১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে চুড়ান্ত বিজয়ের পর বাংলাদেশ দাঁড়িয়ে ছিল এক খাঁদের কিনারায়। নয় মাসের যুদ্ধে দেশের আইন-শৃংখলা, প্রশাসন, অর্থনীতি, অবকাঠামো সবকিছুই ভেঙ্গে পড়েছে। দেশের সর্বত্র ছিল এক অরাজক অবস্থা। জাতীয় অর্থনীতিতে দেশের মোট উৎপাদনের শতকরা পঞ্চান্ন ভাগ পণ্য উৎপাদিত হত কৃষি খাত থেকে। যুদ্ধের ফলে বাংলাদেশের প্রাণ হিসাবে পরিচিত সেই কৃষিখাত ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
সর্বাত্মক যুদ্ধে সোনার বাংলার সবই পুড়ে ছারখার হয়, কৃষি উৎপাদনের সব উপকরণ হয় বিনষ্ট;
যুদ্ধের পরে বিভিন্ন বিশেষজ্ঞদের চালানো জরিপ অনুসারে, যুদ্ধকালীন সময়ে চাষাবাদের কাজে ব্যবহৃত পশু, চাষের উপকরণ, বীজ ইত্যাদি ধ্বংস হয়েছে। পাক বাহিনী মাইলের পর মাইল উর্বর ভূমিতে আগুন লাগিয়ে জ্বালিয়ে দিয়েছে। এর ফলে প্রায় ৪.৩ বিলিয়ন টাকার সম্পদ বিনষ্ট হয়েছিল, যা মোট জাতীয় উৎপাদনের ত্রিশ শতাংশ। বিশেষ করে পাট এবং পাটজাত দ্রব্য ছিল বাংলাদেশের প্রধান রপ্তানি দ্রব্য। রপ্তানি আয়ের আশি শতাংশ অর্থাৎ ৩০০ থেকে ৩৫০ মিলিয়ন ডলার আসতো পাট থেকেই। পাটের গুদাম ধ্বংস, পাটকলের ক্ষতিসাধন, অকেজো বিদ্যুৎকেন্দ্রের কারণে স্বাধীন বাংলাদেশের কাছে পাটশিল্পকে আবার আগের জায়গায় ফিরিয়ে নিয়ে আসা পরিণত হয় প্রধান চ্যালেঞ্জে।
পাটের পাশাপাশি বাংলাদেশের আরেক গুরুত্বপূর্ণ অর্থকরী পণ্য চায়ের উৎপাদনও ক্ষতিগ্রস্ত হয় মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে। ১৯৭০-৭২ সালে চায়ের উৎপাদন এক তৃতীয়াংশ কমে দাঁড়ায় ছাব্বিশ মিলিয়ন পাউন্ডে। রপ্তানি বাজার সংকুচিত হয়ে আসে। রাস্তাঘাট, অবকাঠামোর ধ্বংসস্তুপে দাঁড়িয়ে থাকা বন্দর ব্যাপকভাবে আমদানি-রপ্তানি কাজকে ব্যাহত করে।
স্বাধীনতা যুদ্ধের একটি বড় অংশ দখল করে আছে গেরিলা যুদ্ধ। এই গেরিলা যুদ্ধের কারণে নদীমাতৃক দেশের ভেতরে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা প্রায় তিনশত সেতু ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত অবস্থায় ছিল। স্বাধীনতার পরে দেশের একপ্রান্ত থেকে অন্যপ্রান্তে মালামাল পরিবহণ করার কাজটিও দুঃসাধ্য হয়ে যায়। এই বিপুল পরিমাণ ক্ষতি মাথায় নিয়ে বাংলাদেশের জন্ম হয়েছিল। মুক্তিযুদ্ধে ক্ষতিগ্রস্ত ২৪৭টি রেল ব্রীজের ১৯৪টিকে মেরামত করে ব্যবহার উপযোগী করা হয় জানুয়ারীর তিন তারিখ নাগাদ। রেল যোগাযোগ সীমিত আকারে শুরু হয় তবে বড় ব্রীজগুলো মেরামত করতে আরো ছয় মাসের মতো সময় লাগে।
