক অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ। যা আমরা ভুলে গেছি “মনে রাখবা ঘরে শত্রু বাহিনী ঢুকেছে, এই বাংলায় হিন্দু মসুলমান, বাঙালি, অবাঙালি সবাই আমরা ভাই, আমার যেন বদনাম না হয়” যা এখন রুপকথার মত শুনায়।
দেশ এগিয়ে চলেছে। কাঙালি ভোজে এখন কাঙালি মেলে না, মধ্যবিত্ত এখন নেপাল কিংবা ব্যাংককে উইকেন্ড কাটায়। পাতি নেতারা ও কোটি টাকার গাড়ি হাঁকায়। দেশ কিন্তু এগিয়ে চলেছে শুধু নারী নিগ্রহে আমরা পিছিয়েছি পঞ্চাশ বৎসর, দুর্নীতিতে পিছিয়েছি শত বৎসর, সামাজিক মূল্যবোধের অবক্ষয়ের দিক দিয়ে পিছিয়েছি শত বৎসর। এতে তিত বিরক্ত হয়ে অনেকেরই মাথার চুল খারা হয়, শরীর হয় লোহার পাড়া কারা, চিৎকার করে বলতে ইচ্ছা হয় ধর্মনিরপেক্ষতা, আইনের শাসন, পরস্পরের প্রতি অশ্রদ্ধা এই বিষয়গুলিকে শুকনো লেকচারের মধ্যে বন্দি রেখে বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলার স্বপ্ন বাঙালি দেখেনি। কিন্তু কি হবে? প্রশাসনে, শিক্ষা প্রণেতা, আইন প্রণেতার স্তরে স্তরে ভোল পালটে বসে আছে নাগীনের দল।
এই বেশ ভালো আছি বলে টাইগারদের নাগীন নাচ জনগণের চিত্ত ভুলায়।
এই ঘোর কাটতে হবে। কাল ঘুম যখন বাংলায়, ১৭ই মার্চ জাতির জনকের প্রেরণা আবার নুতন করে পথ চলতে শেখায়।
তাঁর জন্মদিনে শপথ হউক, শুধু স্মরণ নয় তাঁর আচরণ ধরি। বঙ্গবন্ধুর আদর্শ বসনে নয় মননে ধারণ করি। তবেই সোনার বাংলা গড়া সম্ভব। হেরে যাবে বলে এমন স্বপ্ন বাঙালি কখনোই দেখে না।
জয় বাংলা।
হিমাদ্রী রয় সঞ্জীব।
সাহিত্য সম্পাদক
বঙ্গবন্ধু পরিষদ, কানাডা।