মিলটন রহমান
১৫ অগাস্ট রাতে লিও রোজেসের বাঁশি শুনছিলাম
ভেজা তুষারের সাথে গলে পড়ছিলো রাত
রঙ আর অনুরাগের বার্তারা শুয়ে থাকে বুকের কার্ণিশে
লিও রোজেস তখনও বেজে চলে
রাতের শরীরে চালান করে দেয় রোদের ছুরি
কারণ আজ ১৫ অগাস্ট
সবুজ নক্ষত্রের ভেঙে পড়ার রাত
এমন কঙ্কাল সময় আমি আর কখনো দেখিনি
এইমাত্র মাথা উঁচু করা সবুজ পাতাটি
নিজের শরীরে আঁচড় কেটে গেলো
ক্যনি জি‘র স্যাক্সোফোন শুনে জেগে থাকে যে পাখি
তার মৌন বিলাপে দালানের পাথরেরা ঢুকরে ওঠে
এই রাতে সব সবুজ মুহুর্তে কালো হয়ে যায়
মেঘেদের কোরাসে নেমে আসে বিলাপের ঘোর
আমি বসে থাকি লিও রোজেসের বাঁশি হাতে
অনুভব করছি একাত্তরের বংশিবাদক কেমন ছিলো
কেমন ছিলো পঁচাত্তরের নেকড়েদের হিংস্রতা।
নিজেকে অযোগ্য উত্তরাধিকার মনে হয়
মনে করার চেষ্টা করি আমি কি সেই জলের জন্ম
যেখানে সাদা পায়রা ঠোঁটে রাখে সৌরভ
প্রতিটি দেয়ালে দেয়ালে এঁকে দেয় একটি নাম
বঙ্গবন্ধু।
আজ ১৫ অগাস্ট লিও রোজেস শুনছি
আকাশ থেকে নামিয়ে আনছি শোক ও শক্তি
আর একটি মন্ত্র
একটি ফুল
একটি রাগ
রাতের অন্ধকার ফুঁড়ে ধেয়ে আসা স্বপ্ন
আমি ভোর শেষে রাস্তায় নেমে দেখি
প্রতিটি পথ এক হয়ে চলে গেছে স্বর্গের দিকে
আর সাদা কাপড়ের থান থেকে পৃথিবীতে নেমে আসছে
অসংখ্য আলো আর ফুলের সৌরভ
আমি রোজেসের বাঁশিতে ফু দিয়ে
অগাস্টের রাতে আর কাঁদি না
জল ছিড়ে অবয়ব তৈরী করি
মনে করি প্রিয় মানুষের মুখ
নিজের ভিতর ধারণ করি বাংলাদেশ
আর সবুজ নক্ষত্র
যে নক্ষত্র আর কখনো ভেঙে পড়বে না
জেগে থাকবে অসংখ্য তারা ও নক্ষত্রের মাঝে