শুধু হার্ডিঞ্জ ব্রীজ নয়, মুক্তিযুদ্ধের পর দেশজুড়ে শত শত সেতু-কালভার্ট-ব্রীজের অবস্থা ছিল এমন;
তাই রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় বসে শেখ মুজিবের নেতৃত্বাধীন সরকারের প্রধান লক্ষ্য ছিল খাদ্যসামগ্রীর অভাব দূর করা, যেকোনো মূল্যে দুর্ভিক্ষ ঠেকানো। মুক্তিযুদ্ধের পর স্বাধীন বাংলাদেশে খাদ্যশস্যের ঘাটতি দাঁড়ায় চল্লিশ লক্ষ টন। তাই সদ্য স্বাধীন এই দেশকে বাঁচিয়ে রাখতে প্রয়োজন ছিল বিদেশী বিভিন্ন দেশের সাহায্যের। সেই লক্ষ্যে বাংলাদেশের দরকার ছিল খুব সুচারু একটি পররাষ্ট্র নীতি। তাই স্বাধীনতা লাভের পর বাংলাদেশ জোট নিরপেক্ষতা, সবার সাথে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের ঘোষণা দেয় এবং সাম্রাজ্যবাদ, উপনিবেশবাদ, বর্ণবাদের বিরুদ্ধে তার অবস্থান জানায়। বিশ্বের সকল দেশের সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক উন্নয়নে আগ্রহ প্রকাশ করায় ১৯৭২ সালের ১ জুনের মধ্যে ৭৫টি দেশ বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেয়। বাহাত্তরের শেষ নাগাদ সেই সংখ্যা ৯৪টিতে দাঁড়ায়। স্বাধীনতা লাভের একদম শুরু থেকেই প্রভাবশালী সোভিয়েত ইউনিয়ন আর প্রতিবেশী ভারত এই দুইটি দেশ বরাবরই বাংলাদেশকে সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে। কূটনৈতিক মহলে সেই সহায়তার অনেক ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ আছে তবে শিশু বাংলাদেশের বেঁচে থাকার জন্য এই পদক্ষেপগুলো অনেক জরুরী ছিল। ১৯৭২ সালের ৩ মার্চ গৃহীত হয় বাংলাদেশ আর সোভিয়েত ইউনিয়নের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক চুক্তি।
সোভিয়েত ইউনিয়নের সাথে চুক্তি করতে মস্কো যান বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান;
সোভিয়েত বিশেষজ্ঞদের সহায়তায় যুদ্ধে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্থ হওয়া চট্টগ্রাম বন্দরকে সারিয়ে তোলা হয়, ভারতীয় নৌবাহিনী ভাসমান মাইন সরানো এবং অবরুদ্ধ নৌপথ মুক্ত করতে সহায়তা করে। বাইরের দেশের সাথে বাণিজ্য করতে বন্দরকে কার্যকর করার কাজ এভাবেই শুরু হয়। এছাড়াও সোভিয়েতের অর্থনৈতিক সহায়তায় ঘোড়াশালে ১১০ মেগাওয়াটের তাপ-বিদ্যুত কেন্দ্র এবং সারাদেশে আটটি রেডিও স্টেশন নির্মাণের কাজ শুরু হয়।
সব মিলিয়ে ১৯৭২ সালের শুরুর দিকেই প্রাপ্ত বৈদেশিক সাহায্যের পরিমাণ ছিল ৬১২ মিলিয়ন ডলার, ১৯৭২-৭৩ অর্থবছরের পুরোটার হিসেবে বৈদেশিক সাহায্যের পরিমাণ ছিল ৮৮৬ মিলিয়ন ডলার। খাদ্য সমস্যা সমাধানে হাত বাড়িয়ে দেয় বিভিন্ন দেশ, ৭২ সালে বিদেশ থেকে আসে তিন মিলিয়ন টন ধান আর গম।
তবে দেশজুড়ে সবচেয়ে ভয়াবহ আকার ধারণ করেছিল আইন শৃঙ্খলা সমস্যা। মুক্তিযুদ্ধের সময় নিয়মিত বাহিনী ছাড়াও সাধারণ মানুষের সহায়তায় গড়ে উঠেছিল গণবাহিনী। গণবাহিনীতে ছিলেন সাধারণ কৃষক, মধ্যবিত্ত চাকুরে, দিনমজুর, কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া ছাত্র। সব মিলিয়ে এই গণবাহিনীর সংখ্যা ছিল ৮৪,০০০। গণবাহিনীর বাইরে ছিল মুজিববাহিনী, এদের সংখ্যা ছিল দশ হাজার। এদের সবার হাতেই কম বেশি অস্ত্র ছিল, সবার ছিল যুদ্ধ করার ট্রেনিং। তথ্য উপাত্ত ঘেঁটে জানা যায়, মুক্তিযোদ্ধাদের হাতে ছিল এক লক্ষ পঞ্চাশ হাজারের মতো আগ্নেয়াস্ত্র। এছাড়াও পাকিস্তানি বাহিনীর কাছ থেকে লুটকৃত অস্ত্র গোলাবারুদের পরিমাণও কম ছিল না। মুক্তিযোদ্ধা বাদেও রাজাকার, আল বদর, আল শামস, বিহারীদের কাছেও অস্ত্র আর গোলাবারুদ ছিল। নতুন দেশের আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি ছিল খুবই নাজুক।
মুক্তিযুদ্ধের পর দেশের মানুষের হাতে ছিল বিপুল পরিমাণ অস্ত্র, এই অস্ত্র পুনুরুদ্ধার করা সরকারের সামনে প্রধান চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়ায়;
শেখ মুজিবুর রহমানের দেশে ফিরে আসার পর তার ডাকে সাড়া দিয়ে অনেকেই অস্ত্র জমাদান শুরু করেন। তবে ঝামেলা বাঁধে অতি বামপন্থী আর রাজাকার সহ বিহারীদের নিয়ে। অতি বামপন্থীদের একাংশ তাদের হাতে থাকা অস্ত্র জমাদানে আগ্রহী ছিল না, তাদের মতে বাংলাদেশে বিপ্লব অসম্পূর্ণ রয়ে গেছে, এবং এই ধারণা থেকে অনেকেই সশস্ত্র সংগ্রাম চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়ে যায়।
ঢাকা থেকে প্রকাশিত ‘মর্নিং নিউজ’ এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছিল, স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম বিশ মাসে রাজনৈতিক কারণে ছয় হাজারের বেশি অপরাধ সংগঠিত হয়েছিল। সশস্ত্র হামলা, ডাকাতির সংখ্যা দেশজুড়ে বৃদ্ধি পায়। নতুন দেশে চাওয়া পাওয়ার মিল না হওয়া, খাদ্যের অভাব, চাকরি আর কর্মসংস্থানের অভাবে তরুণ আর মধ্যবয়স্ক অনেকেই অপরাধে জড়িয়ে যায়, মুক্তিযুদ্ধের পরে স্বজন হারানো বিপুল সংখ্যক মানুষের মানসিক সমস্যাও প্রকট আকার ধারণ করে, যার হিসেব কাগজে কলমে কোনোদিন লিপিবদ্ধ হয়নি।
অন্যদিকে বাংলাদেশে থাকা পাঁচ লাখ বিহারীদের নিয়ে সরকার পড়ে বিপাকে। মূলত ১৯৪৭ সালে দেশ বিভাগের পর ভারতের উত্তর প্রদেশ, বিহার এবং আশপাশের রাজ্য থেকে পূর্ব বাংলায় আশ্রয় নেয় বিহারীরা। ব্যবসা বাণিজ্য আর ক্ষুদ্র শিল্পে ভালো দখল ছিল বিহারী হিসেবে পরিচিত এই জনগোষ্ঠীর। তবে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে বাঙালীদের উপর ব্যাপক অত্যাচার নির্যাতনের অভিযোগ উঠে বিহারীদের বিরুদ্ধে। তাই স্বাধীনতার পরে বাঙালীদের অনেকেই বিহারী জনগোষ্ঠীর উপরে প্রতিশোধ পরায়ন হয়ে উঠে। উভয় পক্ষের হাতে অস্ত্র, বিহারিদের হাতে বাঙালীদের স্বজন হারানোর বেদনা আর স্বাধীনতার আবেগ, উভয় পক্ষের টিকে থাকার লড়াই আর প্রতিশোধ পরায়ণতার এক অদ্ভুত মিথস্ক্রিয়া ছিল বাঙালী আর বিহারিদের মাঝে। তাই শুরুতে ভারতীয় সেনাবাহিনী বিহারীদের নিরাপত্তার ব্যবস্থা করে। বিহারীদের একটি বড় অংশকে অবরুদ্ধ অবস্থায় রাখা হয়, এই জনগোষ্ঠীও পাকিস্তানে চলে যাওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করে কিন্তু পাকিস্তান তাদের গ্রহণ করতে শুরু করে গড়িমসি। যে সমস্যার সমাধান আজ অবধি করা সম্ভব হয়নি।
১৯৭৩-৭৪ অর্থবছরে বাংলাদেশের কৃষি একটু একটু করে ঘুরে দাঁড়িয়েছিল, তবে কালোবাজারি, চোরাচালানের ফলে তার সুফল পাওয়া হয়নি দেশবাসীর। দেশের নাজুক আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে দেশে গড়ে উঠে চোরাকারবারি চক্র। পত্রপত্রিকার খবর থেকে জানা যায় ১৯৭৪ সালে উৎপাদিত চালের প্রায় ১০ থেকে ২০ লাখ টন সীমান্ত পেরিয়ে ভারতে পাচার হয়ে যায়, প্রধান রপ্তানি দ্রব্য পাটের ২০ শতাংশ অবৈধভাবে ভারতে চলে যায়। দেশে ব্যাপক আকারে মুদ্রাস্ফীতি দেখা দেয় আর অন্যদিকে একটি অসাধু চক্র ব্যাংকনোটের জালিয়াতি শুরু করে, যার খবর পত্রপত্রিকায় খবর ছাপা হয়, সব মিলিয়ে দেশের মানুষের উপর ভয়াবহ অর্থনৈতিক চাপ সৃষ্টি হয় ।
স্বাধীন বাংলাদেশে আঘাত হানে দুর্ভিক্ষ, সৃষ্টি হয় মানবিক বিপর্যয়;
স্বাধীন দেশ প্রাকৃতিক আর ভৌগলিক কারণেও কম হোঁচট খায়নি। ১৯৭৪ সালের বন্যা দেশে ভয়াবহ পরিস্থিতির সৃষ্টি করে। একদিকে বাংলাদেশের জটিল রাজনৈতিক পরিমণ্ডলে চলছে ভাঙ্গা গড়ার লড়াই অন্যদিকে বাংলাদেশের ১৭ থেকে ১৯টি জেলা প্লাবিত হয়ে লক্ষ লক্ষ মানুষের ভোগান্তি শুরু হয়। নতুন দেশের রাস্তাঘাট নতুন করে নির্মাণের কাজ বিভিন্ন জায়গায় যতদূর হয়েছিল তা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে মানবিক বিপর্যয়ের সৃষ্টি হয়। বিভিন্ন এলাকায় দুর্ভিক্ষ দেখা দেয়, সরকারি তথ্য অনুসারেই ১৯৭৪ সালের নভেম্বরের দুর্ভিক্ষে সাড়ে সাতাশ হাজার মানুষ মারা যায়। বেসরকারি হিসেবে সেই সংখ্যা দাঁড়ায় এক লাখের ঘরে। ১৯৭০ সালের সাথে তুলনা করলে ১৯৭৪ সালে নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম ৭০০-৮০০% বেড়ে যায়। দেশজুড়ে এক ভয়াবহ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়।
নিউ ইয়র্ক টাইমসের পাতায় দুর্ভিক্ষের খবর;
মুক্তিযুদ্ধের পরে বাংলাদেশ দাঁড়িয়ে ছিল এক ভগ্নস্তূপে। দেশের সর্বত্রই পাক হানাদার বাহিনীর রেখে যাওয়া ধ্বংসস্তুপ, দেশে লক্ষ লক্ষ তরুণ বেকার, অনেকের হাতেই গোলাবারুদ আর অস্ত্র, অনেকেই পঙ্গু কিংবা মানসিকভাবে বিপর্যস্ত। হাজারো লক্ষ মানুষের বুকে স্বজন হারানোর বেদনা, নয়মাস শরনার্থী শিবিরে কাটিয়ে আসা মানুষের এক মুঠো ভাতের জন্য হাহাকার। এরমধ্যেও একদল সুযোগ সন্ধানী মানুষের লুটতরাজের চেষ্টা চারিদিকে। ১৯৭৩ সালের জানুয়ারি থেকে ১৯৭৪ সালের মে মাসের মধ্যেই দেশে ৯৫৪০টি খুন আর ১২২৪৪টি রাহাজানির ঘটনা সরকারি সূত্র থেকেই জানা যায়।
দেশ স্বাধীন হওয়ার পরে ভারতে পাড়ি জমানো শরনার্থীরাও দেশে আসতে থাকেন;
লাখো শহীদের আত্মত্যাগে স্বাধীন হওয়া দেশে তখন চারিদিকে সংকট। খাদ্য নেই, সুপেয় পানি নেই, রাস্তাঘাট নেই, ব্রীজ কালভার্ট নেই, দেশের নাজুক আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে চলছে চোরাকারবারি। প্রশাসনিক দুর্বলতা আর সীমাহীন দুর্নীতির সাগরে ধুঁকে ধুঁকে চলা প্রশাসন বিদেশ থেকে অর্থ, ত্রাণ সাহায্য মানুষের কাছে যথাযথ ভাবে বিতরণ করতে পারছে না।
জাতীয় রাজনীতিতে নানা পরিবর্তনে বেদনাবিধুর সেই সময় আমরা অনেক পেছনে ফেলে এসেছি। পৃথিবীর ইতিহাসে বাংলাদেশ আর তার অর্থনীতির যাত্রা এখন শুধুই সামনের দিকে। একদম কবির কবিতার মতো করেই ধ্বংসস্তুপে আমরা ফুল ফুটিয়েছি,
"শহীদের পূণ্য রক্তে সাত কোটি
বাঙালির প্রাণের আবেগ আজ
পুষ্পিত সৌরভ। বাংলার নগর, বন্দর
গঞ্জ, বাষট্টি হাজার গ্রাম
ধ্বংস্তুপের থেকে সাত কোটি ফুল
হয়ে ফোটে। প্রাণময় মহৎ কবিতা
আর কোথাও দেখি না এর চেয়ে।"
তথ্যসূ:
১.মূলধারা' ৭১; মঈদুল হাসান; ইউপিএল (২০০৮)
২. বাংলাদেশের রাজনৈতিক গতিধারা ১৯৭১-১৯৮৫; ভ্লাদিমির পুচকভ; দ্যু প্রকাশন (২০১৯)